অসৌন্দর্যের মাঝে সৌন্দর্যকে হারিয়ে ফেলা অতঃপর জাহান্নাম।
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:০২:২৭ সকাল
আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াসসলাত ওয়াসসালাম আলা রসুলিল্লাহ (সা)
নিশ্চই আমার এই লেখা মুসলিম বোনদের জন্য যারা নিজেকে মুসলিম দাবি করে হোক জেনে বুঝে অথবা বংশ পরম্পরায়। তবে এই লেখা থেকে পুরুষ ও বাদ যাবার নয়। নিশ্চই রসুল (সা) বলেছেন, প্রত্যেকেই তার নিজের স্থানে একজন রাখাল আর তার রাখালী সম্মন্ধ্যে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে (বুখারী) তাই হে ভাই, নিশ্চই আপনাকে আপনার পরিবার সম্মন্ধ্যে জিজ্ঞাসা করা হবে কিভাবে তাদেরকে রেখেছেন।
কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলেছেন,
”কুআনফুসাকুম ওআহলিকুম নারা” অর্থাৎ তোমরা নিজেরা বাচো ও তোমাদের পরিবারকে বাচাও জাহান্নাম থেকে।
তাই আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে এবং জানতে হবে নিজে বাচার জন্য ও আপনার পরিবারকে বাচানোর জন্য সেই হুতামা থেকে, যার বন্দবস্ত মহান আল্লাহ বানিয়ে রেখেছেন কাফেরদের জন্য। আর আমাদেরকে সরল পথ দেখিয়েছেন তার দয়ায় রসুল (সা) এর মাধ্যমে।
মুল প্রসঙ্গ।
আমাদের দেশে বেশিরভাগ শহর অঞ্চলে এবং ইদানিং গ্রাম-গঞ্জে একটি কালচার সৃষ্টি হয়ে উঠেছে। এই কালাচার এখন যেনো জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠেছে। আমাদের তরুন সমাজের বোনদের এবং বিবাহিত বোনদের জন্য।ইদানীং আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে, বাসার ফ্ল্যাটে, যেকোন যায়গায় দেখা যায় একটি কথা ”বিউটি পার্লার”।
আর এই বিউটি পার্লারের সমস্যাও আমাদের চোখের সামনে সদা সর্বদাই দেখা যাচ্ছে। এইতো বেশিদিন হয়নি ”পরসোনার ভিডিও ব্লাকমেইলিং” কে না জানেন। বোনদেরকে স্পার নামে তার নগ্ন ভিডিও ধারন করে তাকে ব্লাকমেইল করা হচ্ছে। তাতে সম্মান হানি হচ্ছে আমাদের বোনদের। হে পুরুষ ভাই আপনি কি এতে পরক্ষ ভাবে দোষি নন?
এখন এমন হয়ে উঠেছে যেনো আগের যুগের মা/বোনেরা বিউটি পর্লার না যাবার কারনে সুন্দরই ছিল না। পার্লারে না গেলে যেনো আনস্মাট গেয়ো হয়ে যায় (তাদের ভাষায়, কিন্তু আমার কাছে এরই সর্বোত্তম)।
পার্লারে একটা কাজ সচরাচর করা হয় আর তা হলো ভ্রু প্লাক বা ভ্রু উপরে ফেলা। প্রায় সব বোনদেরকেই দেখা যায় তারা ভ্রু উপরে ফেলে হোক সেটা পার্লারে গিয়ে অথবা বাসায় বসে। এমনও বোন দেখাযায় যারা পর্দা করে কিন্তু ভ্রু উপরে ফেলে।
আমি তাদেরকেই বলছি, হে মুসলিমা/মুমিনা বোন হতে পারেন আপনি তাদের একজন। হতে পারে আপনি আগে জানতেন না তাই ভুল হয়ে গেছে তাই আজ আপনাকে জানানোর জন্য এই লেখার উদভব। জেনে নিন এবং তওবা করে নিন ইনশাল্লাহ আল্লাহ মাফ করবেন।
খেয়াল রাখবেন নিশ্চই আপনি রসুল (সা) এর স্ত্রী/মহিলা সাহবা (রাআ) দের চেয়ে উত্তম নন এটাগ্যারান্টির সাথে বলা যায়। তাই ভ্রুর উপরে ফেলা সম্মন্ধ্যে আজকে জেনে নিন আর এ থেকে বীরত থাকুন, আপনার অন্য বোনদেরকেও সাবধান করুন।আল্লাহ আপনাদেরকে জাজাইখাইর দান করবেন ইনশাল্লাহ।
ভ্রু উফড়ে ফেলা শরীয়ত কি বলে?।
জেনে রাখবেন, রুপ সৌন্দয্য দুই প্রকার ১. অভ্যন্তরীণ /চারিত্রিক ২. বাহ্যিক/দৈহিক। নারীর লজ্জাশীলতা তার রূপ সৌন্দয্যর চেয়েও বেশি আকর্ষণীয়।
রসুল (সা) বলেন, তুমি সন্দর চরিত্র ও দীর্ঘ নিরবতা অবলম্বন করো। সেই সত্তার কসম যার হতে আমার প্রাণ, সারা সৃষ্টি উক্ত দুই (অলংকারের) মত অন্য কিছু দিয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত হতে পারে না। (সহীহুল জামে ৪০৪৮)
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
”আমিতো সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে” (সুরা ত্বিন ৯৫/৪)
আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা জানেন কিভাবে মানুষকে বানাতে হবে আর তিনি কসম করে বলেছেন যে তিনি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে বানিয়েছেন। তাই তার সৃষ্টির মাঝে পরিবর্তন করা উচিৎ নয়।
মানষকে উক্ত সকল জিনিসের ব্যাবস্থা করাটাই ”আহসানি তাক্বইম” বলাহয়েছে যা মানুষের জন্য দরকার।যা মহান আল্লাহ তিনটি জিনিসের কসম করার পর বলেছেন ১.ত্বীন ২.জাইতুন ৩.সিনাই পর্বত (ফাতহুল কাদির)
আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের অধীবাসী করে দেন যারা আল্লাহ ও রসুল (সা) এর আনুগত্য না করে। (তাফসির ইবনে কাসির, সুরা ত্বীন)
হাদিসে রসুল (সা) থেকে রূপ পরিবর্তন কারীর উপর লানত রয়েছে।
আলক্বামাহ (রহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে যে সব নারী অঙ্গ প্রত্যঙ্গে উল্কি আকে, যে সব নারী ভ্রু উপড়ে ফেলে এবং যেসব নারী দাত সরু করে, দাতের মাঝে ফাক করে- যা আল্লাহর সৃষ্টিকে বদলে দেয়, তাদের উপর আবদুল্লাহ (রা) (ইবনু মাসউদ) লানত করেছন। উম্মু ইয়াকুব বলল: এ কেমন কথা? আবদুল্লাহ বললেন : আমি কেন তাকে লনত করব না, যাকে আল্লাহর রসুল (সা) লানত করেছেন এবং আল্লাহর কিতাবও। উম্মু ইয়াকুব বলল : আল্লাহর কসম! আমি পূর্ণ কুরআন পাঠ করেছি, কিন' এ কথা তো কোথাও পাইনি। তিনি বললেন : আল্লাহর কসম! তুমি যদি তা পড়তে তবে অবশ্যই পেতে , ”ওয়ামা আতাকুমুর রসুলু ফাখুজুহু ওয়ামা নাহাকুম আনহু ফানতাহু” অর্থ: রসুল তোমাদেরকে যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর তোমাদেরকে যাথেকে নিষেধ করেন তাথেকে বিরত থাক। (সুরা হাশর ৫৯/৭)
(সহিহ আল বুখারী,তাওহীদ প্রকাশনী, ৫ম খন্ড, পর্ব:৭৭ অধ্যায়:৮৪ বাব: ভ্রু উপড়ে ফেলা হাদিস নং: ৫৯৩৯)
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সৌন্দর্যের জন্য উলকি আঙ্কনকারী ও উলকি গ্রহণকারী, ভ্রু উত্তলনকারী নারী এবং দাত সরু করে মাঝে ফাক সৃষ্টিকারী নারী, যা আল্লাহর সৃষ্টিকে বদলে দেয়, তাদের উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। (রাবী বলেন) আমি কেন তাকে অভিশাপ করব না, যাকে আল্লাহর রসুল (সা) অভিশাপ করেছেন এবং তা আল্লাহর কিতাবে বিদ্যমান রয়েছে।
(সহিহ আল বুখারী,তাওহীদ প্রকাশনী, ৫ম খন্ড, পর্ব:৭৭ অধ্যায়:৮৫ বাব: পরচুলা লাগানো সম্পর্কিত হাদিস নং: ৫৯৪৩)
তাই হে ভাই/বোন আল্লাহ ও তার রসুল (সা) চান আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাচাতে, আর আমরা জানার পরেও যদি জাহান্নামী হতে চাই(?) তাহলে আল্লাহর কাছে পানা চাই জাহান্নাম থেকে তিনি যেনো আমাদেরকে ও আমদের পরিবারকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেন। আমিন।
লেখাটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
সংগ্রহ ম্যাসেজ অব ম্যাসেনজার থেকে।
বিষয়: বিবিধ
১৬৭০ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ভাই আমাদের ফ্যাশন হচ্ছে নারী কোন ভুল করলে সেখানে নারীকে সতর্ক না করে পুরুষদের দোষী করার উপায় খুঁজি । মনে করি ,এটা না করলে নারীদের সলাজ হাসি ও পরোক্ষ আহবান আমরা হারাবো !
ভাইরে , পারসোনার ঘটনার পর তো মেয়েদের সেখানে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল ।
কি হত পারসোনাতে না গেলে ? বিউটি পারলার যখন ছিল না তখন কি আমাদের নানী দাদী , মা খালা , চাচী ফুফুরা সাঁজেন নি ? সাঁজবার উপকরণ কি সুপার মার্কেটে পাওয়া যায় না ?
সেই ঘটনার পরও তো নারীরা গেছে পারসোনাতে । তাহলে এতে দোষ কাদের ? পুরুষদের ?
এসব নারীরা তো পারসোনাতে সাঁজতে যায় তারই স্বামীর টাকায় অন্য মেয়ের চোখে নিজেকে ঈর্ষনীয় করে তুলতে এবং অন্য পুরুষের চোখে নিজেকে আকর্ষনীয় করে তুলতে । আর সিসি ক্যামেরাতে ধরা খেলে ঝুট ঝামেলা তো স্বামী বেচারাকেই পোহাতে হয় ।
টাকা গেল তার (স্বামীর) , তার জন্য সাজে নাই , তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে মনের মত করে সাঁজছে তার স্ত্রী এবং ধরা খেলে ঝামেলাও স্বামীকেই ফেস করতে হচ্ছে । এগুলোর এএকটাও তো তার জন্য ভাল না । সে কেন নিজের জন্য এরকম লোকসানী ও ক্ষতিগ্রস্ত কাজকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দেবে ?
আপনার কস্ট আমি বুঝতে পারছি। সত্যি মেয়েদের তা বোঝা উচিৎ। তারা বুঝেও বোঝেনা সে জন্যেই তো এই পোস্ট।
আর পুরুষ দেরকে বলেছি এজন্য যে নিশ্চই নারী কুমারী অবস্থায় বাবার, বিবাহিত অবস্থায় স্বামীর,বয়স্ক অবস্থায় স্বামী না থাকলে সন্তানের হেফাজতে থাকে।
তাই কর্তা পুরুষ জদি এ সমন্ধে সতর্ক হয় তাহলে আর কোন সমস্যা থাকে না।
তবে শর্ত হল তাদেরকে হতে হবে মুসলিম।
মুসলিম না হলে তার জন্য এই পোস্ট নয়।
আপনার অনেক কথাই পোস্টটিকে সুন্দর করে তুলেছে। আপনাকে ধন্যবাদ আমার পোস্টে। আরো বেশি বেশি কমেন্টস করবেন ইনশাআল্লাহ।
০ আগে পরে কোন কথা নাই , সমস্যা হচ্ছে মাঝেরটা নিয়ে ।
এমন কাজ করে বসে যে হেফাজতকারীই সমস্যায় পড়ে যায় । যেখানে তার উচিত এই হেফাজতকারীর কথা মত চলা , সেখানে সেই তার উপর অযাচিত বসিং করে ।
বাবার সংসারে মেয়ে আর ছেলের সংসারে মা - এরা ঠিকঠাক মতই চলে । সমস্যা হয় না বললেই চলে ।
কিন্তু স্বামীর সংসারে স্ত্রী সবসময়ই ঝামেলা পাকিয়ে চলে । না পাকালে সে যে একজনের স্ত্রী তার প্রমাণ কি ?
একজন মেয়ে যদি তার স্বামীর উপর অন্যায় , অযাচিত বসিং নাই করতে পারলো , তাহলে সে কিভাবে নিজেকে সেই লোকের স্ত্রী হিসেবে দাবী করে?
স্ত্রীদের স্বামীর হেফাজতে থাকার পরও তার উপর এই অযাচিত বসিং সংসারে অশান্তি আনে এবং বজায় রাখে ।
অসহ্য হয়ে কিছু করলে তো ক্বুরআনের বিপরীতে বানিয়ে রাখা আইনই আছে একতরফা তাদের পক্ষে রায় দেবার জন্য ।
০ যে ক্ষমতা তার না , তার বসের । সেই ক্ষমতা যদি বেআইনীভাবে সে তার বসের উপর প্রয়োগ করতে চায় তাহলে তার মান সন্মায় যায় কিভাবে ? তার তো এই অপ্রত্যাশিত ও অভাবনীয় চার্জ পেয়ে মহা খুশি হবার কথা , ১৯৯২ এর ইউরো কাপে ডেনমার্কের মত !
মান সন্মান তো বসেরই যাবার কথা । ১৯৯২ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইংল্যান্ড - সাউথ আফ্রিকার সেমি ফাইনালে সাউথ আফ্রিকার অবস্থার মত ! ১৩ বলে ২৩ রান , পরে রিভাইস হয়ে ৭ বলে ২৩ রান , আবারও রিভাইস হয়ে ১ বলে ২৩ রান !
এরকম একটা অপ্রত্যাশিত পজিশন পেয়ে গেলে স্ত্রী কি সেটা লুফে নেবে না ? এতে মান তার সন্মান হারাবে কিভাবে ?
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
আপনাকে দেয়া পোষ্ট হতে অনেক কিছুই শিখতে পারলাম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাধ।
লেখাটি সবার সাথে শেয়র করুন।
আমিন।
ভালো...
সুন্দর পোষ্টটির বারটা বাজিয়ে দিছেন শিরোনাম এ।
আপনি সত্যি আমার হিতাকাংখী।
আল্লাহ আপনাকে জাজায়ে খায়ের দিন। আমিন।
দুঃখ জনমের বন্ধু তুমি আধার ঘড়ের আলো।
তোমাকে তাই আমি বাসি অনেক ভালো।
ইমরান ভাই -------অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
কেননা রসুল (সা) জাহান্নামের বেশিরভাগ কে দেখেছেন নারী।
বারাকাল্লাহু ফিকুম।
সত্যি আমাদের শাসক যাদ হতেন খাটি মুসলিম ও তার শাসন যদি হত ইসলামের তাহলে আমরা বাংগালীরা সর্ব উৎকৃষ্ট জাতিতে পরিনত হতাম ইনশাআল্লাহ্।
আমাদের দেশ মুসলিম দেশ কিন্তু ইসলামিক দেশ নয়। কেননা ইসলামিক দেশ সেই দেশকে বলা হয় যার শাসন কার্য কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী করা হয়।
আল্লাহ আমাদের জন্য আমাদের উপর দয়ালু শাসক প্রদান করুন যারা ইসলামের আইন দিয়ে আমাদেরকে শাসন করবেন, আমিন। আর আমরা মুসলিমরা শান্তিতে থাকব সাথে কোন অমুসলিমদের উপরও কোন জুলুম হবে না, আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন