দশ জন সাহাবা (রা) সত্যায়নে রসুল (সা) এর সালাত। আপনার সালাত কি এর সাথে মেলে?
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৮ মে, ২০১৪, ০৪:০৬:৪৩ বিকাল
সাধারণত একই হাদীসে সালাতের সকল কর্মগুলো পাওয়া যায় না। তবে এই হাদীসটি দশজন সাহাবা (রা) দেয়া স্বাক্ষ্য হিসেবে মোটামুটি সালাতের বেশিরভাগ কাজ এখানে এসে যায়।
ইমাম আবুদাউদ তার সুনান আবুদাউদে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। যেখানে সেই হাদীসে রসুল (সা) এর দশ জন সম্মানিত সাহাবা (রা) সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, হ্যাঁ এটাই ছিল রসুল (সা) এর সালাত। আসুন দেখি আমার আপনার সালাত কি ঠিক সেরখম কি না।
কেননা রসুল (সা) বলেছেন “সল্লু কামা রআইতুমুনি উসল্লি” তোমরা ঠিক সেভাবেই সালাত আদায় করো যেভাবে আমাকে দেখেছ (সহীহ বুখারী হা/৬৩১)
====================================
মুহাম্মাদ ইবনু আমর (রহ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু হুমায়িদ আস-সাঈদী (রা) কে দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে যাদের মধ্যে আবু ক্বাতাদাহ (রা) ছিলেন-বলতে শুনেছি: রসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত সম্পর্কে আমি আপনাদের চেয়ে অধিক অবগত।
তারা বললেন, সেটা আবার কিভাবে? আল্লাহর সপথ! আপনি তো তার অনুসরণ ও সাহচর্যের দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামী নন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর তারা বললেন, এখন আপনি আপনার বক্তব্য পেশ করুন।
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা) সালাতে দাড়ানোর সময় নিজের দু হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে পূর্ণরুপে সোজা হয়ে দাড়াতেন।
এরপর ক্বিরআত পড়ে তাকবীর বলে রুকুতে গমনকালে স্বীয় দু হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন।
তারপর রুকুতে গিয়ে দু হাতের তালু দ্বারা হাটুদ্বয় দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতেন।
রুকুতে তার মাথা পিঠের সাথে সমান্তরাল থাকত।
এরপর রুকু হতে মাথা উঠিয়ে “সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ” বলে তিনি স্বীয় দু হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে সোজা হয়ে দাড়াতেন।
তারপর আল্লাহু আকবার বলে তিনি সাজদায় যেতেন, সাজদাহতে বাহুদ্বয় স্বীয় পাঁজরের পাশ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেন।
তারপর সাজদাহ হতে মাথা উঠিয়ে বাম পা বিছিয়ে তাতে সোজা হয়ে বসতেন এবং সাজদাহকালে স্বীয় পায়ের আংগুলগুলি ফাকা করে রাখতেন।
এর পর আবার সাজদায় যেতেন এবং আল্লাহু আকবার বলে সাজদাহ হতে মাথা উঠিয়ে বাম পা বিছিয়ে তাতে সোজা হয়ে বসতেন, এমনকি প্রতিটি হাড় স্ব স্ব স্থানে ফিরে যেত।
এরপর পরের রাকআতও অনুরুপভাবে আদায় করতেন।
অতঃপর যখন দু’রাকআত শেষে (তৃতীয় রাকআতের জন্য) দাড়াতেন তখন তাকবীর বলে দু হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন, ঠিক যেমনটি উঠাতেন সালাত আরাম্ভকালে তাকবীর বলে।
অতঃপর এভাবেই তার অবশিষ্ট সালাত আদায় করতেন।
অতঃপর শেষ রাকআতে স্বীয় বাম পা ডান পাশে বের করে বাম পাশের পাছার উপর ভর করে বসতেন।
তখন তারা সকলেই বললেন, হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। রসুলুল্লাহ (সা) এভাবেই সালাত আদায় করতেন।
(হাদীস সহীহ)
(সুনান আবুদাউদ হা/৭৩০, ১ম খন্ড, অনুচ্ছেদ-১১৭: সালাত শুরু করা সম্পর্কে, এছাড়া এই হাদীস পাবেন: তিরমিযী হা/৩০৪,অনুচ্ছেদ: সালাতের বিবরণ, ইবনু মাজাহ হা/১০৬১, সনদ সহীহ, মিশকাত হা/৭৪৫, অনুচ্ছেদ: সালাতের বিবরণ)
সংগ্রহ: Message Of Messenger
বিষয়: বিবিধ
২১২৮ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই হাদীসে হাত কোথাও রাখার ব্যাপারে নির্দেশনা নেই সেহেতু ধারণা করা যায় যে,তিনি হাত ছেড়ে দিতেন। আরব দেশে দেখেছি অনেকেই হাত সোজা ছেড়ে দেন। তা এই হাদীসের আলোকে কি না তা অবশ্য আমার জানা নেই।
আমার কথাটাও এই ফাঁকে বলে নেই- আমি প্রাথমিক জীবনে লোকেদের দেখা দেখি নাভির উপর অথবা নিচে রাখতাম। পরে সিনার কাছাকাছি রাখা শুরু করেছি, এভাবে চলছে।
কেউ নাভির নিচে, কেউ নাভি বরাবর, কেউ সিনার নিচে, কেই সিনা বরাবর, কেউ গলার কাছাকাছি আবার কেউ সোজা ছেড়ে দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। আমি অবশ্য আমার অনুসৃত নিয়মের বাহিরে যারা তাদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করি না। ধন্যবাদ।
"কেউ গলার কাছাকাছি" এটা প্রথম শুনলাম।
অযথা চাপাতে আমিও চাইনা। তবে জদি শক্ত রেফারেন্স থাকে।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
আমাদের প্রতিটি ধর্মীয় গোষ্ঠির কিছু কিছু অনুসারী মধ্যেই কিছুটা বাড়া বাড়ি আছে। এগুলোকে আমি বলে থাকি অতি শিবির, অতি সুন্নী, অতি খারেজী এবং অতি সালাফী ইত্যাদি নামে। বিশ্বাস করুন সাধারণ নয়, কিছু সালাফী আলেম পেয়েছি যাঁরা গলার কাছাকাছি হাত বাঁধেন। সাধারণ সালাফী ভাইদের অনেককে পেয়েছি জামায়াতে দাঁড়ানো অবস্থায় একজনেরে পায়ের আঙ্গুলের সাথে আরেকজনের পায়ের আঙ্গুল লাগিয়ে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য (হয়ত)আঙ্গুল দিয়ে পায়ে ঘষা ঘষি করতে থাকেন।
জাযাকাল্লাহ খাইরান!
তুমি কমেন্টস করলে তোমি দুআটা পেতে।
হাত কোথায় বাঁধবে-নাভীর নীচে নাকি বুকের উপরে?
এ বিষয়ে কি কোন সহীহ হাদীস আছে? আমি যতদূর জানি নেই।
==========================
সালাতে হাত বাঁধার শুদ্ধ পদ্ধতি ও দুর্বল পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য নিচের ছবিটি দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
ইমাম ইবন হাজার আসকালানী (রহ) তার বুলুগুল মারাম মিন আদিল্লাহতীল আহকাম গ্রন্থে ইবনু খুজাইমা থেকে একটি হাদীস বর্ননা করেছেন এবং নাসিরুদ্দিন আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। নিচে স্কৃণ শর্ট দিলম দেখুন...
আরোও বিস্তারিত জানতে আপনি দেখতে পারেন..
“সালাতে/নামাযে হাত বাধা”
নামাজে বুকের উপর হাত বাদা
*****”সালাত/নামায”- এর ভিতর ও বাহির*****
সালাতে হাত বাঁধার শুদ্ধ পদ্ধতি ও দুর্বল পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন