শেখ হাসিনার স্বপ্ন এরশাদকে ঘিরে, যে কোন সময় তা ভেঙ্গে দিতে পারেন এইচ এম এরশাদ !
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মিজানুর রহমান সোহেল ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৪:২৪:৪৯ রাত
আমরা স্বপ্ন দুই ভাবে দেখি, ঘুমিয়ে আর জেগে। ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখি তার প্রায় সবটাই অপ্রত্যাশিত ভাবে পেয়ে থাকি। তবুও যখন কোন অনাকাঙ্খিত স্পর্শে, শব্দে বা সময়ের কারনে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার সাথে সাথে সে স্বপ্নও ভেঙ্গে যায়, তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মনের মাঝে কিছু মুহুর্তের জন্য একটা পরিবর্তন সৃষ্টি হয়। লেখার বিষয়ানুযায়ী সুখময় স্বপ্নের কথাই ধরা যাক। সুখময় একটা স্বপ্ন যখন ভেঙ্গে যায়, জেগে ওঠার পর একটু বেশিই আফছোছ হয়। আর ভেঙ্গে যাওয়ার কারনটির উপরে বেশ ধিক্কারও জেগে ওঠে মনে। তবুও তা খানিক সময়ের ব্যবধানে নিছক স্বপ্ন ভেবেই স্বপ্ন ভাঙ্গার কষ্ট ভুলে যাই। কিন্তু বাস্তবে আমরা জেগে জেগে যে স্বপ্ন দেখি তা প্রত্যাশা থেকেই আসে। কারন মানুষের কাঙ্খিত জীবনের পুরোটাই স্বপ্নময়। আর তা বাস্তবায়নে আমাদের কত পরিকল্পনা। যে কোন স্বপ্নের শেষ ফলাফলের ঠিক পুর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত আমাদের চেষ্টার কমতি থাকেনা। এতদস্বত্তেও বাস্তবতার আঘাতে অনেক স্বপ্নই ভেঙ্গে যায়, যদিও তা মেনে নেয়া আমাদের জন্য কষ্টকর।
শেখ হাসিনার বর্তমান স্বপ্নের কথা সকলেরই জানা। নিজের অধীনে নির্বাচন দিয়ে এবং তাতে প্রভাব খাটিয়ে আবার ক্ষমতায় আসা। বিরোধী দল তথা প্রতিদ্বন্দীতা ছাড়া কোন নির্বাচন গ্রহনযোগ্য হয়না। শেখ হাসিনা ভাল করেই জানেন তাঁর এই মনগড়া নির্বাচনে খালেদা জিয়া অর্থাৎ বিরোধী দল বিএনপি অংশ নেবেন না। তাহলে কি হবে তাঁর সে স্বপ্নের ? নির্বাচনের গ্রহন যোগ্যতা পেতে বিরোধী দলের প্রতিদন্দ্বীতা প্রয়োজন। আর সে প্রয়োজন মেটাতেই স্বপ্নের নায়ক এইচ এম এরশাদকে ঘিরেই শেখ হাসিনার যত স্বপ্ন। সে মতে মহা পরিকল্পনারও অন্ত নেই। নাটকই যার বাস্তবায়নের স্বরুপ। নাটকে যৌথ অভিনয়ে অভিনেতা হিসেবে এরশাদেরতো জুড়ি নেই। ইতি মধ্যেই বেশ সাফল্যের সাথেই মঞ্চস্থ করলেন জোট বিভক্তির। সময়ের সাথে সাথে স্বপ্ন পুরনে এরশাদের কদরও বেড়ে যাচ্ছে বহুগুন। স্বপ্ন পুরনে এইচ এম এরশাদের বিকল্প নেই শেখ হাসিনার জন্য। যে কোন উপায় দেশের গুরুত্বপূর্ন অবস্থানে নিজেকে অধিষ্ঠিত করার লোভ এরশাদের সর্বকালেই ছিল। যে লোভ তাঁর পাপ বোধকেও ভুলিয়ে দেয় মাঝে মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ করেই যদি পাপের ফলে মৃত্যুর ভয়ে কাতর হয়ে ওঠে এরশাদের মন অর্থাৎ-
১. বর্তমানের তীব্র আন্দোলনের ফলে যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে সকলের কাঙ্খিত নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাদ্য হয়, আর সে নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠ হয়, বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাই বেশি। শেখ হাসিনার আঁচলের নিচে থাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের যদি এই আশংকাবোধ জেগে ওঠে যে, সেক্ষেত্রে জীবনের অন্তিম দিনগুলি সেই অতি পরিচিত সরকারী প্রকোষ্ঠে (জেল) কাঁটাতে হতে পারে। অথবা
২. শেখ হাসিনার স্বৈরাচারিতায় স্বপ্নের বাস্তবায়ন যদিও ঘটে অর্থাৎ বিএনপিকে ছাড়াই নিজের অধীনে নির্বাচন দিয়ে বিজয় নিশ্চিতকরে সরকার গঠন করেন, জবাবে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য বিক্ষুদ্ব দলগুলোর অব্যাহত গন আন্দোলন ও জাতিসঙ্গ সহ বহির্বিশ্বের চাপে সে সরকার যে বেশি দিন টিকতে পারবেনা সে অভিজ্ঞতা স্বয়ং এরশাদেরই রয়েছে। আর তখন নিজের করুন অবস্থার উপলব্দি বা ভয়ে যদি এখুনি এরশাদ ভীতু হয়ে পড়েন। এছাড়াও
৩. লোভের ধরনটা যদি একটু পাল্টে সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ঐক্যমত পোষন করে আনদোলনে শরিক হন। বিনিময় বেগম জিয়ার সাথে আগামীর ক্ষমতায় গুরুত্বপুর্ন কেউ হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এবং সেই সাথে এটাও ভাবেন বিএনপি’র প্রতিশোধের বিশেষ প্রজেক্টের আওতায় প্রতিহিংসার আগুনে যখন আওয়ামীলীগ পুড়তে থাকবে তখন চির তরুন আমি এরশাদই হব বাংলার অন্যতম বিকল্প শক্তি,
তবে যে কোন সময়েই এরশাদ সাহেব ভেঙ্গে দিতে পারেন শেখ হাসিনার সব স্বপ্ন। স্বপ্নভাঙ্গা কষ্ট , ক্ষোভ আর বিরহের কথা হাসিনাই বা ভুলবেন কি করে ???
বিষয়: রাজনীতি
১৩৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন