তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৩ জুন, ২০১৪, ১১:১৮:০৭ সকাল
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের ভ্রান্ত বক্তব্যঃ
==========
আমরা কয়েকদিন আগে তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের উর্দু ভাষায় একটি অডিও লিঙ্কে রাসুল (সাঃ)-এর জানাযা সম্পর্কে একটি বক্তব্য শুনলাম। উনি সেখানে উল্লেখ করলেনঃ ‘’রাসুল (সাঃ) তাঁর মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বে সাহাবীদেরকে তাঁর মৃত্যু পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন’’; যার পুরোটাই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
তাবলীগ জামা’তের কিতাবগুলো অধ্যায়ন করলে আমরা দেখতে পাই সেখানে অসংখ্য জাল, যইফ, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও আজগুবি কিসসা-কাহিনী দ্বারা পরিপূর্ণ। এইসব মিথ্যা কাহিনী দিয়ে তারা লক্ষ লক্ষ সাধারন মানুষদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে।
সচরাচর তাদের বয়ানে তারা তাদের কিতাব জাকারিয়া সাহারানপুরি সাহেবের লিখিত ‘ফাজায়েলে আমল’ ছাড়াও বিভিন্ন মিথ্যা ও মনগড়া কাহিনী বর্ণনা করে থাকে। যার কুরআন ও সহীহ হাদিসের সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, এবং অধিকাংশই আকিদা বিধ্বংসী।
এইরকম ভ্রান্ত বক্তব্য শুধু তাদের সাধারন তাবলিগী ভাইয়েরা দেন না, বরং তাদের গণ্য-মান্য ব্যক্তিরাও প্রদান করে থাকেন।
এরকমই একটি বয়ান পেশ করেছেন তাদের কাছে চরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি পাকিস্তানের মাউলানা তারিক জামিল সাহেব। বক্তব্যটি উর্দু ভাষায়। আমরা পাঠক ও শ্রোতার সুবিধার্থে অনুবাদ করে দিলাম। এবং সাথে সাথে উনার বক্তব্যের অডিও লিঙ্ক দিলাম।
========
মাউলানা তারিক জামিল সাহেব বলেনঃ
রাসুল (সাঃ)-এর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পূর্বে সাহাবীরা রাসুল (সাঃ)-এর নিকট আসলেন। তাদেরকে দেখে রাসুল (সাঃ)-এর চোখে পানি চলে এলো। রাসুল (সাঃ) তাদেরকে বললেনঃ ‘’আমি তোমাদেরকে আল্লাহর সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সাথী’’
আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘’হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকতে চলে এসেছে; (আপনি মারা যাওয়ার পর) আপনাকে কে গোসল দিবে?
রাসুল (সাঃ) বললেনঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’
আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ কে আপনাকে কাফন পরাবে?
রাসুল (সাঃ) ঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’
আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ কে আপনাকে কবরে নামাবে?
রাসুল (সাঃ)ঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’
আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ আপনার জানাযা কে পড়াবে?
তখন রাসুল (সাঃ)-এর চোখে পানি চলে এলো।
তিনি বললেনঃ তোমাদের নাবীর জানাযা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে আমার আল্লাহ আমার জানাযা পড়বেন। তারপর জিবরীল, মিকাঈল ও ইস্রাফিল অতঃপর আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে।
তারপরে তোমাদের মধ্যে পুরুষরা আগে আমার জন্য দু’আ করবে। তারপর নারীরা আসবে, তারপর শিশুরা আসবে। অতঃপর তোমাদের দাস-দাসী, চাকর-বাকর আসবে।
অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে।
তারিক জামিল সাহেবের বক্তব্য এখানেই শেষ।
উনার বক্তব্যের লিঙ্ক Click this link
============
আমরা হবাক হয়ে গেলাম উনার বক্তব্য শুনে! এত বড় ডাহা মিথ্যা কথা বলতে কি উনার একটুও বুক কাঁপল না! স্বয়ং আল্লাহ, রাসুল (সাঃ) জানাযা পড়ার জন্য আসবেন!!!
আমরা রাসুল (সাঃ)-এর মৃত্যু বিষয়ক আমাদের সাধ্যমতো সমস্ত অথেনটিক হাদিস ও সিরাত গ্রন্থ তন্ন তন্ন করে খুজে দেখলাম, কিন্তু কোথাও খুজে পেলাম না।
এই যদি হয় তাদের মান্যবর আলেমদের অবস্থা, সেখানে তাবলীগ জামা’আতের সাথে জড়িত সাধারন মানুষদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
মহান আল্লাহর কাছে এই সমস্ত মিথ্যা কথা থেকে পানাহ চাই। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সমস্ত মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।
বিস্তারিত এখানে
বিষয়: বিবিধ
৪৮০২ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ ভাল জানেন কে সঠিক আর কে গোমরাহ বা বেঠিক।
আল্লাহ তা'আলা কুরআনে বলেছেন-
"অধিকাংশ লোক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা সত্ত্বেও মুশরিক।"
(সূরা ইউসুফ, আয়াত-১০৬)
খেয়াল কইরেন অধিকাংশ মানে বেশিরভাগ লোকের কথা বলা হইছে।
কেউ যদি ভ্রান্তির মধ্যে থাকে, তাকে সংশোধন করে দেয়াই যেন আমাদের উদ্দেশ্য হয়। কিন্তু এটাকে পুঁজি করে কাউকে হেয় করা ঠিক নয়। কারণ আমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও ঘৃণা একমাত্র আল্লাহর জন্য।
তাদের পন্হা বলতে তারা যেভাবে না জেনে, না বুঝে শুধু বিদ্ধেষবশতঃ কারো বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায় সেটা যেন করা না হয়।
যা সত্য তাই বলেছি। অডিও না শুনলে শুনে দেখুন যদি উর্দু বোঝেন।
অনেক চেষ্টা করা হয়েছে তাদেরকে বোঝানোর পারলে আপনি একবার করে দেখুন। সত্যি তাদের প্রতি ঘৃণা থাকের সেটা আল্লাহর জন্যই।
এক হাত লম্বা ব্যক্তি যদি দুই হাত লম্বা কলসীতে হাত দিয়ে বলে “কলসীর তলা নেই”তাহলে সেটি যেমন হাস্যকর ব্যাপার। তেমনি মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের মত বিজ্ঞ ও গবেষক আলেমের কোন বক্তব্য স্বীয় মুর্খতার কারণে না পেয়ে সেটিকে জাল ও বানোয়াট বলাটাও কম মুর্খতার পরিচয় নয়।
যে সকল কিতাবে বর্ণিত হয়েছে উক্ত ঘটনা
১- দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিলবায়হাকী, বাবু জিকরিল হাদীস আল্লাজি রুয়িয়া আন ইবনে মাসঈদ রাঃ।
২- আলখাসায়েসুল কুবরা, রাসূল সাঃ এর গোসল অধ্যায়।
৩- তাবকাতে ইবনে সাদ, রাসূল সাঃ এর মৃত্যুকালীন অসিয়ত অধ্যায়।
৪- আলমুনতাজিম ফী তারীখিল মুলুকি ওয়াল উমামি, রাসূল সাঃ এর অসুস্থ্যকালীন সময়ে একত্র হওয়া সাহাবীদের ওসিয়ত অধ্যায়।
৫- শরহুজ যুরকানী, ১২তম খন্ড, ১০ম অধ্যায়, প্রথম পরিচ্ছেদ।
৬- তারীখুল খামীস, রাসূল সাঃ এর ওফাত অধ্যায়।
৭- আলমাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ, তৃতীয় খন্ড, ১০ মাকসাদ, ১ম পরিচ্ছেদ।
৮- ইতহাফুল মাহরাহ লিইবনে হাজার, হাদীস নং-১৩১৮৬।
৯- আলমুস্তাদরাক আলাস সাহীহাইন, হাদীস নং-৪৩৯৯।
১০- আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا حَمْزَةُ بْنُ الْعَبَّاسِ الْعَقَبِيُّ بِبَغْدَادَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوْحٍ الْمَدَائِنِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَلَّامُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْمَدَائِنِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَلَّامُ بْنُ سُلَيْمٍ الطَّوِيلُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْحَسَنِ الْعُرَنِيِّ، عَنِ الْأَشْعَثِ بْنِ طَلِيقٍ، عَنْ مُرَّةَ بْنِ شراحيل، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: لَمَّا ثَقُلَ رسول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اجْتَمَعْنَا فِي بَيْتِ أُمِّنَا عَائِشَةَ، قَالَ: فَنَظَرَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عليه وسلم فَدَمَعَتْ عَيْنَاهُ، ثُمَّ قَالَ لَنَا: قَدْ دَنَا الْفِرَاقُ. وَنَعَى إِلَيْنَا نَفْسَهُ، ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِكُمْ، حَيَّاكُمُ اللهُ، هَدَاكُمُ اللهُ، نَصَرَكُمُ اللهُ، نَفَعَكُمُ اللهُ، وَفَّقَكُمُ اللهُ، سَدَّدَكُمُ اللهُ، وَقَاكُمُ اللهُ، أَعَانَكُمُ اللهُ، قَبِلَكُمُ اللهُ، أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللهِ، وَأُوصِي اللهَ بِكُمْ، وَأَسْتَخْلِفُهُ عَلَيْكُمْ، إِنِّي لَكُمْ مِنْهُ نَذِيرٌ مُبِينٌ، أَنْ لَا تَعْلُوا عَلَى اللهِ فِي عِبَادِهِ وَبِلَادِهِ فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى:
ذِكْرُهُ: قَالَ: ذَكَرَهُ لِي وَلَكُمْ تِلْكَ الدَّارُ الْآخِرَةُ نَجْعَلُها لِلَّذِينَ لَا يُرِيدُونَ عُلُوًّا فِي الْأَرْضِ وَلا فَساداً. وَالْعاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ [ (2) ] ، وَقَالَ: أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوىً لِلْمُتَكَبِّرِينَ [ (3) ] ، قُلْنَا: فَمَتَى أَجَلُكَ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «قَدْ دنا الأجل وَالْمُنْقَلَبُ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَالسِّدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَالْكَأْسِ الْأَوْفَى، وَالْفَرْشِ الْأَعْلَى، قُلْنَا فَمَنْ يُغَسِّلُكَ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: رِجَالُ أَهْلِ بَيْتِي الْأَدْنَى فَالْأَدْنَى مَعَ مَلَائِكَةٍ كَثِيرَةٍ يَرَوْنَكُمْ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ، قُلْنَا: فَفِيمَ نُكَفِّنُكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟
قَالَ: فِي ثِيَابِي هَذِهِ إِنْ شِئْتُمْ أَوْ فِي يَمِنَةٍ، أَوْ فِي بَيَاضِ مِصْرَ» ، قُلْنَا مَنْ يُصَلِّي عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ فَبَكَى وَبَكَيْنَا، فَقَالَ: «مَهْلًا غَفَرَ اللهُ لَكُمْ، وَجَزَاكُمْ عَنْ نَبِيِّكُمْ خَيْرًا، إِذَا غَسَّلْتُمُونِي، وَحَنَّطْتُمُونِي، وَكَفَّنْتُمُونِي فَضَعُونِي عَلَى شَفِيرِ قَبْرِي، ثُمَّ اخْرُجُوا عَنِّي سَاعَةً، فَإِنَّ أَوَّلَ مَنْ يُصَلِّي عَلَيَّ، خَلِيلَايَ، وَجَلِيسَايَ جِبْرِيلُ وَمِيكَائِيلُ، وَإِسْرَافِيلُ ثُمَّ مَلَكُ الْمَوْتِ، مَعَ جُنُودٍ مِنَ الْمَلَائِكَةِ، وَلْيَبْدَأْ بِالصَّلَاةِ عَلَيَّ رِجَالٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي، ثُمَّ نِسَاؤُهُمْ، ثُمَّ ادْخُلُوهَا أَفْوَاجًا وَفُرَادَى، وَلَا تُؤْذُونِي بِبَاكِيَةٍ، وَلَا بِرَنَّةٍ، وَلَا بِصَيْحَةٍ وَمَنْ كَانَ غَائِبًا مِنْ أَصْحَابِي فَأَبْلِغُوهُ عَنِّي السَّلَامَ وَأُشْهِدُكُمْ بِأَنِّي قَدْ سَلَّمْتُ عَلَى مَنْ دَخَلَ فِي الْإِسْلَامِ، وَمَنْ تَابَعَنِي على ديني هذا مند الْيَوْمِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ» ، قُلْنَا: فَمَنْ يُدْخِلُكَ قَبْرَكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟، قَالَ: «رِجَالُ أَهْلِ بَيْتِي الْأَدْنَى فَالْأَدْنَى، مَعَ مَلَائِكَةٍ كَثِيرَةٍ، يَرَوْنَكُمْ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ»
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কতৃক প্রকাশিত আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া থেকে স্কৃন শর্ট দেন।
তারিক জামিল হুজুরের একজন ভক্ত হিসেবে তার প্রতি আত্মপক্ষ নিয়ে কথার উত্তর দেওনের সময়ও কি হেতিনির অনুসৃত ভদ্রতার আশ্রয় লওন যায় না?
তাই যারা এই হাদীস বহন করে তারা তার ভাষায় জালীয়াত। সুতরাং স্পষ্ট হয়েযায় বিষয়টি।
দ্বীতিয়ত নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহ) তার সিলসিলহী যইফা ওয়াল মাওযুআতে হাদীসটিকে মওযু বলেছেন.....
এরখম বানোয়াটি কথা দারা মানুষকে ভোলাতে চায় কারা? তাতো বোঝাই যায়।
প্রমান আরো আছে ধাপে ধাপে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন