ডিএনএ কী? ১৭ তম পর্ব। ফিজিওলজী অথবা মেডিসিনে ২০১৩ এর নোবেল বিজয়ীগন, স্নায়ু কোষ কী? (২)

লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ৩১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৮:৩৮:৫২ রাত

ডিএনএ কী? ১৭ তম পর্ব।

ফিজিওলজী অথবা মেডিসিনে ২০১৩ এর নোবেল বিজয়ীগন, স্নায়ু কোষ কী? (২)



বাম হতে: Randy W. Schekman, Thomas C. Südhof and James E. Rothman.(NY TIMES)

১।Randy W. Schekman

জন্ম: ৩০ ডিসেম্বর ১৯৪৮, St. Paul, MN, USA

২। Thomas C. Südhof

জন্ম: ২ ২ ডিসেম্বর ১৯৫৫, Goettingen, Germany

৩। James E. Rothman

জন্ম: ৩রা নভেম্বর ১৯৫০, Haverhill, MA, USA

(প্রীয় পাঠক বর্গ- এই পর্বটি ঠিক এর পূর্বের ১৬ তম পর্বের ধারাবাহিকতার অংস বিশেষ। অতএব এই পর্বটি পড়ার পূর্বেই ১৬ তম পর্ব অবশ্যই পড়ে লইবেন। অন্যথায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।)

উক্ত ৩ জন বিজ্ঞানীদের জন্য নোবেল প্রাইজ অর্গানাইজেসন ২০১৩ সালের মেডিসিন অথবা ফিজিওলজীর উপর ৭ই অক্টোবর,সোমবার নোবেল প্রাইজ অর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন।(১)

তারা কী আবিস্কার করেছেন?

১৬ তম পর্বে কিছুটা বলা হয়েছিল। কোষ কীভাবে তাদের উৎপাদিত দ্রব্য কনা তাদের লক্ষ্মবস্তু- কোষে অথবা কোষের আভ্যন্তরীন কোষের ক্ষুদ্রাংসে যথা সময়ে যথা স্থানে পৌছে দেয়, এইটাই তাদের আবিস্কারের বিষয় বস্তু ছিল।

আবিস্কারটা বুঝাবার জন্য পূর্বের ১৬ তম পর্বে সাধারণ কোষ এর বর্নণা দেওয়া হয়েছে।

তবে James E. Rothman এর গবেষনা টা ছিল মস্তিস্কের স্নায়ু কোসের উপর।

এ কারণে তার পর্যবেক্ষনটা বুঝতে গেলে স্নায়ূ কোষ (NERVE CELLবা NEURON) এর গঠন ও কাজ কাম একটু জানা দরকার। এ জন্য আমি স্নায়ূকোষ সম্পর্কে মূল বিষয় বস্তুর পূর্বেই এখানে যৎ কিঞ্চিৎ আলোচনা করতে চাচ্ছি।

আসুন তাহলে দেখুন স্নায়ুকোষ গুলী কী অদ্ভুৎ ভাবে কাজ করে থাকে।

কী কী অন্তর্ভূক্ত এই স্নায়ূতন্ত্রের মধ্যে, এবং কী কাজ?

স্নায়ূতন্ত্রের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত –

১. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (CENTRAL NERVOUS SYSTEM বা CNS)- এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত মস্তিস্ক (BRAIN)-যেটা সিদ্ধান্ত গ্রহন করে এবং সেই সিদ্ধান্তকে মেরুমজ্জা (SPINAL CORD) পর্যন্ত পৌছাইয়া দেয়।

২. প্রান্তিক স্নায়ূতন্ত্র (PERIPHERAL NERVOUS SYSTEM বা PNS)-এটা মস্তিস্কের নির্দেশকে মেরুমজ্জা হতে কাজ করার জন্য কর্মকারী অরগানকে (অর্থাৎ যে অর্গানটা প্রকৃতপক্ষে কাজটি করবে যেমন,মাংস পেশী) পৌছাইয়া দেয়।

বিজ্ঞানীদের আজ এটা জানা একটা বড় চ্যালেঞ্জ যে, মস্তিস্ক কী ভাবে অসংখ্য বহু মুখি কাজ করতে পারে।

আমরা আজ এখনো জানতে পারিনাই যে, আমাদের এই মস্তিস্কে কতখানি ক্ষমতা ও যোগ্যতা ধারন করে আছে। আমরা এটাও জানতে পারিনাই এই ক্ষমতার কতটুকু এপর্যন্ত কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছি, আর কতটুকু এখনো কাজে লাগাই নাই।

স্নায়ূকোষ(NEURON) কী?

NEURON(স্নায়ুকোষ) হইল মস্তিস্কে ডাটা পরিবেশন করার একটা সংবেদনশীল ক্ষুদ্র একক।একটা মস্তিস্কে গড়ে অন্ততঃ ১০০ বিলিয়ন NEURON রয়েছে, এবং প্রতিটা NEURON তার পার্শবর্তী অন্য প্রায় ১০০০ NEURON এর সংগে সংযুক্ত থাকে । এভাবে মস্তিস্কটি NEURON এর একটি বিশাল জটিল নেটওয়ার্ক আকারে পরিণত হয়ে আছে। প্রত্যেকটা NEURON প্রায় ১০০০ NEURON হতে বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE পায়। এবং যদি সংকেৎ টির বৈদ্যুতিক CHARGE এর শক্তির পরিমানটা যথেষ্ঠ শক্তিশালী হয়, তাহলে NEURON টি একটি ACTION POTENTIAL ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক CHARGE টির প্রবাহ আরম্ভ করবে। এটাকে নিউরোনের FIRING ও বলে। ঠিক যেমন, গুলী ভর্তী বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেওয়া মাত্রই বন্দুকের গুলীটা মুহুর্তের মধ্যে লক্ষ্য বস্তুকে আঘাত করে ঠিক তদ্রুপই, DENDRITE হতে গৃহীত বৈদ্যুতিক CHARGE এর তথ্যটি কোষে ACTION POTENTIAL উৎপাদন করলেই কোষের ট্রিগার টিপা হয়ে যায় এবং সংগে সংগেই NEURON, AXON এর মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE টি অন্য NEURON এ বা লক্ষ্য বস্তু-কোষে পৌছে দেয়।

(৭,৮,৯,১০)

স্নায়ূকোষ দেখতে কেমন ও কী করে?

হ্যাঁ, এটা মাইক্রোস্কোপ ছাড়া খালি চোখে দেখা যায়না। নীচে (চিত্র-১) একটি পৃথক NEURON ও (চিত্র-২) ২টি NEURON এর সংযুক্তি দেখানো হয়েছে।

লক্ষ করুন একটা NEURON এর বিভিন্ন অংস গুলি দেখা যাচ্ছে যেমন-

১। DENTRITES- বৈদ্যুতিক সংকেৎ গ্রহন করে ২। কোষ বডি বা SOMA-সংকেতটা পাঠানোর সিদ্ধান্ত লয়। ৩। AXON HILLOCK- কোষ বডি ও AXON এর সংযোগ স্থল । এখানে সর্বপ্রথম ACTION POTENTIAL আরম্ভ হয়। ৪। AXON –ACTION POTENTIAL আকারের বৈদ্যুতিক সংকেৎটা AXON TERMINAL এ পৌছে দেয়।

৫। AXON TERMINAL- বৈদ্যুতিক সংকেৎটা SYNAPSE পেরিয়ে পরবর্তী NEURON কে ধরিয়ে দেয়।

আরো দেখতে পাবেন, AXON টার প্রান্ত (TERMINAL END) অন্য একটি নিউরোনের DENDRITE এর প্রান্তের সংগে কী ভাবে সংযুক্ত হয়েছে মাঝখানে অতি সামান্য ফাকা জায়গা রাখিয়া, পরস্পর সংস্পর্ষ ছাড়াই।

দুই নিউরোনের এই সংযুক্তির স্থান কে বলা হয় SYNAPSE, এবং উভয়ের মাঝখানের ফাকা জায়গাটাকে বলা হয় SYNAPTIC CLEFT. (চিত্র-২ ও ৪ দেখুন)

এই পর্বের মূল আলোচ্য বিষয়,

১.কী ভাবে একটি নিউরোন অন্য একটি নিউরোন হতে সাংকেতিক বৈদ্যুতিক CHARGE গ্রহন করার পর সেটা অন্য নিউরোনকে পাঠিয়ে দেয়।

২. কী ভাবে প্রথম নিউরোনটি তার সাংকেতিক বৈদ্যুতিক CHARGE দ্বিতীয় নিউরোনকে, এদের সংযোগ স্থলের (SYNAPSE) এর ফাকা জায়গা (SYNAPTIC CLEFT) কে অতিক্রম করায়।

মূলত: James E. Rothman এর আবিস্কারটার মূল বিষয় বস্তুটাই ছিল এই SYNAPTIC CLEFT এর উপর। অর্থাৎ তিনি গবেষনা করে দেখিয়েছিলেন, কী ভাবে মস্তিস্কের একটি নিউরোন আর একটি নিউরোনকে এই SYNAPTIC CLEFT এর মধ্যদিয়ে, তার সঠিক প্রয়োজনের সময়ই সাংকেতিক বৈদ্যুতিক CHARGE টি পৌছে দেয়।

শুধু মাত্র তার এই আবিস্কার টুকুই বুঝাবার জন্য এটা আগে জানতে হচ্ছে যে নিউরোন কী এবং কীভাবে তার বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE এর প্রবাহ এক নিউরোন হতে অন্য নিউরোনে পাচার করে।

আসুন তাহলে আমরা আগে এগূলী একটা একটা করে দেখি। এর পর পরবর্তী পর্বে তাদের আবিস্কারটার মূল বিষয় বস্তু ধরে ফেলতে সক্ষম হবেন।

১.কী ভাবে একটি নিউরোন অন্য একটি নিউরোন হতে বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE এর প্রবাহ গ্রহন করার পর সেটা অন্য নিউরোনকে পাঠিয়ে দেয়।

NEURON এর DENTRITES গুলী অসংখ্য শাখা প্রশাখা সম্বলিত। এটা কোন প্রাপ্ত তথ্যকে বৈদ্যুতিক CHARGE আকারে পেয়ে মূল কোষে (SOMA) পাঠিয়ে দেয়।

মূল কোষ তখন তথ্য বিবেচনা করে এবং ফলাফল বা বৈদ্যুতিক CHARGE আকারের প্রত্যুত্তর প্রদানের জন্য ACTION POTENTIAL উৎপাদন করে। তখন এই ACTION POTENTIAL টাই বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE আকারে AXON এর মধ্য দিয়া কোষ ত্যাগ করে।

AXON টি স্বল্পদৈর্ঘের হইলে শধুমাত্র মস্তিস্কের আসে পাশের NEURON কে সরবরাহ করে।

আর যদি AXON টি অনেক দৈর্ঘের হয় তাহলে দূরবর্তী কোষে (মস্তিস্কের অভ্যন্তরে অথবা বাইরে শরীরের যে কোন কোষে) সরবরাহ করে।

AXON, SCHWANN CELL দ্বারা তৈরী MYELIN SHEATH দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। এটা বৈদ্যুতিক সংকেত কে দ্রুত পাঠাতে সাহায্য করে ও এটা INSULATOR হিসাবেও কাজ করে।এই MYELIN SHEATH ক্ষয় হয়ে গেলে,বিদ্যুৎ প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে MULTIPLE SCLEROSIS নামক জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে হয়। (৭)

চিত্র-২ ও ৪ দেখুন। ভিডিও গুলী-১-৪ দেখুন

ACTION POTENTIAL কী বস্তু?

ACTION POTENTIAL- বলা হয় নিউরোনের প্রাচীরের বাহিরে ও ভিতরে হঠাৎ করে বৈদ্যুতিক চার্জ কমে যাওয়া (DEPOLARIZATION) ও সাথে সাথে আবার বেড়ে যাওয়া (REPOLARIZATION) কে। কোষ প্রাচীরের এই হঠাৎ করে বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ এর বড় একটা উঠা নামাকেই ACTION POTENTIAL বলে। একে SPIKE ও বলে। (২,৭,৮)

নিউরোন ACTION POTENTIAL কী ভাবে উৎপাদন করে?

কোষের বিশ্রাম অবস্থায় কোষ প্রাচীর এর ভিতরের পিঠে বৈদ্যুতিক চার্জ থাকে মাইনাছ সত্তর (-৭০ ) মিলি ভোল্ট এবং তখন কোষ প্রাচীর এর বাহির পিঠে পজিটিভ চার্জ থাকে। কোষ প্রাচীর এর এই অবস্থাকে POLARIZED অবস্থা বলে। এই সময়ে কোষ প্রাচীর এর বাহিরে প্রচুর পরিমানে পজিটিভ ছোডিয়াম আয়ন (NA+) থাকে। (চিত্র –ছোডিয়াম দেখুন।চিত্র-ভোল্টামিটার দেখুন)

(কোষ প্রাচীরে ACTION POTENTIAL উৎপাদনের জন্য কোষের অভ্যন্তরে মাইনাছ সত্তর (-৭০ ) মিলি ভোল্ট ধরে রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় কোষ ACTION POTENTIAL উৎপাদন করতে পারবেনা।আর এই মাত্রাটা কোষ বিশ্রাম অবস্থায় ধরে রাখে N+/K+ আয়ন পাম্প এর মধ্য দিয়ে।)

আর তখন প্রাচীর এর অভ্যন্তরে থাকে নিগেটিভ চার্জ এর প্রোটীন, নিউক্লীক এসিড ও পজিটিভ পটাসিয়াম আয়ন (K+)। (চিত্র-পটাসিয়াম পরমানু দেখুন।)

যখন নিউরোনটি তার DENTRITES এ একটা তথ্য যথেষ্ঠ শক্তিশালী আকারের বৈদ্যুতিক CHARGE পায়, তখন এই সাংকেতিক চার্জটি কোষের উপর STIMULANT বা উত্তেজক হিসাবে কাজ করে। তার এই STIMULATING ACTION ই তখন AXON HILLOCK এ কোষ প্রাচীর এ ACTION POTENTIAL আরম্ভ করে দেয়।।

ACTION POTENTIAL হল পজিটিভ ছোডিয়াম আয়ন (NA+) ও পজিটিভ পটাসিয়াম আয়ন (K+) এর কোষ প্রাচীরের ভিতর –বাহির সমন্বীত অনুপ্রবেশ ও বহির্গমন করা।

তখন হঠাৎ করে কোষ প্রাচীর এর ছোডিয়াম CHANNEL এর দরজা খুলে যায়। এবং ভিতরে NA+ আয়ন ঢুকে DEPOLARIZATION হয়ে চার্জ পজিটিভ এর দিকে উঠতে থাকে। যখন এই চার্জ -৫৫ মিঃ ভোল্ট পর্যন্ত উঠে যায়, তখন এটা কে THRESHOLD মাত্রা বলে। চার্জ একবার THRESHOLD মাত্রায় পৌছে গেলে তখন আর নীচে নামতে পারেনা। তখন আরো প্রবল বেগে NA+ আয়ন ভিতরে প্রবেশ করে চার্জ মাত্রা সর্বোপরে +৪0 মিঃ ভোল্ট পর্যন্ত উঠিয়ে ফেলে।

যদি এই সাংকেতিক চার্জ টা THRESHOLD পর্যন্ত উঠাতে সক্ষম না হয়, তাহলে কোন আংশিক কাজ আরম্ভ হয়না। কাজ হলে পূর্ণ মাত্রায় আরম্ভ হতে হবে,না হইলে মোটেই হইবেনা। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ALL-OR-NONE PHENOMENA । (চিত্র-ভোল্টামিটার,ও চিত্র-৫,৬,৭ দেখুন)

ভিতরের চার্জ সর্বোচ্য পৌছার পরেই ছোডিয়াম (NA+)CHANNEL এর পথ আটকিয়ে দেওয়া হয়,তখন NA+ আয়ন আর ভিতরে ঢুকতে পারেনা। এবং কোষ প্রাচীর এর স্থানীয় এই পজিটিভ চার্জ তার পার্শবর্তী পটাশিয়াম আয়ন চ্যানেলের পথ STIMULATE করে খুলে দেয়। তখন পটাশিয়াম পজিটিভ আয়ন (K+) বাহিরে চলে যায়।

(চিত্র-৩, চিত্র-ছোডিয়াম,চিত্র-পটাশিয়াম দেখুন।)

এর ফলে এই অবস্থায় ভিতরের চার্জ নামতে নামতে পুনরায় RESTING অবস্থার চার্জে (-৭০ মিলি ভোল্ট) REPOLARIZED হয়ে যায়। তখন পটাশিয়াম CHANNEL এর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতটুকু ঘটতে সময় লাগে ২ মিলি সেকেন্ড।

এই টাই হল ACTION POTENTIAL।

ACTION POTENTIAL কী ভাবে সম্মুখে অগ্রসর হয়?

যখন AXON HILLOCK এ প্রথম ACTION POTENTIAL টা ঘটল, তখন তার STIMULATING ACTION এর দ্বারা তার পরবর্তী স্থানের NA+ আয়নের ও K+ আয়নের CHANNEL গুলী খুলে ও বন্ধ করার মধ্য দিয়ে, ঠিক তার পূর্ববর্তী ACTION POTENTIAL এর মতন আর একটা ACTION POTENTIAL ঘটায়। এই ভাবে বৈদ্যুদিক সংকেৎটা ACTION POTENTIAL আকারে এগুতে এগুতে AXON TRRMINAL এ চলে যায়। এই প্রবাহটার গতি থাকে ১০-১০০ মিটার প্রতি সেকেন্ডে। (AXON POTENTIAL এর ভিডিও গুলী দেখুন)

কেন AXON POTENTIAL পিছনের দিকে ফিরে যেতে পারেনা?

কোষ প্রাচীরের কোন অংসে ACTION POTENTIAL ঘটতে গেলে সেই অংস তখন কোষের বিশ্রামের চার্জে যা মাইনাস সত্তর (-৭০) মিলি ভোল্ট, তাতে থাকতেই হবে।(পূর্বেই বলা হয়েছে). যখন কোন অংসে ACTION POTENTIAL ঘটে তখন ১ মিলি সেকেন্ড এর মধ্যে তার পূর্ববর্তী অংসে তখন কার চার্জ, NA+/ K+ আয়ন পাম্প ইতি মধ্যে নামিয়ে RESTING CHARGE (-৭০ মিলি ভোল্ট) এর অধিক নীচে মাইনাছ নব্বই (-৯০) মিলি ভোল্ট এ লয়ে যায়।

-৭০ মিলি ভোল্ট এর নীচে CHARGE যুক্ত স্থানে ACTION POTENTIAL উৎপাদন করা সম্ভব নয়।

(একে কোষের REFRACTORY PERIOD বলে।)

পিছনের দিকে যদি ACTION POTENTIAL কে ফিরতে হয় তাহলে কোষকে তখন পিছনের জায়গার ঐ মাইনাছ নব্বই (-৯০) মিলি ভোল্ট চার্জ যুক্ত স্থানে ACTION POTENTIAL উৎপাদন করা লাগে, যেটা বাস্তবে সম্ভব নয়।

যার কারনে ACTION POTENTIAL কে সম্মুখে এগুনো ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকেনা। পিছনের দরজা চার্জ -৯০ মিলি ভোল্ট এ নামিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

NEURON, ACTION POTENTIAL এর বৈদ্যুতিক সাংকেতিক চার্জ কে সম্মুখে ধাবিত করার জন্য কতবড় কৌশল প্রয়োগ করলো,দেখলেন তো?

এ যেন কাকেও সম্মুখে এগিয়ে যেতে বলে দিয়ে একটি ব্রীজের উপর উঠিয়ে দিয়ে,আর একজনকে তার পিছনে পিছনে একটা তালা বদ্ধ গেট লয়ে এগিয়ে লয়ে যেতে বলে দেওয়া, যাতে উক্ত চলন্ত ব্যক্তি গন্তব্য স্থল না পৌছা পর্যন্ত আর পিছনে কখনোই একটি পা-ও ও না পিছাতে পারে।

অদ্ভুৎ কৌশল বটে!!

কেন কোষ ACTION POTENTIAL কে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এরুপ অতি সূক্ষ্ম অথচ অতিশয় নিশ্চিত ফলপ্রসু কৌশল এর ব্যবস্থা করে?

হ্যা, জরুরী কারণ আছে। ACTION POTENTIAL টি যে জরুরী বৈদ্যুতিক সংকেটি লয়ে তার লক্ষ্যস্থলে রওনা হয়, যদি এতে কোন রকমের বাধাবিঘ্ন ঘটে, তাহলে স্নায়ু তন্ত্রের কাজ অচল হয়ে যাবে। আর স্নায়ু তন্ত্র অচল হয়ে যাওয়ার অর্থ হল, মুহুর্তের মধ্যে আমাদের শরীরের অন্য সমস্ত তন্ত্রের কাজ ও বন্ধ হয়ে যওয়া। যার অর্থ আমরা জড় পদার্থে পরিণত হয়ে যাওয়া।

এজন্য দেখুননা, আমরা ঠিক যেমন টা বৈদ্যুতিক তারে রাবার বা প্লাস্টিকের INSULATOR দ্বারা COVERING দিয়ে দেই যাতে SHORT CIRCUIT হয়ে কোথাও দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে, ঠিক তেমনিই NEURON তার এই বৈদ্যুতিক সংকেত পরিবাহী AXON এর নিরাপত্তার জন্য MYELIN SHEATH নামক INSULATOR কভারিং দিয়ে আদ্যান্ত ঢেকে দিয়েছে।

দেখলেনতো, NEURON আগে থেকেই কীভাবে সতর্কতা অবলম্বন করেছে?

একটা ACTION POTENTIAL ঘটতে ২ মিলি সেকেন্ড সময় লাগে।

(চিত্র-৪,৫,৬,৭ ভিডিও-৫) (২,৯,১৫)

এ পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE টা তাহলে AXON TERMINAL এ পৌছে গেল এবার এই বৈদ্যুতিক DISCHARGE টা কে আর একটা নিউরোনে যেতে হবে।

তবে মনে রাখতে হবে, আমাদের বৈদ্যুতিক তারের মত নিউরোন একটার সংগে আর একটার সংস্পর্ষ থাকেনা।

AXON TERMINAL এ গিয়ে প্রবাহটি সম্মুখে আর একটি NEURON এর DENDRITE এর সংযোগ স্থল পাইবে।

(চিত্র-২, লক্ষ করুন)

এই সংযোগ স্থলের নাম SYNAPSE( চিত্র-৪ লক্ষ করুন।)

২. কী ভাবে প্রথম নিউরোনটি তার সাংকেতিক বৈদ্যুতিক CHARGE টা দ্বিতীয় নিউরোনকে, এদের সংযোগ স্থলের (SYNAPSE) এর ফাকা জায়গা (SYNAPTIC CLEFT) কে অতিক্রম করায়।

এই SYNAPTIC CLEFT কী ? এবং বৈদ্যুতিক DISCHARGE টা এই SYNAPTIC CLEFT টা কী ভাবে পেরিয়ে পরবর্তী NEURON এর RECIEVER DENTRITE কে ধরিয়ে দিয়ে তার দায় মুক্ত হইবে?

SYNAPSE টা যদিও একটি NEURON এর TERMINAL এবং পরবর্তী NURON এর DENDRITE TERMINAL এর মিলন স্থল, তবুও এই দুইটি TERMINAL বা প্রান্ত পরশ্পর একেবারে স্পর্শ করেনা।

এদের মধ্যখানে অতি সামান্য ফাকা যায়গা রয়ে গিয়েছে। তাহলে এখান দিয়ে কে এই AXON TERMINAL এর CHARGE টাকে এই ফাকা জায়গাটা পার করে অন্য NEURON কে ধরিয়ে দিবে?

তাহলে এবার দেখুন, নিউরোন কী ভাবে বৈদ্যুতিক CHARGE টা SYNAPSE কে পার করিয়ে পরবর্তী নিউরোন কে পাঠায়।

যে নিউরোনটি বৈদ্যুতিক CHARGE টা বয়ে আনে তাকে PRESYNAPTIC NEURON বলে। আর যে নিউরোনটি বৈদ্যুতিক CHARGE টা গ্রহন করবে তাকে POST SYNAPTIC NEURON বলে। দুই নিউরোনের মাঝখানের সামান্য ফাকা স্থান কে SYNAPTIC CLEFT বলে।

PRESYNAPTIC NEURON এর AXON TERMINAL এ VESICLE এর মধ্যে NEUROTRANSMITTER নামক বিভিন্ন প্রকারের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যেমন, serotonin, acetylcholine, norepinephrine, dopamine and gamma-amino butyric acid (GABA) ইত্যাদি।

এই NEUROTRANSMITTER ই বৈদ্যুতিক CHARGE টা SYNAPTIC CLEFT পার করিয়ে POSTSYNAPTIC NEURON এ পৌছে দেয়।

কী ভাবে পার করায়?

যখন ACTION POTENTIAL এর প্রবাহ, PRESYNAPTIC NEURON এর AXON TERMINAL এ পৌছায়, তখন সেখানকার ক্যালসিয়াম আয়নের CHANNEL খুলে যায়।(উপরে ক্যালশিয়াম -চিত্র দেখুন)

তখন ভিতরে অজস্র ক্যালশিয়াম পজিটিভ আয়ন ঢুকে পড়ে। এরপর AXON TERMINAL এ অবস্থিত VESICLE গুলী যার মধ্যে NEUROTRANSMITTES গুলী থাকে, সেগূলী সহ PRESYNAPTIC NEURON এর AXON TERMINAL এর কোষ প্রাচীর এর বাহিরে এসে, NEUROTRANSMITTES গুলী SYNAPTIC CLEFT এ বের করে ঢেলে দেয়।

একটি নিউরোনে এপর্যন্ত জানা মতে একাধিক প্রকারের NEUROTRANSMITTRES থাকতে পারে।(১৫)

প্রত্যেকটি NEUROTRANSMITTER এর কাজ ভিন্ন।

তখন এই নিউরোট্রান্সমিটার POST SYNAPTIC NEURON এর কোষ প্রাচীরের সঠিক RECEPTOR টা এর উপর বসে যায়। এখন এই NEUROTRANSMITTER টি, গ্রহন কারী NEURON কে STIMULATE করে, পূর্বের ন্যায় একই ভাবে AXON এ ACTION POTENTIAL উৎপাদন করে, বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE এর প্রবাহ উৎপাদন করবে ও সেই প্রবাহ পরবর্তী NEURON অথবা অন্য কোন প্রান্তীয় কোন কার্যকারী কোষ যেমন মাংস পেশী বা কোন গ্লান্ড কোষে পাঠিয়ে দেয়, ঠিক যেমন ভাবে পূর্বের NEURON এ ঘটিয়েছে।

উল্লেখযোগ্য, এখানে PRESYNAPTIC NEURON এর AXON এর STIMULANT টা শুধু কার্য নির্দেশক বৈদ্যুতিক CHARGE ই হয়না বরং এর কিছু কিছু INHIBITORY বা নিষেধ মূলক বৈদ্যুতিক সাংকেতিক CHARGE ও থাকে।

এরা উভয়ে মিলে সমন্বীত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শরীরের কাজ চালায়।

আরো উল্লেখ যোগ্য, যে সমস্ত NEUROTRANSMITTERS বা VESICLE একবার ব্যবহৃত হয়ে যায়, সেগুলী SYNAPTIC CLEFT এ ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। আর যেগুলী ব্যবহার উপযোগী থাকে,সেগুলী PRESYNAPTIC NEURON এর AXON TERMINAL এ পরবর্তী ব্যবহারের জন্য ঢুকিয়ে লয়।

আয়ন চ্যানেল গুলীর পথ সাময়িক ভাবে কিছু কিছু পদার্থ বন্ধ করে দিয়ে অনুভুতি কে নষ্ট করে দিতে পারে যেমন, LOCAL ANAESTHESIA, কিছু প্রানীর বিষ, অতিরিক্ত ঠান্ডা ইত্যাদি।

(২,১০,১৬) (চিত্র-২ ও ৪ দেখুন) (VIDEO-৬,৭ দেখুন)

উপরের বর্নিত বিজ্ঞান এর বিষয় গুলীকে সহজ বোধ্য করার জন্য নীচে কিছু কিছু বৈজ্ঞানিক পরিভাষার সংগা দেওয়া হইল। প্রয়োজনে এই পরিভাষার অর্থের সাহায্য নিতে পারেন।

STIMULATION কী? বৈদ্যুতিক সাংকেতিক চার্জ, কোষকে বা তার পার্শবর্তী অংসকে STIMULATE বা উত্তেজিত করাকে বুঝায়।,যেমনটা ACTION POTENTIAL এর সময় একটার পর আর একটা আয়ন CHANNEL কে করে করে এগিয়ে যায়।আবার DENDRTES এ প্রাপ্ত বৈদ্যুতিক সাংকেতিক চার্জটা নিউরোন কে STIMULATE করে ACTION POTENTIAL করায়।

POLARIZED অবস্থা কী? এটা কোষের বিশ্রাম অবস্থা, তখন কোষের অভ্যন্তরে বৈদ্যুতিক চার্জ থাকে

-৭০ মিলি ভোল্ট।এই অবস্থায় না থাকলে কোস ACTION POTENTIAL ঘটাতে পারেনা।

DEPOLARIZED অবস্থা কী? এর অর্থ বৈদ্যুতিক চার্জ, নিগেটিভ হতে উপরে শুন্য ও পজিটিভ (+৪০ মিলি ভোল্ট) চার্জ পর্যন্ত চলে যাওয়া।(চিত্র -ভোল্টমিটার দেখুন)

REPOLARIZED কী? এর অর্থ পুনরায় চার্জ প্রাপ্ত হওয়া।

POTENTIAL কী?- কোষ প্রাচীর এর বাহির ও ভিতরের বিদ্যুতের চার্জের এর পার্থক্য যা ভোল্টে প্রকাশ করা হয়।(চিত্র -ভোল্টামিটার দেখুন)

CHANNELকী ?

NEURON এর প্রাচীরে বিশেষ প্রোটীন দ্বারা তৈরী ছিদ্র পথ। এর উপর পাতলা পর্দা থাকে। এই পথ দিয়ে পজিটিভ ছোডিয়াম আয়ন (NA+), পজিটিভ পটাসিয়াম আয়ন( K+), কোষের আভ্যন্তরে অথবা বাহিরে আসা যাওয়া করে কোষ প্রাচীরের বিদ্যুতের উঠানামা করিয়ে, কোষ প্রাচীর কে চার্জ করে AXON এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালায়।

প্রত্যেকটা আয়নের যার যার নিজস্ব পথ থাকে। একটা আয়ন আর একটা আয়নের পথ দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারেনা। আবার কোষ এটাকে বন্ধ করে দিয়ে অথবা খোলা রেখে ইচ্ছা মত নিয়ন্ত্রন ও করতে পারে।

আয়নিক ঘনত্বের পার্থক্য এবং ছিদ্রপথ নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে এটা করা হয়।

চিত্র-৩ দেখুন। ভিডিও-৭ দেখুন

আয়ন কী?

কোন পদার্থ কনা ELECTRON হারিয়ে অথবা ELECTRON সংযুক্ত করে যথাক্রমে পজিটিভ অথবা নিগেটিভ বৈদ্যুতিক চার্জ প্রাপ্ত হওয়া। যদি পজিটিভ চার্জ প্রাপ্ত হয় তাহলে তাকে পজিটিভ আয়ন বলে যেমন NA+, আর যদি নিগেটিভ চার্জ যুক্ত হয় তাহলে তাকে নিগেটিভ আয়ন বলে যেমন-CL-।

পজিটিভ ছোডিয়াম আয়ন (NA+)কী?

(চিত্র-ছোডিয়াম দেখুন) (১৮)

একটা SODIUM পরমানুতে কেন্দ্রে ১১টা প্রোটন (POSITIVELY CHARGED), ১২টা NEUTRON (NO CHARGE), ও তার বাইরে ৩টা বৃত্তে ঘূর্নায়মান ১১ টা ELECTRON (NEGATIVELY CHARGED) রয়েছে।

নীচে চিত্র-SODIUM দেখুন।

এই স্বাভাবিক অবস্থায় পরমানুটিতে সমান পরিমান প্রোটন ও ইলেক্ট্রন থাকার কারনে, অনুটিতে তখন কোন চার্জ থাকেনা।

কিন্তু বাইরের বৃত্তে যে একটি ইলেক্ট্রন রয়েছে, এর ঊপর কেন্দ্রের প্রোটনের আকর্ষন অতি দুর্বল থাকার কারনে ওটা অন্য পদার্থের মধ্যে মিশ্রিত হয়ে যায়।

তখন এই অনুতে প্রোটনের সংখ্যা, ইলেক্ট্রনের সংখ্যা হতে ১টা বেশী দাড়ায়। অর্থাৎ প্রোটন ১১ টাই থাকে আর ইলেকট্রন ১০ টা হয়ে যায়।

অতএব তখন পরমানুটি একটি পজিটিভ চার্জ যুক্ত হয়ে পড়বে। একে পজিটিভ SODIUM আয়ন বা সংক্ষেপে NA+ বলা হয়। যখন দুইটা ইলেক্ট্রন হারায় তখন ২+ , তিনটা হারালে ৩+ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।

আর যখন এর বাইরের বৃত্তে অন্যখান থেকে একটা ইলেক্ট্রন এসে যোগ হবে তখন এটা নিগেটিভ আয়নে পরিণত হয়ে যাবে। তখন একে প্রকাশ করা হবে NA- বা দুটা এলে NA২ - দ্বারা।

এই পজিটিভ নিগেটিভ আয়ন এর উপর সেই স্থানের বৈদ্যুতিক চার্জ নির্ভর করে। যেমন ধরুন,কোষ প্রাচীরের বাইরে যদি পজিটিভ আয়ন, নিগেটিভ আয়নের চাইতে বেশী থাকে তাহলে কোষ প্রাচীরের বাহির পিঠ পজিটিভ চার্জ ধারন করবে। আর কম থাকলে নিগেটিভ চার্জ ধারন করবে।

ঠিক একই অবস্থা ঘটবে কোষের অভ্যন্তরেও।

কোষ প্রাচীরের উভয় পার্শের চার্জের পার্থক্যকে POTENTIAL বলে, যা ভোল্টামিটার দ্বারা মাপা হয়।

একটি SODIUM (NA) এর পরমানু।



চিত্র- SODIUM (NA) পরমানু। এতে ১১ টা প্রোটন,১২ টা নিউট্রন ও ১১ টা ইলেক্ট্রন আছে। (১৮)

বাহিরের বৃত্তের ইলেক্ট্রন টি হারিয়ে ফেললে তখন এটা একটা পজিটিভ ছোডিয়াম আয়নে (NA+) পরিণত হয়।

এটা তখন নিউরোনে পজিটিভ বিদ্যুৎ চার্জ সরবরাহ করে।

পজিটিভ পটাসিয়াম আয়ন( K+), কী?

(চিত্র-পটাশিয়াম পরমানু দেখুন)

একটা POTASSIUM (K) এর পরমানু।



চিত্র- POTASSIUM পরমানু।- এতে ১৯ টা প্রোটন.২০ টা নিউট্রন ও ১৯টা ইলেক্ট্রন আছে। এরও যখন বাইরের ৪র্থ বৃত্তের ইলেক্ট্রনটি হারিয়ে ফেলে,তখন এটা একটা পছিটিভ পটাসিয়াম আয়ন (K+) হয়ে যায়। (১৮)

পজিটিভ ক্যালশিয়াম আয়ন (CA2+) কী?

(চিত্র-ক্যালসিয়াম পরমানু দেখুন)

একটি ক্যালসিয়াম পরমানু



চিত্র-ক্যালসিয়াম পরমানু, এতে আছে প্রোটন-২০,ইলেক্ট্রন-২০,নিউট্রন-২০ (১৮)

লক্ষ করুন-এর বাহিরের বৃত্তে ২টি ইলেকট্রন আছে।এই দইুটি ইলেক্ট্রন হারিয়ে এটা পজিটিভ ক্যালসিয়াম আয়নে (CA2+) এ পরিণত হয়। এটা নিউরোনে AXON TERMINAL এ NEURO TRANSMITTER কোষ প্রাচীরের বাহিরে আনতে কাজ করে।

এক কথায় মস্তিস্ক বা নিউরোনের ভাষা বৈদ্যুতিক CHARGE এর ভাষা। সে যে কোন তথ্য গ্রহন ও করে সেটা হয় বৈদ্যুতিক CHARGE এর ভাষার তথ্য, আবার সে যখন নির্দেশ প্রদান করে তখনও বৈদ্যুতিক CHARGE এর ভাষায় নির্দেশ প্রদান করে। বিদ্যুতের ভাষায় সে সবার সংগে কথা বলে। কারন তাকে বিদ্যুৎ ব্যবহার ছাড়া তার এই কাজ কাম চালানো সম্ভব নয়।

এবার দেখুন সংশ্লিষ্ট চিত্র সমুহ



চিত্র-১, একটি স্নায়ু কোষ।

লক্ষ করুন- এতে একটি সাধারন কোষের চাইতেও অতিরিক্ত রয়েছে-

১। DENTRITES .(ডানে)

২। SOMA বা CELL BODY

৩। AXON-(বামে)যাহা SCHWANN CELL (এখানে লাল রংএর) দ্বারা আচ্ছাদিত মুল কোষ বডি হতে সবচেয়ে লম্বা রশির মত বেরিয়ে গেছে। AXON সব কোষের একটাই হয় এবং সবচেয়ে লম্বা হয়। SCHWANN CELL, MYELIN SHEATH তৈরী করে AXON কে INSULATED করে রাখে।

এবার নীচের চিত্র-২ এ লক্ষ করুন একটি স্নায়ু কোষ (NEURON) এর AXON আর একটি স্নায়ু কোষের DENDRITES এর সংগে সংযুক্ত হয়েছে।



চিত্র-২ . এখানে দেখানো হয়েছে, একটি স্নায়ুকোষ সব সময় আর একটি স্নায়ুকোষের DENTRITES এর সংগে সংযুক্ত হয়। তারপর আবার দ্বিতীয় স্নায়ুকোষটির AXON এর সংগে আর একটি তৃতীয় স্নায়ু কোষের সংযোগ হয়। এভাবে একটির AXON ও তার পরবর্তিটার DENDRITES এর সংগে যোগ হতে হতে সর্ব শেষ স্নায়ু কোষটির AXON কোন একটি লক্ষ বস্তু-কোষে পৌছে যায়। এই শেষ প্রান্তকে বলে MOTOR END PLATE।

ছোডিয়াম/পটাশিয়াম CHANNEL



চিত্র-৩ নিউরোনের প্রাচীরের NA+/K+এর CHANNEL (ছিদ্র)। NA+ CHANNEL দিয়ে ভিতরে NA+ আয়ন ঢুকিয়ে, টার্জ বৃদ্ধি করে (DEPOLARIZE) উপরে (+40 মিলি ভোল্ট) উঠায়। K+ CHANNEL দিয়ে K+ আয়ন বের করে ভিতরে চার্জ নামিয়ে (REPOLARIZE) পুনরায় কোষ এর REST (-70 মিলি ভোল্ট) চার্জে আনে।

SYNAPSE



চিত্র- ৪ SYNAPTIC CLEFT (১৪)বা দুই নিউরোনের সংযোগ স্থল। এর মধ্য দিয়ে PRESYNAPTIC AXON এর বৈদ্যুতিক DISCHARGE টা, NEUROTRANSMITTER পাঠিয়ে POSTSYNAPTIC NEURON এ পাঠায়।



ছবি- ভোল্টামিটার- এর দ্বারা ACTION POTENTIALএর সময়ে কোষ প্রাচীর এর চার্জের উঠা নামার পদ্ধতি দেখুন।

ACTION POTENTIAL



চিত্র-৫ , ACTION POTENTIALএর সময়ে কোষ প্রাচীর এর চার্জের উঠা নামার মাত্রা।

http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/9/95/Action_Potential.gif/800px-Action_Potential.gif

চিত্র-৬ - LINK ANIMATED চিত্রটি দেখুন- ACTION POTENTIALএর সময়ে কোষ প্রাচীর এর চার্জের উঠা নামার মাত্রা দেখুন (ANIMATED)

http://faculty.washington.edu/chudler/gif/actionp1.gif

চিত্র-৭ - LINK ANIMATED চিত্রটি দেখুন- ACTION POTENTIALএর সময়ে কোষ প্রাচীর এর চার্জের উঠা নামার মাত্রা দেখুন (ANIMATED)

নিউরোন বা স্নায়ূকোষের বর্ণনা এখানেই শেষ। পরবর্তী পর্বে বিজ্ঞানীদের আবিস্কারটা দেখবেন।

VIDEOS FOR NEURON

১, http://www.youtube.com/watch?v=CMnDiepv5Os

২, http://www.youtube.com/watch?v=c5cab4hgmoE

৩. http://www.youtube.com/watch?v=WyQbME6ilV4

৪. http://www.youtube.com/watch?v=vyNkAuX29OU

৫.ACTION POTENTIAL VIDEOS

http://www.youtube.com/watch?v=U0NpTdge3aw

http://www.youtube.com/watch?v=7EyhsOewnH4

http://www.youtube.com/watch?v=HnKMB11ih2o

ACTION POTENTIAL PROPAGATION VIDEO

http://www.youtube.com/watch?v=Sa1wM750Rvs

৬.SYNAPSE WORKS

http://www.youtube.com/watch?v=ZuclwAOJFh8

৭.SYNAPSE WORKS (ACETYLCHOLINE)

http://www.youtube.com/watch?v=o4Srx4mUmaI

http://www.youtube.com/watch?v=Sa1wM750Rvs

১৭ তম পর্বের সূত্র সমূহ-

NOBEL ORG

১। http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2013/press.html

NERVE IMPULSE/ACTION POTENTIAL/POLARIZATION

ACTION POTENTIAL

২। http://www.dummies.com/how-to/content/understanding-the-transmission-of-nerve-impulses.html

NEURONE

৩. http://en.wikipedia.org/wiki/Neuron

৪. HOW MANY NEWRON,HOW MUCH TIME

http://www.ualberta.ca/~chrisw/howfast.html

৫. NA-K PUMP

http://en.wikipedia.org/wiki/Na%E2%81%BA/K%E2%81%BA-ATPase

৬. NEUROTRANSMITTER

http://webspace.ship.edu/cgboer/genpsyneurotransmitters.html

৭. ACTION POTENTIAL/CHANNEL/BRISTOL

http://www.bristol.ac.uk/synaptic/basics/basics-2.html

৮. ACTION POTENTIAL/WIKI

http://en.wikipedia.org/wiki/Action_potential

৯. ACTION POTENTIAL

http://science.howstuffworks.com/life/human-biology/nerve4.htm

১০. SYNAPTIC TRANSMISSION

http://science.howstuffworks.com/life/human-biology/nerve5.htm

১১. DIAGRAM OF THE OF THE DISCOVERY

http://www.theguardian.com/science/2013/oct/07/nobel-prize-in-physiology-or-medicine-2013-live-blog

১২. DIAGRAM/

http://ibnlive.in.com/news/2-americans-german-win-medicine-nobel-prize-for-cell-transport-system/426931-17.html

১৩. /DIAGRAM/DISCOVERY DETAILED/ cen.acs.org

http://cen.acs.org/articles/91/i41/2013-Nobel-Prize-Physiology-Medicine.html

১৪.

http://en.wikipedia.org/wiki/Exocytosis

১৫. For kids

http://faculty.washington.edu/chudler/ap.html

১৬. SYNAPSE FOR KIDS

http://faculty.washington.edu/chudler/synapse.html

১৭. ELECTRICITY

http://www.ndt-ed.org/EducationResources/HighSchool/Electricity/electroinduction.htm

১৮, CHEMICAL ELEMENTS

http://www.chemicalelements.com/elements/na.html

বিষয়: বিবিধ

২১৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File