জীবনটা যেন একটা রং নাম্বারে!
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ সাহিল ১৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৪:১৬:৩০ বিকাল
কিছু মানুষ সরলতাকে বিলিয়ে দেয় আর কিছু মানুষ অন্যের এই সরলতাকে পুঁজি করে। এমনই একটি ঘটনা বাংলাদেশের কোন এক প্রান্তে। মোবাইল ফোনে রং নাম্বার সূত্র ধরে প্রেমকেন্দ্রিক এমনই একটি ঘটনার শিকার এ্যানি। বাবা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। বাবা মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে এ্যানি মেঝো এবং একমাত্র মেয়ে। দুই ভাই ও এক বোন।
বড় ভাই বিএসসি পাশ করেছেন। ছোট ভাই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আর এ্যানি এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এ্যানির বাবা ও বড় ভাই এলাকার ডাক্তার একটি ছেলের সাথে এ্যানির বিয়ে ঠিক করে। মেয়েটি দেখতে অনেক সুন্দর ও পরিপাটি এবং মেধাবী ছাত্রী। অনেক ছেলেই তাকে পছন্দ করত কিন্তু কখনো বলতে সাহস পেত না।
বাবা মায়ের পছন্দের ছেলে এমবিবিএস মাসুম তাকে মোবাইল কিনে দেয় তার সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য। কিন্তু উক্ত বিয়েতে এ্যানি অসম্মতি প্রকাশ করে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মনে সন্দেহের দানা বাঁধতে শুরু করে। এ্যানির বড় ভাই এ্যানির সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে এ্যানির বিষয়ে জানতে চায়। তার অন্য কোন ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে কি না।
বন্ধু মহলের কেউই এ বিষয়ে তাকে জানাতে পারেনি। অতঃপর একদিন পরিবারের পছন্দের ছেলে মাসুমের উপহার দেওয়া মোবাইলে এ্যানি কারো সাথে কথা বলছে এই ব্যাপারটি এ্যানির বড় ভাই বুঝতে পারেন। তিনি এ্যানির মোবাইল কললিস্ট চেক করেন। সেখানে তিনি একটি অপরিচিত নাম্বার দেখেন। এ বিষয়ে এ্যানির কাছে জানতে চাইলে এ্যানি প্রথমে নিশ্চুপ থাকে। পরবর্তীতে সে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। মোবাইল ফোনে রং নাম্বারে মনির নামে একটি ছেলের সাথে তার পরিচয়। ছেলেটির বাড়ি কুমিল্লায়। মনির গাজীপুর বুয়েট থেকে বিএসসি পাশ করে। সে এখন চট্টগ্রামে চাকুরী করে।
মোবাইল ফোনে রং নাম্বারে কথা বলার সূত্র ধরে তাদের মাঝে সম্পর্ক তৈরি হয়। এক কান দু’কান করে তৈরি হয় প্রেমের পাঁচকাহন। এ্যানি নিছক দুষ্টুমির ছলে কথা বলার এক পর্যায়ে আবেগ প্রবন হয়ে পড়ে। এ্যানি সরল মনের একটি মেয়ে। ছেলেটির মনের গভীরে কি ছিল তা বুঝতে পারেনি। তাই এ্যানির সরল মন আবেগের বশঃভূত হয়ে মনিরকে মণপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসে। নিয়তির বিধান তাই এ্যানির সরল মন বোঝেনি।
ছেলেটির মনে ছিল বিশ্বাসঘাতকতা, অমানবিকতা ও প্রতারণার নিকৃষ্ট আবাস। গত ০৫/০৪/২০১২ইং তারিখ রাত আনুমানিক রাত ২টার সময় মনির এ্যানিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ্যানির পবিত্র প্রেমকে প্রত্যাখান করে এবং চরমভাবে বিদ্রুপ করে। এদিন মনিরের মনের কুৎসা ও প্রতারণার প্রকৃত রূপের প্রকাশ ঘটে। যা একজন সরল মনের মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে অবমূল্যায়ণ করার চরম ঘৃণিত একটি উদাহরণ। এই বিদ্রুপ ও প্রত্যাখ্যান সইতে না পেরে সরল মনের এ্যানি সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা পর এ্যানির জ্ঞান ফিরে।
বর্তমানে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এ্যানি চিকিৎসাধীন। তাই বলতে হয়, ভালোবাসার প্রতিদান যদি এমন হয় তাহলে প্রেমের মত একটি পবিত্র সম্পর্ককে মানুষ ধিক্কার দিবে এবং চিরতরে ভুলে যাবে। তাই এই ক্ষুদ্র রিপোর্টারের অনুরোধ মনের মিল হলেও তা যেন রং নাম্বারে না হয়।
বিষয়: সাহিত্য
১৩৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন