কী আবিস্কার করিয়া এই ৩ বিজ্ঞানী ২০১১ সনে মেডিসিনের উপর নোবেল বিজয়ী হলেন? MHC CLASS-1 কী? DNA এর সম্পর্ক। ৪৫ (৫) তম পর্ব।
লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ১১ মার্চ, ২০১৫, ০৬:৪৭:৫২ সন্ধ্যা
কী আবিস্কার করিয়া এই ৩ বিজ্ঞানী ২০১১ সনে মেডিসিনের উপর নোবেল বিজয়ী হলেন?
MHC CLASS-1 কী? DNA এর সম্পর্ক। ৪৫ (৫) তম পর্ব।
এই ৩ বিজ্ঞানী শরীরের রোগ প্রতিরোধ এর কোন্ বিষয়টি আবিস্কার করিয়া ২০১১ সনে মেডিসিন এর উপর নোবেল বিজয়ী হয়েছিলেন, সেটা বুঝতে হলে তারপূর্বে একটু জানার দরকার আছে, শরীর কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ করে?
আসুন তাই আমরা কিছুটা জেনে লই শরীরের রোগ প্রতিরোধ বলতে কী বুঝায়, আর এর গুরুত্বই বা আমাদের জীবনের উপর কতটুকু?
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় IMMUNITY.
IMMUNITY কে অন্য ভাবে বলা যায় শরীর এর বহিশত্রুর সংগে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে টিকে থাকার অদম্য প্রচেষ্টার ক্ষমতাকে।
শরীরের প্রতিরক্ষা সৈনিক কোষ বাহিনী শরীরকে প্রতিরক্ষা করার জন্য অনবরত অজস্র প্রকারের কলা কৌশল প্রয়োগ করে যাচ্ছে। মূলতঃ এতদ-সমস্ত জটিল কলাকৌশল টি DNA তার নির্দিষ্ট জ্বীন এর কোড দ্বারা বিশেষ বিশেষ প্রোটীন উৎপাদন করে করিয়ে থাকে।
DNA ও তার জ্বীন সম্পর্কে জানতে ৯-১২ পর্ব পড়ুন।
আজ বর্ণনা করতে চাচ্ছি “MHC CLASS-1” নামক একটি প্রোটীন যৌগ COMPLEX কী ভাবে অনবরত শরীর এর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
MHC এর পূর্ণ অর্থ “MAJOR HISTOCOMPATIBILITY COMPLEX”.
অর্থাৎ কোন টিসু বা কোষ শরীরের অভ্যন্তরে থাকবার যোগ্য কিনা তা লক্ষ্য করার প্রধান দায়িত্ব এই প্রোটীন যৌগটির। HISTO অর্থ টিসু বা কোষ।
এই প্রোটীন যৌগটি কী ভাবে সেই দায়িত্বটা পলন করে, তা এখনই জানতে চলেছেন।
MHC (major histocompatibility complex) প্রোটীন যৌগ ৩ প্রকারের-1) MHC CLASS- 1. 2) MHC CLASS- 2. 3) MHC CLASS-3.
এখানে শুধু MHC CLASS-1 সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।
MHC CLASS 2 ও 3 এর আলোচনা পরে করা হবে।
আসুন তাহলে-
কী এই MHC CLASS 1 প্রোটীন?
কোথায় কী ভাবে উৎপাদন হয়?
কোথায় এটা অবস্থান করে?
আর কী-ই বা এর কাজ?
জী, হ্যাঁ, তাহলে আসুন এ সব বিষয়ে এক এক করে পর্যালোচনা করে দেখা যাক।
নীচে চিত্রে-১ এ এই যৌগ টির আকৃতি দেখুন।
এই যৌগটি আমাদের শরীরের প্রতিটা নিউক্লীয়াছ যুক্ত কোষের প্রাচীরের বাহিরে সর্বত্র ঝান্ডা ধরিয়া দাড়িয়ে আছে।
তবে যেহেতু একমাত্র রক্তের লোহিত কনিকায় কোন নিউক্লীয়াছ থাকেনা, তাই এরাও শুধুমাত্র লোহিত কনিকায় থাকেনা।
এর দন্ডটি কোষ প্রাচীরের ভিতর দিয়ে খুটির মত গাঁড়া থাকে, আর মূল কার্যকরী অংশটা উপরে থেকে কাজ করে। এই অংশগুলীকে DOMAINS বলে। ওখানে ৪টা DOMAINS আছে।
লক্ষ্য করুন, এটা ৪টা DOMAIN প্রোটীন দ্বারা গঠিত- যেমন 1) ALPHA 1. 2)ALPHA 2. 3) ALPHA 3. 4) BETA MICROGLOBULIN.
এগুলী সবই ই প্রোটীন যৌগ। যেসব প্রোটীন পেচানো আকৃতিতে গঠিত হয়, তাকে ALPHA প্রোটীন ও যারা ফ্লাট আকারে গঠিত হয় তাদেরকে BETA প্রোটীন বলা হয়।
যে সব প্রোটীন লম্বা PEPTIDE দ্বারা গঠিত হয় তাকে HEAVY CHAIN PROTEIN বলে। আর যে সব প্রোটীন SHORT PEPTIDE CHAIN দ্বারা গঠিত হয়, তাদেরকে LIGHT CHAIN PROTEIN বলা হয়।
এখানে ALPHA প্রোটীন ৩টি HEAVY CHAIN প্রোটীন ও BETA MICROGLOBULIN প্রোটীনটি LIGHT CHAIN প্রোটীন দ্বারা গঠিত।
এই BETA MICROGLOBULIN টি MHC 1 কে, কোষের অভ্যন্তরে তৈরী হওয়ার পর কোষ প্রাচীরের বাহিরে ঠেলে বের করে এনে জায়গা মত বসিয়ে দেয়।
লক্ষ্য করুন, ALPHA 1. ও ALPHA 2 এর মধ্যখানে একটা খাজ (GROOVE) রয়েছে।
কেন এই খাজ টি রয়েছে?
উত্তর-
আমাদের শরীরের সৈনিক কোষ “CD-8 CYTOTOXIC T LYMHOCYTE” কোষ গুলী রক্তের মধ্যদিয়ে অনবরত হন্যে হয়ে খুজে বেড়াচ্ছে, যে আমাদের শরীর এর কোন একটি কোষ ও কোথাও জীবানু, ভাইরাছ বা ক্যানসার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়ল কি না।
যদি কখনো কোথাও তারা এভাবে আক্রান্ত কোষ পেয়ে যায়, তখন তারা তৎক্ষনাৎ সেই কোষটির উপর GRANZYME-B বা CYTOKINE নামক এক ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, শত্রু সহ সেই আক্রান্ত কোষটিকে মেরে ফেলে।
এরপরে এই বিভাগের পরিচ্ছন্ন কারী কোষ গুলী আসিয়া এই কোষের মৃত দেহ খানা, যার মধ্যে মৃত শত্রু কোষ ও থাকে, তা সহ পরিস্কার করিয়া ফেলে।
এখন কথা হল, এই সৈনিক কোষ “CD-8 CYTOTOXIC T LYMHOCYTE” কোষ গুলী শুধু কোষের বহিরাবারণ দেখে নিশ্চিত ভাবে চিনবে কী করে যে, এই কোষটির অভ্যন্তর ভাগে শত্রু ঢুকে পড়েছে?
জী,হাঁ, এভাবে শত্রু আক্রান্ত কোষকে নিশ্চিত ভাবে চিনিয়ে দেওয়ার জন্যই এই MCH-1 কে সৃষ্টি করা হয়েছে।
নীচে চিত্র-১ এ এর আকৃতি দেখুন।
চিত্র-১, MHC-1. লক্ষ্য করুন এর উপরে একটি GROOVE বা খাজ রয়েছে, যার মধ্যে কোষের অভ্যন্তরে উৎপাদিত প্রোটীন ধরে লয়ে আসে।
(2)
নীচে চিত্র-৩ দেখুন। কোষ অনবরত, তার অভ্যন্তরে তার নিজ দেহের প্রোটীন উৎপাদন করিয়া MHC-1 এর খাঁজ এর মধ্যে ঢুকিয়ে কোষ প্রাচীরের আবরণের উপর খাড়া করিয়া রাখে।
এটা তার ল্যাবেল, এটা শরীর এর নিজস্ব কোষ হওয়ার নিশ্চিত পরিচয় পত্র।
শরীরের সৈনিক কোষ “CD-8 CYTOTOXIC T LYMHOCYTE” কোষ গুলী, সাধারণ কোষ গুলীর উপর এরুপ ল্যাবেল লাগানো দেখলে, আর তখন তাকে আক্রমন করা হতে বিরত হয়ে যায়।
কারণ, সে-তো শরীর এর নিজস্ব কোষ। তাকে কেন মারবে?
এটা যেন ঠিক এরুপ, যেমন ধরা যাক, কোন একটা সময়ে আমেরিকার সংগে জাপান এর যুদ্ধ চলছে। আর আমেরিকান বোম্বার প্লেন গুলী আটলান্টিক মহাসাগরে তাদের নিজস্ব যুদ্ধ জাহাজ গুলীকে জাহাজের উপরে লাগানো নিজস্ব কোড নং দেখিয়া সনাক্ত করিয়া তার উপর বোম্ব আক্রমন হতে বিরত থাকল।
নীচে চিত্র-২ দেখুন।
চিত্র-২ এটা একটি সুস্থ কোষ। কোষ প্রাচীরের উপর MHC-1. এই কোষ MHC-1 এর মাধ্যমে তার নিজস্ব প্রোটীন (সবুজ রংএর) , MHC-1 এর খাজের ভিতর ধরে ধরে রেখে, শরীর এর সৈনিক কোষ CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE কে জানিয়ে দেয়, যে আমি শরীর এর নিজস্ব্ কোষ, আমার রাজ্যের অভ্যন্তরে কোন শত্রু নাই, আমি শুস্থ আছি, আমাকে হত্যা করনা।
(3)
এবার যদি এই সুস্থ কোষে কোন ভাইরাছ ঢুকে যায়, তখন সেই ভাইরাছ, কোষের ডিএনএ ও প্রোটীন উৎপাদক মেসিনারীজ দখল করে লয়ে তার নিজস্ব প্রোটীন ঊৎপাদন করতে থাকে, তখন MHC-1 সেই VIRUS প্রোটীন অভ্যন্তর হতে ধরে এনে একই ভাবে কোষের বহি আবরণের উপর ধরে রাখে।
এবার শরীর এর সৈনিক কোষ “CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE” এটাকে তার RECEPTOR তারা পরীক্ষা করিয়া এই কোষটিকে বহিশত্রু আক্রান্ত কোষ হিসাবে অতি সহজে চিনে ফেলতে সক্ষম হয়ে যায়।
তখন কোষটির ভাষা যেন এরুপ হয়, আমি ভয়ংকর শত্রু দ্বারা আক্রান্ত। আমাকে শত্রু সহ এখনি মেরে ফেল, নইলে এরা আমাকে আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে শরীরের সমগ্র কোষে বিস্তার লাভ করে আক্রান্ত করবে, ও সমগ্র কোষকেই তথা মানব প্রানীটিকেই মেরে ফেলবে।
তখন সৈনিক কোষ “CD 8 CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE” এই কোষটাকে লক্ষ্য করে সংগে সংগে তার দিকে রাসায়নিক অস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যা করে ফেলে।
এটা এরুপ যেন আক্রান্ত কোষটি অন্য সুস্থ কোষ সমূহ তথা মানব প্রাণীটাকে বাচাবার জন্য নিজেকেই নিজে হত্যা করিয়ে দিল।
অবাক হচ্ছেন?
অবাক হওয়ার কিছুই নাই। ঠিক এই কাজটিই বর্তমানে চিকিৎসক গন ও করে থাকেন।
তবে সেটা বড় আকারে।
যেমন ধরুন কারো পায়ের নীচের পাতায় আঙ্গুলে একটি বিশেষ মারাত্মক ধরনের নিরাময়ের অযোগ্য ধরনের পচন ক্রিয়া আরম্ভ হইল।
তখন চিকিৎসক সেই পচন ক্রিয়া যাতে শরীরের বাকী উপরের অংশকে আক্রান্ত না করতে পারে, সেজন্য নীচের আঙ্গুলীটাকে কেটে বাদ দিয়ে চিকিৎসা করে।
এরুপ ভাবে কোথাও প্রথম ক্যানছার টিউমার ধরা পড়লেও সেখানেও কেটে বাদ দেওয়া হয়, যদি ইতিমধ্যে অন্যত্র ছড়িয়ে না থাকে।
অতএব MHC-1 ও ঠিক একই কাজ করে, তবে সে করে অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোষ লেভেলে, একেবারে রোগের অঙ্কুরোদ্গমে। এটুকুই পার্থক্য।
অতএব এই প্রতিরক্ষা কোষ গুলী ও এই প্রতিরক্ষা NET WORK অমূল্য সম্পদ। দেখতেই পাচ্ছেন এরা আমাদের শরীরে বড় বড় রোগ ভিত্তি গাড়বার আগেই অঙ্কুরেই প্রতিহত করে দেয়।
নীচের চিত্র ৩ দেখুন।
চিত্র- ৩,
এটা একটা ভাইরাছ আক্রান্ত অসুস্থ কোষ। এর বহিরাবারনের উপর MHC-1 এর খাজে লাল রংএর যে প্রোটীন দেখা যাচ্ছে, ধরা যাক ওটা ভাইরাছ এর প্রোটীন। এই কোষকে সৈনিক কোষ “CD 8 CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE” বহিশত্রু আক্রান্ত কোষ হিসাবে চিনে ফেলবে ও সংগে সংগে তার দিকে রাসায়নিক অস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যা করে ফেলবে।
(3)
DNA এর সংগে সম্পর্ক।
ALPHA PROTEIN গুলী CHROMOSOME NO, 6 (4A)ও BETA MICROGLOBULIN টা CHROMOSOME NO 10 এর DNA তে অবস্থিত। DNA কোষের অভ্যন্তরে RIBOSOME এর নিকট mRNA এর মাধ্যমে কোড পাঠিয়ে উৎপাদন করায়।
MHC এর জ্বীন গুলী HLA(HUMAN LEUCOCYTE ANTIGEN)GENE FAMILY এর অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়।(4B)
CHROMOSOME সম্পর্কে জানতে ৯-১২ পর্ব পড়ুন।
শরীরে অর্গান TRANSPLANT এর ঊপর MHC-1 এর কোন প্রভাব কী আছে?
জী,হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। আপনারা উপরে লক্ষ্য করেছেন MHC-1 তার খাজের মধ্যে সেই প্রোটীন ই ধরে রাখে যা তার অভ্যন্তরে উৎপাদিত হচ্ছে। অতএব TRANPLANTED অর্গানটির কোষ গুলীর MHC-1 সেই অর্গানের কোষেরই উৎপাদিত প্রোটীন তার খাজের মধ্যে এনে কোষ প্রাচীর এর বাইরে ধরে রাখবে, যা শরীর বহির্ভূত প্রোটীন বস্তু, বা DONOR এর শরীর এর প্রোটীন।
অতএব সৈনিক কোষ “ CD-8 CYTOTOXIC T LYMHOCYTE” কোষ গুলী TRANSPLANTED অর্গানটির কোষ গুলীকে, শরীর বহির্ভূত কোষ হিসাবে চিহ্নিত করে ফেলবে ও আক্রমণ করবে।
এই কারণে, DONOR ও RECIPIENT এর CHROMOSOME খুব নিকটবর্তী না হইলে TRANSPLANTED অর্গানটি RECIPIENT এর শরীর REJECT করে দেয়।
CD 8 CYTOTOXIC T সৈনিক কোষ কী? আর এরা কী ভাবেই বা কোষের উপরে অবস্থিত MHC-1 কে চিনতে পারে?
জী,হ্যাঁ, এটা বুঝতে গেলে, আগে বুঝতে হবে কোষ এর RECEPTOR কী? কোষের RECEPTOR বুঝার জন্য ১৬ ও ১৮ পর্ব আগে পড়ে নিন।
নীচের চিত্র- ৪ লক্ষ্য করুন। এখানে উপরে নীচে ২টি কোষ আছে। এর নীচের কোষটি (হালকা লাল রং এর) একটি CD-8 CYTOTOXIC T কোষ। এটা রক্তের একটা শ্বেত কনিকা লিম্ফোছাইট কোষ। এর একটা CO-RECEPTOR আছে, যার নাম CD 8 বা(CLUSTER DIFFERENTIATION-8)। CO RECEPTOR এর কাজ হল RECEPTOR কে সাহায্য করা।
লক্ষ্য করুন, এই কোষটির RECEPTOR ও রয়েছে, যাকে বলা হয় T CELL RECEPTOR বা TCR.
এবার লক্ষ্য করুন উপরের কোষটিকে (গোলাপী রং এর)। এটা একটি ভাইরাছ আক্রান্ত সাধারন কোষ। ভাইরাছ এই কোষটির আভ্যন্তরীন যন্ত্রপাতি দখল করে লয়ে, ভাইরাল প্রোটীন (PEPTIDE) উৎপাদন করতেছে।
এবার MHC-1, এই ভাইরাল প্রোটীন (সবুজ রংএর)কোষ প্রাচীর এর বাহিরে এনে তুলে ধরতেছে।
এদিকে রক্তের সৈনিক কোষ “CD-8 CYTOTOXIC T CELL” এর চলার পথে এই আক্রান্ত কোষটির সাক্ষাৎ হয়ে গেল। তখন এই সৈনিক কোষের CO RECEPTOR CD 8 আগে, আক্রান্ত কোষের MHC-1 এর VIRAL প্রোটীনকে ধরে চেক করে, রিপোর্টটি সৈনিক কোষের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দিবে।
তখন সৈনিক কোষটির RECEPTOR (TCR), তার খাঁজের মধ্যে, আক্রান্ত কোষের MHC-1 এ অবস্থিত ভাইরাল প্রোটীনকে শক্ত করে আটকিয়ে ফেলবে। এখানে জোর করে আটকানোর কাজে CD-8 CO RECEPTOR ও পাশে থেকে RECEPTOR কে সহযোগিতা করবে।
এ ভাবে আটকিয়ে, CD8 CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE তার RECEPTOR এর মাধ্যমে প্রোটীনটির তথ্য সংগ্রহ করে যখন নিশ্চিত হয়ে যাবে যে এটা একটা FOREIGN বা VIRAL প্রোটীন।
তখন সৈনিক T LYMPHOCYTE কোষটি নিশ্চিত হয়ে যাবে যে এই কোষটিকে ভাইরাছে আক্রমন করিয়াছে।
তখন সৈনিক কোষটি রাসায়নিক অস্ত্র (GRANZYME-B বা CYTOKINE) নিক্ষেপ করে আক্রান্ত কোষটিকে মেরে ফেলবে।
ঠিক একই রকমের ঘটনা ঘটবে যদি কোষটি কোন জীবানু বা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়।
RECEPTOR গুলী এভাবেই এদের খাঁজের মধ্যে কোন বহিবস্তুকে আটকিয়ে ধরে, কোষের অভ্যন্তরে খবর পাঠিয়ে কোষটির দ্বারা সঠিক কাজ কাম চালায়।
মনে রাখতে হবে অসংখ্য সৈনিক কোষ রয়েছে, এবং প্রত্যেকের উপর অসংখ্য CD8 CO-RECEPTOR ও RECEPTOR রয়েছে। আবার প্রত্যেক কোষের উপর অসংখ্য MCH-1 ও রয়েছে।
আর সবচাইতে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল এর প্রতিটি RECEPTOR ও প্রতিটি MHC-1 অদ্বিতীয়। একটার খাজের সংগে আর একটার খাজের কখনোই মিল হইবেনা।
আর এগুলী CHROMOSOME এর DNA তৈরী ও নিয়ন্ত্রন করে।
CD-8 CO RECEPTOR ও TCR (T CELL RECEPTOR) ২নং CHROMOSOME এর DNA করায়।(6)
চিত্র-৪
একটা CD 8 T CELL একটা ভাইরাছ আক্রান্ত কোষকে রাসায়নিক অস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যা করতেছে।
কোষ কী ভাবে MHC-1 উৎপাদন করে ও কোষ প্রাচীরের উপরে আনে?
জী,হ্যাঁ, এটা বুঝতে গেলে কোষ সম্পর্কে আগে বুঝতে হবে। কোষ এর কার্যাবলী বুঝার জন্য আগে ১৬ ও ১৮ তম পর্বটা পড়ে নিন ও নীচের ভিডিও গুলী দেখুন।
VIDEO তে অত্যন্ত পরিস্কার ভাবে বর্নণা করা হয়েছে।
এখানে এটা বিস্তারিত বর্নণা করতে গেলে পর্বটি অনেক বৃহৎ ও জটিল হয়ে যাবে। তবে সংক্ষেপে কিছুটা বলি।
নীচে চিত্র-৫ লক্ষ্য করুন।
১) কোষের অভ্যন্তরে CYTOPLASM এ অনবরত প্রোটীন উৎপাদিত হচ্ছে।
২) PROTEASOME নামক একটি অতি ক্ষুদ্র অর্গান বড় বড় প্রোটীন কে ভেঙ্গে ছোট আকারের (15 AMINOACID LEGTH) PEPTIDE এ পরিণত করে দেয়।(চিত্র-৬ দেখুন)
৩) এবার এই প্রোটীন TAP1 ও TAP2 নামক দুইটি বিশেষ প্রোটীন যাকে TAP TRANSPORTER বলে, এর দরজা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়ে ROUGH ENDOPLASMIC RETCULUM বা ER(চিত্র-৭)এর মধ্যে ঢুকানো হয়। এখানে আসার পর ER এর একটা এনজাইম এটাকে আরো একবার ভেঙ্গে ১০ এমিনো এসিড পর্যন্ত ক্ষুদ্র করে দেয়।
এর দ্বারা এটা বুঝা যাচ্ছে যে RIBOSOME যেমন একটী প্রোটীন উৎপাদনের কারখানা, সেখানে ROUGH ENDOPLASMIC RETCULUM বা ER হল একটি MACHINERY PARTS এর ASSEMBLY করার কারখানা।
এটাকে এপর্যন্ত এখানে রেখে দিয়ে এবার অন্য জায়গায় আসুন।
৪) এদিকে DNA এর প্রেরিত mRNA এর কোড অনুসারে RIBOSOME, MHC1 এর ৩টি ALPHA PROTEIN ও ১টা BETA MICROGLOBULIN উৎপাদন করে ROUGH ENDOPLASMIC RETCULUM (ER) এর মধ্যে সঠিক ভাবে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য বা ASSEMBLY করানোর জন্য পাঠিয়ে দেয়।
৫)এবার ER MHC1 কে সাজিয়ে (ASSEMBLY)করে ফেলে। তাকে এখানে সহযোগিতা করে আরো কতকগুলো প্রোটীন। এই সমস্ত প্রোটীন গুলী হল যেমন, CULNEXIN, CALRETICULIN, ERP57 ও TAPASIN.
৬) এবার উপরে ৩ নং এ চলে যান। ওখানে CELL CYTOPLASM হতে যে প্রোটীন এনে ভেঙ্গে রাখা হয়েছে, সেই প্রোটীন কনা MHC 1 এর ALPHA PROTEIN এর খাজের মধ্যে ধরা হয়।
মনে রাখতে হবে MHC 1 এর ALPHA PROTEIN এর এই খাজ অদ্বিতীয়। এটাকে তৈরী করা হয় একটি মাত্র বিশেষ প্রোটীনকে ধরতে ও বহন করার জন্য।
তাকে যেটাই দেওয়া হবে সেইটাই সে গ্রহন করবেনা। এখানে অনেক প্রোটীনকে তার চাহিদা অনুসারে, মিল না হওয়ায় গ্রহন করতে অস্বীকার করবে।
এর মধ্যে একমাত্র সেই প্রোটীনটাকেই সে গ্রহন করতে সক্ষম হবে, যে প্রোটীনটার সংগে মিল রেখে তার খাজটি তৈরী করা হয়েছে।
এটা এরুপ যেমন নির্দিষ্ট তালাটিতে ঢুকাবার জন্য নির্দিষ্ট চাবি করে দেওয়া হয়।
এতবড় সূক্ষ্ম ভাবে সমন্বীত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটা অত্যন্ত দক্ষ্য কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক শক্তি থাকার অবশ্যই প্রয়োজন।
তাহলে সেই কেন্দ্রটা কী?
উত্তর- সেই কেন্দ্র হল DNA. DNA একদিকে জায়গামত তালা দিয়ে আটকিয়ে রাখে, আবার অন্যদিকে সেই তালাটি খোলার চাবি তৈরী করে সঠিক ব্যক্তিটির হাতেই তুলে দেয়। অন্য কারো হাতে দেয়না। (পর্ব ১৬ ও ১৮ দেখুন)
এমন ভাবে নিয়ন্ত্রন না করতে পারলে সব কিছু অচল হয়ে যেত। আমরা মুহূর্তেই অসুস্থ হয়ে মারা যেতাম।
৭)MHC1 এর খাজ এর মধ্যে আকাংখিত প্রোটীনটা স্থাপিত হয়ে গেলে TRANSPORT ASSOCIATED PROTEIN (TAP1.TAP2) এর মাধ্যমে ROUGH ENDOPLASMIC RETICULUM (RE)এর মধ্য হতে GOLGI এর মধ্য দিয়ে CYTOPLASM এর মধ্যে, তারপর ENDOSOME এর মধ্য দিয়ে, EXOCYTOSIS পদ্ধতিতে, কোসের বহিরাবারনে এসে প্রোটীনটার ল্যাবেল বা পরিচিতি ধরে দাড়িয়ে যায়।
৮) এর পরবর্তী ঘটনা ইতিমধ্যে উপরে জেনেছেন। এখন দুইটার একটা ঘটনা ঘটবে।
ক) যদি MHC 1 কোষের নিজস্ব প্রোটীন ধরে রাখে, তাহলে নিরাপদে থাকবে। কেহ তাকে আক্রমন করে মেরে ফেলবেনা।
খ) আর যদি MHC1 কোষের অভ্যন্তর হতে ভাইরাছ বা ক্যানছার প্রোটীন বহন করে এনে থাকে, তাহলে CD8 CYTOTOXIC T LYMPHOCYTE কোষ, এই কোষটিকে রাসায়নিক অস্ত্র GRANZYME B বা CYTOKINE নিক্ষেপ করে মেরে ফেলবে।
এভাবে MHC 1 অনবরত আমাদের শরীরে তার জটীল প্রক্রীয়ার মাধ্যমে রোগ জীবানু, ভাইরাছ ও ক্যানছার শিকড় গাড়ার আগেই অঙ্কুরে ধংশ করে দিচ্ছে।
নচেৎ আমরা কবেই ভাইরাছ বা ক্যানছারে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতাম!!
অতএব আমাদের সুস্থভাবে বেচে থাকার জন্য আমাদের এই IMMUNITY শক্তিকে শক্তিমান রেখে ধরে রাখার একান্ত প্রয়োজন।
কী ভাবে IMMUNITY কে সমুন্নত ভাবে ধরে রাখা যায়, তা পরে কোন একটি পর্বে বলব।
ততক্ষন ধৈর্য্য সহকারে সংগে থাকুন।
MHC 1 যে ভাবে উৎপাদিত হয়।
চিত্র-৫
যে ভাবে MHC-1 কোষের অভ্যন্তর হতে প্রোটীন ধরে লয়ে কোষ প্রাচীর এর উপর আসে।
(7)
কোষের CYTOPLASM এ PROTEASOME যে ভাবে পোটীন ভেঙ্গে ভেঙ্গে ছোট করে।
চিত্র-৬,
PROTEASOME নামক এই ক্ষুদ্র অর্গানটি কোষের অভ্যন্তরে CYTOPLASM এ প্রোটীন এর বড় বড় চেইন, এর মধ্যে ঢুকিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ছোট PEPTIDE (UPTO 15 AMINOACID LEGTH)করে দেয়.
চিত্র- ROUGH ENDOPLASMIC RETICULUM (ER)
চিত্র-৭
ROUGH ENDOPLASMIC RETICULUM (RE)
এখানে MHC-1 এর ASSEMBLY করা হয়। এই ক্ষুদ্র অঙ্গ টি কোষের CYTOPLASM এ থাকে।
(8)
কী ভাবে কোষ MHC-1 উৎপাদন করে সে সম্পর্কিত VIDEO এখানে দেখুন-
1. https://www.youtube.com/watch?v=soWtpAO1Nr0
2. https://www.youtube.com/watch?v=Am2RVvWdT48
3. https://www.youtube.com/watch?v=VPvCekgPwRI
4. https://www.youtube.com/watch?v=vrFMWyJwGxw
পূর্বের পর্ব সমূহ এখানে দেখুন-
http://WWW.CHKDR02.WORDPRESS.COM
৪৫ তম পর্বের সূত্র সমূহ-
1.NOBEL PRIZE
.http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2011/
2. MHC-1
http://en.wikipedia.org/wiki/MHC_class_I
3.. MHC 1
http://en.wikipedia.org/wiki/Major_histocompatibility_complex#mediaviewer/File:MHC_expression.svg
4.A. MCH-1
http://ghr.nlm.nih.gov/gene/HLA-A
4.B HLA
http://ghr.nlm.nih.gov/geneFamily/hla
5. T CELL
http://users.rcn.com/jkimball.ma.ultranet/BiologyPages/C/CTL.html
6. CD 8 TCR
http://ghr.nlm.nih.gov/gene/ZAP70
7. HOW MHC 1 WORKS
http://edoc.hu-berlin.de/dissertationen/peters-bjoern-2003-07-10/HTML/chapter1.html
8. RE
http://animal-kid.com/animal-cell-rough-endoplasmic-reticulum.html
বিষয়: বিবিধ
১২৬৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন