প্রিয়ো খুদে ব্লগার নুজহাত রায়হান নুহেরি....
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ১৬ নভেম্বর, ২০১৩, ০৪:৫৬:২৫ বিকাল
আমার আজকের এই লেখাটি আমাদের সবার প্রিয়ো খুদে ব্লোগার নুজহাত রায়হান নুহেরি কে উৎসর্গ করলাম।Click this link
তার লেখা "সবার চেয়ে প্রিয় যেজন" Click this link পড়ার পড় আমি তার জ্ঞান দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। আমি আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করি আল্লাহ তার লক্ষ্য অর্জনের ও সর্বচ্চ জান্নাত পাবার পথকে সরল করুন আমিন।
আমি জানিনা আমাদের ছোট্ট সোনামনিটি আমার এই লেখাটি পড়ছে কিনা?
মামানি সত্যি তোমার লেথা পড়ে আমার বাবার কথা মনে পড়ে গেলো। আমি আমার বাবার ছোট সন্তান । সব ভাই বোনদের চেয়ে আমাকে অনেক ভালোবাসে আমার বাবা আমাকে, ঠিক তোমার মতো।
আল্লাহ আমাকে তোমার মতো একটা মেয়ে দান করুন আমিন। আর কিছুই চাইনা হে আল্লহ ।
কোরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
"হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।"
(মায়েদা/৫৪)
সত্যি তার বাস্তবতা তোমাদের না দেখলে বোঝা য়ায় না।
"আবু কেলাব উমাইয়া ইবনে আস্কার তার সন্তান কেলাবকে ভালোবাসার ঘটনা"
ইমাম যুহুরী (রহ) উর'আহ্ খেকে বর্ণনা করেন,
তিনি বলেন: কেলাব ইবনে উমাইয়া (রা) উমর ফারুক (রা) এর খেলাফাত কালে মদিনায় হিজরত করেন। তিনি মদিনায় কিছুদিন অবস্থান করেন। একদিন তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ ও জুবাইর ইবনে আওয়াম (রা) এর সাথে সাক্ষাত করেন। তাদের দুজনকে ইসলামের সর্বচ্চ আমল সম্মন্ধ্যে জিজ্ঞাস করলে বলেন: ইসলামের সর্বোত্তম আমল হচ্ছে আল্লহর রাস্তায় জিহাদ করা। এরপর উমর ফারুক (রা) এর সাথে পরামর্শ করলে তিনি তাকে জিহাদে প্রেরন করেন।
এদিকে তার বাবা-মা বয়োবৃদ্ধ ও দুর্বল ছিলেন। সন্তানের অনুপস্থিত দীর্ঘ দিন হলে আবু কিলাব (রা) কবিতা লেখে তার দু:খের কথা প্রকাশ করেন এবং মদিনার অলি গলিতে আবৃতি করে বেড়ান। এমনকি তার কবিতা উমার ফারুক (রা) নিকট পৌছালেও তিনি সন্তান কেলাবকে ফেরত নিয়ে আনার কোন ব্যবস্থা গ্রহনের ফরমান জারি করেন না।
অবস্থা কঠিন আকার ধারন করলে আবু কেলাব (রা) একদিন উমারের (রা) নিকটে আসেন। এ সময় তিনি মসজিদে নববীতে ছিলেন তার আসা-পাশ ছিলেন মুহাজির ও আনসার সাহাবা গন। আবু কেলাব (রা) উমারের (রা) সামনে দাঢ়িয়ে তার দ:খ ও কস্টের কথা কবিতা আকারে পড়তে শুরু করেন।
কবিতা শুনে উমার ফারুক (রা) প্রচন্ডভাবে কাদেন এবং কুফার আমীর সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা) কে পত্র লিখেন যে, দ্রুত কেলাব ইবনে উমাইয়াকে (রা) মদিনায় পৌছানোর ব্যবস্থা কর।
কেলাব মদিনায় পৌছালে উমার (রা) তাকে জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাবার সাথে কি ধরনের সদ্ব্যবহার করতে? কেলাব তার সদ্ব্যবহারের বর্ননা দেন।
উমার (রা) বাবা উমাইয়াকে (রা) হাজির করার জন্য লোক পাঠান। তিনি টলতে টলতে এসে উপস্থিত হলেন। তার চক্ষুদ্বয় দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং পিঠ বেকে গেছে।
উমার (রা) বললেন : আবু কেলাব! (রা) কেমন আছেন?
উত্তরে বললেন: যেমন দেখছেন আমীরুল মুমিনীন
উমার (রা) বললেন: আপনার কোন প্রয়োজন আছে কী?
উমাইয়ার (রা) বললেন: হ্যা, একবার প্রিয় সন্তান কেলাবকে দেখতে চাই। মৃত্যুর পুর্বে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে তার শরীরের গন্ধ নিতে চাই।
এ কথা শুনে উমার (রা) কাদতে লাগলেন এবং বললেন: আল্লাহ চাহে আপনার আশা পুরন করা হবে।
অতপর উমার (রা) কেলাবকে তার বাবার জন্য যেভাবে দুধ দহন করত সেরুপ এক গ্লাস দুধ দহন করতে আদেশ করলেন। সে তাই করলে দুধের পেয়ালা উমার (রা) নিয়ে আবু কেলাবের হাতে দিয়ে বললেন, ধরুন হে আবু কেলাব।
আবু কেলাব (রা) পেয়ালা হতে নিয়ে মুখের নিকট নিতেই উমার (রা) কে বললেন: হে আমীরুল মুমিনীন! আমি এ পেয়ালাতে কেলাবের দুহাতের গন্ধ পাচ্ছি।
এ শুনে উমার (রা) ক্রন্দন করতে লাগলেন এবং বললেন: এই যে কেলাব আপনার নিকটে হাজির। তাকে আমি উপস্থিত করেছি।
শুনা মাত্র সন্তানের দিকে লাফ দিয়ে উঠেন এবং বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে চুমু দিতে থাকেন। এ দেখে আবার উমার (রা) এবং উপস্থিত সকলেই কাদতে লাগলেন।
অতপর উমার (রা) কেলাবকে তার বাবা-মার খেদমত করার নির্দেশ করে বললেন: যতদিন তারা বেচে থাকেন ততদিন তাদের দুজনের থেদমত করেই জিহাদ কর। এর পর তোমার যা হবার হবে । এছাড়া উমার (রা) কেলাবের সরকারী ভাতা চালু রাখার নির্দেশ করলেন।
কেলাব (রা) তার বাবা-মার মৃত্যু পর্যন্ত তাদের সাথেই অবস্তান করেন।
(খাজানাতুল আদাব: ২/২৭৩ গ্রন্থের উদৃতিতে, আল্লাহর প্রিয়ো বান্দা হবেন কি ভাবে? বই হতে সংগৃহীত)
আমার গত পোস্ট Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৫৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন