বাংলাদেশ - দারুল হারব নাকি দারুল সিল্ম?? [কাফির রাষ্ট্র নাকি ইসলামিক রাষ্ট্র??]
লিখেছেন লিখেছেন আলীনূর ফাহাদ ২১ আগস্ট, ২০১৩, ০৩:০৭:৪০ রাত
যখন এই দেশে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে নিয়ে প্রকাশ্যে বাজে কথা বলা শুরু হল অথবা বলা যায় যখন ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক এবং কিছু মুরতাদের রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে নিয়ে বিভতস কটূক্তি মানুষের সামনে প্রকাশ হয়ে গেল তখন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি চায়ের দোকানের টেম্পারেচার থাকত চরম (৭২ডিগ্রি সেলসিয়াস),মাঝে মাঝে অনেকেই লাফায়ে উঠত, চায়ের দোকানদার টেনশনে থাকত এই বুঝি তার কাপটা উত্তেজনায় মাটিতে আছার মাইরা ভাইঙ্গা ফালাইলো । মিথ্যা বলব না আমিও কম লাফাই নাই। মুসলিম সে জেমনি হোক সেই সময় মনে অবস্থাটা কারোই ভাল ছিল না
যাই হোক সেই সময় বেশির ভাগ ভাইদের মুখেই একটা কথা শুনতাম আর তা হল, বাংলাদেশ যে দেশের ৯০ ভাগই মুসলমান এই রকম একটা ইসলামিক রাষ্ট্রে নাস্তিক মুরতাদ দের কোন জায়গা নাই।
বাংলাদেশকে অনেকেই বলে ইসলামিক রাষ্ট্র। তাদের ভাষায় ৯০% মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ তাই এইটা ইসলামিক রাষ্ট্র। আবার অনেক ভাইদের মতে বাংলাদেশ হচ্ছে কুফফার রাষ্ট্র। এখন প্রশ্ন হইল বাংলাদেশের অবস্থান সত্যিকার অর্থে কি ,
আমার তো মাথা পুরাই পেজগি খাইয়া গিয়েছিল। তাই চিন্তা করলাম একটু খোজ খবর নিয়া দেখি , এই দেশের কাহিনিটা আসলে কি? যাই হোক ঘাটা ঘাটি কইরা যা পাইলাম তা হইল।
বাংলাদেশের ৯০% মানুষ মুসলমান(অর্থাৎ ওনাদের নাম সালাম , বরকত, রফিক ,জব্বার ইত্যাদি) কথা সত্য। এখন ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম হলেই কি একটা রাষ্ট্রকে ইসলামিক রাষ্ট্র বলা যায়??
ইমাম আবু হানিফা (র একটা ফতোয়া দিয়েছিলেন যেখানে তিনি বলেছিলেন দারুল ইসলাম (ইসলামিক রাষ্ট্র) দারুল কুফরে (নন ইসলামিক রাষ্ট্র) পরিনত হবে যদি নিম্নক্ত তিনটি শর্ত কোন রাষ্ট্র পুরন করে ।শর্ত গুলো হল।
১, যখন আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য আইন দিয়ে সেই দেশ পরিচালনা করা হবে।
২, যখন মুসলমানরা সেই দেশে তাদের নিরাপত্তা হারিয়ে ফেলবে।
৩, প্রতিবেশি। এটা হবে যদি সেই রাষ্ট্রের সাথে অমুসলিম রাষ্ট্রের বর্ডার থাকে এবং পরে যদি সেই প্রতিবেশি অমুসলিম রাষ্ট্র মুসলিমদের জন্য ভয়ংকর প্রমানিত হয় যার দরুন মুসলিমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।
আবু হানিফা (রঃ) ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ এবং ইমাম ইউসুফ এই ফতোয়া দেন যে ইসলামিক রাষ্ট্র তখনই বলা যাবে যখন সেই রাষ্ট্র সম্পূর্ন ইসলামিক আইন দারা পরিচালিত হয়। আর যদি তা না হয় তাহলে সেই রাষ্ট্রকে দারুল কুফর বা অ-ইসলামিক রাষ্ট্র বলে গন্য করতে হবে।
এখন বলেন বাংলাদেশ কে কি ইসলামিক রাষ্ট্র বলা যায়? দেশ কিন্তু আল্লাহর আইনে চলছে না। কিন্তু এই দেশের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষই মুসলমান।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়ার একটা ফতোয়া আছে। তাকে মারদিন নামক এক শহরের কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যেই শহরটি এক সময় ইসলামিক আইন দ্বারাই পরিচালিত ছিল কিন্তু পরে সেই শহরে কুফর আইন দিয়ে দেশ পরিচালনার কাজ শুরু হয়। ইবনে তাইমিয়া (রঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল মারদিন শহরটি কি দারুল হারব (ইসলামের সাথে যুদ্ধ অবস্থায় আছে) নাকি দারুস-সিল্ম (ইসলামের সাথে শান্তি অবস্থায়) আছে।
তিনি উত্তর দিলেনঃ “ এটা (মারদিন) দুটো অর্থই বহন করে। এই শহরটি দারুস সিল্ম (ইসলামের সাথে শান্তি অবস্থা) নয় কারন দারুস সিল্ম আল্লাহর আইন দ্বারা পরিচালিত হয় আবার যেহেতু এই শহরের সৈন্যরা মুসলিম তাই এই শহরটি দারুল হারব (ইসলামের সাথে যুদ্ধ অবস্থা ) নয়, কারন এর ভেতর বসবাস কারি রা অমুসলিম নয়। এইটিকে বরং একটি তৃতীয় ভাগে ভাগ করা যায় যেখানে মুসলিমদের সাথে সেই ব্যাবহার করতে হবে যা তাদের প্রাপ্য আর ইসলামি শরীয়া বিরোধিদের সাথে সেই ব্যাবহার করতে হবে যা তাদের প্রাপ্য।” আল-ফাতোয়া ২৮/২৪১
[বিঃদ্রঃ আশা করছি ব্যাপারটা এখন কিছুটা হলেও পরিষ্কার হবে ইন শা আল্লাহ।]
facebook link
বিষয়: বিবিধ
২৯১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন