হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠ ও ভালভ সমূহ, হৃদপিন্ড যখন সম্প্রসারিত বা সংকুচিত হয়, তখন হৃদপিন্ডে যা ঘটে, ফুসফুস এর সহযোগিতা,৩৫(৪)পর্ব।
লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৫২:৩৬ সন্ধ্যা
বুকের মধ্যখানে অবস্থান করে অনবরত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনাকে জীবনভর বাচিয়ে রাখতেছে, যে হৃদপিন্ড নামক বস্তুটি, তার সম্পর্কে কী আপনি কিছু জানতে আগ্রহী ?
তাহলে আমার সংগে থাকুন।
আপনারা পূর্বের পর্ব সমূহে হৃদপিন্ড কী ভাবে কাজ করে তার কিছুটা জানতে পেরেছেন।
হৃদপিন্ড মানুষের রক্তকে অনবরত পাম্পের মাধ্যমে একটা CLOSED CIRCUIT SYSTEM এর মধ্য দিয়ে আবর্তন করাতে থাকে।
যদি কখনো আঘাতের কারণে বা রক্তচাপ (BLOOD PRESSURE) বৃদ্ধির কারণে আভ্যন্তরীন কোন অর্গানে রক্ত নালী ছিড়ে বা ফেটে গিয়ে এই আবদ্ধ CIRCUIT নালীর বাহিরে টিসুর মধ্যে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে INTERNAL HEMORRHAGE বা “আভ্যন্তরীন রক্তক্ষরন” হইয়াছে বলা হয়। এটা ভয়ংকর বিপজ্জনক। বিশেষ করে যদি মস্তিস্কে অথবা হৃদপিন্ডে ঘটে তখন আরো বেশী বিপজ্জনক হয়।
মস্তিস্কে এটা ঘটলে তখন সার্জারী করা জরুরী হয়ে পড়ে।
নীচের ১ নং চিত্রে একটি হৃদপিন্ডকে বাহির হতে (সম্মুখ দিক দিয়ে) যেরুপ দেখা দেখা যায়, তা দেখতে পাচ্ছেন।
এর অভ্যন্তরে কী কান্ড কারখানা ঘটতেছে, শুধুমাত্র বাহির হতে দেখে তা কিছুই বুঝতে পারবেননা।
শুধু শরীরের বিষয়েই বা কেন, এ ব্যাপারটি সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
তাই আসুন আজ আমরা আমাদেরই হৃদপিন্ডের অভ্যন্তরটায় কী আছে ও সেখানে কী ঘটতেছে তা একটু দেখে আসি। তবেই হৃদপিন্ডের কর্মকান্ড কিছুটা উপলদ্ধি করতে পারবেন।
কী করে হৃদপিন্ডের অভ্যন্তরে দেখবেন?
এটাকে না কেটে অভ্যন্তরে দেখবার কোনই উপায় নাই।
তা হলে আসুন হৃদপিন্ডটার ঠিক প্রায় মধ্যখান দিয়ে সমান দুই ভাগে এমন ভাবে ভাগ করে ফেলি যাতে সমান ভাবে এক দিকে হৃদপিন্ডের সম্মুখের অর্ধাংস ও অপর দিকে পিছনের অর্ধাংস পড়ে।(চিত্র-২ দেখুন)
বুঝতে সহজ হওয়ার জন্য, বর্ণণা টা নীচের ২নং চিত্রের নীচে দেওয়া হল, যাতে চিত্রটি সামনে রেখে প্রাকটিকাল দেখে দেখে হৃদপিন্ডের অভ্যন্তরটা সহজে চিনতে ও কীভাবে কাজ করে তা সহজে বুঝতে পারেন।
তাহলে আসুন চিত্রটি দেখুন ও নীচের বর্নণা পড়তে থাকুন।
চিত্র-১, সম্মুখ দিক হতে একটি হৃদপিন্ডকে যে ভাবে দেখায়
চিত্র-২, হৃদপিন্ডকে দুই খন্ডে বিভাজন করার পর সম্মুখ হতে এর অভ্যন্তরের দৃশ্যপট। এতে কী দেখা যাচ্ছে?
লক্ষ করুন, এতে দেখা যাচছ-
৪টি প্রকোষ্ঠ, যেমন-
১) RIGHT ATRIUM (ডান অলিন্দ)-
২) RIGHT VENTRICLE (ডান নিলয়)-
৩) LEFT ATRIUM (বাম অলিন্দ)-
৪) LEFT VENTRICLE (বাম নিলয়)-
লক্ষ্য করুন ডান ও বাম অংসের মধ্যখানে শক্ত ও পুরু প্রাচীর (Partition) রয়েছে, যা উভয় পার্শের রক্তকে পৃথক রাখার নিশচয়তা বিধান করে।
মনে রাখবেন সব সময় ডান পার্শের কক্ষ দুইটি (ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়) শরীর হতে বহন করে আনা কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত এনে ফুসফুসে অক্সিজেন (O2) মিশ্রনের জন্য পাম্প করে পাঠিয়ে দেয়।
এবং বাম পার্শের প্রকোষ্ঠ দুইটি(বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়) ফুসফুস হতে অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত বিশুদ্ধ রক্ত এনে, পাম্প করে সর্ব শরীরে পাঠিয়ে দেয়।
হৃদপিন্ডের দুই পার্শের এই সম্পূর্ণ দুই বিপরীত ধরনের রক্ত পাশাপাশি থাকিলেও কখনো মিশ্রিত হতে পারেনা। কারণ এদের মাঝখানে শক্ত প্রাচীর থাকে। উপরে চিত্র-২ দেখুন।
এবার হৃপিন্ডের এই ৪টি প্রকোষ্ঠ এর বর্ণণা জানুন-(চিত্র-২ দেখুন)
১) RIGHT ATRIUM (ডান অলিন্দ)-হৃদপিন্ড সম্প্রসারিত হইলে SUPERIOR VENA CAVA ও INFERIOR VENA CAVA নামক সবচেয়ে মোটা দুইটি ধমনী এর মাধ্যমে, এখানে সর্ব শরীর হতে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত দুষিত রক্ত আনয়ন করা হয়।
প্রশ্ন- শরীরের কোথা হতে অনবরত এই বিপুল পরিমানের কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) আসে? শরীর তো বায়ূ মন্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) কখনই গ্রহন করেনা, বরং অনবরত গ্রহন করে অক্সিজেন?
উত্তর- খুবই ভাল প্রশ্ন। এই কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) আমাদের শরীরের প্রতিটা কোষে অনবরত শরীরের বর্জ পদার্থ হিসাবে উৎপন্ন হচ্ছে, যেমনটা কারখানা ফ্যাক্টরী চললে সেখানে বর্জ পদার্থ উৎপন্ন হয়, এবং তা বর্জ্য ও ক্ষতিকর হিসাবেই ফেলে দেওয়া হয়।
আমাদের শরীরের ৬০০ ট্রিলিয়নের প্রত্যেকটি কোষকে জীবিত থাকার জন্য অনবরত বাইরের যে কোন বৃহৎ ও জটিল ফ্যাক্টরীর চাইতেও অনেক বৃহৎ ও জটিল কাজ মৃত্যু পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা ব্যাপী চালিয়ে যেতে হয়। তবেই না আমাদের কোষগুলী তথা আমরা বেচে থাকি। আমরা ম্যাজিকের মত বেচে থাকতে সক্ষম নই। এটা আর এক ঘটনা। এখানে বলতে গেলে প্রবন্ধটি দীর্ঘ ও জটিল হয়ে যাবে। তাই এ গল্পটা আর একদিন শুনবেন। (কোষ কী ? ১৬তম পর্ব দেখুন)
২) RIGHT VENTRICLE (ডান নিলয়)-সংগে সংগে ডান অলিন্দে আনীত রক্ত TRICUSPID ভালভ এর মধ্য দিয়ে, ডান নিলয়ে চলে যায়।
৩) LEFT ATRIUM (বাম অলিন্দ)-হৃদপিন্ড সম্প্রসারিত হইলে ফুসফুস হতে PULMONARY VEIN(ফুসফুস শিরা) এর মাধ্যমে অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত বিশুদ্ধ রক্ত এখানে চলে আসে।
৪) LEFT VENTRICLE (বাম নিলয়)- বাম অলিন্দে আনীত রক্ত সংগে সংগে MITRAL VULVE এর মধ্য দিয়ে বাম নিলয়ে চলে যায়।
এবার হৃদপিন্ডের ভালভ সম্পর্কে জানুন-
(ভালব কী? কী ভাবে কাজ করে পর্ব-৩৪ দেখুন)
হৃদপিন্ডের ৪টি ভালব আছে, যেমন-
১) TRICUSPID ভালভ-এখানে ৩টি ঢাকনা কাজ করে। এজন্য একে TRICUSPID ভালব বলে। এটা ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মধ্যখানের প্রাচীরের ছিদ্র পথকে নিয়ন্ত্রন করে। এই ভালভ এই ছিদ্র পথকে উন্মুক্ত করে নীচে ডান নিলয়ের দিকে। অর্থাৎ এটা এমন ভাবে সাজানো যে যখন হৃদপিন্ড সম্প্রসারিত হয় তখন ডান অলিন্দে আনীত রক্ত এই ছিদ্রপথের মধ্য দিয়ে নীচে ডান নিলয়ে ঢুকে যায় ।
কিন্তু যখন হৃদপিন্ড সংকোচন করে তখন আভ্যনতরীন চাপে এই ভালবটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটে যায়,আর রক্ত উপরে ডান অলিন্দের দিকে REGURGITATE করতে পারেনা। ফলে এই রক্ত “ফুসফুস-শিরা” এর মধ্য দিয়ে ফুসফুসে চলে যায়।
২) PULMONARY VALVE-এটা ডান নিলয়ের উপরের দিকে যেখানে PULMONARY ARTERY (ফুসফুস শিরা) এর মুখ অবস্থিত, সেইমুখে এটা ফিট করা রয়েছে। এই ভালভটি ছিদ্র পথটিকে OPEN বা উন্মুক্ত করে বাহিরের দিকে, অর্থাৎ যে রক্ত নালী পথ ফুসফুসে চলে গিয়েছে। এটা এমন ভাবে ফিট রয়েছে যাতে, হৃদপিন্ড যখন সংকুচিত হয়ে অভ্যন্তরে চাপের সৃষ্টি করে তখন ডান নিলয়ে আনীত কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত এই ভালভ টিকে খুলে দিয়ে বহি মুখে উন্মুক্ত করে দেয়। আর তখন এই কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত দুই পার্শে অবস্থিত দুইটি ফুসফুসে প্রবাহিত হয়ে যায়।
তাহলে এখানে মনে রাখুন হৃদপিন্ড সংকোচন করলে ডান নিলয়ের কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত প্রবাহিত হওয়ার একমাত্র উন্মুক্ত ছিদ্র পথ এই PULMONARY ARTERY (ফুসফুস শিরা) এর মুখ, যার মধ্য দিয়ে এই রক্ত ফুসফুসে প্রবাহিত হয়ে যায়।
এই রক্ত ফুসফুসে গেলে ফুসফুস প্রস্বাসের মাধ্যমে রক্তের এই কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)বায়ু মন্ডলে ছেড়ে দেয়। একই সংগে ফুসফুস নিস্বাষের মাধ্যমে বায়ুমন্ডল হতে অক্সিজেন (O2) সংগ্রহ করে এই রক্তেই মিশ্রিত করে দেয়।
তখন এই অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত রক্ত, হৃদপিন্ড সম্প্রসারিত হইলে PULMONARY VEIN (ফুসফুস ধমনী) এর মধ্য দিয়া হৃদপিন্ডের বাম অলিন্দে চলে আসে।
এবং সাথে সাথেই এই রক্ত MITRAL VALVE এর ছিদ্র পথ দিয়ে, বাম নিলয়ে পৌছে যায়।
এরপর যখন হৃদপিন্ড সংকোচন করে তখন এই রক্ত, সবচেয়ে মোটা ধমনী AORTA এর মুখের AORTA VULVE এর ছিদ্র পথ দিয়ে ঢুকে শরীরের সমগ্র কোষ তথা ৬০০ ট্রিলিয়ন কোষকে সরবরাহ করে।
সারাংস-
মনে রাখবেন, হৃদপিন্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারন উভয় পার্শের (ডান ও বাম) কাজ একই সংগে তালে তাল মিশিয়ে সমান ভাবে করতে থাকে। অর্থাত হৃদপিন্ড সম্প্রসারিত হইলে, ডান পার্শে সর্ব শরীর হতে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) মিশ্রিত রক্ত চলে আসে, আর ঠিক তখনি বাম পার্শে ফুসফুস হতে অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত রক্ত চলে আসে।
আবার এর পরক্ষনেই যখন হৃদপিন্ড সংকোচন করে, তখন ডান পার্শের কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) মিশ্রিত রক্ত ডান নিলয় হতে উভয় ফুসফুসে চলে যায়, আর ঠিক তখনি হৃদপিন্ডের বাম পার্শের অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত রক্ত, বাম নিলয় হতে সর্ব শরীরে চলে যায়।
হৃদপিন্ড এভাবে সর্বক্ষন ছন্দের তালে তাল মিশিয়ে সংকোচন ও সম্প্রসারনের মধ্য দিয়ে আমাদের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে।
হৃদপিন্ডের এই ছন্দের তাল এর পতন হইলেই আমাদের জীবন ও শেষ।
এইটাই রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
প্রশ্ন- কেন আমাদের ৬০০ ট্রিলিয়ন কোষের প্রত্যেকটি কোষকে এভাবে বায়ুমন্তল হতে ফুসফুস ও রক্তের মাধ্যমে অনবরত অক্সিজেন (O2)সরবরাহ করা লাগে?
উত্তর- খুবই ভাল প্রশ্ন। খাদ্য ও অক্সিজেন ছাড়া আমাদের কোষ গুলী তথা আমরা জীবিত থাকতে পারিনা। আগেই বলেছি আমাদের প্রতিটা কোষকেই এক একটা বৃহৎ ফ্যক্টরী বা জগত বলতে পারেন।
এই কোষ গুলীকে জীবিত থাকতে গেলে এমনি এমনিই জীবিত থাকতে পারেনা। এদের বেচে থাকার জন্য একটি সাক্ষাত “শক্তি”(ENERGY)ও নির্দিষ্ট “তাপ মাত্রা” প্রয়োজন।
কোষে এইটা উৎপাদন করে আমাদের মুখ দিয়ে সরবরাহ কৃত খাদ্যবস্তুর সারাংস ও নাক দিয়ে সরবরাহ কৃত অক্সিজেন, এর মধ্যে একটা জটিল বিক্রিয়ার মাধ্যমে । তবেই আমরা বেচে থাকি।
আমাদের ব্যবহারিক জীবনের ছোট্ট একটা উদাহরণ দেখুন-
আমরা চুলায় পাক করতে আগুনের উত্তাপ প্রয়োজন হয়। কীভাবে আগুনের উত্তাপ পাই?
এর জন্য আমরা চুলায় কাঠ দিয়া আগুন ধরিয়ে এই উত্তাপ শক্তি পাই। এখানেও এই তাপ শক্তি উৎপাদন হতে অক্সিজেন (O2)এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেকানকার বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন না থাকিলে কাঠ জ্বলতেও পারবেনা ও তাপ ও দিতে পারবেনা। আবার কাঠ জ্বলে জ্বলে তাপ দেয় ও একই সংগে বায়ুমন্ডলে বর্জ পদার্থ হিসাবে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ও ছড়িয়ে দেয়।
ঠিক তদ্রুপই আমাদের কোষ গুলি আমাদের খাদ্য বস্তুর সারাংস গুলিকে অক্সিজেন (O2)এর সংস্পর্ষে কাঠের মত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে শরীর কে শক্তি ও তাপ দেয় আর একই সংগে ক্ষতিকর বর্য্য হিসাবে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) উৎপন্ন করে।
আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা। ৯৮০ ফাঃ। এই তাপমাত্রাটা শরীরের কোষগুলী এভাবে অনবরত খাদ্যবস্তুকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে অনবরত ধরে রাখে।
নইলে আমরা শীতল হয়ে মারা যাব।
কোষের মধ্যের যে অতিশয় ক্ষুদ্র অর্গানটি বহু রকম ENZYME, CO-ENZYME ব্যবহার করে অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই শক্তি উৎপাদনের কাজটি করে তার নাম MITOCHONDRIA।
আর এই প্রক্রিয়াটার নাম METABOLISM।
এখানে বিস্তারিত বলতে গেলে প্রবন্ধটি দীর্ঘ ও জটিল হয়ে যাবে। তাই এ গল্পটা আর একদিন শুনবেন।
৩) MITRAL VULVE- বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের প্রাচীরের মধ্য খানে থাকে।এটা ২টা ঢাকনা দ্বারা তৈরী। এটা ছিদ্র পথকে নীচের দিকে অর্থাৎ বাম নিলয়ের দিকে OPEN বা উন্মুক্ত করে। অর্থাৎ বাম অলিন্দের রক্তকে বাম নিলয়ে পৌছে দেয়।(২নং চিত্র লক্ষ করুন)
উপরেই জেনেছেন।
৪) AORTIC VULVE- এটা বাম নিলয়ের উপর দিকে শরীরের সবচেয়ে মোটা ধমনী, AORTA, যার মধ্য দিয়ে সমগ্র শরীরে অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করা হয়, তার মুখে অবস্থিত। এই ভালভ এই ছিদ্র পথটাকে বাহিরের দিকে OPEN বা উন্মুক্ত করে। অর্থাত এই অক্সিজেন (O2) মিশ্রিত রক্ত তখন AORTA এর মধ্য দিয়ে সমগ্র শরীরে পৌছে যায়। (২নং চিত্র লক্ষ করুন)
উপরেই জেনেছেন।
এবার ২নং চিত্রটি আবার একটু লক্ষ্য করুন –
RIGHT ATRIUM (ডান অলিন্দ)এ OPEN বা উন্মুক্ত হয়েছে
SUPERIOR VENA CAVA, ও INFERIOR VENA CAVA নামক দুইটি শরীরের সবচেয়ে মোট শিরা। এর কী কাজ জানেন? এই ২ টি মোটা শিরা সর্ব শরীর হতে অসংখ্য ছোট ছোট শিরার মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত বহন করিয়া হৃদপিন্ডের এই RIGHT ATRIUM (ডান অলিন্দ)নামক প্রকোষ্ঠে আনে।
SUPERIOR VENA CAVA, শরীরের উপরি অংশের সমগ্র কোষ হতে আর INFERIOR VENA CAVA, আনে শরীরের নিম্নাংসের সমগ্র কোষ হতে।
কয়েকটা বিষয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করুন-
১) ডান অলিন্দে ও ডান নিলয়ে শিরার মধ্য দিয়ে আগত শুধুমাত্র একটি বিশেষ ধরনের রক্ত ধারন করে। আর তাহল অবশ্যই বুঝতে পারছেন, এই রক্ত টা শুধু মাত্র কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত, তাতে কোনই সন্দেহ নাই।
অন্য কথায় একটা নীরোগ হৃদপিন্ডে, তার ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ে বা তার ডান পার্শের প্রকোষ্ঠে শুধু মাত্র কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)মিশ্রিত রক্ত থাকতেছে। এই ডান পার্শে কোন অক্সিজেন (O2)মিশ্রিত রক্ত থাকতে পারেনা।
২) হৃদপিন্ডের বাম পার্শের প্রকোষ্ঠে, অর্থাৎ বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ে ঠিক এর বিপরীত, অর্থাৎ এখানে শুধু মাত্র অক্সিজেন (O2)মিশ্রিত রক্ত থাকতেছে।
৩) উভয় বিপরীত ধর্মী রক্ত হৃদপিন্ডের মধ্যে একেবারে পাশাপাশি থাকলেও এরা যাতে মিশ্রিত না হতে পারে, তার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে, উভয়ের মাঝে শক্ত প্রাচীরের ব্যবস্থা করে।
যদি জন্মগত ভাবে জেনেটিক বৈকল্যের কারনে কারো কারো এই প্রাচীরে ছিদ্র থেকে যায়। তখন তাদের এই উভয় রক্ত মিশ্রিত হয়ে জীবন বিপন্ন করে তোলে। তখন হৃদপিন্ড শরীরকে একেবারে বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করতে সক্ষম হয়না। (১,২,৩)
তখন তাদের সার্জারীর মাধ্যমে এই ছিদ্র মেরামত করা লাগে।
এরুপ একটি রোগীর বাস্তব বর্নণা জানতে পড়ুন আমার এই প্রবন্ধ-
আছে কী কোন এমন হৃদয়বান ব্যক্তি যিনি এই তরুনের হৃদপিন্ড অপারেশনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করিয়া তার জীবন টা রক্ষায় অবদান রাখতে পারেন?FALLOTS TETRA LOGY (৩১ তম পর্ব)
https://www.amarblog.com/index.php?q=HAKIM-CHAKLADAR/posts/180269
সংগে থাকুন আরো জানতে পারবেন, ইনশা আল্লাহ।
পূর্বের পর্ব সমূহ এখানে দেখুন-
http://www.chkdr02.wordpress.com/
৩৫ তম পর্বের সূত্র সমুহ-
FULL HEART DIAGRAM
http://www.cdc.gov/heartdisease/about.htm
HEART SECTION DIADRAM
. http://en.wikipedia.org/wiki/Circulatory_system
3 Circulatory System
http://www.texasheart.org/HIC/Anatomy/
বিষয়: বিবিধ
২২২৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন