তোমরা হবে বন্যার পানির উপর ভেসে যাওয়া ময়লার মতো।
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:২০:২০ সকাল
রাসূলুল্লাহ সা. তার এক হাদীসের মাঝে ইরশাদ করেছিলেন,
عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يُوشِكُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمُ الأُمَمُ مِنْ كُلِّ أُفُقٍ كَمَا تَدَاعَى الأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا . قِيلَ يَا رَسُولَ الله : فَمِنْ قِلَّةٍ يَوْمَئِذٍ ؟ قَالَ لاَ ، وَلكِنَّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ يُجْعَلُ الْوَهْنُ في قُلُوبِكُمْ وَيُنْزَعُ الرُّعْبُ مِنْ قُلُوبِ عَدُوِّكُمْ لِحُبِّكُمُ الدُّنْيَا وَكَرَاهِيَتِكُمُ المَوْتَ.
অর্থ: হযরত সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, মহানবী সা. বলেছেন, “এমন একটি সময় আসবে যখন (অমুসলিম) জাতিসংঘ একে অপরকে প্রতিটি অঞ্চল থেকে তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য আহ্বান করতে থাকবে, যেভাবে একই পাত্রে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য একে অপরকে আহ্বান করা হয়ে থাকে। একজন জিজ্ঞাসা করলেন যে, ‘এটা কি এই কারণে হবে যে আমরা তখন সংখ্যায় কম হবো?’ তিনি বললেন- ‘না, (তোমরা সংখ্যায় তখন অনেক থাকবে কিন্তু) তোমরা হবে বন্যার পানির উপর ভেসে যাওয়া ময়লার মতো। আল্লাহ তোমাদের অন্তরের মধ্যে ‘ওয়াহন’ ঢুকিয়ে দেবেন এবং তোমাদের শত্র“দের অন্তর থেকে তোমাদের প্রভাব ও ভয়কে উঠিয়ে নিবেন।’ জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! ‘ওয়াহন’ কি?’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা আর (আল্লাহর পথে) মৃত্যুকে ঘৃণা করা।” (আবু দাউদ হাঃ- ৪২৯৭, আহমদ- হাঃ-২২৪৫ উত্তম সনদে ‘কিত্বালের প্রতি ঘৃণা’- এই শব্দ সহকারে, বায়হাকী হাঃ -১০৩৭২)
প্রিয়নবী সা. এর উপরোক্ত হাদীসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে আজ মুসলিম উম্মাহ্ বিশ্বজুড়ে কি ভীষণ দূরাবস্থার মধ্য দিয়ে বর্তমান সময় অতিক্রম করছে তা সচেতন পাঠক আর বিদগ্ধ জ্ঞানী মহল ভালো করেই জানেন এবং উপলব্ধি করছেন। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে প্রতিদিন মুসলিমরা জুলুম আর নির্যাতনের ষ্টিমরোলারে পিষ্ট হচ্ছে। ইরাক, আফগান, ফিলিস্তিন, বসনিয়া, চেচনিয়া, সোমালিয়া, আরাকান, কাশ্মীর, লেবানন, পাকিস্তানসহ মুসলি ভূখন্ড গুলোতে আজ মুসলিমদের লাশের স্তুপ পরে আছে।
আবূ গারীব আর গুয়ান্তানামোর বন্দি শিবির গুলো লাখো লাখো ফাতেমা আর আব্দুল্লাহদের আর্তনাদে প্রতি মুহূর্ত ভারী হয়ে উঠছে, কিন্তু তাদেরকে এই দূরাবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য বিশ্বের কোন প্রান্ত থেকেই আজ আর কেউ এগিয়ে আসছে না। একেকটি ভূখন্ডে আগ্রাসন শুরু হওয়ার সময় মুসলিমদের সারি সারি লাশ, ছিন্ন-ভিন্ন দেহ আর রক্তস্রোত দেখে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা মৌন কিছু প্রতিবাদ জানাই, কিন্তু দু’দিন পর মিডিয়ায় আর তাদের খবর আসা বন্ধ হয়ে গেলে আমরাও নিরব হয়ে যাই। ইস্যু শেষ মনে করে আমরা আবার ঘুমিয়ে পরি গাফলতীর গভীর ঘুমে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী কুফুরী শক্তির আগ্রাসন মিডিয়ার আড়ালে চলতে থাকে নিজ অব্যাহত গতিতে। খানিক ব্যবধানে তা বিস্তৃত হয় আরেক ভূখন্ডে। আবার প্রথম কয়েকদিন মুসলিম বিশ্বে খানিকটা বিক্ষোভ এরপর নিরব।
এভাবে চলছে গত অর্ধ শতাব্দীরও অধিক সময় ধরে। মুসলিম উম্মাহ আজ বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত, নিপীড়িত এবং নিষ্পেষিত কিন্তু কেন? তাদের কি সম্পদের অভাব? না, বরং গ্যাস সম্পদের ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বের ৪৫% এককভাবে তাদের হাতে, তেলের ক্ষেত্রে পৃথিবীর ৭৫% তেল মুসলিম ভূমি থেকে উত্তোলন হয়, দেশ হিসেবে মুসলমানদের ৫৭ টি ভুখন্ড আছে, জনসংখ্যার দিক থেকে দেড়শত কোটিরও বেশি। মুসলিম ভূখন্ডগুলো খনিজ সম্পদের উপর ভাসমান। মুসলিমদের রয়েছে ৬৭ লক্ষেরও অধিক প্রশিক্ষিত এবং নিয়মিত মুসলিম সেনাবাহিনী।
আল্লাহ আমাদেরকে এক হবার সাহয্য করো।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন