ইন্ডিয়ান সুপার গ্লুর এতো শক্তি!!!
লিখেছেন লিখেছেন গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৬:২৫:৪৫ সন্ধ্যা
বর্তমানে দেশে চলছে আজব এক ঘৃণ্যতন্ত্র! মোবাইল অপারেটর কোম্পানী বাংলালিংক তাদের একটি বিজ্ঞাপনে মানুষকে মোটিভেশন করার জন্য একটি কথাকে বেশ জনপ্রিয়তা করতে সক্ষম হয়েছে “বাংলালিংক দর”। অনেকেই এই শব্দটি এখন ব্যবহার করছে ”বাংলালিংক দরে গুম, বাংলালিংক দরে ক্রসফায়ার, বাংলালিংক দরে যত্র তত্র, যারে ইচ্ছা তারে গুলি করে হত্যা, বাংলালিংক দরে লুটতরাজ, বাংলালিংক দরে গান পাউডার দিয়ে মানুষ পোড়ানো এখন নিত্য নৈমিত্যিক ঘটনা।
নিরাপরাধ সাধারণ রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গুম করে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া বাংলাদেশে এখন একদম মামুলি ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
একাত্তুর সালে পাকিস্তানী হানাদারদের অত্যাচার নির্যাতনের কাহিনী আমরা মুরুব্বীদের মুখে শুনেছি। পড়েছি বই পুস্তক ও পেপার পত্রিকায়। পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবহেলা ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তোলে আমাদের রাজনৈতিক মাঠের খেলোয়াড়রা স্বাধীনতার স্বাদ গিলানোর স্বপ্ন দেখাতে লাগলেন। রাজনৈতিকদের দেখানো স্বপ্নে বিভোর হয়ে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার খুনী জানোয়ারদের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে দেশের স্বাধীনতাকে চিনিয়ে এনেছিল এদেশের দামাল ছেলেরা। অগনিত নিরাপরাধ মানুষের রক্তের স্রোত এবং বেশুমার নারীর ইজ্জত বিসর্জন ও সীমাহীন আর্থিক অবকাঠামো ধুলিষ্যৎ করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংশ করে চিনিয়ে আনলো কাংখিত স্বাধীনতা।
রাজনৈতিক বেনিফিসিয়ারীদের দাবী অনুযায়ী দু’লক্ষ নারীর ইজ্জত হরণ এবং ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের স্রোতের উপর দিয়ে ভেষে আসা এদেশের স্বাদের স্বাধীনতার একচ্ছত্র মালিক মোক্তার এবং সোল এজেন্ট বনে যাওয়া সেই রাজনৈতিক জ্ঞানপাপী পুতুল খেলোয়াড়দের দখলে চলে যায় এদেশের গরীব দুঃখী, কৃষক-শ্রমিক মেহনতী মানুষের ভাগ্য নিয়্ন্ত্রণের ভার। অথচ এরা না কেউ সম্মুখে যুদ্ধ করেছিল আর না ছিল দেশ মাতৃকার টানে শেকড়বদ্ধ দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন কোন ডাইনামিক চরিত্রের অধিকারী! কেউ পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল প্রতিবেশী ল্যান্ডিয়ানদের গ্রোদে। কেউ বা পাকিস্তানী হানাদারদের সাথে নেগোসিয়েশন করে নিজের পরিবার পরিজনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি পেয়ে শটকে পড়লো পিন্ডীতে। দেশের মানুষ দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে আদায় করে নিল স্বাধীনতা। কিন্তু সেই সংগ্রামী জনতার মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে নতুন শোষকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হলো আওয়ামী লীগ নামক নিমক হারামের গোষ্টী যারা মূলত নয় মাস ল্যান্ডিয়ানদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী দেশের সম্পদ লুটপাটের যোগ্যতা অর্জনের প্রশিক্ষণরত স্বেচ্ছাসেবী শকুন। এই নিমক হারামগোষ্টী বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে তাদের কথিত পিতাকে বসানোর চেষ্ঠা করতে লাগলো আধুনিক যুগের নতুন ফেরাউনের শিংহাসনে। নয় মাস ধরে পাকিস্তানী হানাদারদের অত্যাচার নির্যাতনের ঘা শুকাতে না শুকাতেই নেমে আসলো নতুন বাকশালী হায়েনা জানোয়ারদের অত্যাচার, নির্যাতন এবং শোষণের নিত্য নতুন কলা কৌশল। লুটপাট এবং শোষণ নির্যাতনে বাধা দিতে গিয়ে মেজর জলিল আর শিরাজ সিকদাররা হলেন বলির পাঠা। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ হয়ে গেলো আরেক নতুন নারকীয় জলন্ত অগ্নিকু্ন্ড। এই আগুনে জলে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেন জাসদের ত্রিশ হাজার নেতা কর্মী।
ইতিহাসের অনিবার্য এবং অবধারিত পরিনতিতে নিষ্ঠুর এবং শিক্ষণীয় উদাহরণ হয়ে থাকলো পচাত্তরের পনেরই আগষ্ট!
অথচ সে উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ পাওয়া সত্বেও পরবর্তী উত্তরসূরীরা শিক্ষা না নিয়ে হার মানিয়ে দিলেন। সাড়ে তিন বছরের পাপের পায়শ্চিত দিলেন গোটা রাজ পরিবারের হৃদয় বিদারক এবং করুণ পরিনতির বিনিময়ে। মজলুমের অন্তরফাটা আর্তনাদের বদ দোয়া এবং পাপের বোঝা এতোই ভারী ছিল যে, রাষ্ট্র ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক মোক্তার একটি ভোগ বিলাসী পরিবারের সমূলে ধ্বংস হওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশের জনগণকে সামান্য আফসোস করতে দেখলো না দুনিয়ার মানুষ। দেশের কোন কোন এলাকাতে নামাযার নামাজের পরিবর্তনে শুকরানার নামাজ পড়ার খবরও পড়েছি ইতিহাসের পাতায়। কুনুতে নাজেলা পড়ে আল্লাহর দরবারে জালিমদের বিরুদ্ধে ফরিয়াদ জানানোর কথাও শুনেছি মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বগাথা অবদান রাখা মুরুব্বীদের মুখে।
দিন দিন বাড়িতেছে পাপের বোঝা। পিলখানার বিডিআর মেস্যাকার, হেফাজতের উপর ইতিহাসের নির্মম গনহত্যা, যুদ্ধপরাধী ইস্যুতে প্রতিবাদী মানুষের মিছিলে রক্তের স্রোত, রজনৈতিক দাবী দাওয়া আদায়ে আন্দোলনরত জনতার কন্ঠরোধে নির্মম অত্যাচার সবকিছুই ইতিমধ্যেই কথা বলতে শুরু করেছে! বাপের অরাজক দুঃশ্বাসনের রাজত্বকাল ছিল সাড়ে তিন বছর। অসহায় নির্বোধ জাতীর উপর কন্যার ধ্বংসলীলা ও দুঃশ্বাসনের সময় বাপের চেয়ে দ্বিগুণ। দম বন্ধ হয়ে যাওয়া বিভিষিকাময় পরিস্থিতিতে নিপতিত জনগণ চেয়ে আছে নতুন সংস্করণের পরিনতি কত করুণ হয়! এবার কি গোটা নিমকহারাম সম্প্রদায়ের জংলী রাজনৈতিক দূর্বৃত্বপনাশুদ্ধ বঙ্গোপসাগরের অতল গভীরে বিলিন হয়ে যাবে তাহলে?
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক বাণী শুনেছিলাম- লা ইয়ুলদাগুল মোমিনু ফি জুহরিণ ওয়াহিদিন মাররাতাইনি।- অর্থাৎ কোন মুমিন একই ভূল দ্বিতীয় বার করে না। অর্থাৎ কোন মুমিন বান্দা একই ভূল বার বার করে না। ভূল কোনক্রমে হয়ে গেলে সেই ভুল থেকে পরবর্তীতে শিক্ষা গ্রহণ করে আত্মশুদ্ধি করাই হচ্ছে মুমিনের ক্যারেক্টার। কিন্তু দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে বাপের দুঃশ্বাসন থেকে কন্যার দুঃশ্বাসনের মাত্রা সীমাহীন বেশী! তাহলে কি দেশের জনগণ এমন কোন বে-ঈমান, জাহেল মুর্খের খপ্পরে পড়েছে যে কিনা মা দুর্গার কাছে নিজের ক্ষমতার কুরসির নিরাপত্তা ভিখারী? যে কিনা গজে চড়ে রিজিক বিতরণকারী দেবদেবীপর পুজারী?
দেশরত্ন খেতাবধারী ডজন খানেক ডক্টরেট ডিগ্রীর অধিকারী জ্ঞানী মানুষ হিসেবে আত্মপরিচয় দানকারী শেখ হাসিনা আজ ক্ষমতা চেড়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেও কি সম্ভব হবে তার পক্ষে? তিনি ক্ষমতা ছাড়তে চাইলেও ক্ষমতার কুরসি তো তারে চাড়তে চাচ্ছে না। সমালোচকরা বলে থাকে ইন্ডিয়ান সুপার গ্লু দিয়া আটকানো আছে ক্ষমতার চেয়ারের সাথে। কুরসির সাথে এমন ভাবে লাগানো আছে যাতে পড়নের কাপড় লাগছে তো লাগছেই, দেহের চামড়াশুদ্ধ শক্তভাবে লেগে গেছে। আন্দোরলনরত জনতার হেঁচকা টানে কাপড়ের সাথে দেহের চামড়াও ছিড়ে যাচ্ছে কিন্তু ইন্ডিয়ান সুপার গ্লুর আকর্ষণ শক্তির তীব্রতা কমছে না। ক্ষমতার কুরসি বেয়ে লাল রক্ত ঝড়ার দৃশ্য জনগণ অলরেডি দেখতে পাচ্ছে!!!
বিষয়: বিবিধ
১৯১১ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর যাই হোক এই পোস্ট কিন্তু বাংলালিংক দামের নয় ,,ধন্যবাদ এরকম যৌক্তিক ও ভারতীয় সুপার গ্লু সংক্রান্ত লিখার জন্য।
দেশের অবস্থান বর্তমানে ভয়ঙ্কর রূপে আছে কখন কারে গায়েল করে কে জানে। ওদের হাল এমন পর্যায় চলে গেছে ক্ষমতা ছাড়তে চাইলে ও নিজেদের নিরাপত্তার ভয়ে ক্ষমতা ছাড়বে না। কারণ গুম খুনের পরিধি অনেক দূর চলে গেছে এখন সময়ের অপেক্ষায় ক্ষমতার পালাবদলে সকল লাশ এসে আওয়ামী সরকারের পাছায় লাতি মেরে গঙ্গায় পাঠানোর।
না কখনও সম্ভব নয় এই কারনে এই যে সে যদি ক্ষমতা ছারে হয় দেশান্তরী নয় জেলে/ফাঁফিতে নয়ত খুন করবে জনগন।
সুতরাং অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে শেষ চেষ্টা টা করে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
এমনেও শেষ তেমনেও শেষ তাই জনগনের রক্ত নিয়ে খেলা করে যদি টিকে যায় সেটা কি তার জন্য মন্দের ভালো নয়?
শুকরানার নামাজ শুদ্ধ আছিল না। হেতারা শাপ মেরে লেজে প্রাণ রাইখ্যা শুকরানার নামাজ পইড়তে কইছে কিডা তাগোরে? নামাজডা শুদ্ধভাবে না পইড়বার কারণেই পেট্রোল বোমা খাইয়া আইজকে তাগোরে কাফ্ফারা দিয়ন লাগছে। আন্নে না থাইকলেও গ্যাঞ্জাম কিন্তু এবার মারাত্মকভাবেই লাগছে।
শুধু নিজের স্বার্থ আর ক্ষমতাকে যারা সব চেয়ে বড় করে দেখে তারা ইতিহাস থেকে কখনই শিক্ষা নেয় না!
বর্তমান চেতনা ব্যবসায়ীরাও এই প্রকারের!
ধ্বংশের শেষ প্রান্তে দাড়িয়েও স্বীয় স্বার্থ ছাড়া আর কিছু ওদের চোখে ভাসে না!!
এখানে কিন্তু আপনার আমার অথবা তার কোন কোন কথাই হচ্ছে না। যা হচ্ছে তা এক তরফা। টকশোগুলো ঝাল এবং তিতার সাপ্লাই বন্ধ কইরা দিছে বুবুজান। হের লিগ্যা ক্রসফায়ার, বিনা বিচারে হত্যা, গুম, খুন, বন্দুকযুদ্ধ- এসব শব্দগুলো উচ্চরিত অয় ন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন