মুসলমানের রক্তে অমুসলিমের জয়

লিখেছেন লিখেছেন অবুঝ ছেলে ২৭ আগস্ট, ২০১৩, ১২:২২:০৩ রাত

আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ছে ঐতিহ্যময় ভূখন্ড সিরিয়া।শিয়া নুসাইরী গোষ্ঠীর ক্ষমতালোভী শাসক বাশার আল আসাদের ক্ষমতালিপ্সা আর কয়েক প্রজন্ম ধরে অব্যাহত সুন্নীদের উপর দমন পীড়নের ফলাফল হিসেবে এ দেশে শুরু হয় আন্দোলন।২০১১ সালে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ন এ আন্দোলন সরকারীবাহিনীর নির্যাতনের ফলে এখন সহিংস আকার ধারন করে গৃহযুদ্ধে পরিণত হয়েছে।বাশার আল আসাদের ক্ষমতার লোভ ও বিশ্বের দুটি অন্যতম পরাশক্তি আমেরিকা ও রাশিয়ার স্বার্থান্বেষনের বলি হচ্ছে এখানে লাখ লাখ মানুষ।গৃহহীন ও উদ্বাস্তু হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি।এই যুদ্ধে মার্কিনদের স্বার্থ মুসলমানদের ক্ষতি স্বাধন করা কিন্তু রাশিয়ানদের স্বার্থ কি..?? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের কে একটু ঘুরে তাকাতে হবে ইতিহাসের দিকে।আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর আফগানের মুক্তিকামী মানুষেরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে।সে সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করে।আফগান মুজাহিদদের দ্বারা সুপার পাওয়ার সোভিয়েতকে ধ্বংস করে তার স্থান দখল করার জন্য আমেরিকাও তাদেরকে সাহায্য করে।প্রায় দশ বছর ধরে চলা সেই যুদ্ধে ১৪লাখ আফগান প্রান হারায়।অবশেষে তারা বিজয় লাভ করে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের অবকাঠামো ভেঙ্গে খন্ডবিখন্ড হয়ে মূল রাশিয়ায় তাদের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যায়।সেই খন্ডবিখন্ড সোভিয়েত ইউনিয়ন নতুনরুপে গঠিত হয়ে বর্তমানের রাশিয়ার জন্ম।অনেকদিন থেকেই তারা আমেরিকাকে শায়েস্তা করার মওকা খুজছিলো।অবশেষ সিরিয়ায় তাদের আশা পূরন হয়েছে।প্রতিশোধস্বরুপ সিরিয়ায় সেই খেলাই খেলতে চাচ্ছে রাশিয়া যে খেলা আফগানিস্তানে আমেরিকা খেলেছিলো তাদের বিরুদ্ধে।তারা সেখানে বাশার আল আসাদকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করছে।খুনী বাশার বাহিনীকে ইতিমধ্যে ব্যাপক মরণাস্ত্র সরবরাহ করেছে রাশিয়া।সিরিয়ার তরতুস বন্দরে রয়েছে শক্তিশালী রুশ নৌ ঘাটি।এ ছাড়াও খুনী বাশারের সাথে রয়েছে তার সমগোত্রীয় শিয়াপন্থী ইরান।দমন-পীড়নের সাথে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত ছিলো ইরানিরা।অর্থ-অস্ত্র-জনবল দিয়ে তাদের ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে তারা।এমনকি লেবাননভিত্তিক ইরানের প্রক্সিবাহিনী হিজবুল্লাহও যোগ দিয়েছে বাশারবাহিনীর সাথে।

বিপরীত দিকে সিরিয়ার মুজাহিদদেরকে অল্পবিস্তর সাহায্য করছে আমেরিকা ও আরো কয়েকটি রাষ্ট্র।আন্তর্জাতিকভাবেও মুজাহিদরা আর কোনো সাহায্য পাচ্ছেনা।ফলে তারা ব্যাপকহারে গণহত্যার শিকার হচ্ছে।কয়েকদিন আগে রাসায়নিক বিষাক্ত গ্যাস ব্যাবহার করে ১৩০০শ মানুষকে একসাথে হত্যা করে খুনী আসাদ বাহিনী।যদি এখনি তাদেরকে পর্যাপ্ত সাহায্য না করা হয় তাহলে তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে পারবেনা এ কথা উপলব্ধি করতে পারায় বর্তমানে নড়াচড়া শুরু করেছে আমেরিকা।তার প্রস্তুতি স্বরুপ তাদের সপ্তম নৌবহর এগিয়ে আসছে সিরিয়ার দিকে।এ দিকে রাশিয়া আমেরিকাকে হুমকি দিয়েছে,সিরিয়ায় যুদ্ধে নামলে মারাত্মক পরিনতি হবে আমেরিকার।

এ থেকে এটাই বোঝা যায় যে,আপাতদৃষ্টিতে এটা সিরিয়ার মুক্তিযুদ্ধ মনে হলেও আসলে তা নয়। বরং আফগানিস্তানের মতো এটাও মার্কিন বনাম রাশিয়ার যুদ্ধ।কিন্তু আফসোস..! আফগানেও রক্ত ঝড়েছিলো মুসলমানদের,সিরিয়াতেও রক্ত ঝড়ছে মুসলমানদের।ধূর্ত খৃষ্টানরা চালাকি করে মুসলমানদের পিছে লুকিয়ে যুদ্ধ করছে যাতে আঘাত সব মুসলমানদের উপর দিয়েই যায়।সরল-সোজা মুসলমানরা তা উপলব্ধি করতে পারছেনা।

বিষয়: বিবিধ

১২৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File