৪৯(১) তম পর্ব।কী আবিস্কার করিয়া এই ৩ বিজ্ঞানী ২০১৫ সনে রসায়নের উপর নোবেল বিজয়ী হলেন? DNA এর নিজেরই অস্তিত্ব অনবরত হুমকীর সম্মুখীন। কোষ অনবরত সেই হুমকী যেভাবে মুকাবেলা করে DNA তথা সমগ্র প্রানী জগৎকে রক্ষা করে রাখে।

লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ১০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:২১:২১ সন্ধ্যা

৪৯(১) তম পর্ব।কী আবিস্কার করিয়া এই ৩ বিজ্ঞানী ২০১৫ সনে রসায়নের উপর নোবেল বিজয়ী হলেন? DNA এর নিজেরই অস্তিত্ব অনবরত হুমকীর সম্মুখীন। কোষ অনবরত সেই হুমকী যেভাবে মুকাবেলা করে DNA তথা সমগ্র প্রানী জগৎকে রক্ষা করে রাখে।



Figure source- http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/chemistry/laureates/2015/

Figure-1

1) Tomas Lindahl (Left)

Born: 1938, Stockholm, Sweden

2) Paul Modrich (Middle)

Born: 1946

3) Aziz Sancar (Right)

Born: 1946, Savur, Turkey

১৯৭০ দশকের প্রথম দিকে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, DNA যৌগটি একটি EXTREMELY STABLE বা একেবারেই অপরিবর্তনীয় যৌগ।এর পরে বিজ্ঞানীগন টের পেয়ে যান, ব্যাপারটি অতটা সহজ নয় যতটা মনে করা হয়।

বেশ কিছু পদার্থ DNA এর STRUCTURE বা রাসায়নিক গঠনকে কে ধংশ করার লক্ষে অনবরত আঘাত করে চলেছে। এই সমস্ত উপাদানগুলী হল যেমন, RADIATION, FREE RADICALS, ও বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার উৎপাদক পদার্থ যেমন সিগারেটের Benzo a Pyrene নামক একটি রাসায়নিক যৌগ পদার্থ।

আরো বিপজ্জনক ব্যাপার হল, DNA যে শুধু এই বাহ্যিক পদার্থ দ্বারাই আক্রান্ত হয় তাইই নয়, DNA এর নিজস্ব নিয়মিত কাজ কাম এতই জটিল যে সেটা পরিচালনা করার সময় ও DNA এর উপর অনবরত আঘাত আসতেছে।

যেমন শরীরের কোষকে অনবরত বিভাজিত হয়ে হয়ে নূতন কোষের জন্ম দেওয়া লাগে। কোষ এর এই বিভাজনের সময় প্রতিটা কোষের অভ্যন্তরের DNA কেও কপি হয়ে, বিভাজিত হয়ে হয়ে সমান ভাবে প্রতিটা নূতন কোষে যাওয়া লাগে।DNA এর প্রতিনিয়ত এই প্রাকৃতিক কপি হয়ে হয়ে বিভাজনের সময় ত্রুটি অসংখ্য রকমের বিচ্যুতি ঘটে।

(এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ৭ম ও ৮ম পর্ব দেখুন)

দৈনিক এই ঘটনাটি, তা ধরুন মিলিয়ন মিলিয়ন বার ঘটে।(১)

এবার ধরুন DNA এর এভাবে যদি অনবরত ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটতে থাকে তাহলে তো আমাদের DNA, তৎসহ এই ভূমন্ডলের সমগ্র প্রানী জগৎ অচীরেই ধংস হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তাওতো হচ্চেনা।

এই চিন্তাটাই মাথায় রেখে, এই বিজ্ঞানীত্রয় অনুসন্ধান চালাতে থাকেন, যে DNA কে এই ধংস হতে কে রক্ষা করতেছে?

শেষ পর্যন্ত তারা পেয়ে যান।

কী পেয়ে যান তারা?



