কপি পেস্টের মহারাজ......সাবধান!! হে মুসলিম।
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ১১ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:১৮:৫৩ সকাল
ইদানিং ব্লগে দেখা যায় কিছু ভাই কপি পেস্ট করায় মহারাজ হয়ে যাচ্ছে।
(আমি কারো নাম বলবো না)
তারা যা কপি পেস্ট করেন এবং যে উদৃতি দেন তা কোনদিন নিজের চোখে সেই সকল কিতাব থেকে দেখেছেন বলে মনে হয়না। কিন্তু কপি পেস্টে উস্তাদ। সাধারন মুসলিদেরকে বিভ্রান্ত করার এ এক মহা উৎসব। কেননা তাদের কপি পেস্টে কিছু সত্য থাকে কিছু মিথ্যাও থাকে। তাই সকল মুুসলিমকে অনুরোধ করবো "কোন কিছু পাবার সাথেই বিশ্বাস করার আগে একটু যাচাই করুন কতো টুকু সত্যি"
যেমনটি আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা কোরআনে বলেছেন,
"মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।" (হুজুরাত আয়াত ৬)
রসুল (সা) বলেছেন,
"কোন ব্যাক্তির মিথ্যাবাদী হবার জন্য এতটুকুই যথেস্ট যে সে যা শোনে (যাচাই ছাড়া) তাই বর্ণনা করে"
(মুসলিম)
তেমনি একটা ঘটান বর্ণনা করবো,
এক ভাই কপি পেস্ট করেছেন,
ইমাম বুখারী (র) তার সহিহ আল বুখারীতে একটি অধ্যায় কায়েম করেছেন,
সকল নামাযে ইমাম, মুক্তাদী উভয়ের উপর কিরাত পড়া ওয়াজিব। চাই মুসাফির হোক বা মুকিম হোক, জোরে কিরাতওয়ালা নামায হোক বা আস্তে কিরাতওয়ালা নামায হোক”। (এই অংশটি সঠিক)
এার পর সেই ভাই কপি পেস্ট করেছেন,
ইমাম বুখারী রহঃ এর কায়েম করা এ বাব দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে যে, ইমাম বুখারী রহঃ এর মতে সকল নামাযে যেমন ইমামের উপর কিরাত পড়া আবশ্যক, তেমনি মুক্তাদীর উপরও কিরাত পড়া আবশ্যক।
(এই অংশটি সঠিক)
তারপর কপি পেস্ট,
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, ইমাম বুখারী রহঃ এর মতানুসারে ইমামের জন্য যেমন সূরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব, তেমনি মুক্তাদীর উপরও সূরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব।(খুব ভাল কথা) তেমনি ইমামের জন্য যেমন সূরা ফাতিহার পর আরেক সূরা মিলানো ওয়াজিব, তেমনি মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহার পর আরেক সূরা মিলানো ওয়াজিব। (মন গড়া কথা) যদি তাই না হতো, তাহলে ইমাম বুখারী রহঃ এরকম বাব কায়েম করতেন যে, “ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ের জন্য সূরা ফাতিহা পড়া আবশ্যক।”
===============
সেই ভাই সহিহ আল বুখারী খুলে দেখেন নাই যে ইমাম বুখারী (র) অধ্যায় কায়েম করার পর কোন হাদিস নিয়ে এসেছেন,
ইমাম বুখারী (র) তার সহিহ আল বুখারী তে এই বিষয়ে যে অধ্যায়টি নিয়ে এসেছেন তার পরে তিনি একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন হাদিসটি হলো,
"লা সলাতা লিমান লাম ইয়াকরবি ফাতিহাতিল কিতাব"
"উবাদাহ ইবনু সামিত (রা) হতে বর্ণিত যে, রসুল (সা) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাতে সুরাহ্ আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না।" (বুখারী ১০/৯৫ হা/৭৫৬)
(বিঃদ্রঃ ইমাম বুখারী (র) যে সকল লোক ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পড়ার বিরোধী তাদের উদ্দেশ্যে একটি সতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন তার নাম হলো "জুযউল কিরাত" ইমামের পিছনে পটনীয় সর্বোত্তম কিরাআত" নামে যা বাংলায় অনুবাদ পাওয়া যায়)
এখানে ইমাম বুখারী স্পস্ট ভাবে বুঝিয়েছেন সুরাহ আল-ফাতিহাকে। অথচ সেই ভাই ভুল ব্যাখ্যা করে বলতেছেন,
তেমনি ইমামের জন্য যেমন সূরা ফাতিহার পর আরেক সূরা মিলানো ওয়াজিব, তেমনি মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহার পর আরেক সূরা মিলানো ওয়াজিব। যদি তাই না হতো, তাহলে ইমাম বুখারী রহঃ এরকম বাব কায়েম করতেন যে, “ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ের জন্য সূরা ফাতিহা পড়া আবশ্যক।” (ইমাম বুখারী (র) চেয়ে বিজ্ঞ হয়ে গেছেন)
