পর্ব-৪, ডিএনএ ও মানব দেহের রহস্য, কোষ চক্র কী?DNA REPLICATION, TELOMERE কী?বার্ধক্য কেন আসে?
লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ২৯ জুলাই, ২০১৫, ০৭:০৮:৪৯ সন্ধ্যা
পর্ব-৪, ডিএনএ ও মানব দেহের রহস্য, কোষ চক্র কী?DNA REPLICATION, TELOMERE কী?বার্ধক্য কেন আসে
DNA REPLICATION জানবার পূর্বে, কোষের জীবন চক্রটা একটু জানার বিশেষ প্রয়োজন আছে।
কারণ?
কারণ, DNA REPLICATION কোষের জীবন চক্রের বাইরে নয়, বরং এটা প্রতিটা কোষের জীবন চক্রের একটি নির্দিষ্ট সময়ের অংসের কাজ।কাজেই কোষের জীবন চক্রটা জানলেই কোষের অন্যান্য কাজও বুঝতে সহজ হবে।
কোন কিছুর জীবন চক্র তার জন্ম হতে আরম্ভ হয়ে মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত সময়ের ঘটনাবলীকে বুঝায়।আমাদের শরীরের কোষের জীবনচক্র তো আমাদের জীবন চক্রের মত মাত্র একবার জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যদিয়ে হয়না।
কোষের জীবন চক্র ভিন্ন।
তাহলে কী ভাবে হয়?
আমাদের দেহের সর্বপ্রথম ZYGOTE নামক কোষটি মাতৃ জরায়ূতে জন্ম নিয়েছিল(পর্ব ১৪ দেখুন)। এরপর সেই একটি মাত্র কোষ MITOTIC বিভাজনের মধ্য দিয়ে প্রতি ১৫-২০ মিনিটে, ১টি হতে ২টা, ২টা হতে ৪, ৪টা হতে ৮টা, ৮টা হতে ১৬টা, ১৬টা হতে ৩২টা, এভাবে সেই আদি কোষের হুবহু DNA কপি করে করে, DNA ঠিক রেখে তার থেকে জন্ম লওয়া শিশু কোষের মধ্যে DNA পাঠিয়ে দিয়ে, আমাদের পরিপূর্ণ দেহের ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ জন্মিয়েছে।
Figure source- https://en.wikipedia.org/wiki/Mitosis
চিত্র-১, কোষের MITOTIC বিভাজন দেখানো হয়েছে।
উপরের চিত্র- ১ এ লক্ষ্য করুন কী ভাবে ১টি কোষ তার DNA হুবহু কপি করে ও সঠিক রেখে ১টি হতে ২টা হয়েছে। এভাবেই আবার এর ২টি হতে একই ভাবে ৪টি হইবে।এভাবেই আমাদের দেহের ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কোষ জন্মিয়ে আমাদের দেহকে বর্ধিত করেছে।
(MITOTIC পদ্ধতির বিভাজন কী ভাবে হয় বিস্তারিত জানতে পর্ব ৬ ও ৭ দেখুন, VIDEO, ৫ দেখুন)।
তাহলে কোষের যখন এরুপ অবস্থা, এর মধ্যে আমরা একটি নির্দিষ্ট কোষের জীবন চক্র কোথা হতে কোন পর্যন্ত ধরব?
জী,হা, একটি কোষের জীবনচক্র আমাদের অবশ্যই এঁকে ফেলতে হবে, নইলে আমরা কোষের কোন্ “কাজটি” কখন ঘটাচ্ছে এটা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে পারবনা।
কোষের কোন্ কোন্ “কাজগুলীর” সময় জানতে চাই?
ঐযে,
১)কোষ কখন তার DNA REPLICATION ঘটায়?
২)কোষ কখন তার MITOTIC বিভাজন ঘটিয়ে তার শিশু কোষ উৎপাদন করে দিয়ে নিজের অস্তিত্বকে বিলীন করে দিয়ে শিশু কোষ রুপে পূনর্জীবন আরম্ভ করে?
৩)কোষের এই ক্ষনিকের জীবন কালে তার নিজস্বও অনেক কাজ থাকে, তাও করতে হয় যেমন, কোষের বৃদ্ধি ঘটাতে হয়, প্রোটীন উৎপাদন করতে হয় (কীভাবে কোষ প্রোটীন উৎপাদন করে, পর্ব-১১ দেখুন)।
একটি কোষকে তার এই জীবন চক্রের মধ্যেই সমগ্র কাজ অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এর মধ্যেই MITOTIC বিভাজন ঘটিয়ে তার মধ্য দিয়ে নিজেকে বিলীন করে দিয়ে নবীন কোষের মধ্যে হুবহু DNA পাঠিয়ে দিতে হবে।
আবার নবীন কোষকেও ঠিক একই জীবন চক্রের মধ্যে ঢুকে, এই একই জীবন চক্রকে অতিক্রম করতে হবে। সে পুনরায় নিজেকে বিলীন করে দিয়ে, তার শিশু কোষের মধ্যে MITOTIC বিভাজনের মধ্য দিয়ে DNA পাঠিয়ে দিতে হবে।
এভাবেই কোষ চক্র প্রত্যেক কোষেই আবর্তিত হতে থাকবে ও একই সংগে কোষের বৃদ্ধি ঘটিয়ে শরীর এরও বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে থাকে।
অতএব বুঝতেই পারতেছেন, DNA REPLICATION, কোষ বিভাজন, শরীর বৃদ্ধি এ সবই কোষ চক্রের মধ্যে একের পর এক পরশ্পর অতি ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত। এর একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটা ঘটতে পারেনা।
এজন্যই, DNA REPLICATION বা কোষ বিভাজন টা বুঝতে গেলে, তার পূর্বেই কোষ চক্র (CELL CYCLE)টা বুঝা একান্ত দরকার।
Figure source- https://en.wikipedia.org/wiki/Mitosis
চিত্র-২, এখানে একটি কোষের জীবন চক্র এর ডায়াগ্রাম দেখানো হয়েছে।
উপরে চিত্র- ২ এর কোষ চক্রটির ব্যাখা লক্ষ্য করুন-
১) M PHASE- কোষ চক্রটির এই অবস্থানের সময় সমগ্র চক্রটির মাত্র ১/১০ অংস সময় ব্যবহার করে।কোষ এই অবস্থানে এলেই কোষ বিভাজনের চারটি স্তর, ক)PROPHASE. খ)METAPHAE. গ)ANAPHASE ও ঘ)TELOPHAE এর স্তর গুলী অতিক্রম করে নবীন শিশু কোষ উৎপাদন করে, নিজেকে বিভাজিত করে দিয়ে DNA প্রদান করে(MITOTIC বিভাজনে হুবহু DNA বিতরণ করে, পর্ব ৬,৭ দেখুন, আর MEIOSIS বিভাজনে DNA বিতরণে বিরাট পার্থক্য আছে-পর্ব ৮ ও VIDEO-৬ দেখুন) ২ টি শিশু কোষ জন্ম দেয়। এর পরে মাতৃকোষ এর পৃথক আর কোনই অস্তিত্ব থাকেনা। এই দুইটি শিশু কোষের মধ্যেই মাতৃকোষের হুবহু DNA ও গুনাগুন থেকে যায়। আবার শিশু কোষ দুইটির ও DNA ও গুনাগুন হুবহু একই হয়।
সেক্ষেত্রে মানুষের সন্তানেরা কখনোই পিতৃমাতৃর হুবহু DNA ও গুনাগুন পায়না।এটা SEX কোষের MEIOSIS বিভাজনের কারনে ঘটে, (এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পর্ব ৮ ও VIDEO-৬ দেখুন)
কোষের বাকী ৯০ ভাগ অংসকে INTERPHASE অবস্থান বলে।এর মধ্যে কোষের যাবতীয় কার্য সমাধা করে, সে গুলী হল যেমন-
২)G1 PHASE-এটা কোষের শিশু অবস্থা। শিশুকোষ এই সময় বাড়তে ও পরিপক্ক হতে থাকে, ও কোষের অন্যান্য কাজ ও আরম্ভ করে দেয়।
৩) S PHASE- কোষের এই অবস্থানে আমাদের আলোচ্য বিষয় “DNA REPLICATION” এর কাজ টি সেরে ফেলে, ও কোষ বিভাজনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে।
৪)G2 PHASE- এই অবস্থানে কোষ এসে গেলে, কোষ পূর্ণ মাত্রায় বিভাজনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
এরপর কোষ পুনরায় M PHASE এ গিয়ে একই চক্রের পুনরাবৃতি ঘটাতে থাকে। (VEDIO,1-4 দেখুন)
এখানে জেনে রাখা ভাল, একটা সুস্থ শরীর এর সুস্থ কোষগুলী তার এই কোষচক্রকে সুনিয়ন্ত্রিত ভাবে চালিয়ে শরীরকে শুস্থ রাখে।
আর যদি কোন কোষ তার এই স্বাভাবিক চক্রটির নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে, তখন কোষটি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে অতি দ্রুত গতিতে বিভাজন হয়ে হয়ে টিউমার আকারে বাড়তে থাকে। তখন বলা হয় কোষটি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে গেছে। ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলী ছড়াতে থাকে, আর রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যায়।
(VIDEO-৭ দেখুন)
তাহলে এখন পরিস্কার হল যে, কোষ তার DNA REPLICATION এর মত এতবড় বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কাজটি তার জীবন চক্রের কোন্ অবস্থানে থাকা কালে ঘটায়?
জী, হ্যাঁ,
কোষ তার এই DNA REPLICATION এর কাজটি S PHASE এ থাকা কালে সম্পন্ন করে ফেলে।এই কাজ টি সম্পন্ন করে কোষ G2 ও M PHASE এ চলে যায়, সেখানে বিভাজনের মাধ্যমে শিশু কোষ জন্ম নেয়। এবং সেই শিশু কোষ ও পুণরায় এই একই চক্র অতিক্রম করতে থাকে।
এবার তাহলে আসুন দেখা যাক কোষ তার DNA REPLICATION বা DNA এর হুবহ কপি কী ভাবে করে।
DNA REPLICATION
যখনই কোষ বিভাজনের সময় হয়ে যায় তার পূর্বেই (কোষ এর জীবন চক্রের S PHASE এ) কোষের নিউক্লীয়াছের অভ্যন্তরে DNA REPLICATION ঘটে। REPLICATION (কপি) করার মাধ্যমে DNA নিজে নিজেই তার উভয় চেইনের প্রত্যেকটির একই রুপের আর একটি চেইন নিউক্লীয়াছের অভ্যন্তরে করে ফেলে।
একই সংগে ২৩ জোড়া DNA কপি করতে হয়।
এরপর এই বিভাজিত DNA নবীন কোষে সমান ভাবে বন্টিত হয়ে যায়।
কিছু বিজ্ঞানীদের মতে এই বন্টন প্রকৃয়া SEMI CONSERVATIVE প্রকৃয়ায় হয়। এর অর্থ হল কপি প্রকৃয়া শেষে উভয় কোষের DNA এর ডবল হেলিক্স এ একটা মুল চেইন ও একটা কপিকৃত চেইন থাকে।
আবার কিছু কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, একটি কোষে উভয় PARENT DNA STAND ও আর একটি কোষে উভয় নবীন DNA STRAND যায়। একে CONSERVATIVE প্রকৃয়া বলা হয়।(Video-১ ও ৫ দেখুন)
প্রশ্ন করতে পারেন,
কোষ বিভাজনের পূর্বে কেন DNA কে বিভাজনের প্রয়োজন হয়?
জী, হ্যাঁ, কারণ প্রতিটা বিভাজিত নবীন কোষ (Somatic cell-যৌণ কোষ ছাড়া শরীরের অন্য সমস্ত কোষ)এ মাতৃ কোষের হুবহু GENETIC CODE সহ DNA অবশ্যই থাকতে হবে। আর তা থাকতে হলে প্রতিবার কোষ বিভাজনের সময় DNA কেও হুবহু বিভাজন (Replication)হওয়া লাগে।
(SOMATIC CELL এ MITOTIC বিভাজনে হুবহু DNA বিতরণ করে, পর্ব ৬,৭ দেখুন, আর SEX কোষেও MEIOSIS বিভাজনে DNA বিতরণ করে, তবে হুবহু DNA বিতরণ করেনা।বিরাট পার্থক্য আছে-পর্ব ৮ দেখুন)
কারণ একদিকে যেমন, কোন কোষ ই DNA ছাড়া কার্যকরী বা জীবন্ত থাকতে পারেনা ঠিক তদ্রুপ একই শরীরের ভিন্ন ভিন্ন কোষে ভিন্ন রকমের DNA থাকলেও জীবন অচল হয়ে যাবে।শরীর এর সমগ্র কোষের DNA হুবহু একই থাকতে হবে। আর এই কাজটি MITOTIC কোষ বিভাজনের মাধ্যমে হয়।
আরো প্রশ্ন করতে পারেন,
কোষ কেন বিভাজন হয়, বা না হলে ক্ষতি কী?
জী হ্যাঁ, ভাল প্রশ্ন।
এটা বুঝতে হলে আমাদের দেহ গঠনের একেবারে আদিতে চলে যেতে হবে। আমাদের বর্তমান(ধরা যাক ৪০ বৎসর বয়স্ক এক জন ব্যক্তির) এই ৭০ কেজী ওজনের এবং ১০০ ট্রিলিয়ন এর বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম বিশিষ্ট কোষ ধারন কৃত ব্যক্তিটি, ৪০ বৎসর ৯ মাস পূর্বে সর্ব প্রথম কোথায় কী অবস্থায় ছিল? একটু অনুধাবন করুন?
আমাদের প্রত্যেকের এই বিরাট সুন্দর দেহখানা সর্বপ্রথম পিতৃ হতে আগত ২৩ টি ক্রোমোজোম এর একটি অর্ধ SEX কোষ(Haploid) ও মাতৃ হতে আর একটি ২৩ টি ক্রোমোজোম এর অর্ধ SEX কোষ(Haploid) এর সম্মেলনে একটি ৪৬ ক্রোমোজোম বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ (DIPLOID) কোষে পরিণত হয়ে মাতৃ জরায়ুর নালীর AMPULA নামক স্থানে অবস্থান লয়েছিল।
তখন এটি একটি মাত্র কোষ ছিল। এই কোষটির নাম ZYGOTE.
এই এখনকার এই আমরা প্রত্যেকেই তখন এই এক কোষ বিশিষ্ট ZYGOTE আকারে ছিলাম। সেই একটি মাত্র অতি ক্ষুদ্র কোষের মধ্যেই এই এতবড় আমাদের সবকিছুই শুপ্ত আকারে বিদ্যমান ছিল। আমাদের তখন কিছুই ছিলনা, একমাত্র পিতৃ-মাতৃ হতে প্রাপ্ত ২৩+২৩=৪৬ টা ক্রোমোজোম সম্পদ ছাড়া।
এরপর কী ঘটল?
এরপর এই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম ঐ একটি মাত্র কোষকে MITOTIC পদ্ধতিতে বিভাজন আরম্ভ করতে থাকল।
আর ঐ একটি মাত্র কোষ এর বিভাজন ও যথাযথ বৃদ্ধির ফল স্বরুপ আজ এই আমরা ৭০ কেজী ওজনের ও ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ মানব আকারে বর্ধিত হয়েছি।
এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে ১৪ তম পর্ব পড়ে দেখুন।
এই কোষ বিভাজন কখন হতে কখন পর্যন্ত চলে?
--একেবারে সেই এক কোষী ZYGOTE থেকে আরম্ভ করে মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত চলে।
তাহলে এভাবে এ যাবৎকাল কতবার বিভাজন হয়?
--তা ধরুন অন্তত প্রায় ১০ হাজার ট্রিলিয়ন বার বিভাজন হওয়া লাগে। (VIDEO 3,5 দেখুন)
অন্য ভাবে বলা যায়, কোষ বিভাজনের মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্বের সৃষ্টি ও অস্তিত্বের রক্ষাও হয়।
এছাড়াও কোষ বিভাজনের আরো কাজ আছে, যেমন আমাদের শরীরের কোথাও কেটে ছিড়ে গেলে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে সেখানে মেরামত করা হয়। লিভার এর কিয়দংশ ক্ষতিগ্রস্থ হলে কোষ বিভাজনের দ্বারা মেরামত করে ফেলে।
কোষ বিভাজনের মাধ্যমে শরীর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে, তা হল,
শরীরে যখন কোন জীবানু শত্রু ঢুকে পড়ে, তখন শরীর এর রক্তের প্রতিরক্ষা বাহিনীর শ্বেত কনিকা বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের সংগে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে শরীরকে রক্ষা করার চেষ্টা চালায়।
এই কৌশলের মধ্যে একটি কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তা হল এই, শত্রুকে সহজে পরাজিত করার লক্ষে কিছু কিছু শ্বেত কনিকা দ্রুত বিভাজনের মাধ্যমে একই রুপের অসংখ্য শ্বেত কনিকা বা সৈনিক কোষ উৎপাদন করে ফেলে।
একে PROLIFERATION বলে। এভাবে একটি B কোষ PROLIFERATE করে অসংখ্য PLASMA কোষ উৎপন্ন করে, এবং তারা জীবানুর বিরুদ্ধে অসংখ্য ANTIBODY ছড়িয়ে জীবানুকে ধংশ করতে থাকে।
অবশ্য জীবানুরাও শরীরে দ্রুত সংখ্যায় বিস্তার লাভ করতে থাকে।
(এ ব্যাপারে ৪৬ ও ৪৭ পর্বে বিস্তারিত দেখুন)।
আমরা মানব সৈনিকরা কিন্তু কখনো এভাবে একজন সৈনিক হতে একাধিক বা শত শত সৈনিকে পরিণত হওয়ার ক্ষমতা রাখিনা, কিন্তু কোষ এ ক্ষমতা রাখে।
তা হলে আশা করি এবার বুঝতে সক্ষম হয়েছেন কোষ কেন বিভাজিত হয় ও এর গুরুত্ব কত বেশী।
অন্য ভাবে বলা যায় কোষ বিভাজনের মধ্য দিয়েই আমাদের সৃষ্টি।
DNA REPLICATION
তাহলে এবার দেখুন DNA, একদল প্রোটীন ও এনজাইম এর সমন্বীত কর্ম তৎপরতায় কীভাবে কপি ও বিভাজিত হয়, যাকে REPLICATION বলা হয়।
REPLICATION আরম্ভ হওয়ার পূর্বেই কিছু সংখ্যক প্রোটীন ও এনজাইম কোষের NUCLEUS এর মধ্যে DNA এর পার্শে এসে জড় হয়ে দাড়িয়ে যায়। এরা তখন নিউক্লীয়াসটার অভ্যন্তরে একটা পূর্ণ মাত্রার ফ্যাক্টরীর মত অত্যন্ত সুশৃংখল, সুনিয়ন্ত্রিত, ও সুসমন্বীত ভাবে DNA এর উপর অত্যন্ত সুক্ষ্ম ও জটিল প্রকারের কাজ কাম আরম্ভ করে দেয়।
আর যদি এই সময়ে কোন কারনে, ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটে যায়, এবং তা যদি হয় বিশেষ করে SEX কোষে বা শিশুটির মাতৃগর্ভে শরীর গঠন কালে, তাহলে শিশুটির উপর চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে, এমনকি এই ত্রুটি বংশ পরম্পরাও চলতে থাকে যদি এই ত্রুটি SEX কোষে ঘটে।
ফলশ্রুতিতে বিকলাঙ্গ,পাগল,ক্যান্সার,ডায়বেটিস সহ অসংখ্য প্রকারের জটিল রোগ গ্রস্থ শিশু জন্মাবে।
এবার তাহলে আসুন দেখা যাক এই সমস্ত প্রোটীন ও এনজাইম গুলী কী ভাবে সমন্বীত ভাবে কাজ চালিয়ে এই দুরুহ কার্য সম্পাদন করে।
যেভাবে এরা কাজ করে DNA REPLICATION ঘটায়।
শিশু হবু ডিএনএর একটি চেইনে DNA POLYMERASE নামক একটি প্রোটীন এনজাইম এই কাজটি এক নাগাড়ে সেরে ফেলে।
এই চেইনটিকে বলা হয় LEADING STRAND।
অন্য হবু চেইনটিতে DNA POLYMERASE এভাবে এক নাগাড়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেনা।
সেখানে কাজটি খন্ড খন্ড ভাবে করতে হয়। এই চেইনটিকে বলা হয় LAGGING STRAND।
মনে রাখতে হবে-
DNA POLYMERASE, DNA CHAIN এর কোনো প্রান্ত থেকে কাজ আরম্ভ করেনা বরং আরম্ভ করে মাঝখান থেকে।
দুইটি চেইনে একই সংগে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন DNA POLYMERASE কাজ করে করে REPLICATION করতে থাকে।
উভয় DNA POLYMERASE শিশু হবু সম্পূরক চেইনের একমাত্র 5’ T0 3’ PRIME প্রান্ত অভিমুখে কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম।এর বিপরীত অর্থাৎ 3’ To 5’ PRIME প্রান্ত এর দিকে কখনোই কাজ চালাতে সক্ষম নয়।
যেহেতু হবু শিশু চেইনের LEADING চেইনটিতে 5’ T0 3’ PRIME এর অভিমুখ ও DNA FORK এর অগ্রসর হওয়ার অভিমুখ একই দিকে থাকে এই কারনে DNA পলিমারেজ এখানে এক নাগাড়ে 5’ T0 3’ PRIME এর অভিমুখে CONTINUOUS পদ্ধতিতে REPLICATION এর কাজটি চালিয়ে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।
কারণ LEADING CHAIN এ DNA FORK, DNA CHAIN কে খুলে খুলে 3’ PRIME প্রান্তের দিকে অগ্রসর হতে থাকে আর এদিকে DNA POLYMERASE ও DNA কপি করতে করতে একই দিকে অর্থাৎ 3’ PRIME প্রান্তের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
অপরপক্ষে হবু চেইনের LAGGING চেইনটিতে 5’T0 3’ PRIME এর অভিমুখ, DNA FORK এর অগ্রসর হওয়ার অভিমুখ, বিপরীতমুখী হয়।
এ কারণে DNA POLYMERASE কে উল্টা মুখী হয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে খন্ডাংস DNA তৈরী করে করে 5’T0 3’ PRIME এর অভিমুখে পিছন মুখী সেজে অগ্রসর হতে হয়। চিত্র-৩,৪ দেখুন,ভিডিও ১-৪ দেখুন।)(২)
Figure source- https://en.wikipedia.org/wiki/DNA_replication
চিত্র- ৩ DNA Fork
Figure source- https://en.wikipedia.org/wiki/DNA_replication
চিত্র- ৪ DNA REPLICATION
অর্থাৎ একটি ডিএনএ খন্ডাংস 5’T0 3’ PRIME এর অভিমুখে উৎপন্ন করে ,পলিমারেজকে উক্ত খন্ডাংশের পিছনের দিকে ,যেদিকে 5’ PRIME প্রান্ত ও DNA FORK অবস্থান করছে, চলে আসতে হয়। সেখানকার আর একটা RNA PRIMER এর 3’ PRIME এর OH গ্রুপ- প্রান্ত হতে আর একটি ডিএনএ খন্ডাংস তৈরী করে যার অভিমুখ হয় পূর্ববর্তি DNA খন্ডাংসের দিকে, যেটা 5’T0 3’ PRIME এর অভিমুখি,ও DNA FORK অগসর হওয়ার বিপরীত অভিমুখে হয়,এমন আর এক খন্ড ডিএনএ উৎপন্ন করে।
পুনরায়,DNA POLYMERASE ঠিক একই কাজ পিছনের দিকে ,যেদিকে 5’ PRIME প্রান্ত ও DNA FORK অবস্থান করছে, সেখান কার আর একটি RNA PRIMER এর 3’ PRIME প্রান্ত এর OH গ্রুপ হতে আর একটি ডিএনএ খন্ডাংস তৈরী করে, যার অভিমুখ হয় পূর্ববর্তি DNA খন্ডাংসের দিকে, অর্থাৎ 5’ T0 3’ PRIME এর অভিমুখ,ও DNA FORK এর অগ্রসর হওয়ার বিপরীত অভিমুখে।
এভাবে LAGGING চেইনে উল্টা মুখী,কিন্তু ডিএনএ খন্ডাংসের মুখ 5’T0 3’ PRIME এর অভিমুখী হয়ে, কাজ চালিয়ে চালিয়ে LAGGING চেইনের 5’ PRIME প্রান্ত এর দিকে, ও DNA FORK এর মুখ খুলার অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। (২)
মনে রাখতে হবে, উভয় শিশু চেইনটির 5’ -3’ PRIME প্রান্তের দিক তাদের PARENT CHAIN এর 5’ -3’ PRIME প্রান্তের দিকের বিপরীতে থাকে এবং কপি হওয়ার সময় শিশু চেইনের 5’ -3’ এর দিককেই হিসাবে গন্য করিয়া 5’ হতে 3’ PRIME এর দিকে কপি কাজ চলে।
যেহেতু চেইন দুইটি ANTIPARALLEL একারনে উভয়ের কাজের দিক ও এভাবে বিপরীত মুখী হতে হয়।এবং যেহেতু LAGGING চেইনে DNA FORK এর মুখ 5’ PRIME প্রান্তের দিকে থাকে একারনে এক নাগাড়ে সম্পন্ন করতে পারেনা।
ORIGIN- যে স্থান হতে DNA REPLICATION সূচনা হয় তাহার নাম ORIGIN।আমরা জানি A-T জোড় মাত্র ২টা হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা সংযুক্ত হওয়ার কারনে G-C জোড় অপেক্ষা দুর্বল,কারন G-C জোড় ৩টা হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা সংযুক্ত। আর এ কারনে এই ORIGIN এ বেশী পরিমান
A-T জোড় বিদ্যমান থাকে। কারণ দুর্বল সংযোগ পৃথক করতে সহজ হয়।
HELICASE নামক একটি ৬ প্রোটীন বিশিষ্ট এনজাইম DNA এর দুইটি চেইনকে পৃথক করে ফেলে।এবং TOPOISOMERASE নামক আর একটি প্রোটীন দুইটি চেইনের পেঁচ খুলে চেইন দুটিকে সোজা করিয়া ধরিয়া রাখে।(চিত্র-৩,৪)
এই পৃথক কৃত মুল চেইন দুইটি হবু ডিএনএ কপির জন্য TEMPLATE বা মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
SINGLE STRAND BINDING PROTEIN নামে এক ধরনের প্রোটীন এসে পৃথক হওয়া চেইন দুইটিকে পুনরেকত্রিত হতে বাধা দিয়ে প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথক ভাবে একটু ফাক করিয়া ধরিয়া রাখে।DNA POLYMERASE ডিএনএ NUCLEOTIDE উৎপন্ন আরম্ভ করিয়া পূর্ণ চেইন তৈরী করিতে থাকিলে তখন এদের আর প্রয়োজন না থাকায় এরা একটার পর একটা সরে যেতে থাকে।
যেহেতু DNA POLYMERASE নূতন কপিকৃত চেইনে নিজে নিজেই DNA NUCLEOTIDE SYNTHESIS আরম্ভ করিতে পারেনা,
এ কারনে প্রথমে RNA প্রাইমেজ নামক একটি এনজাইম এসে ৬০টি RNA NUCLEOTIDE বিশিষ্ট একটি ডিএনএ চেইন এর খন্ডাংস উৎপন্ন করে দেয়। এর নাম RNA PRIMER। এবার DNA POLYMERASE এসে RNA PRIMER এর 3’ PRIME এর OH গ্রুপ হতে, শিশু চেইনটির 5’-3’ PRIME অভিমুখে, ডিএনএ NUCLEOTIDE উৎপন্ন করতে করতে অগ্রসর হয়ে যায়। মানুষের ক্ষেত্রে DNA POLYMERASE প্রতি সেকেন্ডে ৮০ টি NUCLEOTIDE উৎপন্ন করতে পারে।
SLIDING CLAMP নামে একটি প্রোটীন DNA POLYMERASE কে কাজ সম্পাদনের জন্য চেইন বরাবর সম্মুখ দিকে ঠেলে অগ্রসর করিয়ে নিতে থাকে।
ডিএনএর LEADING চেইন এ DNA POLYMERASE এই কাজটি এভাবে এক নাগাড়ে করে ফেলে। এজন্য একে CONTINUOUS WORK বলে।
অন্য চেইনটিতে(LAGGING STRAND) DNA POLYMERASE এভাবে এক নাগাড়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেনা।কেন পারেনা তা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।
সেখানে DNA POLYMERASE কে এই কাজটি খন্ড খন্ড ভাবে করতে হয়। এজন্য একে DISCONTINUOUS WORK বলে।
সেখানে প্রথমে প্রারম্ভিক জায়গায় RNA PRIMASE এনজাইম RNA PRIMER সংযোগ করিয়া একটি DNA খন্ডাংস তৈরী করে দেয়। এর পর আরো ফাকা জায়গায় এভাবে আরো RNA PRIMER স্থাপন করিয়া খন্ড খন্ড DNA চেইন তৈরী করে ফেলে।
এবার DNA POLYMERASE এসে RNA PRIMER এর 3’ PRIME এর OH প্রান্ত থেকে আরম্ভ করিয়া শিশু চেইন এর 5” To 3’ PRIME প্রান্ত অভিমুখে কিন্তু DNA FORK এর বিপরীত অভিমুখে কাজ চালিয়ে একটার পর একটা ফাঁকা জায়গায় DNA NUCLEOTIDE উৎপন্ন করে DNA CHAIN এর খন্ড খন্ড অংশ তৈরী করে ফেলে।
নবীন এই কপিকৃত চেইন এখনো মূল চেইন এর সম্পূরক চেইনে পরিণত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয় নাই, কারণ এতে এখনো RNA PRIMER স্থাপিত রয়ে গেছে।
এখন প্রয়োজন এই RNA PRIMER কে দুরীভূত করার। কে এই কাজ করিবে?