তারা পেয়ে যান, কোষে TOOL BOX আকারে একটি পদ্ধতি রয়েছে, যে পদ্ধতিটার মাধ্যমে কোষ তার বিভিন্ন ধরনের এনজাইম যৌগের মাধমে DNA এর উপর সদা সর্বদা পরিদর্শন চালাতে থাকে, এবং একই সংগে যেখানে যেটা কাটা ছেড়া অংস পেয়ে যায় তার উপর রীতিমত একদল এনজাইম যৌগ SURGERY চালিয়ে অপ্রয়োজনীয় অংস টুকু বাদ দিয়ে দেয়,

আবার আর একদল এনজাইম যৌগ ঠিক তার পরপরই এসে সেই ফাকা স্থানটিতে একেবারে সদ্য নূতন DNA খন্ডাংস বসিয়ে দেয়।

আবার ঠিক তার পর পরই আর একদল এনজাইম যৌগ এসে সেই নূতন যোড়া লাগান খন্ডাংস টুকু সেখান থেকে নড়বড়ে হয়ে এদিক ওদিক সরে না যেতে পারে, তার জন্য তাকে পুরাতন মূল খন্ডাংশের সংগে আঠা দিয়ে যোড়া লাগিয়ে দেওয়ার মত রাসায়সিক বন্ড দ্বারা আটকিয়ে দেয়।

এভাবেই কোষ অনবরত তার নিজস্ব কারিগর ও টুল-বক্স ব্যবহার করে আমাদের DNA তথা বিশ্বের সমগ্র প্রানীজগৎকে টিকিয়ে রাখতেছে।

অন্যথায় প্রানী কুল কবেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত তার ঠিক ছিলনা।

কোষ কতবড় কৌশলী তাহলে দেখলেন তো?

এই আবিস্কারকে এখন বিজ্ঞানীগন ক্যানসার নিরাময়ের নূতন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিস্কারের একটা ভিত্তি হিসাবে চিন্তা ভাবনা করতেছেন।

এখন দেখতে হবে এ বিজ্ঞানীত্রয় DNA এর কে কোথায় কীভাবে অবদান রাখলেন।

এরা ৩ জনে DNA এর ৩ জায়গায় মেরামতের ঘটনাটি আবিস্কার ও করেছেন এবং তার রীতিমত আনবিক ম্যাপ ও অঙ্কিত করে দিয়েছেন।

নীচের ২নং চিত্রটি টি একটি সাধারণ DNA এর কয়েল উন্মুক্ত খন্ডাংশের ছবি। (DNA STRUCTURE বুঝতে পর্ব ১,২,৩ দেখুন)

নীচের ৩ নং চিত্রটি বিজ্ঞানী Tomas Lindahl DNA

এর যে স্থানটার উপরে কোষের মেরামত আবিস্কার করেছেন তার ম্যাপ। আগামী পর্বে এটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আমি এদের প্রত্যেকের আবিস্কারের জায়গাটি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরব। এই জটীল TECHNICAL বিষয়টি এক সংগে এখানে দিলে আপনাদের জন্য বুঝতে কঠিন হবে বলে আমাকে এ কারণে আরো ৩ জনের জন্য অন্ততঃ ৩ টা পর্বে ভাগ ভাগ করে ছবি সহ দেখাতে হবে।(১)



Figure source- – http://en.wikipedia.org/wiki/DNA)

Figure-2

একটি স্বাভাবিক DNA এর কয়েল উন্মুক্ত খন্ডাংশ।

( বিস্তারিত DNA STRUCTURE বুঝতে পর্ব ১,২,৩ দেখুন)



Figure-source- http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/chemistry/laureates/2015/fig_ke_en_15_baseexcisionrepair.pdf

Figure-3

বিজ্ঞানী Tomas Lindahl DNA এর যে স্থানের উপরে কোষের মেরামত আবিস্কার করেছেন তার ম্যাপ।পরের পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

মানব দেহের রহস্য জানতে সংগে থাকুন।

পূর্বের পর্ব গুলী এখানে দেখুন-http://www.Chkdr02.wordpress.com

References-

1)

http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/chemistry/laureates/2015/

বিষয়: বিবিধ

৮৯৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

345268
১০ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:২১
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


সুবহা-নাল্লাহি ওয়া বি হামদিহি
সুবহা-নাল্লাহিল আযীম
তাবা-রাকাল্লা-হু আহসানুল খা-লিকীন!!

জাযাকাল্লাহ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File