ফ্রান্সে ঈদ উৎসব
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মিজানুর রহমান সোহেল ১৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:৫৪:৩৩ দুপুর
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে পিছনের সকল দুঃখ-কষ্ট, ব্যাথা-বেদনা, রাগ-ক্রোধ, হিংসা-দেমাগ, দুশমনি সকল কিছু ভুলে একে অপরকে ভালবাসায় স্বানন্দে বুকে টেনে নেয়া। পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়। উচু-নীচু, ধনী-গরীব নেই কোন ভেদাভেদ। মহান আল্লাহ পাকের হুকুম তথা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে পশু কুরবানী দেওয়ার সাথে সাথে নিজের ভিতরের পশুত্বটাকেও (অর্থাৎ নিজের ভিতরে থাকা হিংস্রতা ও সকল কু-রিপু বা খারাপ স্বভাব গুলো কে ) কুরবানী বা বিষর্জন দিয়ে মানুষ সহ সকল প্রানী জগতের প্রতি ভালবাসার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়াই ঈদ-উল-আজহার শিক্ষা। ঈদ-উল-আজহা আমাদের কে চরম আত্ম ত্যাগের শিক্ষা দেয়। স্বার্থ ত্যাগ করে নিজের প্রেম ভালবাসা, অর্থ ও কুরবানীকৃত পশুর গোস্ত আত্মীয় স্বজন, গরীব দূঃখী, দুস্থ্যদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে, পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে সাক্ষাত, খোঁজ খবর নেয়া, মোলাকাত, দাওয়াত নিমন্ত্রনের মাধ্যমে ঈদের আনন্দে সবাই একাকার হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ঈদের যে প্রকৃত নিয়ম রয়েছে তা অনুসরন ও অনুকরনের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আজহা পালিত হচ্ছে আজ।
আরব বিশ্বের সাথে একযোগে ইউরোপের সকল দেশে মুসলিম কমিউনিটিতে গতকাল ঈদ-উল-আজহা পালিত হয়েছে। ফ্রান্সে রয়েছে বৃহত্তর মুসলিম কমিউনিটি। সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে যথাযোগ্য মর্যাধায় ঈদ-উল-আজহা পালিত হয়েছে এখানে। প্রতিটি মুসলিম পরিবারে বয়ে গেছে ঈদের আনন্দ। সকাল ৮:৩০ মিনিট থেকে শুরু করে ফ্রান্সে অবস্থিত সকল মসজিদে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদ ছাড়াও ঈদের নামাজের জন্য বিভিন্ন হল ভাড়া করেও ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় অমুসলিমদের মাঝেও মুসলমানের এ দিনটি পালনের ক্ষেত্রে সম্প্রীতি সদ্ভাব পরিলক্ষিত হয়। রাস্তার পাশে অবস্থিত মসজিদগুলোতে জামাত চলাকালীন লোকজনের রাস্তা পারাপারের সময়, সাধারন , প্রাইভেট সকল ধরনের পরিবহন বা গাড়ী চালকেরা নির্দিষ্ট ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াও সহিঞ্চু মনোভাবের পরিচয় দিয়ে হাসিমুখে রাস্তা পারাপারে লোকজনকে অগ্রধিকার প্রদান করতে দেখা যায়।
ফ্রান্সে বাংলাদেশী কমিউনিটির নিজস্ব মসজিদগুলোতেও একাধিক নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আর এ সময়টা নিজেদের মিলন মেলায় রুপ নেয়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের এই একত্রিত অবস্থান সত্যিই মুহুর্তের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেয় পিতা মাতা, ভাই বোন, প্রিয়তমা স্ত্রী, ছেলে মেয়ে, আত্মীয় স্বজন ও প্রিয় জন্মভুমিকে ছেড়ে প্রবাসে নিসঙ্গ জীবনের শত কষ্ট, দূঃখ বেদনাকে।
ঈদের নামাজের প্রতিটি জামাতে নামাজের আগে পরে সম্মানিত ইমামগন ঈদ-উল-আজহা প্রকৃত উদ্দেশ্য, শিক্ষা ও কর্তব্য সম্পর্কে বক্তব্য পেশ করেন এবং দোয়া মুনাজাতে সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ পাকের দরবারে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও কল্যান কামনা করা হয়।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
৯৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন