মৌদুদীবাদের দশচক্র জাতিকে জানাতেই হবে।
লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ২৫ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:৩৪:২৭ বিকাল
মৌদুদীবাদের দশচক্র জাতিকে জানাতেই হবে।
২৩শে আগষ্ট ৪৪ মুক্তিসন (২০১৪)
লেখক-হাসান মাহমুদ
প্রকাশক-আঃ হাকিম চাকলাদার (লেখকের অনুমোদনক্রমে)
"দশচক্রে ভগবান ভুত" - ধুর্তরা কোন কিছুকে কয়েকবার ঘূর্ণন দিয়ে উল্টো কিছু বানিয়ে দিতে সুদক্ষ।
পেট্রলের দাম বাড়লে পরিবহন খরচ বেড়ে গিয়ে সবকিছুর দাম বাড়ে আর সেই হ্যাপা আমাদের এড়াবার উপায় নেই। মৌদুদীবাদীরা যে সুদক্ষ প্ল্যানে আমাদের সংস্কৃতি/রাজনীতি আক্রমণ/অনুপ্রবেশ করেছে সেটাও আমাদের এড়াবার উপায় নেই। শারিয়া আইন তার কেন্দ্রবিন্দু, তার এসব তথ্য জাতিকে জানাতেই হবে। এর অনেক কিছুই অবিশ্বাস্য কিন্তু কোনটাই আমার কথা নয়, দেখাচ্ছি ইসলামি দলিলের নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে যা আমার বইতে দেয়া আছে।
১. ইমাম আবু হানিফা, শাফি, মালিক ও হানবল লিখেছিলেন সামান্যই। তাঁরা সেগুলোকে "আল্লার আইন" তো বলেনই নি, রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবেও চালাতে দেননি ও তাঁদের নামে মজহাবও চাননি।
২. পরে তাঁদের ছাত্ররা বহু আইন যোগ করে কয়েক হাজার আইনের মজহাব তৈরী করেন। হান্বলী আইন “আল মুঘনি” আনেন ইমাম কাদামাহ, ইমামের প্রায় ৪০০ বছর পরে ! কোরানে প্রত্যক্ষ আইন আছে ডজন খানেক হাদিসে কয়েকশ' অথচ হানাফি-শাফি শারিয়াতে আইন ছয় হাজারের বেশী। তার অনেক আইনই ভালো, কিছু আইন শুধুমাত্র তখনকার গোত্রীয় সমাজের জন্য, কিছু আইন চিরকালীন আর কিছু নারী-বিরোধী যা কোরান-রসুলের বিরোধীও।
৩. খলিফারা ইমামদের ওপর যে নির্মম অত্যাচার করেছে তা ভাষায় বলা সম্ভব নয়। মদিনার রাস্তায় সৈন্যেরা ইমাম মালিককে পিটিয়ে হাত মুচড়িয়ে কাঁধ থেকে বিচ্যুত করে, দীর্ঘকাল ইমাম শাফি'র হাত পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা হয়। খলিফারা জেলখানার অন্ধকারায় দীর্ঘকাল বন্দী রেখে অমানুষিক প্রহার করে ইমাম হানিফা ও ইমাম হানবলের হাড় ভেঙ্গে দেয় ও ইমাম হানিফাকে (ইমাম তাইমিয়াকেও) বিষ দিয়ে খুন করে।
৪. ইমাম মালিককে খলিফা প্রস্তাব দিয়েছিল তাঁর আইন কাবা'র দেয়ালে ঝুলিয়ে রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে বলবৎ করবে। এমন সম্মানের প্রস্তাবেও ইমাম মালিক রাজী হন নি, তিনি বলেছিলেন "আমি এখানকার ইমাম, অন্য জায়গায় তাদের ইমাম আছেন"। অর্থাৎ আমাদের ইমামদেরও উচিত বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী জাতিকে ইসলামী দিকনির্দেশ দেয়া, অতীতের ইমামদের অন্ধ অনুসরণ না করা।
৫. চার মযহাবের অনুসারীরা নিজেদের মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ইমাম শাফিকে ইমাম মালিকের অনুসারীরা পিটিয়ে হত্যা করে।
৬. হানাফি-শাফি'দের মধ্যে বিয়ে পর্য্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়, কেউ অন্য মযহাবের ইমামের পেছনে নামাজ পর্য্যন্ত পড়ত না।
৭. তারা কাবা'র চার কোণায় চারটি মিম্বর বানিয়ে তাদের ইমামের পেছনে আলাদা নামাজ পড়ত। আঠারো শতাব্দীতে ওহাবীরা এগুলো ভেঙ্গে দেয়। (ওহাবী তাণ্ডবের কারণে ১৮০৩ থেকে ১৮০৯ এই ৭ বছর কাবা'র আশেপাশের মুসলিম ছাড়া বিশ্ব-মুসলিমের জন্য হজ্ব কার্য্যত: বন্ধ ছিল)।
৮. এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শারিয়া-ইমাম চারজন, হাদিস-ইমাম সাতজন (ইমাম মালিক হাদিস ও শারিয়া ইমাম দুই-ই)। তাঁদের জীবনচরিতে দেখা যায় শারিয়া আইন লেখা হয়েছে হাদিস সংকলনের মোটামুটি এক প্রজন্ম আগে। জাল হাদিস অনেক আছে তা সবাই স্বীকার করেন, এটা খুবই সম্ভব যে হিংস্র ও নারী-বিরোধী আইনগুলোকে বৈধ করার জন্য রসুলের নামে জাল হাদিস বানানো হয়েছে। বলা দরকার, মুসলিম ইতিহাসে একজনও নারী শারিয়া-ইমাম নেই, মানবজীবনে এসব আইনের প্রভাব নিয়ে কোনো সমীক্ষা নেই।
৯. কোরানে "শারিয়া" শব্দ আছে মাত্র ৪ জায়গায়, যার কুরানিক আধ্যাত্মিক অর্থ আত্মিক মুক্তির মূল্যবোধ বা নীতিমালা। ইসলামে রাজতন্ত্র অবৈধ অথচ মুসলিম খেলাফতের ইতিহাস রাজতন্ত্রেরই ইতিহাস। সেটাকে ইসলামী হিসেবে বৈধ করার জন্য অতীতের প্যালেস ইমামেরা "মূল্যবোধ"-কে "রাষ্ট্রীয় আইন" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এখনো মৌদুদীবাদীরা সেটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই খুন করছেন খুন হচ্ছেন। "শারিয়া" শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো মাটি/বালুর ওপরে উট বা পশুদের পানির কাছে যাবার পায়ে চলার পথ।
১০.(ADDED) ইমাম হানিফা মুসলিমদেরকে নিজের নিজের মাতৃভাষায় নামাজ পরার ফতোয়া দিয়েছিলেন, পরে তা ফিরিয়ে নেন, - সম্ভবত: ইসলামের নামে ভাষা-ঔপনবেশিক শক্তির চাপে।
ওদের হাজারো মিথাচার ও সত্যগোপনের এটা আংশিক তথ্য-তালিকা মাত্র।
বই ও ভিডিও এর লেখকওয়ার্ল্ডমুসলিমকংগ্রেসেরউপদেষ্টাবোর্ডেরসদস্য, দ্বীনরিসার্চসেন্টারহল্যাণ্ড-এররিসার্চএসোসিয়েট, মুসলিমসফেসিংটুমরো‘রজেনারেলসেক্রেটারী, ফ্রিমুসলিমসকোয়ালিশন-এরক্যানাডাপ্রতিনিধি, আমেরিকানইসলামিকলিডারশীপকোয়ালিশনেরপ্রতিষ্ঠাতাসদস্যএবংখুলনা‘র “সম্মিলিতনারীশক্তি”রউপদেষ্টা। শারিয়ারওপরেবই“শারিয়াকিবলে, আমরাকিকরি” ওআন্তর্জাতিকপ্রশংসিতডকু-মুভি “হিল্লা“, “নারী” ও “শারিয়াপ্রহেলিকা” –লণ্ডনওটরন্টো‘রস্কুলেধর্মীয়শিক্ষাক্লাসেদেখানোহয়।
লেখকেরনিজস্বসাইটঃ http://hasanmahmud.com/
বিষয়: বিবিধ
১১২৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সকালে এই পোষ্ট একবার দেছেন আমিও নিজেও মন্তব্য কইরাছি। অনেক ব্লগার সেখানে মন্তব্য কইরাছে। আন্নে কোন প্রশ্নের জওয়াব দেন নাই, কারুন আন্নের কোন উত্তর আছিল না। আন্নে এখন পুরা পোষ্টটাই মুইছা দিয়া নয়া কইরা সেই আগের পোষ্ট কে আবারো পোষ্টাইছেন!
আন্নে তো উপরের মাথা আর নিচের মাথা দুই টাই এক কইরা দিছেন? নাকি এক মাথার বুদ্ধি জ্ঞান অন্য মাথায় চইড়া বসছে!
সকালের পোষ্ট মুইছা দিয়া একই লেখা আবারো পোষ্টানোর কারণ কি বুঝাই কইবেন, নইলে আঁই আন্নের পোষ্টের বিরুদ্ধে নতুন পোষ্ট দিমু আর ফ্রেশ মল বাজারে বাজারে করমু।
সকালে এই পোষ্ট একবার দেছেন আমিও নিজেও মন্তব্য কইরাছি। অনেক ব্লগার সেখানে মন্তব্য কইরাছে।
দুখিতঃ, ভূলে পোষটি রিপিট করে ফেলেছিলাম।
পরে নূতন টা মুছতে গিয়ে ভূল বসতঃ আগেরটা মুছে ফেলেছি, অথচ সেখানে ১০ টা মন্তব্য ও দেখছিলাম।
এ জন্য আমি নিজেই অনূতপ্ত।
আপনারা আবার মন্তব্য করুন।
আশা করি ভূলটা বুঝতে পেরেছেন।
পোষ্টে কি বলতে চাইছেন কিছুই বুঝলাম না।
"১০.(ADDED) ইমাম হানিফা মুসলিমদেরকে নিজের নিজের মাতৃভাষায় নামাজ পরার ফতোয়া দিয়েছিলেন, পরে তা ফিরিয়ে নেন, - সম্ভবত: ইসলামের নামে ভাষা-ঔপনবেশিক শক্তির চাপে।" -সম্ভবত বলে একটা অভিযোগ দিয়ে দিলেন। এরপরে সম্ভবত শব্দটি বাদ দিয়ে বাকী অভিযোগটা দিলেই হবে।
ভিন্ন ভাষায় নামাজ আদায় কি ভাবে সম্ভব? কার অনুবাদ অনুসরণ করবো? কুরআনের তরজমা কুরআন নয়, কুরআন বুঝার একটা উপায় মাত্র।
মন্তব্য করতে লগইন করুন