তাই, সেই ভাইকে বলবো এবং সকল মুসলিম কে অনুরোধ করেবো কপি পেস্ট করেন কিন্তু সেই উদৃতি দেয়া কিতাব গুলো থেকে যাচাই করবেন। তা না হলে রসুল (সা) এর এই হাদিসকে স্বরন রাখবেন,
"কোন ব্যাক্তির মিথ্যাবাদী হবার জন্য এতটুকুই যথেস্ট যে সে যা শোনে (যাচাই ছাড়া) তাই বর্ণনা করে"
(মুসলিম)
"ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যা কানাসতাঈন"
"ইহ দিনাস সিরাতাল মুসতাকিম"
(আমার উদ্দেশ্য কাঊকে কস্ট দেয়া নয় তবে সত্যকে জানানো)
বিষয়: বিবিধ
২৪১২ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিজে নিজে একটা ১,০০০ পৃষ্ঠার বই যদি পড়তে একজনের যদি ৩০ দিন লাগে, তবে ৩০ জন জ্ঞানী লোকের এক সমাবেশে বসে পুরা বইটা বুঝতে এবং পেছনের ব্যাখ্যা পেতে ১ দিন থেকে বড়জোড় ৩ দিন লাগবে – আর একটু আরাম করে শিখতে চাইলে – ৭ দিন।
এই মাযহাবের বিভক্তির কারনে কাবা ঘড়ের সামনে ৪ মুসল্লাহয় ৪ মাযহাব ইমাম নিযুক্ত করে নামাজ পড়ত ইতিহাস তার স্বাক্ষী।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহদ্দিস দেহলবি (রহ) বলেছেন,
"আল ইনসাফ ফী বায়ানিল আসবাবীল ইখতিলাফ গ্রন্থে"
"প্রথম ২০০ হিজরীর আগে নিদৃস্ঠ কোন মাযহাব ত্বাকলিদ করার প্রচলন ছিলোনা। বরং এসব ফিকহি গ্রন্থ পড়ে রচিত হয়েছে" (বাংলা অনুদিত মতবিরোধ পূর্ন বিষয়ে সঠিক পন্থা অবলম্বনের উপায় গ্রন্থের অধ্যায় ৯)
ভাই, অনেক ফাতাওয়াই জানি মাযহাবিদের যা কোরআন সহিহ সুন্নার বিপরীত কিন্তু তা বলবোনা কেননা "দাওয়াত দিবো আল্লাহ ও তার রসুলের (সা) দিকে" কে কি করেছে ফাতাওয়া দিয়েছে সেটা পড়ে। যদি কোরআন ও সহিহ হাদিসের সাথে মেলে তাহলে মানব নাহলে না।
এখন এ কথা বললে মুসলিম হয়ে যায় "ওহাবী" যদিও তারা "ওহাবী" গালী হিসেবে ব্যাবহার করে তাবে এর অর্থ সত্যিই খুব সুন্দর "আল্লাহর নাম আলওহাব তার সাথে বী যৃুক্ত" হলে হয় ওহাবী অর্থ "দাতার বান্দা" সুবহানাল্লাহ এই নামে আমি সত্যিই খুব খুশি।
তাই কোরআন ও সহিহ সুন্নার দিকে আহবান এর দাওয়াত থাকবেই তাতে বিরুদ্ধবাদীরা যাই বলুক।
আর আল বিদায়া ওয়াননিহায়া ৮ খন্ড পেলে জানাবো ইনশাআল্লাহ।
তবে এমন যেনো না হয় যে, কোন ব্যাক্তি এত কিছু জানার ভয়ে জ্ঞান অর্জন করাই ছেরে দেয়।
তবে রেফারেন্স দিলে নিজেই সেই রেফারেন্স চেক করা খুবই জরুুরি, তাতে মিথ্যাবাদি হবার সমুহ সম্ভাবনা কমে যায়।
কিছু লোক আছে সঠিক ইসলামের নামে বেঠিক ইসলাম প্রচার করার তালে। তারা সাধারন মুসলামদেরকে রেফাঃ ফাদে ফেলে গোমরাহ করতেছে কিন্তু নিজে বুঝতেছেনা।
ইমাম মালেক (র) বলেন, "এই উম্মতের পরবর্তীদের সংশোধন তাতেই সম্ভব যাতে সংশোধিত হয়েছে এর পূর্ববতীরা (সাহাবা,তাবেঈ,তাবাতাবেঈ)"
ইমাম আব্দুল ওহাব (রহ) আরব দেশে সকল কবর,মাজার ভেঙ্গে দিয়ে মাটিতে গুড়িয়ে দেন আর পীর তন্ত্রকে বাস্তুভিটা ত্যাগ করান যার ফলে আরব থেকে এই শির্ক দুরিভুত হয়। আর তাই তাদেরকে মতলববাজরা ওহাবী বলে।
আর ভারত উপমাহাদেশে উলামায়ে হকরা যখন এই কবর,মাজার,পীর দের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তখন তাদেরকেও দেওবন্দি,বেরেলভীরা ওহাবী লেবেল লাগিয়ে দেন।
আলহামদুলিল্লাহ.. এই ধরনের ওহাবী হাবার তাওফিক আল্লহর কাছে চাই।
রসুল (সা) বলেছেন,
"তারাকতু ফিকুম আমরাইণ, লানতাদিল্লু মাতামসসাকতুম বিহিমা কিতাবাল্লাহি ওয়া সুন্নাতি রাসুলীহ"
অর্থঃ তোমাদের জন্য আমি দুইটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষন তোমরা সে জিনিসদুটি আকড়ে ধরে থাকবে তোমরা কখনও পথভ্রস্ট হবে না। আর তা হলো আল্লাহর কিতাব (কোরআন) ও রসুলের (সা)সুন্নাহ (অর্থাৎ সহিহ হাদিস)।
(ইমাম মালেকের মুয়াত্তা,হাদিসটি সহিহ)
ব্লগের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো...
ধন্যবাদ ভিশু ভাই....
ব্লগের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো...
ইমরান ভাই লিখেছেন : ব্লগের স্বাস্থ্যই নয় মুসলিমের স্বাস্থ্যও ভালো হবে ইনশাআল্লাহ।
ধন্যবাদ ভিশু ভাই...
তুমার লেখা আমি ভালো পাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন