রসুল (সা) আলেমুল গাইব। (!!) (আকিদার পোস্ট)
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ০৩ জুন, ২০১৪, ০৯:৩৮:৪৬ সকাল
রসুল (সা) আলেমুল গাইব এটা আমার কথা নয়। বিস্তারিত পড়ুন। তাহলে বুঝবেন তিনি কেমন আলেমুল গাইব।
====================================
মাহান আল্লাহর রুবুবিয়াতের অন্যতমদিক তার অনন্ত অসীম অতুলনীয় ও সামগ্রিক ইলম বা জ্ঞান। তার অন্যতম সিফাত হলো “আলিমুল গাইব” বা “অদৃশ্যের জ্ঞানের অধিকারী” এবং”আলিমুল গাইব ওয়াশ শাহাদা” বা ”দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানের অধিকারী” । কুরআনে একথা বলাহয়নি যে, “আল্লাহর মত গাইবী ইলম কারো নাই। বরং বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে যে, ”গাইবেরজ্ঞান”-ই আল্লাহ ছাড়া কারো নেই। আল্লাহ ছাড়া কারো এরুপ গাইবের জ্ঞান বা অনাদি অনন্তজ্ঞান আছে বলে বিশ্বাস করা শিরক। ইহুদী-খৃষ্টান ও আরবের কাফিরগণ এরুপ শিরকে লিপ্ত ছিল।যেমন এখন খৃষ্টানরা বিশ্বাস করেন যে ইসা (আ) গায়েবের জ্ঞানের অধিকারী। কাফিরগণ বিশ্বাসকরতেন এবং করেন যে, জিনগণ এবং তাদের পুরোহিতগণ গাইবের জ্ঞানের অধিকারী। কুরআন ও হাদীসেএ সকল শিরকী বিশ্বাস খন্ডন করা হয়েছে। এমনকি কোন কোন মুসলিম রাসুলুল্লাহ (সা) এর বিষয়েএরুপ ধারণা প্রকাশ করলে তিনি তার কঠোর প্রতিবাদ করেছেন।
প্রথমে কোরআন ও পরে সহীহ হাদীসদিয়ে তার প্রমান দিব ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ বলেন:
”বলুন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতেআল্লাহ ব্যাতীত কেউ গাইবের (অদৃশ্যের) জ্ঞান রাখে না”
(সুরা (২৭) নমল: ৬৫ আয়াত)
নবী-রাসুলগণ কেউই পৃথিবীতে জীবদ্দশায়এবং মৃত্যুর পরে কখনো ইলমে গাইবের অধিকারী হন না।
আল্লাহ বলেন:
”যে দিন (কিয়ামতের দিন) আল্লাহরাসুলদেরকে একত্র করবেন এবং বলবেন, তোমরা কী উত্তর পেয়েছিলে? তারা বলবে, আমাদের তো কোন জ্ঞান নেই, আপনিই তো অদৃ্শ্য সম্মন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত”
(সুরা (৫) মায়িদা: ১০৯ আয়াত)
আল্লাহ বলেন:
”বল, আমি তোমাদেরকে বলিনা যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডারসমূহ রয়েছে, অদৃশ্য (গায়েব) সম্মন্ধে ও আমি অবগত নই, আর আমি তোমাদেরকে একথাও বলিনা যে, আমিফিরিশতা। আমি তো শুধু আমার প্রতি যে ওহী প্রেরণ করা হয় তারই অনুসরণ করি”
(সুরা (৬) আনআম: ৫০ আয়াত, সুরা(১১) হুদ: ৩১ আয়াত)
রসুল (সা) ওহী ছাড়া কিছুই জানতেননা তা স্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় উপরের আয়াতের দারা।
আল্লাহ বলেন:
”বল, আমার নিজেরকোন মঙ্গল বা অমঙ্গল করার ক্ষমতাও আমার নেই, শুধু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যাতীত।আমি যদি গাইব (অদৃশ্যর জ্ঞান) জানতাম তাহলে প্রভুত কল্যাণ লাভ করতাম, আর কোন অমঙ্গলআমাকে স্পর্শ করতে পারতো না। আমি তো কেবল ভয়প্রদর্শনকারী এবং সুসংবাদ দাতা বিশ্বাসীসম্প্রদায়ের জন্য”
(সুরা (৭) আরাফ: ১৮৮ আয়াত)
হাদীস থেকে:
মহিলা সাহাবী রুবাই বিনতু মাআওয়িয(রাআ) বলেন:
”আমার বিবাহের দিন সকালে রসুলুল্লাহ(সা) আমার ঘড়ে প্রবেশ করেন, তখন আমার কাছে দু’জন বালিকা বসে গীত গাচ্ছিল। তারা তাদেরকথার মাঝে মাঝে বলছিল: আমাদের মধ্যে একজন নবী রয়েছেন যিনি আগামীকাল (অর্থাৎ ভবিষ্যতে)কি আছে তা জানেন,। তখন রসুল (সা) তাদেরকে বলেন: একথা বলো না, আগামীতে (ভবিষ্যতে) কিআছে তা আল্লাহ ছাড়া কেউই জানে না।
(সহীহ আল বুখারী: হা/১৪৬৯ কিতাবুলমাগাযী অধ্যায়: বাবু শুহূদিল মালাইকাতি বাদয়ান)
রসুল (সা) বলেন, কিয়ামতের দিনঅনেক মানুষ আমার কাছে (হাউযে পানি পানের জন্য) আসবে, যাদেরকে আমি চিনব এবং তারাও আমাকেচিনবে, কিন্তু তাদেরকে আমার কাছে আসতে বাধা দেওয়া হবে। আমি বলব, এরা তো আমারই উম্মত– সহচর। তখন উত্তরে বলা হবে: আপনার পরে তারা কী আমল করেছে তা আপনি জানেন না’। তখন আমিতাই বলব নেকবান্দা ঈসা ইবনু মরিয়াম (আ) যা বলেন; যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমিছিলাম তাদের শাহীদ-সাক্ষী। কিন্তু যখন আপনি আমাকে তুলে নিলেন তখন আপনিই তো ছিলেন তাদেরকার্যকলাপের তত্বাবধায়ক এবং আপনিই সর্ববিষয়ে সাক্ষী (শাহীদ)
(সহীহ আল বুখারী: হা/১৬৯১ কিতাবুলআম্বিয়া অধ্যায়; বাবু কাওলিল্লাহি : ওয়াত্তাখাযাল্লাহু ইবরাহীমা খালীলান, সহীহ আল মুসলিম:হা/১৭৯৩-১৭৯৪ কিতাবুল জান্নাতি বাবু ফানাইদ্দুনইয়া)
আবু হুরাইরাহ (রা) বলেন; রাসুলুল্লাহ(সা) বলেন: যে ব্যাক্তি কোনো গণক, ভাগ্যবক্তা বা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন করে এবং তারকথা বিশ্বাস করে সে মুহাম্মাদ (সা) এর উপর আবতীর্ণ দীনের প্রতি কুফরী করে।
(আহমাদ, আল মুসনাদ ২/৪২৯, আলবানী,সহীহুত তারগীব ৩/৯৭-৯৮)
কুরআন ও সহীহ হাদীস দারা জানলামযে গায়েবের খবর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না এমনকি রসুল (সা) ও গায়েবের খবর জানতেন না।তাহলে যারা ভাবে রসুল (সা) আলেমুল গায়েব (নাউজুবিল্লাহ) তাদের কি হাল হবে তা আল্লাহইভাল জানেন। আশাকরি আল্লাহ সেই ভাইদেরকে সঠিক বোঝার তাওফিক দান করুন আমীন।
আসুন দেখি মোল্লা আলী কারী হানাফী (রহ) কি বলেন:
তিনি ফিকহুল আকবার গ্রন্থের ব্যাখায়বলেন:
জেনে রাখ, নবীগণ (আ) অদৃশ্য বা গাইবেরবিষয়াদির বিষয়ে আল্লাহ কখনো কখনো যা জানিয়েছেন তা ছাড়া কিছুই জানতেন না। হানাফী মাযহাবেরআলিমগণ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, রসুলুল্লাহ (সা) গাইব জানতেন বলে আকীদা(বিশ্বাস)পোষণ করা কুফরী, কারণ তা আল্লাহর এ কথার সাথে সাংঘর্ষিক: বল(হে মুহাম্মাদ) আল্লাহব্যাতিত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য (গাইব) বিষয়ে জ্ঞান রাখে না।
(মোল্লা আলী কারী হানাফী: শারহুলফিকহিল আকবার, পৃ: ২৫৩)
আবারো খেয়াল করুন যারা ভাবেন যে, রসুল (সা) আলেমুল গাইব, “হানাফী মাযহাবের আলিমগণ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে,রসুলুল্লাহ (সা) গাইব জানতেন বলে আকীদা (বিশ্বাস) পোষণ করা কুফরী”
আল্লাহ আমাদের বোঝার তাওফিক ওসত্য গ্রহণের তাওফিক দিন আমীণ।
{কালেকটেড}
বিষয়: বিবিধ
২৫৫৯ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখানেআসোজলদি
জনৈক পীরভক্ত ফতোয়া দিল আমি নাকি কুফরী করেছি। তাওবা করতে হবে।
আল্লাহ তাদের হেদায়াত দিন।
কালেমার সঠিকভাবে দাওয়াত দিলে বিপদ আসবেই ধয্যধরুন। আর অপেক্ষা করুন।
আপনার মাযহাব কোনটা ভাই???
ওয়া আনতুম ফাজাজাকুমুুল্লাহু খায়রান।
বাঙ্গাল মানুষ নেহায়েত ভাইয়ের উত্তর টা যদি বাংলায় বলতেন...........।
০আল্লাহ সম্মন্ধ্যে সঠিক জ্ঞান
০রসুল (সা) সম্মন্ধ্যে সঠিক জ্ঞান
০দ্বীন ইসলাম সম্মন্ধ্যে সঠিক জ্ঞান
আল্লাহ ও তার রসুল সম্মন্ধে সঠিক জানতে এই বইটি পড়ুন
এই পেজটাতে অনেক বই আছে দেখুন
ইযা সাহহাল হাদীসু ফাহুয়া মাযহাবী অর্থাৎ
হাদীস সহীহ হিসেবে সাব্যস্থ হলে সেটাই আমার মাযহাব
-- ইমাম আবু হানিফা
(ইবনে আবেদিনের হাশিয়া, সিফাতু সালাতিন নাবি থেকে উধৃত)
(সুরা (৬) আনআম: ৫০ আয়াত, সুরা(১১) হুদ: ৩১ আয়াত)
রসুল (সা) ওহী ছাড়া কিছুই জানতেননা তা স্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় উপরের আয়াতের দারা।
মি’রাজ এর কাহিনী প্রায় পুরাটাই গায়েবের;
এর জন্য কুর’আনের রেফারেন্স সূরা জ্বীন এর ঐ আয়াত – যাতে আল্লাহ কইছে রাসূল ছাড়া কারও কাছে আল্লাহ গায়েব জাহির করেন না।
আর রাসূল(সাঃ) এর কাছে যা জাহির করছেন আল্লাহ তার মধ্যে অন্যতম জান্নাত-জাহান্নাম, নবী-রাসূল(আঃ) দের সাথে মি’রাজে দেখা হইছে রাসূল(সাঃ); এছাড়া যে ভবিষ্যৎ বাণী গুলো করছিলেন, ইত্যাদি আরও কিছু।
তাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে কিছু গায়েব জাহির করা হইছে রাসূল(সাঃ) এর কাছে।
আমার চাইতে তো আপনি হাদীস অবশ্যই বেশী জানেন।
আর মেরাজের ঘটনা রসুল (সা) কে সেটাও দেখানো হয়েছিল ফলে তিনি বর্ণনা করেছেণ আমাদের কাছে।
জান্নাত জাহান্নাম রসুল (সা) কে যা দেখানে হয়েছিল তিনি তাই বর্ণনা করেছেন তার বেশি নয়।
কোরআনে বলা আছ রসুল(সা) অহীছাড়া একটা কথাও বলেন না। তাই তিনি যা ভবির্ষত বানি করেগেছেন তাও ছিল ওহীর অংশ যা আমরা সহীহ হাদীসে পাই।
আল্লাহ বলেন:
”বলুন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতেআল্লাহ ব্যাতীত কেউ গাইবের (অদৃশ্যের) জ্ঞান রাখে না”
(সুরা (২৭) নমল: ৬৫ আয়াত)
আপনি পুরাটাই আবার পড়ুন একবার ভালোকরে।
মি’রাজের বিষয়গুলো কি আমাদের কাছে অদৃশ্য বা গায়েবের না?
আল্লাহ বলেন:
”বলুন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতেআল্লাহ ব্যাতীত কেউ গাইবের (অদৃশ্যের) জ্ঞান রাখে না”
(সুরা (২৭) নমল: ৬৫ আয়াত)
জাজাকাল্লাহু খায়রান
তাদের যা ব্যাখ্যা একদম টাশকি খাওয়ার মতো!
মন্তব্য করতে লগইন করুন