এই কাজ করার জন্য এরপর RNase H নামে একটি ENZYME এসে RNA PRIMER গুলীর SUGAR RIBOSE এর সংগে সংযুক্ত ফসফেট দ্বয়ের বন্ড (DIESTER BOND) এর উপর HYDROLIZING REACTION এর মাধ্যমে, RNA PRIMER কে মুছে ফেলে।
এই অবস্থায় এই নবীন চেইনটিতে DNA POLYMERASE এর ইতিপূর্বেই নিজস্ব তৈরী ফাকা ফাকা খন্ড খন্ড চেইনের অংশ দৃশ্যমান হয়।
DNA CHAIN এর এই ফাকা ফাকা খন্ডাংস গুলীকে বলা হয় OKAZAKI FRAGMENT ।চিত্র-৪)
এবার DNA POLYMERASE এই OKAZAKI FRAGMENT এর প্রত্যেকটির 3’ PRIME এর প্রান্তের OH গ্রুপ হতে আরম্ভ করিয়া এবং শিশু চেইনের 5’ To 3’ PRIME অভিমুখে কাজ চালিয়ে DNA NUCLEOTIDE উৎপন্ন করিয়া দুই OKAZAKI FRAGMENT এর মধ্যে অবস্থিত ফাকা জায়গা গুলী একটার পর একটা পুরন করতে থাকে। একটা অংসের কাজ সম্পন্ন হলে সামনে এগিয়ে গিয়ে আর একটা অংশকে ধরে। সেইটা শেষ হলে সামনে আর একটা ধরে।
এভাবে DNA POLYMERASE , LAGGING CHAIN এর উপর 5’ To 3’ PRIME অভিমুখে কিন্তু DNA FORK এর বিপরীত অভিমুখে DISCONTNUE পদ্ধতিতে কাজ চালিয়ে চালিয়ে কাজটি সমপন্ন করে নূতন কপি কৃত সম্পূরক চেইনটি তৈরী করে ফেলে।
এর পরেও দুটি খন্ডাংসের জোড়ানো জায়গায় কিছুটা ফাঁকা থেকেই যায়।
BACK BONE এর এই জোড়ার ফাকা বন্ধ করতে DNA LIGASE নামক একটি এনজাইম এসে এই ফাঁকা স্থানগুলী ATP বা NAD REACTION এর মাধ্যমে ফছফেট অনু যোগ করিয়া পূরন করিয়া দেয়।
REPLICATION FORK বলা হয় যে স্থানে DNA চেইন দুইটি ক্রমান্বয়ে পৃথক হইতে হইতে ও কাজ চালাতে চালাতে অগ্রসর হয়ে যেতে থাকে।উভয় দিকেই REPLICATION FORK থাকে।(চিত্র-৩)
DNA REPLICATION এর সংগে TELOMERE এর সম্পর্ক,বার্ধক্য কেন আসে?
লক্ষ করেছেন, DNA POLYMERASE, কপি করার সময় RNA PRIMER স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত নিজে নিজে কপি করে DNA উৎপাদন করতে পারেনা। RNA PRIMER স্থাপিত হলে তার প্রান্ত থেকে DNA POLYMERASE, DNA কপি করতে সক্ষম হয়।
যার ফলে সর্বশেষে অবস্থিত RNA PRIMER টা যে জায়গায় অবস্থিত ছিল সেই জায়গাটা কপি হতে বাদ থেকে যায়, কারন ঐ জায়গাটুকু কপি করতে গেলে তার পিছনে আর একটা RNA PRIMER থাকার প্রয়োজন হয়, যার পিছন থেকে ঐ জায়গা টুকু কপি করার দরকার হয়। কিন্তু তার পিছনে তো আর RNA PRIMER অবস্থান করার জায়গাই নাই, তাই কী করে থাকবে এবং ঐ জায়গা টুকু কপি করবে?
অতএব প্রতিবারই কপিকৃত DNA তে মূল DNA এর প্রান্তের কিয়দাংশ বাদ থেকে যায়। এভাবে প্রতিবার কপি হওয়ার ফলে প্রতিবার শিশু কোষ এর DNA ক্রমান্বয়ে আকৃতিতে ছোট হতে থাকে। মারাত্মক ব্যাপার বটে!!
একারনে DNA STRAND এর প্রান্তে থাকে বেশ কিছু GENETIC কোড বিহিন সাধারন BASE PAIR, যাকে TELOMERE বলে।
কাজেই এই ঘাটতিটার আঘাত পথম দিকে এই GENETIC কোড বিহিন TELOMERE এর উপর দিয়ে যেতে থাকে, যাতে এই ঘাটতির আঘাতটা DNA এর মূল GENETIC কোড এর উপর না লাগে ।
তাতে প্রথম জীবনের দিকে আমাদের কোন অসুবিধা মনে হয়না, কারণ এই TELOMERE এ তো কোন GENETIC CODE থাকেনা ও এটা হারালেও আমাদের শারীরিক কাজেরও কোন বিঘ্ন ঘটেনা।
বলা নিশ্প্রয়োজন, এই TELOMERE ঘাটতির মাধ্যমেই আমাদের বার্ধক্য আসতে থাকে।
যত বয়স বৃদ্ধি হতে থাকে ততই TELOMERE কমতে থাকে। এরপর অধিক বয়োবৃদ্ধির কারনে এক পর্যায়ে এসে এই TELOMERE একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়, তখন এই ঘাটতিটা DNA এর মূল GENETIC কোড এর উপর দিয়ে যাওয়া আরম্ভ করে।
এই বার আমরা এখন থেকে শরীর এর ঘাটতি অনুভব করা আরম্ভ করি।কারণ এখন আমাদের DNA এর TELOMERE খরচ হয়ে গিয়ে DNA এর মূল জায়গায় ক্রমান্বয়ে আঘাত পড়া আরম্ভ হয়ে গিয়েছে।
এই বার আমরা মারত্মক বিপদ গ্রস্থ।কারণ এখন থেকে আমাদের জীবন এর মূল চাবী কাঠি GENETIC CODE বা GENE এর উপর সরাসরি আঘাত পড়তে থাকে।
বয়স আরো যত বাড়তে থাকে, যেমন, ৪০>৫০>৬০>৭০>৮০>৯০>১০০ আমাদের DNA এর মূল অংশে ততই ঘাটতি ও আঘাত আসতে থাকে, আর আমরা ততই বার্ধক্য অনুভব করতে ও বার্ধক্য জনক সমস্যায় ভুগতে আরম্ভ করি।
অন্য ভাবে বলা যায় আমরা যৌবন হারাই কেন? কারণ আমাদের শরীর এর কোষ তার প্রতি বিভাজনে DNA এর প্রান্তের TELOMERE হারায়।
কপিকৃত কোষে এভাবে DNA এর মূল GENETIC CODE কমা আরম্ভ করলে বৃদ্ধ বয়সে কোন এক পর্যায়ে কোষ গুলী নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বড় বড় ব্যাধি যেমন, CANCER, ALZHEIMER’S, MULTIPLE SCLEROSIS নামক নানাবিধ জটিল নিরারোগ্য ব্যাধি দেখা দিতে থাকে। তখন আর জীবন চলা সম্ভব হয়না।
এই TELOMERE কে রক্ষার জন্য এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীগন তেমন কিছু অবদান রাখতে পারেন নাই। তবে বর্তমানে এটা বিজ্ঞানীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্র হিসাবে রয়েছে।
হতে পারে অদূর ভবিষ্যতে বিজ্ঞানীগন TELOMERASE ACTIVATOR জাতীয় কোন রাসায়নিক পদার্থ আবিস্কার করিয়া TELOMERE এর ক্ষয় রোধ করে ফেলবে এবং আমাদের এই অতি ক্ষণস্থায়ী যৌবনকে হাজার হাজার বৎসর পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী করতে সক্ষম হবেন।
মানব দেহের রহস্য জানতে সংগে থাকুন।
TELOMERE সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পর্ব-৫ পড়ুন।
অন্যান্য পর্ব গুলী এখানে দেখুন- https://chkdr02.wordpress.com/
Edited on-6/25/2015
ভিডিও লিংক-
1. DNA REPLICATION
http://www.wiley.com/college/pratt/0471393878/student/animations/dna_replication/index.html
2. DNA Structure and Replication: Crash Course Biology #10
https://www.youtube.com/watch?v=8kK2zwjRV0M
3. Leading strand vs. lagging strand
https://www.youtube.com/watch?v=cDwJTLnGEyw
4. DNA Replication
https://www.youtube.com/watch?v=FBmO_rmXxIw
5. Mitosis: Splitting Up is Complicated - Crash Course Biology #12
https://www.youtube.com/watch?v=L0k-enzoeOM
6. Meiosis: Where the Sex Starts - Crash Course Biology #13
https://www.youtube.com/watch?v=qCLmR9-YY7o
7. The Cell Cycle and Cancer
https://www.youtube.com/watch?v=lpAa4TWjHQ4
চতুর্থ পর্বের সূত্র সমূহ-
1) CELL CYCLE, MITOSIS
https://en.wikipedia.org/wiki/Mitosis
2) DNA REPLICATION
https://en.wikipedia.org/wiki/DNA_replication
বিষয়: বিবিধ
১৫০৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন