ডিএনএ কী/ দ্বিতীয় পর্ব।-গঠন প্রথম পর্ব পূর্বে প্রকাশিতের পর।–গঠ
লিখেছেন লিখেছেন আঃ হাকিম চাকলাদার ২৪ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:৪৩:৫২ সকাল
ডিএনএ কী/
দ্বিতীয় পর্ব।-গঠন
প্রথম পর্ব পূর্বে প্রকাশিতের পর।–গঠন
ডিএন এ গঠন প্রনালী:
ডিএনএ একটি ডবল হেলিক্স এর স্পাইরাল (চিত্র ৪,৫ ও১৩) আকৃতির মস্তবড় অনু (POLYMER)। এর একটি STRAND (চেইন)আর একটি STRAND এর সংগে কয়েলের মতন করে পেচিয়ে থাকে। এবং এর একটি কে আর একটির সম্পূরক (COMPLEMENTARY) বলা হয়।
ডিএনএ এর BUILDING BLOCK হইল নিউক্লীওটাইড (NUCLEOTIDE )। (২,৩)
ডিএনএ র মধ্যে এই নিউক্লীওটাইড গুলী একটির পরে আর একটি যার যার STRAND এর নির্দিষ্ট দিক অনুসারে তার তার নির্দিষ্ট দিক লক্ষ করে সংযুক্ত থাকে। (চিত্র-৫ ও ১৩ )
চিত্র- ৪) ডি এন এর একটি ডবল হেলিক্স।
চিত্রে দেখানো হয়েছে,ডিনএর ২ টি চেইন কি ভাবে একটি AXIS এর উপর কয়েল আকারে পেচানো থাকে । আরো দেখানো হয়েছে একটি চেইন এর নিউক্লিওবেছ আর একটি চেইনের নিউক্লিওবেছ এর সংগে সংযুক্ত হয়ে ডিএনএর দুইটি চেইন কে, কি ভাবে একত্রে সংযুক্ত রেখেছে।
চিত্র ৫) কয়েল উন্মুক্ত ডিএনএর ২টা চেইন। ।
চিত্রে দেখানো হয়েছে:ডিএনএর ২টি চেইন কয়েল উন্মুক্ত অবস্থায় কি ভাবে একে অপরের সংগে সংযুক্ত হয়ে আছে,ও কিভাবে উভয় চেইনের BACKBONE তেরী হয়ছে।
এখন তাহলে আমাদের দেখতে হবে,
এই নিউক্লীওটাইড গুলী কি ভাবে গঠিত হয়েছে এবং
এদের উপাদান কি কি?
এরা একটার সংগে আর একটা কি ভাবে সংযুক্ত থাকে।
একটা STRAND (চেইন)এর নিউক্লীওটাইড তার পার্শবর্তি সম্পূরক STRAND এর নিউক্লীওটাইড এর সংগে কি ভাবে সংযুক্ত থাকে।
নিম্নের আলোচনা থেকে এই বিষয় গুলী পরিস্কার হয়ে আসবে।
চিত্র-৬ এডিনোছিন মনোফছফেট(একটি পূর্ণ নিউক্লীওটাইড)
নিউক্লীওটাইডের উপাদান: (চিত্র-৬)
নিউক্লীওটাইডের উপাদান ৩ টি।
১) নিউক্লীওবেছ (নাইট্রোজেন সংযুক্ত)
২)ডিঅক্সিরিবোছ (পাচটা কার্বন অনু বিশিষ্ট সরকরা)।(চিত্র ১৩)
৩) ফছফেট গ্রুপ।(চিত্র ৩)-ফসফেটের বিবরন ডি অক্সিরিবোছের সংগে এসে যাবে।
এবার তাহলে এই উপাদান গুলী সম্পর্কে কিছু জানা যাক।
১) নিউক্লীওবেছ: নিউক্লীওবেছ ৪টি যথা:
ক) ছাইটোছিন(CYTOSINE)-(চিত্র-৭) এর বৈজ্ঞ্যানিক সাংকেতিক চিহ্ন-C
খ) গুয়ানিন (GUANINE)- )-(চিত্র-৮) এর বৈজ্ঞ্যানিক সাংকেতিক চিহ্ন_ G
গ) এ্যাডেনাইন (ADENINE)- )-(চিত্র-৯) এর বৈজ্ঞ্যানিক সাংকেতিক চিহ্ন-A
ঘ) থাইমিন (THYMINE)- )-(চিত্র-১0) এর বৈজ্ঞ্যানিক সাংকেতিক চিহ্ন- T
যে হেতু এই বেছ গুলী জেনেটিক তথ্য গুলী ধরে রাখে একারণে এদেরকে জেনেটিক বেছ ও বলা হয়।
চিত্র-৭ ছাইটোছিন
চিত্র-৮ গুয়ানিন
চিত্র-৯ এডেনিন
চিত্র-১০ থাইমিন
এ্যাডেনাইন ও গুয়ানিন কে “পিউরিন” এবং থাইমিন, ও ছাইটোছিন কে “পাইরিমিডিন” বলা হয়।
এখানে বলা প্রয়োজন, ডি এন এর একটি চেইন এ সংরক্ষিত GENETIC তথ্য গুলী ঠিক একই ভাবে ডি এন এ এর COMPLEMENTAY চেইনে ও সংরক্ষিত থাকে।
এখন দেখা যাক ডিএন এর দুইটি STRAND বা চেইন কি রাসায়নিক প্রকৃয়ায় একে অপরের সংগে সংযুক্ত থাকে।
দুইটি STRAND এর রাসায়নিক সংযুক্তির এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সমাধা করে এই নিউক্লিওবেছ গুলী।
এটা করা হয় হাইড্রোজেন বন্ড সংযুক্তি দ্বারা। চিত্র-১১
হাইড্রোজেন বন্ড সংযুক্তি।
একটি STRAND এর নিউক্লিওটাইডের বেছ তার সম্পূরক STRAND এর নিউক্লিওটাইডের বেছ এর সংগে হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা সংযুক্ত করে। (চিত্র-৫,১১,১৩)।
এটাকে বলা হয় হাইড্রোজেন বন্ড সংযুক্তি।
হাইড্রোজেন বন্ড সংযুক্তি COVALENT BOND সংযুক্তির মতন অতটা শক্ত্ নয়, কিছুটা দুর্বল।
এখানে একটা বিষয় লক্ষনীয়- বেছ গুয়ানিন(G) ও ছাইটোছিন (C) সংযুক্তিতে ৩টা হাইড্রোজেন বন্ড এবং এডেনিন(A) ও থাইমিন(T) সংযুক্তি তে ২টা হাইড্রোজন বন্ড ব্যবহৃত হয়।(চিত্র-১১)
চিত্র-১১।
এখানে দেখানো হচ্ছে বেছ গুয়ানিন ও ছাইটোছিন সংযুক্তিতে ৩টা হাইড্রোজেন বন্ড এবং এডেনিন ও থাইমিন সংযুক্তি তে ২টা হাইড্রোজন বন্ড ব্যবহৃত হয়
এজন্য G-C সংযুক্তি A-T সংযুক্তি হতে বেশী STABLE (শক্ত)।
তবে সংযুক্তি করনে নিউক্লিওবেছ কে সর্বদা একটা কঠোর নিয়ম অনুসরন করতে হয়।
নিউক্লিওবেছ গুলী যে যার সংগে খুশী তার সংগেই জোড় মিলাতে পারেনা।
সংযুক্তির ক্ষেত্রে :
এডেনাইন বেছকে অবশ্যই থাইমিন বেছ এর সংগে সংযুক্ত হইতে হইবে এবং ছাইটোনিন বেছ কে অবশ্যই গুয়াণিন বেছ এর সংগে সংযুক্ত হইতে হইবে।(চিত্র -১১)
এই বন্ড গুলীর সংযুক্তি কতকটা ZEEPER এর ন্যায় তাই ডিএনএ বিভাজনের সময় চেইন দুইটি ZEEPER খুলে পৃথক হওয়ার মতন খুলে পৃথক হয়ে যায়।
এবং ১টা DOUBLE STRAND DNA (DS DNA) ২টা SINGLE STRAND DNA(SS DNA) তে পরিণত হয়।
একটি নিউক্লীওবেছ এর সংগে ফসফেট ছাড়া শুধু ছুগার(ডিঅক্সিরিবোছ ) সংযুক্ত থাকিলে তাহাকে নিউক্লীওছাইড বলে। (4)
ডিঅক্সিরিবোছ (পাচটা কার্বন অনু বিশিষ্ট সর্করা)।(চিত্র ১২)
ডিঅক্সিরিবোছ কে 2 ডিঅক্সিরিবোছ ও বলা হয়। এটা একটি সাধারন মনোছ্যাকারাইড পেনটোজ ছুগার শর্করা । এর আদর্শগত ফর্মুলা হল:
চিত্র- ১২ (একটি DEOXYRIBOSE এর STRUCTURE)
লক্ষ করুন এর ৫টি কার্বন অনু C1 C2 C3 C4 C5 এর অবস্থান যথাক্রমে 1 2 3 4 ও 5 দ্বারা দেখানো হইয়াছে।
ডিঅক্সিরিবোছ, নিউক্লীওটাইড অনু নির্মানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিঅক্সিরিবোছের রাসায়নিক উপাদানে ৫টি কার্বন অনু আছে। এজন্য একে পেনটোছ ছুগার ও বলে ।এর STRUCTURALফরমুলায় এই পাচটি কার্বন অনু (C) র বিভিন্ন অবস্থানে এদের রাসায়নিক সাংকেতিক চিহ্নে কিছু গানিতিক সংকেত দেখিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
এদের অবস্থান ভেদে চিহ্নিত করা হয়েছে যথাক্রমে: C1 C2 C3 C4 ও C5
আগেই বলা হয়েছে একটি ডিএনএ র দুইটি চেইন আছে। এই উভয় চেইনের মেরুদন্ড (BACKBONE) তৈরী হয়েছে ডি অক্সিরিবোছ ও ফসফেট অনু দ্বারা।
এরা একটার পর আর একটা (ALTERNATELY) সংযু্ক্ত হয়ে আছে। আবার এই ডি অক্সিরিবোছ অনুটি চেইনে যার যার পার্শের নিউক্লীওবেছের সংগেও সংযুক্ত রয়েছে (চিত্র-৫ ও ১৩ লক্ষ করুন)
চেইনের মেরুদন্ডে (BACK BONE) ডি অক্সিরিবোছ ও ফসফেট এর এই সংযূক্তি টা যেমন খুশী তেমন ভাবে হলেই চলবেনা। সংযুক্তি টা একটা বিশেষ নিয়ম কানুন মেনে হতে হয়েছে।
নীচে দেখা যাক কী সেই নিয়ম কানুন এবং এর তাৎপর্যই বা কি?।
ডিঅক্সিরিবোছ ও ফসফেটের সংযোগের ক্ষেত্রে ডিএনএর উভয় চেইন এর মেরুদন্ড(BACKBONE) তৈরী হতে মাত্র ১টি বিশেষ নিয়ম জোরালো ভাবে অনুসরন করতে হয়েছে (চিত্র-৫ ও ১৩)।
নিয়মটি হল-একই চেইনে ফসফেট অনুটিকে তার এক প্রান্তের ডিঅক্সিরিবোছের কার্বন অনু C5 এর সংগে সংযোগ এবং OH কে অপর প্রান্তের ডিঅক্সিরিবোছের কার্বন অনু C3 এর সংগে সংযোগ করতে হবে।
অপর চেইনেও একই ঘটনা ঘটে তবে প্রান্তদ্বয় প্রথম চেইনের বিপরীত দিকে থাকে। (চিত্র-৫ ও ১৩ লক্ষ করুন)
চিত্র ১৩) কয়েল উন্মুক্ত ডিএনএর ২টা চেইন।
এখানে নিউক্লিওটাইড গুলী কি ভাবে একটার সংগে আর একটা ও একটা চেইন কি ভাবে এর COMPLEMENTARY চেইন এর সংগে সংযুক্ত থাকে, তা দেখানো হয়েছে। উভয় চেইনের BACKBONE কিভাবে ছুগার ডিঅক্সিরিবোছ ও ফসফেট দ্বারা তৈরী হয়েছে।
দুইটি চেইন এর দিক কিভাবে বিপরীত মুখী হয়ে ANTIPARALLEL হয়েছে তাও দেখানো হয়েছে।
এই একটি মাত্র নিয়ম মেনে চলার ফলে ২ টি বিশেষ অবস্থার উদ্ভব হয়েছে।
১) সমস্ত নিউক্লীওটাইড গুলী এক মুখি হয়ে গিয়ে চেইনের একটা নির্দিষ্ট দিক হয়ে গিয়েছে।
২)যেহেতু এই নিয়মটি উভয় চেইনে মানতে হয়েছে, তার ফলে দুইটি চেইনের দিক বিপরীত মুখী হয়েছে। নিয়মটি মানতে গেলে এটা হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা।(চিত্র-৫ ও ১৩ লক্ষ করুন)
দুই টি STRAND এর বিপরীত মুখী দিক হওয়ার কারনে এদেরকে বলা হয় এন্টিপ্যরালেল (ANTI PARALLEL)।
ডিএনএ STRAND এর এই ANTIPARALLEL গুনাগুনটি, ডিএনএ বিভাজনের সময় বিশেষ ভাবে প্রয়োজন হয়।
এ ধরনের ASYMMETRICAL(অসামঞ্জস্যপূর্ণ) সংযোজনের মাধ্যমে ডিএনএ STRAND এর যে প্রান্তটিতে ডি অক্সিরিবোছের C5 অবস্থিত রয়েছে সেই প্রান্তকে 5’ PRIME END এবং যে প্রান্তে ডি অক্সিরিবোছের C3 অবস্থিত হয়েছে তাকে 3’ PRIME END বলা হয়।
5’ PRIME END এ একটি প্রান্তিয় ফসফেট গ্রুপ এবং 3’ PRIME END এ একটি হাইড্রক্সিল গ্রুপ সংযুক্ত থাকে।
চিত্র-১৪ (ডিএনএ মডেল)একটি AXIS এর উপর নিউক্লীওবেছ দ্বারা সংযুক্ত DNA এর ডবল হেলিক্স।
চলতে থাকবে
Click this link
সূত্র:
১।^ Dahm, R (Jan 2008). “Discovering DNA: Friedrich Miescher and the early years of nucleic acid research”. Human Genetics 122 (6): 565–81. doi:10.1007/s00439-007-0433-0. ISSN 0340-6717. PMID 17901982.
২।^ Kabai, Sándor (2007). “Double Helix”. The Wolfram Demonstrations Project.
৩।^ Wang JC (1979). “Helical repeat of DNA in solution”. PNAS 76 (1): 200–203. doi:10.1073/pnas.76.1.200. PMC 382905. PMID 284332.
৪। http://en.wikipedia.org/wiki/Nucleotide
৫। Yakovchuk P, Protozanova E, Frank-Kamenetskii MD (2006). “Base-stacking and base-pairing contributions into thermal stability of the DNA double helix”. Nucleic Acids Res. 34 (2): 564–74. DOI:10.1093/nar/gkj454. PMC 1360284. PMID 16449200. //www.pubmedcentral.nih.gov/articlerender.fcgi?tool=pmcentrez&artid=1360284.
৬।a b c d Watson J.D. and Crick F.H.C. (1953). “A Structure for Deoxyribose Nucleic Acid” (PDF). Nature 171 (4356): 737–738. Bibcode 1953Natur.171..737W. DOI:10.1038/171737a0. PMID 13054692. http://www.nature.com/nature/dna50/watsoncrick.pdf.
৭।^ Gregory S; Barlow, KF; McLay, KE; Kaul, R; Swarbreck, D; Dunham, A; Scott, CE; Howe, KL et al. (2006). “The DNA sequence and biological annotation of human chromosome 1″. Nature 441 (7091): 315–21. Bibcode 2006Natur.441..315G. DOI:10.1038/nature04727. PMID 16710414.
৮। http://en.wikipedia.org/wiki/James_D._Watson
৯। http://www.nobelprize.org/educational/medicine/dna_double_helix/readmore.html
১০। http://en.wikipedia.org/wiki/Chromosome
১১। http://en.wikipedia.org/wiki/DNA
১৩। http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC177480/?tool=pmcentrez ১৪।http://en.wikipedia.org/wiki/Zygote
১৫। http://wiki.answers.com/Q/What_is_the_role_of_DNA_in_evolution
Share on Facebook
বিষয়: বিবিধ
২০৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন