হৃদপিন্ড, যে ভাবে আমরা সুস্থ থাকতে পারি। হৃদপিন্ডের সংগে DNA এর কি কোন সম্পর্ক আছে? পর্ব-৩৯(৮)

লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ০৮ অক্টোবর, ২০১৪, ০৭:২৫:২৩ সকাল

বুকের মধ্যখানে অবস্থান করে অনবরত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনাকে জীবনভর বাচিয়ে রাখতেছে, যে হৃদপিন্ড নামক বস্তুটি, তার সম্পর্কে কী আপনি কিছু জানতে আগ্রহী ?

তাহলে হৃদপিন্ড সিরিজটা পড়ুন।

আপনারা পূর্বের পর্ব সমূহে হৃদপিন্ড কী ভাবে কাজ করে তার কিছুটা জানতে পেরেছেন।

এবার তাহলে জানুন হৃদপিন্ডকে যে ভাবে আপনি সুস্থ রাখতে পারবেন।

১) খাদ্য- যেহেতু আমরা যাই কিছু খাই না কেন, তা পরিপাক হওয়ার পর, তার প্রান্ত-উৎপন্ন দ্রব্য (END PRODUCT, যেমন, শর্করা জাতীয় খাদ্যের একটা END PRODUCT গ্লুকোজ, সমস্ত প্রোটীন এর END PRODUCT এমিনো এসিড, সমস্ত চর্বী ও তৈল জাতীয় খাদ্যের END PRODUCT ফ্যাটি এসিড) হৃদপিন্ডের ধমনীর মধ্য দিয়ে(মূলতঃ সর্ব শরীরের ধমনীর মধদিয়ে)অতিক্রম করা লাগে, তাই আমাদের ভুক্ত দ্রব্যের বিরাট একটা ভূমিকা রয়ে গিয়েছে, হৃদপিন্ড সহ আমাদের সমগ্র ধমনী তন্ত্রের উপর।

তাই আমাদের খাওয়া দাওয়া সম্পর্কে আমাদের বিশেষ সজাগ দৃষ্টি রাখা একান্ত প্রয়োজন।

আপনি দিনে কতবার এবং কখন কখন খাইবেন?

আপনি কখন কখন খাইবেন, দিনে ২ বার খাইবেন নাকী ৪ বার খাইবেন এটা আপনি আপনার ইচ্ছামত পছন্দ করতে পারেন, তাতে কিছু আসে যায়না।

কী পরিমান খাইবেন?

এটাও ব্যক্তি হতে ব্যক্তি পর্যায়ে এবং শারীরিক পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে পৃথক হয়। শরীরের আয়তন বেশী থাকলে ও পরিশ্রম বেশী হলে খাদ্য বেশী তো লাগবেই।

যেমন একটি বড় ইঞ্জিনের বেশী মাল টানতে হলে, তার জ্বালানীটাও তো বেশী লাগবেই।

তবে এতটুকু কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে যে আপনার দিনে সর্বমোট যতটুকু পরিমান খাদ্যের নিতান্ত প্রয়োজন, দিনে সর্বমোট খাবারের পরিমান যেন তার চেয়ে সামান্যতম পরিমান ও বেশী না হয়, একটু কম হলে ক্ষতি নাই, বরং ভাল।

কারণ, আপনি যতই বেশী খান না কেন, শরীর তার কোষ ইঞ্জিন পরিচালনার জন্য যতটুকু তাপ (এটা শরীর তাপ

বিজ্ঞানের ক্যালরী ইউনিট দ্বারা মেপে ব্যবহার করে) প্রয়োজন হবে, এবং সেই তাপ টুকু উৎপাদন করতে আপনার ভক্ষিত ও পরিপাককৃত যত টুকু খাদ্য-সারাংস হতে পাইবে, শরীর তার এক তিল পরিমান ও বেশী ব্যবহার করিতে পারিবেনা।

এভাবেই শরীরের কোষগুলী অতি উন্নত কম্পিউটার কলাকৌশল ব্যবহার করে সৃষ্ট।

তাহলে অতিরিক্ত খাদ্য বস্তু গুলী শরীর কী করবে?

অতিরিক্ত খাদ্যগুলী শরীর চর্বী (FAT)তে রুপান্তরিত করিয়া শরীরে জমা রাখিবে, তা আপনি যদি চর্বী একেবারে নাও খান, তবুও অতিরিক্ত খাইলে আপনার শরীরে চর্বী জমতে থাকবে, যে চর্বী হৃদপিন্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

আমার এক আত্মীয় সেদিন বল্ল, তার এক ৩২ বৎসরের তরুন ইঞ্জিনীয়ার বন্ধু হঠাৎ HEART STROKE এ আক্রান্ত হয়ে হসপিটালে পৌছাইবার পূর্বেই মারা গিয়াছে। সে নাকী অত্যন্ত স্বাস্থবান ও মোটা ছিল।

কারন? কারন সহজেই অনুমেয় সে অতিরিক্ত চর্বি অথবা ভোজন প্রীয় ছিল। রক্তের CHOLESTEROL মাত্রা অত্যধিক ছিল, স্বাস্থ্য সম্পর্কে মোটেই সচেতন ছিলনা।

আপনার দৈনিক কী পরিমান ক্যালরীর খাদ্যের প্রয়োজন?

উত্তর-এটা কতকগুলী FACTOR এর উপর নির্ভর করে PERSON TO PERSON VERY করে।

এটা আপনি নিজেই আমেরিকার CANCER INSTITUTE এর দেওয়া টুলে ঢুকে আপনার তথ্য প্রদান করে এই মুহুর্তেই CALCULATE করে ফেলতে পারেন, যে আপনার দৈনিক কত ক্যালরীর খাদ্য প্রয়োজন।

এই লিংকে টুল টি পাইবেন-

http://www.cancer.org/healthy/toolsandcalculators/calculators/app/calorie-counter-calculator (1)

একজন ৩০ বৎসর বয়স্ক, ৫ফুট ৬ ইঞ্চি উচু, ১৩০ পাঃ ওজন, MODERATELY ACTIVE, পুরুষ ব্যক্তির দৈনিক ক্যালরীর CALCULATE করলে তার উত্তর পাওয়া যায় এই রুপ -

“To maintain your current weight, you can eat:

Approximately 2707 calories per day”

তাহলে বুঝতেই পারলেন উক্ত ব্যক্তির জন্য দেনিক ২৭০৭ ক্যালরীর উর্ধে খাদ্য ভক্ষন করলে তার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হইবে। এর বেশী ক্যালরীর খাদ্য সে গ্রহন করলে সেটা ক্ষতিকর চর্বীতে পরিণত হয়ে যাবে।

তবে বাস্তবে তো আপনি আপনার ক্যালরীর সংগে ম্যাচ করে করে খাদ্য মেপে মেপে খাইতে পারিবেননা, তাই সব সময় নিম্ম ক্যালরীর খাদ্য ও পরিমানে শুধু মাত্র ক্ষুধা মেটানো পর্যন্ত খাওয়াই নিরাপদ।

মনে রাখতে হবে উচ্চ ক্যালরীর খাদ্য (চর্বি বা তৈল জাতীয় খাদ্য)আপনার ক্ষুধা তৃপ্তির পূর্বেই অতি সত্বর আপনার প্রয়োজনীয় ক্যালরীর মাত্রাধিক্য হয়ে যাবে ও আপনার শরীরে চর্বি জমাবে, রক্তের CHOLESTEROL মাত্রা বাড়াবে ও দ্রুত হৃদপিন্ডের ক্ষতি করিবে।

কাজেই সব সময় খাদের পরিমান কম রাখা সবচেয়ে নিরাপদ।

তাহলে এবার জানতে চান, কোন খাদ্য হতে কী পরিমান ক্যালরী আসে?

উত্তর-

১ (এক) গ্রাম শর্করা (যেমন,চাউল শুজীর পরিপাক কৃত সারাংস) হতে ৪ ক্যালরী আসে।

১ (এক) গ্রাম প্রোটীন (যেমন, মাংস,ডাউল, শাক শবজী এর পরিপাক কৃত সারাংস) হতে ৪ ক্যালরী আসে।

১ (এক) গ্রাম চর্বী (FAT)বা তৈল (যেমন ঘী, বাটার, মাংসের চর্বী, মাছের চর্বি, ছায়াবীন, সরিসা, অলিভ অয়েল, বাদাম এর পরিপাক কৃত সারাংস) হতে ৯ ক্যালরী আসে।(3)

বুঝতেই পারছেন FAT বা তৈল একটি HIGH-CALORY খাদ্য।

দুধের মধ্যে প্রচুর চর্বী (ঘী আকারে)সহ সব ধরনের খাদ্য বিদ্যমান।

ডিমের সাদা অংশ শুধু প্রোটীন ও হলুদ অংশে চর্বী ভর্তী থাকে।

ডিম খাওয়ার সময়ে ডিমের হলুদ অংশ টুকু ফেলে দিবেন।

এ ছাড়া ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ইত্যাদিতে কোন ক্যালরী দেয়না। এবং শাক শবজী ফল মূল ইত্যাদিতে অতি সামান্য পরিমান ক্যালরী, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও আস (SOLUBLE FIBRE) জাতীয় খাদ্য থাকে।

আস জাতীয় খাদ্য হৃদপিন্ডের CHOLESTEROL পরিস্কার করে।

WHOLE GRAIN FOOD বলা হয় যে খাদ্য বস্তু REFINE না করে তার খোসা সহ খেয়ে ফেলা হয়, যেমন আপনি ছোলা ভিজিয়ে তার খোসা সহ চাবিয়ে খেয়ে ফেল্লেন, অনেক রুটি বা আটা পাওয়া যায় খোসা সহ পিশে বাজার জাত করা।

WHOLE GRAIN FOOD, ও ফলের (যেমন আলু,ছোলা,আপেল ইত্যাদি) খোসায় মধ্যে প্রচুর DISSOLVED FIBER (আস)থাকে যা হৃদপিন্ডের CHOLESTEROL পরিস্কার করে।

কোন্ খাদ্যে কী আছে আপনাকে তার একটা মোটামোটি স্বচ্ছ ধারনা থাকতে হবে। নইলে এমন হতে পারে, যে খাদ্যটি আপনি অনবরত আত্ম বিশ্বাষ লয়ে ভক্ষন করে যাচ্ছেন, সেটা আপনাকে চরম ক্ষতি করতেছে, অথচ আপনার জন্য যেটা পরম উপকারী ছিল সেটা বাদ দিয়ে যাচ্ছেন।

চর্বী (FAT) ৩ প্রকারের- 1.LECITHIN (7) 2. CHOLESTEROL . TRIGLYCERIDE.

এর মধ্যে CHOLESTEROL টা (HDL বাদে) আমাদের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে।

একমাত্র HDL FAT বাদে সমস্ত চর্বিই আমাদের ক্ষতি করে, যদিও এগুলি শরীরের জন্য প্রয়োজন ও আছে।

CHOLESTEROL কী?

CHOLESTEROL এক ধরনের FAT জাতীয় খাদ্য। এটা ৩ প্রকার-

১) LOW DENSITY CHOLESTEROL (LDL),SATURATED FAT

২) TRANS FAT- এটা LDL এর সমান কাজ করে,

৩) HIGH DENSITY CHOLESTEROL (HDL), UNSATURATED FAT

১) LOW DENSITY CHOLESTEROL (LDL),SATURATED FAT

এই LDL(১ নং) FAT টিই শরীরের জন্য চরম ক্ষতিকর। এইটাই হৃদপিন্ডের ধমনী আটকিয়ে HEART STROKE করায়, আবার এটা ARTERIOSCLEROSIS ও ATHEROSCLEROSIS ও ঘটায় (৩৭ পর্বে বিস্তারিত দেখুন)। এই LDL এর উৎপত্তি প্রানী (ANIMAL)হতে, যেমন, গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল, শুকর এর মাংস, দুগ্ধ, ও দুগ্ধ জাত সমগ্র বস্তু যেমন, ঘী, মাখন,পনীর, ছানা, দধি ইত্যাদি, ইলিস মাছ, ও বড় বড় মাছের চর্বির অংস, মস্তিস্কের ঘিলু, হাস, মুরগীর চামড়ার ও মাংসের ভিতরের তৈল, ডিমের হলুদ অংস, ও উদ্ভিদ উৎস যেমন, নারিকেল তৈল ও পাম অয়েল।

এই ভয়ংকর ঘাতক পদার্থটি ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে অথচ অত্যন্ত নিশ্চিত ভাবে এবং IRREVERSIBLE পদ্ধতিতে (অর্থাৎ একবার যত খানি অগ্রসর হয়, সেখান থেকে আর পূর্বের অবস্থায় ফিয়িয়ে আনা যায়না-বড় মারাত্মক ব্যাপার বটে) আমাদের অজান্তে আমাদেরই দেহাভ্যন্তরে এগিয়ে যেতে থাকে।

এই অবস্থায় কোন উপসর্গ না থাকায় চিকিৎসকের নিকট ও যাওয়া হয়না। আর তা ছাড়া পরীক্ষা নীরিক্ষায় ও এই পর্যায়ে তেমন কিছু বুঝা যায়না। নিজেকে পূর্ণ সুস্থ সক্ষম মনে হবে। এভাবে BLOCK মাত্রা বেড়ে গেলে, হঠাৎ কোন এক মুহূর্তে এই ভয়ংকর ঘাতক আমাদের হৃদপিন্ডের ধমনীর পথ একেবারে আটকিয়ে আমাদের হঠাৎ মেরে ফেলে দেয়।

শুধু তখনই আমরা জানতে ও বুঝতে পারি, সে HEART STROKE অথবা BRAIN STROKE করে মারা গেল।

অতএব খাদ্যগুলী সম্পূর্ণ রুপে পরিত্যাজ্য।

২) TRANS FAT- এটা বেকারীতে UNSTURATED FAT (HDL) দ্বারা বেকারী খাদ্য যেমন.COOKIES, CAKES, DONUTS ইত্যাদি ভাজার সময় তাপে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে UNSATURATED FAT (HDL)এ হাইড্রোজেন অনু যোগ হয়ে (একে HYDROGENATION বলে) LOW DENSITY CHOLESTEROL (LDL), SATURATED FAT পরিণত হয়ে যায়। এটা প্রস্তুত কৃত খাদ্য বস্তুর SHELF LIFE দীর্ঘায়িত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

অতএব এগুলীও LDL এর সম পর্যায়ের ও সম্পূর্ণ রুপে পরিত্যাজ্য।

৩) HIGH DENSITY CHOLESTEROL (HDL), UNSATURATED FAT-

এই FAT টি শরীরের কোন ক্ষতি তো করেইনা বরং LDL কে দুরিভূত করে শরীরের উপকার সাধন করে। এজন্য এটাকে উপকারী CHOLESTEROL বলে।

এই FAT টি পাওয়া যায় সমগ্র উদ্ভীজ্জ তৈল (একমাত্র নাকিকেল ও পাম অয়েল বাদে)হতে, ও সমস্ত ছোট ছোট ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্য ( যেমন চেলা পুটি, বাশ পাতা ইত্যাদি) হতে।

উদ্ভিজ্জ তৈলের উদাহরণ-

সরিষার তৈল, ছায়াবীন তৈল, OLIVE OIL, CANOLA OIL, AVOCADOS, PEA NUT সহ সমগ্র প্রকারের বাদাম।(3,4,5,6)

এই জাতীয় তৈলাক্ত পদার্থে কোন ক্ষতি নাই, বরং উপকার আছে। তবে এটা ও মনে রাখিতে হইবে, এটাও একটা FAT, এবং এটা ও একটা উচ্চ ক্যালরীর খাদ্য। অতএব এটা সরাসরি উপকার করিলেও, যদি আপনার প্রয়োজনীয় ক্যালরীর মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন এটা শরীরে FAT আকারে জমে LDL এ পরিণত হয়ে হৃদপিন্ডের ধমনী কে ব্লক করিবে।

আপনার প্রয়োজনীয় ক্যালরীর উর্ধে যে কোন খাদ্য শরীরে ক্ষতিকর FAT বানিয়ে শরীরে জমা করে রাখে যা ক্ষতিকর।

তবে শরীর এই অতিরিক্ত ক্যালরী FAT আকারে জমা রাখে ভবিষ্যতে যদি কখনো শরীরে ক্যালরীর ঘাটতি দেখা দেয়, তখন এখান থেকে লয়ে পূরন করার জন্য। ঠিক যেমনটা আমরা যেমন বেশী টাকা হলে সম্পদ আকারে জমা রাখি ভবিষ্যতের প্রয়োজনের সময়ের জন্য।

তবে অতিরিক্ত FAT কী ভাবে হৃদপিন্ড-ধমনী গাত্রে জমা হয়ে আমাদের অকালে প্রান নাস ঘটায়?৩৭ পর্ব দেখুন।

এই ২ ধরনের চর্বি কী ভাবে দেখে সহজে এদের পার্থক্য করতে পারবেন?

LOW DENSITY CHOLESTEROL (LDL), ও HIGH DENSITY CHOLESTEROL (HDL), বাহ্যিক ভাবেও কিছুটা পৃধক করা যায় এভাবে যেমন সরিষা, ছায়াবীন তৈল (যা HDL গ্রুপের) রুম তাপ মাত্রায় জমেনা, তরল ই রয়ে যায়।

কিন্ত ঘী, মাখন, গরু, ভেড়ার চর্বী (যা LDL গ্রুপের) রুম তাপ মাত্রায় জমে যায়, আর এরাই এই ভাবে হৃদপিন্ড ধমনীর গাত্রে মোমের ন্যায় জমতে জমতে BLOCK ঘটায়।

প্রতিবার আহারের সংগে যথেষ্ঠ পরিমান শাক-শবজী, কিছুটা টাটকা যে কোন ফল, ১টা কাচা মরিচ, লেবুর রস, ২ খোয়া কাচা রসুন, কিছুটা কাচা আদা খাইবেন। মাংস কমিয়ে মাছ বেশী খাইবেন।

আমি একটা বিজ্ঞান অনুষ্ঠানে একটা গবষনার ফলাফলে শুনেছিলাম নিয়মিত কাচা আদা সেবন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। ঠিক একই কাজ করে হলুদ ও (একটা পত্রিকায় দেখেছিলাম)

২) ব্যায়াম

বয়স অনুসারে দৈনিক অন্তত আধা ঘন্টা হতে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত ব্যয়াম বা পরিশ্রম, বা লম্বা পা ফেলে হাটিবেন। বয়স ৬০ এর উর্ধে হলে হাটা ব্যায়াম সবচেয়ে ভাল। ব্যায়াম এর দ্বারা শরীরের চর্বী BURN হয়ে যায়, শরিরের পতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে অন্যান্য বহু রোগ হতে ও রক্ষা করে, বার্ধক্য জনিত বহু রোগ ও প্রতিরোধ করে। তাই বলে ব্যায়াম করে বেশী খাইলে, আবার সেই একই ক্ষতি এসে যাবে। লাভ-লোকসান সমান হয়ে যাবে।

৩)মানসিকতা-

সব সময় ঠান্ডা ও ধীর স্থির মেজাজ ধরে রাখতে হবে। অত্যধিক রাগ, উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা দ্রুত হৃদপিন্ডের রোগী বানিয়ে দেয়। হঠাৎ অত্যধিক উত্তেজনা, একজন ব্যক্তির হৃদপিন্ডকে তৎক্ষনাৎ অকার্যকরী করে মেরে ফেলতে পারে। এরুপ একটি ঘটনা আমার জানা আছে।

৪) আহারের পর, বিশেষ করে দুপুরে, বয়স অনুপাতে অন্ততঃ আধা ঘন্টা হতে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্রাম লইবেন।

৫) কখনো সুনিদ্রার ব্যাঘাত ঘটতে দিবেননা।

৬)রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিছ হতে সতর্ক থাকিবেন। এই গুলী STROKE এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৭) লবন- লবনের ছোডিয়াম দ্রুত ধমনীতে ATHEROSCLEROSIS ঘটিয়ে হৃদপিন্ডের ক্ষতি করে। অতএব কখনো খাওয়ার সময় লবন নিজে লয়ে খাইবেন না। শাক শবজী, তরকারী তে যথেষ্থ লবন থাকে।

আমেরিকান HEART INSTITUTE এর পরামর্শ, একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তি দিনে যেন ১৬ মিঃগ্রাঃ এর বেশী লরন না খায়।

৮)যাতে অত্যধিক আয়রন রয়েছে যেমন প্রানীর কলিজা, তা বেশী খাইবেননা, যদি না শরীরের আয়রন প্রয়োজন না থাকে। অতিরিক্ত আয়রণ ডিপোছিট হয়ে হৃদপিন্ডের ক্ষতি করে। (একটি গবেষনার ফলাফলে দেখেছিলাম)

৯) প্রয়োজন না থাকিলে অত্যধিক ভিটামিন “এ” ও ভিটামিন “ডি” খাইবেননা। এদের মাত্রাতিরিক্ত ডিপোছিট হয়ে ATHEROSCLEROSIS ঘটায়।(আমার একটি বিজ্ঞান পুস্তকে দেখা)

১০) পুরুষ যৌন হরমোন Testosterone এ ATHEROSCLEROSIS ঘটায় (আমার একটি বিজ্ঞান পুস্তকে দেখা)

আমি একটি বিজ্ঞান পুস্তকে দেখেছিলাম। একদল গবেষক বিজ্ঞানী কোরিয়ান যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের দেহ ডিছেকশন করিয়া তাদের হৃদপিন্ডের ধমনী পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছিলেন।

ফলাফল পেয়েছিলেন-যারা সকালের নাস্তায় বাটার খাইতোনা, তাদের হৃদপিন্ড ধমনীতে কোন ব্লক জন্মাতে দেখতে পায়নাই, (নীচের চিত্র-১ দেখুন)

আর যারা সকালের নাস্তায় নিয়মিত বাটার খাইতো, তাদের হৃদপিন্ড-ধমনীতে বিভিন্ন মাত্রার ব্লক দেখতে পেয়েছিল।এমনকি কারো কারো প্রায় বন্ধ হয়ে ও গিয়েছিল। (নীচের চিত্র-২ দেখুন।)



হৃদপিন্ডের সংগে জ্বীন (GENE) এর সম্পর্ক।

কোন শিশু দুর্ভাগ্য বসতঃ কিছু কিছু Mutated (পরিবর্তিত) জ্বীন পেয়ে গেলে Fallots Tetralogy নামক ভয়াবহ রোগের শিকার হয়ে যায়।

এই রোগে আক্রান্ত শিশুটির হৃদপিন্ডের ৪টি প্রকোষ্ঠের নীচের দুইটি প্রকোষ্ঠের মাঝখানের প্রাচীরে বড় ছিদ্র থাকে ও একই সংগে হৃদপিন্ডের ভালভ গুলী সহ মোট ৪ ধরনের সমস্যা থাকে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা নগন্য। প্রতি ১০ হাজারে ৫ জন। নারী ও পুরুষ সমান ভাবে আক্রান্ত হয়।

এটা হলে রোগীকে সার্জারী করানো লাগে।(৮)

এই লিংকে গিয়ে একজন FALLOTS TETRALOGY রোগী এর বাস্তব বিবরন দেখতে পারেন। তার সার্জারীর খরচের জন্য এখানে সাহায্যেরও আবেদন জানানো হয়েছিল। আপনারা সেটা দেখেওছিলেন।

https://www.amarblog.com/index.php?q=HAKIM-CHAKLADAR/posts/180107

এই জ্বীনগুলী হৃদপিন্ডের গঠনের কাজ করে, যেমন-

• NKX2-5[5]

• ZFPM2[6]

নীচে(চিত্র-৩) NKX2-5 জ্বীনের ম্যপ অবস্থানটা দেখে নিন (9)

Molecular Location on chromosome 5: base pairs 173,232,103 to 173,235,311



চিত্র-৩

কয়েকটি জ্বীন এর মধ্যে এই জ্বীন টির Mutation(পরিবর্তন)ও Fallots Tetralogy এর কারণ হয়ে থাকে।

NKX2-5 জ্বীনটি ৫নং ক্রোমোজোম এর q বাহুর ৩৪ অবস্থানে আছে।

আরো সূক্ষভাবে, NKX2-5, base pair 173,232,103 হইতে 173,235,311 base pair পর্যন্ত chromosome 5 এ জায়গা দখল করে রয়েছে।

পূর্বের পর্বগুলী এখানে দেখুন-

http://chkdr02.wordpress.com/

৩৯ তম পর্বের সূত্র সমুহ-

1) CALORY CALCULATION

http://www.cancer.org/healthy/toolsandcalculators/calculators/app/calorie-counter-calculator

2) CALORY /GRAM

http://www.chacha.com/question/how-many-calories-are-produced-when-1-gram-of-carbohydrate-is-oxidizehttp://www.chacha.com/question/how-many-calories-are-produced-when-1-gram-of-carbohydrate-is-oxidized

3) CHOLESTEROL

http://www.nhlbi.nih.gov/health/health-topics/topics/hbc/

4) SATURATED FAT

http://www.heart.org/HEARTORG/GettingHealthy/NutritionCenter/HealthyEating/Saturated-Fats_UCM_301110_Article.jsp

5) SATURATED,UNSATURATED,TRAS, OMEGA 3

http://lowfatcooking.about.com/od/lowfatbasics/a/fats1004.htm

6) SOURCES OF HDL

http://www.livestrong.com/article/237662-what-are-the-food-sources-of-hdl-cholesterol/

7) LECITHIN

http://www.dailymail.co.uk/health/article-62013/Lecithin--fat-burner-control-cholesterol.html

8) FALLOTS

http://en.wikipedia.org/wiki/Tetralogy_of_Fallot

9) GENE RELATION

http://ghr.nlm.nih.gov/gene/NKX2-5

বিষয়: বিবিধ

১৩৭২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

272285
০৮ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
ফেরারী মন লিখেছেন : ওয়াও অসাধারণ পোষ্ট। সরাসরি প্রিয়তে রাখলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
272301
০৮ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫২
জোনাকি লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ।
272317
০৮ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:২৮
আফরা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ।
272333
০৮ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৭
আঃ হাকিম চাকলাদার লিখেছেন : @ ফেরারী মন,
"ওয়াও অসাধারণ পোষ্ট। সরাসরি প্রিয়তে রাখলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।"
অনেক ধন্যবাদ।
272334
০৮ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৯
আঃ হাকিম চাকলাদার লিখেছেন : @জোনাকি ও আফরা,

আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।
275575
১৮ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৩৭
তৌহিদ লিখেছেন : স্বাস্থ্যই সম্পদ। সবার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবগত থাকার নির্দেশনা অবশ্যই মহৎ ও সুন্দর মানুষের কাজ তাই আপনি অবশ্যই একজন মহৎ ও সুন্দর মানুষ।
অনেক ধন্যবাদ।
295279
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪২
আঃ হাকিম চাকলাদার লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File