اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ আমাদেরকে সরল পথ দেখাও
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ০৩ নভেম্বর, ২০১৩, ০৯:২৮:১৫ সকাল
তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম ও ধর্ম-যাজকদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে…..(সুরা তাওবা আয়াত ৩১)
তাফসীর আহসানুল বায়ান
এই আয়াতের ব্যাখ্যা আদী বিন হাতেম (রা) এর বণনাকৃত হাদিস হতে পরিস্কার হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমি নবী (সা) এর মুখে এই আয়াত শুনে আরোজ করলাম যে, ইয়াহুদী-নাসারারা তো নিজেদের আলেমদের কখোনো ইবাদত করেনি, তাহলে এটা কেন বলাহয়েছে যে, তারা তাদের রব বানিয়ে নিয়েছে? তিনি বললেন, একথা ঠিক যে তারা তাদের ইবাদত করেনি।তবে এটাতো সঠিক যে, তাদের আলেমরা যা হালাল করেছে তাকে তারা হালাল এবং যা হারাম করেছে তাকে তারা হারাম বলে মেনে নিয়েছে। আর এটাই হলো তাদের ইবাদত করা।
(সহীহ, জামেয় তিরমিজি, তাহকিক আলবানী ১ম খন্ড হা/২৪৭)
কেননা, হারাম হালাল করার এখতিয়ার কেবল মাত্র আল্লাহর এই এখতিয়ার ও অধিকারের কথাকে কোন ব্যাক্তি অন্যের আছে বলে বিশ্বাস করে নেয়, তাহলে এর মানে হবে যে, সে তাকে রব (প্রভু) মেনে নিয়েছে। এই আয়াতে সেই সকল লোকদের জন্য বড় সতর্ককা রয়েছে, যারা তাদের নিজেদের ইমাম-বুজুর্গ দেরকে হালাল ও হারাম করার অধিকার দিয়ে রেখেছে এবং যাদের কাছে তাদের কথার তুলনায় কুরআন হাদিসের উক্তির কোন গুরুত্ব নেই।
(তাফসির আহসানুল বায়ান, পৃস্ঠা: ৩৩৪)
তাফসির ইবনে কাসির
ইমাম ইবনে কাসির (র) প্রথমত উপরের হাদিস টি বর্ণনা করেছেন...
তার পর তিনি বলেছেন,
হুজায়ফা ইবনে ইয়ামান (রা) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) হতেও এ আয়াতের তাফসিরে এই রুপ বর্ণিত আছে যে, এর দারা উদ্দেশ্য হচ্ছে হারাম ও হালালের মাসআলায় আলেম ও ইমামদের কথার প্রতি অন্ধ অনুকরন করা।
সুদ্দি (র) বলেন, তারা তাদের বুযুর্গ দের কথা মানতে শুরু করে এবং আল্লাহর কিতাবকে একদিকে সরিয়ে দেয়। এজন্য আল্লাহ পাক বলেন, “তাদেরকে তো শুধু এই নিদেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা আল্লাহ ছারা আর কারো ইবাদত করবে না” (তাফসির ইবনে কাসির সুরা তাওবা, পৃস্ঠা:৬৮০)
আল্লাহ, তিনি যেটা হারাম করেছেন সেটাই হারাম এবং তিনি যেটা হালাল করেছেন সেটাই হালাল। তার ফরমানই হচ্ছে শরীয়ত। তার হুকুমই মান্য করার যোগ্য। তারই সত্তা ইবাদতের দাবীদার। তিনি শিরিক ও শরীক হতে পবিত্র। তার কোনো শরীক, কোনো নজীর ও কোনো সাহায্যকারী নেই। তার বীপরিত কেউ নেই। তিনি সন্তান-সন্ততি থেকে পবিত্র। তিনি ছারা না আছে কোন উপাস্য, না আছে কোনো প্রতিপালক।
আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রসুল (সা) বলেছেন: আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি যে, যদি তোমরা এর উপর আমল করো তবে কখোনো গোমরাহ হবে না। প্রথমত: আল্লহার কিতাব দ্বীতিয়ত: আমার সুন্নাহ (সহীহ, আল জামেউস সাগীর হা/২৯৩৪)
জাবের (রা) বলেন, রসুল (সা) বলেছেন: হামদ ও ছানা তথা আল্লাহর প্রশংসার পরে, মনে রাখবে, সবোত্তম কথা হল আল্লাহর কিতাব, আর সর্বত্তম নিয়ম পদ্ধতি হল মুহাম্মাদ (সা) এর নিয়ম পদ্ধতি। আর সবচেয়ে খারাপ কাজ হল দ্বীনে নতুন কথা আবিস্কার করা। আর প্রত্যেক নতুন আবিস্কার (বিদ’আত) হল গুমরাহী। (মুসলিম, কিতাবুল জুমআ হা/৮৬৭)
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
(সুরা ফাতিহা/৫-৭)
আল্লাহ আমাদেরকে বোঝার তাওফিক দিন আমিন।
বিষয়: বিবিধ
২৬১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন