হৃদপিন্ড যে ভাবে RHYTHMIC সংকোচন-সম্প্রসারনের মধ্য দিয়ে রক্তকে সঞ্চালন করিয়া থাকে।পর্ব-৩৬(৫)

লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৫৯:২৮ সন্ধ্যা



বুকের মধ্যখানে অবস্থান করে অনবরত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনাকে জীবনভর বাচিয়ে রাখতেছে, যে হৃদপিন্ড নামক বস্তুটি, তার সম্পর্কে কী আপনি কিছু জানতে আগ্রহী ?

তাহলে আমার সংগে থাকুন।

আপনারা পূর্বের পর্ব সমূহে হৃদপিন্ড কী ভাবে কাজ করে তার কিছুটা জানতে পেরেছেন।

হৃদপিন্ডের RHYTHMIC সংকোচন বলতে কী বুঝায়? কিসে এই RHYTHMIC সংকোচন ঘটায়? কেন ঘটায়? এর প্রয়োজনীয়তাও বা কী?

RHYTHM এর অর্থ কী?

একই মাত্রা ও মাপ ঠিক রেখে কোন ঘটনা বার বার ঘটতে থাকা কে RHYTHM বলে।

একটি সুস্থ হৃদপিন্ডের BEAT(সংকোচন ও সম্প্রসারন) সব সময় RHYTHMIC অর্থাৎ সবদিক দিয়ে একই মাপের হয়।

অর্থাৎ প্রত্যেকটা BEAT এর সময়ের পার্থক্য ও তীব্রতা একই মাপের হয়।

প্রশ্ন-এই RHYTHMIC নিয়ন্ত্রন টা কে করায়?

উত্তর- এটা হৃদপিন্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র SA NODE করায়।(পর্ব-৩৩ দেখুন)

আপনারা ৩৩ পর্বে জেনেছেন হৃদপিন্ডের বাম অলিন্দের উপরি অংশে SA NODE নামক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তার উপকেন্দ্র AV NODE ও তার নিজস্ব বিদ্যুত পরিবাহী তার (PURKINJE FIBERS) দ্বারা হৃদপিন্ডের মাংসপেশীকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করিয়া মাংস পেশীকে সংকোচন করাইয়া, হৃদপিন্ডের সংকোচন (CONTRACTION) ঘটায়।

হৃদপিন্ডের মাংসপেশীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটাইলে কেন হৃদপিন্ডের মাংস পেশী সংকোচন করে?

এটা যে কোন মাংসপেশীর ধর্ম যে, যে কোন মাংস পেশীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটাইলে, সেই বিদ্যুতের আঘাতে মাংস পেশী তখন সংকোচন করিবে। একে আমরা বৈদ্যুতিক শক বলে থাকি।

আপনারা হয়তো অনেকে লক্ষ্য করে থাকবেন, কোন কোন সময়ে আমাদের নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব ঘটনায় এরুপ বৈদ্যুতিক শক পাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকি।

আবার যখন সেই মাংস পেশী হতে বিদ্যুৎ প্রবাহ তুলে লওয়া হয়, অথবা বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়, তখন এই মাংস পেশী স্বাভাবিক ভাবেই পূর্বের সম্প্রসারিত অবস্থায় (DILATATION) বা বিশ্রামে থাকার অবস্থায় ফিরে আসে।

ঠিক এই প্রক্রিয়াটাই প্রয়োগ করে হৃপিন্ডের মাংস পেশীতে একবার বিদ্যুত প্রবাহ চালিয়ে সংকোচন (CONTRACTION) করা হয় ও তার পরোক্ষনেই বিদ্যুৎ প্রবাহ টা বন্ধ করে দিয়ে সম্প্রসারন (DILATATION)বা বিশ্রাম ঘটানো হয়।

তবে হৃদপিন্ডের এই বৈদ্যুতিক চার্জ অন্য যে কোন বৈদ্যুতিক চার্জ হতে ঢের উন্নত, বিশেষায়িত ও সুনিয়ন্ত্রিত। কারন এই বিদ্যুৎ যদি অনবরত চলে, আর বন্ধ না হয় তাহলে হৃদপিন্ড একবার মাত্র সংকোচনের মাধ্যমে রক্ত পাম্প করে ঐ সংকুচিত অবস্থায় পড়ে থাকবে। আর সম্প্রসারিত হয়ে এর মধ্যে রক্ত টেনে আনতে পারবেনা।

ফলে আমাদের ও সাথে সাথে মৃত্যু হইবে।

এই কারণে SA NODE একবার বিদ্যুৎ এর SWITCH ON করে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে , হৃদপিন্ডকে সংকুচিত করিয়ে ও রক্ত পাম্প করিয়ে, আবার সাথে সাথেই বিদ্যুৎ এর SWITCH টা OFF করে দেয়।

হৃদপিন্ডের মাংসপেশীতে বৈদ্যুতিক চার্জ না থাকিলে, তখন হৃদপিন্ড স্বাভাবিক ভাবে সম্প্রসারিত হয়ে যায়। আর তখন রক্ত হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠে চলে আসে।

(রক্ত কোথা হতে কোন প্রোকষ্ঠে আসে, বিস্তারিত পর্ব-৩৫ দেখুন, নীচে ৩ নং চিত্রে ইউ টিউব টি দেখুন)

তাহলে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র SA NODE কে অন্ধের মত শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন করে গেলেই হলনা।

তাকে বিদ্যুৎ এর SWITCH টাকেও নিয়ন্ত্রনে রাখতে হচ্ছে, একের পর এক, একবার ON করে ও একবার OFF করে। তাও আবার RHYTHM ঠিক রেখে।

প্রশ্ন- SWITCH এর এই নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বটা কে পালন করে?

উত্তর- SA NODE (বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র) একই সংগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও করে আবার সঠিক সময়ে ON/OFF ও করে।

তাহলে এটা বুঝা যাচ্ছে SA NODE শুধু বিদ্যুৎ উৎপান করতেই সক্ষম নয়, বরং দায়িত্বের সংগে ঠিক সময় মত SWITCH ON/OFF ও করতে সক্ষম।

এভাবেই আমাদের হৃদপিন্ড অনবরত চলতে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, হৃদপিন্ডের এই চালিকা শক্তির মূলে ঐ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

অন্য ভাবে বলা যায়, এই বিদ্যুৎ শক্তিই, প্রতি মুহূর্তে হৃদপিন্ডকে বৈদ্যুতিক শক মেরে মেরে, পিটানোর মাধ্যমে, জোর করে এই সংকোচনের কাজটি আদায় করে নিচ্ছে।

মনে রাখবেন হৃদপিন্ডকে এ ভাবে বৈদ্যুতিক শক মারা যে কোন ভাবে বন্ধ করে দিলে, হৃদপিন্ড আর এক মুহুর্তও এই পরিশ্রমের কাজ করতে যাবেনা।

তার ফলাফল কী জানেন তো? হৃদপিন্ড টি তখন বিশ্রামে চলে গেল বা স্তব্ধ হয়ে গেল। আর হৃদপিন্ডের বিশ্রামের সংগে সংগে আমাদেরও চির কালের জন্য বিশ্রাম এসে গেল।

তাহলে বুঝতেই পারলেন, আমাদের বেচে থাকার শক্তি, এই হৃদপিন্ডটার অনবরত পরিশ্রমের দ্বারা যোগানো হয়।( আরো বিস্তারিত পর্ব-৩৫ দেখুন)

হৃদপিন্ড কম্পনের মাত্রা (HEARTBEAT)কী, কত ও কেন?

হৃদপিন্ডের একবার সংকোচন ও সম্প্রসারন হওয়াকে হৃদপিন্ডের একটা বিট (BEAT)বা PULSE বলা হয়।

হৃদপিন্ডের এই PULSE আমরা হাতের কবজীর কাছে ও আরো কিছু কিছু জায়গার ধমনী হাতের আঙ্গুল টিপিয়া অনুভব ও গনণা করতে পারি।

আমাদের দেশে কবিরাজী চিকিৎসা শাস্ত্রে একে “নাড়ী দেখা” বলা হয়, যদিও পেটের নাড়ীর সংগে এর কোনই সম্পর্ক নাই।

এটা আরো পরিস্কার ও আরো তথ্য সহ জানতে পারি স্টেথোস্কোপ এর ডায়াফরাম বুকে হৃদপিন্ডের উপর বসিয়ে ও আরো সূক্ষ্ম ভাবে জানতে পারি ECG পরীক্ষার মাধ্যমে।

হৃদপিন্ডের এই কম্পনের মাত্রা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার। অর্থাৎ একটা BEAT দিতে এক সেকেন্ড সময়ের ও কম সময় লাগতেছে।

হিসাব করলে ১/ ৭২ = ০.০১৩৪ মিঃ সময়ে প্রতিটা বিট দিচ্ছে।

নীচে, চিত্র-২ ইউ টিউবে হৃদপিন্ডের স্পন্দন দেখুন।

এই BEAT টা অনিয়মিত ভাবে হলে কাজ চলবেনা। এটা সম্পূর্ণ নিয়ম তান্ত্রিক হতে হবে। কী সেই নিয়ম কানুন?

একটা সুস্থ হৃদপিন্ডে দুই কম্পনের মধ্যখানের এই সময়ের পার্থক্য টা সব সময় একই অর্থাৎ ০.০১৩৪ সেকেন্ড থাকতে হবে। অর্থাৎ কখনো অতি দ্রুত আবার কখনো অতি ধীর গতি সম্পন্ন করা যাবেনা।

একেই RHYTHM বলে। এটা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

এর ব্যতিক্রম যদি ঘটে তাহলে বুঝতে হবে হৃদপিন্ডে ত্রুটি এসে গেছে। এটা অশুস্থ হৃদপিন্ড। অতি দ্রুত হলে তাকে TACHYCARDIA, ও অতি ধীর গতি হলে তাকে BRADYCARDIA, ও গতির উত্থান পতন হতে থাকলে তাকে ARRHYTHMIA বলে।

এরুপ হলেও আমরা অশুশ্থ হয়ে যাব।

হৃদপিন্ডের আরো একটা বিষয় ঠিক রাখা লাগে, তা হল প্রতিটা সংকোচন সমান মাপের হতে হবে অর্থাৎ একবার একটু কম সংকোচন করল, আবার পরের বার একটু বেশী সংকোচন করল, তাহলেও বুঝতে হবে হৃদপিন্ড অশুস্থ হয়েছে। এবং তখন আমরাও অশুস্থ হয়ে যাব।

এটা ECG তে ভাল ধরা পড়ে।

প্রশ্ন-

হৃদপিন্ডের অনবরত এত দ্রুত ভাবে, অর্থাৎ প্রতি ০.০১৩৪ মিনিটে ১ বার করে কেন BEAT বা সংকোচন-সম্প্রসারন করা লাগে?

উত্তর-

হ্যাঁ উপযুক্ত পশ্ন বটে। উত্তর এক কথায় আমাদের কে বাচিয়ে রাখার এই হৃদপিন্ড নামক অর্গানটির এই কর্মকান্ড।

আমাদের বাচিয়ে রাখার জন্য এর বিকল্প আর কোনই পথ নাই।

মনে রাখবেন, জন্মের পর থেকেই আমাদের নিকট আমাদের বেচে থাকাটা একটা স্বাভাবিক ও সহজ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে আরামে চলতেছে বলে মনে হলেও আসল ব্যাপারটা তা কিন্তু মোটেই নয়। এর জন্য হৃদপিন্ডটাকে প্রতিটা মুহুর্ত অনেক উন্নত প্রযুক্তির কারিগরি ব্যবহার করিয়া অপরিসিম পরিশ্রম ও মূল্য বহন করতে হচ্ছে।

নীচের চিত্র-৩ এ ইউ টিউবে হৃদপিন্ডের কাজ দেখুন।

প্রশ্ন- কী ভাবে হৃদপিন্ড আমাদেরকে বাচিয়ে রাখতেছে?

উত্তর-হ্যা, সঠিক প্রশ্ন।

পর্ব-৩৫ নং টা একটু ভাল করে পড়ুন। সেখানে জানতে পারবেন। একটি চলন্ত প্লেনের জন্য যেমন অনবরত জলন্ত জ্বালানীর ব্যবস্থা থাকা একান্ত বাঞ্ছনীয়, এক মূহুর্ত যেমন জলন্ত জ্বালানী না থাকিলে প্লেনটির ধংস অনিবার্য, ঠিক আমাদের শরীরের ৬০০ ট্রিলিয়ন কোষ জীবন্ত থেকে আমাদের জীবনটাকেও প্লেনের মত অনবরত প্রচন্ড শক্তি উৎপাদন করে চালিয়ে লয়ে যাচ্ছে।

আর আমাদের কোষ এই শক্তিটা উৎপাদন করে আমাদের খাদ্যের সারাংস ও অক্সিজেন ব্যবহারের মাধ্যমে।

আর হৃদপিন্ড কী করে?

হৃদপিন্ড অনবরত এই প্রত্যেকটি কোষকে রক্তের মাধ্যমে খাদ্য বস্তু ও অক্সিজেন এর সরবরাহ করে চলে। যদি হৃদপিন্ড অনবরত এভাবে পাম্প করে করে আমাদের প্রতিটা কোষে জ্বালানী সরবরাহ না করে তা হলে আমাদের কোষের ও মৃত্যু হবে, তথা আমাদেরও মৃত্যু হবে।

একটি ট্রেইন ইঞ্জিনে যেমন শক্তি ও তাপ ছাড়া ইঞ্জিনটি অচল হয়ে ট্রেইনটিকে অচল করে দেয়, ঠিক একই পদ্ধতিতে আমাদের কোষের ইঞ্জিন, MITOCHONDRIA, যদি জ্বালানী (খাদ্য)ও অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে শক্তি ও তাপ উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরাও অচল (মৃত) হয়ে যাব।

এর জন্যই হৃদপিন্ডকে আমাদের বেচে থাকার জন্যই অনবরত বিনা মূল্যে এই কঠোর শ্রমের কাজ চালিয়ে যাওয়া লাগে।

তাহলে এবার নিশ্চয়ই বুঝতে সক্ষম হয়েছেন, কেন হৃদপিন্ডকে অনবরত এত ঘন ঘন নিয়মতান্ত্রিক ভাবে BEAT বা সংকোচন ও সম্প্রসারন করা লাগে।

হৃদপিন্ড অত্যন্ত স্পর্ষ কাতর অর্গান।

কোন দুর্ঘটনার কারণে শরীরে প্রচন্ড ধাক্কা লাগলে, এর চাপটা হৃদপিন্ডের উপরেও পড়ে। তখন এই ধাক্কার কারনে হৃদপিন্ডের বিদ্যূৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়ে হৃদপিন্ড বন্ধ হয়ে লোকটি সাথে সাথে মারা যাবে, যদিও দেখা যেতে পারে লোকটির শরীরে কোথাও দুর্ঘটনার আঘাতের চিহ্ন নাই।(ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন)

আমি একটা বাস দুর্ঘটনার কথা জানি, যেখানে দুইটা চলন্ত বিপরীত মূখী বাস মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল। সেখানে পরশ্পর সংঘর্ষের পর বাস ও যাত্রীদের তেমন কোন ভাংচুর বা আঘাত বা জখম হয় নাই। সংঘর্ষের পর বাস দুইটি শুধু দুই দিকে হেলে পড়েছিল।

জন সাধারন এসে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল যে, কোন বাস যাত্রীদের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্নই নাই। যাত্রীরা যেন যার যার ছিটে ঘুমিয়ে আছে, অথচ সবাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।

এখানে এদের মৃত্যু ঘটেছে শরীরের উপর আঘাতের কারণে নয়, বরং মৃত্যু হয়েছে হটাৎ প্রচন্ড ধাক্কায় হৃদপিন্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে বিঘ্ন হওয়ায় হৃদপিন্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে।

এতবড় ধাক্কা হৃদপিন্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সহ্য করতে পারে নাই।

এভাবে কারো বুকের উপর হঠাৎ একটা প্রচন্ড শক্তি ঘুসি মারলেও তার হৃদপিন্ডও সাথে সাথে বন্ধ হয়ে লোকটি সাথে মারা যেতে পারে।

প্রশ্ন- তাহলে আমাদের হৃদপিন্ড কী কখনো কোন পূর্ব সংকেৎ প্রদান ছাড়াই হঠাৎ STRIKE করে তার কাজ বন্ধ করে দিতে পারে?

উত্তর- জী,হ্যা, আমাদের এই হৃদপিন্ডটার এরুপ ধরনের বিশ্বাষ ঘাতকতা বা দায়িত্ব হীনতার অজস্র প্রমান রয়েছে, এবং এখনো করে চলেছে।(ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন)

আমি বেশ কয়েক জনের ঘটনা জানি, এদের বয়স ৪০-৫৫ বছরের মধ্যে। তারা দিব্বি সুস্থ, কর্মরত সক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। কোনদিন বুকে ব্যাথার বা অশ্বস্থি বোধ করার ও কোন অভিযোগ ছিলনা।

কাজ হতে ঘরে ফিরে শুধু বলেছে আমার খারাপ লাগতেছে, আমি শুয়ে পড়তেছি।

তার সেই ঘুম চির-নিদ্রায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল।

একজনের কথা জানি সে ৩৫ বৎসরের দিব্বি সুস্থ সক্ষম যুবক। সকালে তার ব্যবসায়িক কাজে রিকসা লয়ে বেরিয়েছে। পরে খুজতে খুজতে জানা গেল, ঐ ব্যক্তি ঐ রিকসাতে HEART ATTACK হয়ে অশুস্থ হয়ে পড়লে, রিকসা চালক তাকে ঢাকা মেডিকেলে লয়ে যায়। সেখানেই বা তার পৌছানোর পূর্বেই তার মূত্যু হয়।

অতএব আপনারা আপনাদের এই হৃদপিন্ড টাকে পূর্ণ মাত্রায় বিশ্বাষ করবেননা, যদিও নিজেকে সুস্থ সক্ষম মনে হতে থাকে।

মনে করবেন যে কোন মুহূর্তে, আপনার বুকের পিঞ্জরার খাচার মধ্যের এই সোনালী বর্ণের হলুদিয়া পাখিটি আপনার দুই চোখে ধুলো দিয়ে,কখন কোন বনে যে উড়ে চলে যাবে তা টের ও পাবেননা।

প্রশ্ন- তাহলে শুধুই কি হৃদপিন্ডের ত্রুটি? আমাদেরকে এ ব্যাপারে কিছুই করনীয় নাই?

উত্তর-

অত্যন্ত ভাল প্রশ্ন। না শুধু হৃদপিন্ডের ই ত্রুটি নয়। আমরা আমাদের অজ্ঞতার কারনে এমন অনেক কিছু করে চলেছি যা হৃদপিন্ডকে সঠিক ভাবে কাজ চালিয়ে যেতে বিঘ্নের সৃষ্টি করে।

ফলে হৃদপিন্ড তার দায়িত্ব পালনে অকালেই অসমর্থ হয়ে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।

অর্থাত আমাদের নিজেদের ক্ষতি, অজান্তে আমরা নিজেরা অহরহই করে চলেছি।

আপনার এই সবচাইতে উপকারী বন্ধু আপনার হৃদপিন্ডটা কী ভাবে সুস্থ ও সক্ষম থাকতে পারে, আপনাকে ১নং প্রাধান্য দিয়ে সর্বাগ্রে সর্বক্ষন লক্ষ্য রাখতে হবে।

পূর্ব হতে একটু সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি হৃদপিন্ডের বড় বড় সমস্যা হতে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।

এসম্পর্কে পরবর্তী কোন এক পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করব,ইনসা-আল্লাহ।

ততক্ষন ধৈর্য ধরে আরো কিছু জানতে আমার সংগে থাকুন। (১,২,৩,৪)



চিত্র- ১, হৃদপিন্ডের গঠন টি বাহির হতে যেমনটা দেখা যায়। এর বিভিন্ন অংসের নাম দেখুন।

https://www.youtube.com/watch?v=0NmWOHuy-o8

চিত্র-২ ইউ টিউবে হৃদপিন্ডের স্পন্দন দেখুন্য

https://www.youtube.com/watch?v=oHMmtqKgs50

চিত্র-৩, ইউ টিউবে হৃদপিন্ডের কাজ দেখুন।

পূর্বের পর্ব সমূহ এখানে দেখুন-

http://www.chkdr02.wordpress.com/

৩৬ তম পর্বের সূত্র সমুহ-

1.CIRCULATION CIRCUIT

http://antranik.org/blood-flow-of-the-heart/

SIGNIFICANCE

http://www.significancemagazine.org/details/webexclusive/1490091/Birth-Cohort-and-Coronary-Heart-Disease.html

TEXAS HEART INSTITUTE

http://www.texasheartinstitute.org/HIC/Topics/Cond/CoronaryArterySpasm.cfm

CORONARY BRANCH

http://www.cardiologysite.com/html/cx.html

বিষয়: বিবিধ

১৬৭৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

264688
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:২০
ফেরারী মন লিখেছেন : অসম্ভব ভালো লাগা একটি পোষ্ট। সরাসরি প্রিয়তে নিলাম। জাজাকাল্লা ফর ইউ
264729
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৬
আঃ হাকিম চাকলাদার লিখেছেন : @ফেরারী মন,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File