অভাব (সম্পুর্ণ)
লিখেছেন লিখেছেন দীপু সিদ্দিক ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৪:০২:৪৭ বিকাল
১
প্রচন্ড লাথিতে আমি কাঁকিয়ে উঠলাম। মনে হল গলার ভেতর থেকে বমি বের হয়ে গেল। কিন্তু মুখের ভেতরে কোন বমি আসল না।
আমার ঘোর কাটতে কতক সময় লাগল। আন্ধকার ঘরটাতে প্রথমে আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। সম্ভবত আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। হ্যা ঘুমিয়েই ছিলাম হয়ত। কারণ সেই সন্ধ্যে বেলা বাড়িতে রিকশায় ফেরার পথে আমাকে ধরে নিয়ে আসল ওরা। ওরা? হ্যা ওরা চার জন মানুষ। আমার ঘাড়ের পেছনে কাটারি রেখেছিল একজন। গোফওয়ালা লোকটা একটা জং ধরা পিস্তল পেটের কাছে রাখল। অনভিজ্ঞ আমি সহজেই বুঝতে পেরেছিলাম যে ওটা কাজ করছে না। কিন্তু তারপরেও আমি কথা বলতে পারিনি, আমি চিৎকার করতে পারিনি। কারণ চিকন লিকলিকে লোকটা ভয়ংকর রকম একটা খুর আমার গলার সামনে ধরে চোখ বের করে বলেছিল ‘খবরদার! কোন রকম চি ! চি! করবি তো গলার নলি কাইটা ফালামু।’ মাত্র ছয় সেকেন্ড! কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার মাথার নিচে একটা আঘাত লাগল। ব্যাস এইটুকুই।
চার দিকে অন্ধকার। স্পষ্টই বুঝতে পারছি যে আমার সামনে একটি লোক দাড়িয়ে। কিন্তু তার চেহারা বা গায়ের রঙ কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। লোকটার পরনের কাপড়ও দেখা যাচ্ছে না। আমি অন্ধকারের ভেতরে কেমন ঘাবড়ে যাচ্ছি মনে হচ্ছে। কবরের কথা মনে পড়ছে। ছোটবেলা দাদু যেই কবরের কথা বলেছিল। আর সে সময়ে আমি যেরকম কবরের কথা কল্পনা করেছিলাম। আজ মনে হল সেই কবরেই আমি বসে আছি। আমার সামনে ভয়ংকর ফেরেশতা হয়ে ঐ লোকটা। যে কিনা আমাকে ক্ষানিক আগেই লাথি মেরে ঘুম ভাঙ্গালো।
‘ও মাগো!’ আমি চমকে উঠলাম। ‘কে ভাই? আমাকে মারলেন কেন?’ আমি অনেকটা অস্পষ্ট করেই বললাম।
‘চুপ কর হারামজাদা! আমি কেডা এইটা দিয়া তুই কি করবি? নিজের ইয়া নবছি করতে থাক!’
লোকটির গমগমে কথায় কেমন যেন অন্ধকারটা ফাকা হয়ে আসতে চাইল। নিজের 'ইয়া নবছি' বলতে লোকটা কি বোঝাতে চাইছে তা বুঝতে পারলাম না।
‘ভাই আমার একটা নাম আছে। আপনি আমাকে হারামজাদা বলছেন কেন? জীবনে আমি কাউকেই গালি দেইনি। আর আপনি কিনা আমার বাপ তুলে গালি দিলেন!’ এমন শিশুদের মত অভিমানের সুরে কথাগুলো আমি কেন বললাম তা নিজেই বুঝলাম না। নিজের কথায় নিজেকেই খুব বোকা মনে হলো।
‘তোর নাম জাইনা আমার কি হইব!’ কিন্তু লোকটা হাসল না। আগের মতই বাজখাই আর রাগত স্বরে আমাকে ধমকে কথাগুলো বলল।
‘তার পরেও মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে নাম জানা থাকা ভাল। কথা বলতে সুবিধা হয়।’
‘শালায় কয় কি! জীবনের ঠিক নাই! আবার কয় কিনা কথা বলতে ভাল লাগে।’ লোকটা কথাগুলো আমাকে বলল নাকি নিজেকেই বলল তা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু আমি ভয় পেয়ে গেলাম। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে নাকি! লোকটার কথা শুনেতো তাই মনে হয়। হঠাৎই কেন যেন পানির তেষ্টা পেল। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল আমার। আমি অনেকটা কান্নার সুরেই আবেদন করে বললাম ‘ভাই একটু পানি খাওয়াবেন? খুব পিপাসা পেয়েছে।’
লোকটা কোন জবাব দিলনা। পুরো এক মিনিট দাড়িয়ে থাকল। তারপর বুঝলাম ধীরে ধীরে সে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর লোকটা এসে আগের ভাষতেই হুকুম করল ‘ওঠ! পানি আনছি! খা!’
আমি উঠতে গিয়েই ব্যাপারটা বুঝলাম। ওরা আমার হাত পা বেধে ফেলে রেখেছিল। আমি উঠতে পারলাম না। আমি অসহায়ের মত বললাম ‘ভাই হাত পা বাধা। উঠে বসতে পারছি না তো!’ লোকটা সম্ভবত দয়াপরবশ হয়েই সুইচ টিপে লাইট জ্বালালো। চোখের উপর তীব্র আলোর ঝলকানিতে চোখে অন্ধকার দেখলাম আমি। চোঁখের ধাঁধাঁ কাটিয়ে বেশ অবাক হয়ে তাকালাম। সেই গোঁফওয়ালা লোকটা! আমার সামনে দাড়িয়ে। সেই লোকটা! আমার ঘাড়ের পিছনে যে চাপাতি ধরে রেখেছিল। পিট পিট চোখে লোকটা আমাকে দেখছিল। দেখে মনে হবে গো বেচারা। একদম নিরীহ। অথচ এই লোকটিই একটু আগে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। আমি ওর দিকে চেয়ে হাসলাম। নীরব অথচ আন্তরিক মোলায়েম হাসি। লোকটার কোন প্রতিক্রিয়া হলো না। আকস্মিকই এসে আমার শার্টের কলার টেনে ধরে হ্যাচকা মেরে বসালো। খুব ক্ষুধা পেয়েছিল। পানিটুকু পেয়ে ঢক ঢক করে গিলে ফেললাম। পেটের ভেতর গুলিয়ে উঠল আমার। লোকটা কেমন যেন পিট পিট করে আমাকে দেখছিল। কেমন যেন পর্যবেক্ষণসুলভ চাহুনি। হয়ত আমার পুরাতন প্যান্ট, মলিন শার্ট আর প্রায় ছেড়া কমদামি স্যান্ডেল লোকটার পছন্দ হচ্ছিল না।
‘কি দেখছেন ভাই?’
লোকটা কেমন ভাব নিয়ে থাকল কতক্ষণ। তারপর আবার সেই গমগমে গলায় বলল ‘তোর চেহারার এই দশা কেন? শুনেছি তুই নাকি খুব বাঘা লোক! হি হি বাঘা লোকের আবার এই চেহারা!’
‘বাঘা! আমি? আমি বাঘা? কে বলল আপনাকে!’
‘হ! তুই'ই নাকি বাঘা লোক! তোরেতো একটা চিপা দিলেই চ্যাপটা হইয়া যাবি।’
লোকটার অবজ্ঞার কথা শুনে আমার খুব দু:খ লাগলো। ‘নারে ভাই, আমি কোন বাঘা লোক না। আমি খুবই গরীব একটা লোক। ঘরে খুব অভাব। বড় কষ্ট ভাই! বড় কষ্ট!’
লোকটা অবিশ্বাসের চোখে আমার দিকে তাকালো। তারপর হো হো করে হেসে উঠল। ‘তুই আসলেই বাঘা। একটা শয়তান। তোরে মাইরা ফালানই দরকার। তোর আগে যেডারে ধরছিলাম ওডাও এইরাম করছিলো। কিন্তু ওডা ছিল এইকটা ডাকাইত! তুইও এইকটা ডাকাইত!’
‘ভাই আপনের নামটা কি?’
‘এ্য এ্য সুরেশ! ক্যান নাম দিয়া কি করবি?’ লোকটা কেমন ঘাবড়ে গিয়ে বলল।
‘শুরেশ ভাই! দু:খিত, শুরেশ দা! আপনার ঘরে কি স্ত্রী আছে? ছেলে মেয়ে আছে?’
‘তা দিয়া তোর কাম কি? থাকলেই বা কি আর না থাকলেই কি?’
ঘরের কথা মনে পড়াতে আমার কেমন যেন মন খারাপ হয়ে গেল। শুরেশ লোকটার কথা কিছুই খেয়াল করতে পারলাম না। শুধু অসুস্থ মেয়েটার করুণ মুখটা মনে হতে লাগল। আজকেই আমার বেতন পাওয়ার কথা ছিল। কারখানায় কি ঝামেলা হল। আজ বেতন নেই। পরশু বেতন। অথচ ঘরে বাজার নেই। রাবেয়া কখনই এসব ব্যাপারে ঝামেলা করে না। কেবল করুণ চোখে একবার আামার চেহারার দিকে তাকায়।
অথচ আমি নিশ্চিত জানি। এখনও আমার বাড়িতে চুলায় হাড়ি চাপে নি। বেলা কত! হয়ত বিকেল হয়ে গেছে। হঠাৎই আমার সময় সম্পর্কে খেয়াল হল।
‘শুরেশদা! এখন কি বিকেল?’
‘না এখন সন্ধ্যা! তোর মরণের আর বেশিক্ষণ দেরী নাই।’
আমি শুরেশের কথার অর্থ বুৃঝলাম না। কেবল বুঝলাম অসুস্থ মেয়েটার এখনও ঔষধ কেনা হয় নি। শুধু বুঝলাম ছেলে দুটো এখনও সকাল থেকে না খেয়ে আছে। রাবেয়া এখনও আমার পথ চেয়ে আছে।
‘শুরেশ দা! আমাকে যেতে দিন! আমার মেয়েটা অসুস্থ! ’
‘চোপ বেটা!’
‘শুরেশ দা! ঘরে আমার ছেলে দুটো না খেয়ে আছে। আজকে বাসায় যেতে না পারলে কাল ওদের স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেবে। আগামী কাল ওদের বেতন দেয়ার তারিখ।’
‘চুপ করবি! নাকি তোর গলায় গামছা ভরে দেব?’
‘আপনার পায়ে পড়ি! শুরেশদা! বিশ্বাস করেন আমার খুব অভাব! রাবেয়া, আমার স্ত্রী আমার পথ চেয়ে বসে আছে। এখনও আমার বাড়িতে রান্না হয় নি!’
‘শালাতো দেখছি আসলেই বাঘা! এই তোর বকবকানি বন্ধ করবি নাকি তোকে এখনই শেষ করে দেব?’
‘বিশ্বাস করেন ভাই। আমি কোন বাঘা লোক না। আপনাদের নিশ্চয়ই কোন ভূল হয়েছে। আমি খুবই গরীব লোক! ঘরের অভাব নিয়েই বাচি না, আর আমি কিভাবে বাঘা কেউ হবো ! দয়া করে ছেড়ে দিন ভাই। দয়া করুন আমকে। আমিতো আপনাদের কোন ক্ষতি করিনি!’
‘মহা যন্ত্রনা দেখছি! এই জগদ্বন্ধু! এদিকে আয়তো! এই ব্যাটার মুখটা বন্ধ করে দেতো!’
ষণ্ডামার্কা একটা লোক ঘরে ঢুকল। বড় বড় মুখে দাঁত কিঁমড়ে সে আমার দিকে চাইল। কোদালের মত দাঁত। কোকঁড়া চুলওয়ালা লোকটা এসে কোন কথা না বলেই এসে আমার মাথার নিচটাতে প্রচন্ড জোরে আঘাত করল। যতদুর মনেপড়ে আমি গুমড়ে উঠেছিলাম।
আমার মনে হল আমি ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। চোখ মেলে তাকাতেই বুঝলাম ওরা আমার চোখ বেধে রেখেছে। চোখ বাধা অবস্থাতেই বুঝলাম যে ঘরটাতে একটা হলুদ রঙের ডিম লাইট জ্বলছে। মেঝেতে আমাকে হাত পা বেধে উপড় করে ফেলে রেখেছে। কয়েকজন মানুষের পায়ের আওয়াজ শুনলাম। স্পষ্টই বুঝলাম দুজন লোক আমাকে দুই পাশ থেকে ধরে বসিয়ে দিল। আর একজন লোক ঘরে ঢুকল। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। ওরা কি কি বলাবলি করল। আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। দুজন লোক চলে গেল। ওরা যাওয়ার আগে ঘড়ঘড়ে কণ্ঠের কিছু কথা শুনলাম কেবল ‘তোরা চইলা যা’। তাও আবার অস্পষ্ট। কতক নিরাবতা। কয়েক মুহুর্তকেও মনে হল অনেকদিন পার হয়ে গেছে। আমার মনের ভেতরে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করলাম না। কোন ধরনের ভয়, প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ অথাবা দু:খও অনুভব করলাম না। লোকটা আমার পেছনে এসে দাড়াল। আমি ঠিক স্পষ্টই বুঝলাম শুরেশ নামের লোকটাই আমার পেছনে দাড়িয়েছে। সম্ভবত ঠান্ডা চরিত্রের ছোট চোখের এই লোকটা এখন আমাকে হত্যা করতে যাচ্ছে। আমি কিছু বলতে চাইলাম। প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে প্রতিবাদ করতে চাইলাম। কিন্তু আমার কণ্ঠ থেকে যেন কোন কথাই বের হচ্ছিল না।
‘কিরে মরণের সময়েই কি ভয় পেয়ে গেলি!’ শুরেশের ঘড়ঘড়ে কণ্ঠটা আমার কাছে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠল।
‘তোর জীবনের শ্যাষ ইচ্ছা চাইয়া ল।’
আমি প্রাণপণ চিৎকার করে কিছু বললাম যেন। হ্যা আমার কানের মধ্যে যেন আওয়াজ গেল যে আমি বলছি ‘শুরেশদা আমাকে মারবেন না। আমি খুবই দুখী। বাড়িতে আমার মেয়েটা অসুস্থ। ওর ঔষধ কিনে নিয়ে যেতে হবে! নইলে ও বাচবে না।’
আমি আরো কি কি বললাম। কিছুই বুঝতে পারলাম না। শুধু শুনলাম শুরেশ বলছে ‘শালা বাঘা অইলে কি অইব! ভয়ে মুখ দিয়া দেহি কতাই বাড়াইতেছে না। শালা তোর মাইয়া মরলে আমার কি! তোরে না মারলে আমার মাইয়াও মরবে! রাজা ভাই আমারে ণরকে পাঠাইবে!’
আমি যেন আর কিছুই শুনতে পেলাম না। শুধু বুঝলাম হঠাৎই যেন মনে হল আমার শরীর থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে গেল। আমার কাছে রক্ষিত স্মৃতি নামক দু:সহ আমানত আমার থেকে সম্ভবত চীরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
২
প্রচন্ড অন্ধকার। আমি চোখ মেলে তাকালাম। না। আমার চোখ বাধা নেই। আমি তাকাতে পারছি। চোখের পলক ফেলতে পারছি। কিন্তু আমি কিছুই দেখছি না কেন? আশ্চর্য! কিছুই যেন দেখতে পাচ্ছি না। এমনকি আমি আমাকেও দেখতে পাচ্ছি না। আমার হাত ধরলাম। না আমার ডান হাত বাম হাতকে ধরতে পারল না। আমার পেট ধরতে চাইলাম। পেটের ভেতর দিয়ে হাত চলে গেল। শরীরের কোন অংশই আমাকে বাধা দিল না। আমি যেন আর বস্তুগত নেই। আমার সকল কিছুই যেন বায়োবীয় হয়ে গেছে। আমার সবই অন্ধকার। এমনকি আমি নিজেও অন্ধকার হয়ে গেছি। তাহলে কি আমি মরে গেছি! হয়তবা। আমার কিছু মনে পড়ছে না কেন? কে আমি? এখানে কি করছি? আমি? আমি কি? আমি কে? কে? কে?
হঠাৎই আমি দেখতে পেলাম। কয়েকটি লোক। একটি মানুষের সামনে দাড়িয়ে আছে। টকটকে লাল রঙের রক্তে সমস্ত মেঝেটাই লাল হয়ে গেছে। কয়েকটি লোক কথা বলছে। আমি চিৎকার করে ওদেরকে ডাকলাম। ‘এইযে ভাই! আমার কথা শুনছেন! আপনারা কারা?’ অদ্ভুত ব্যাপার লোকগুলো যেন আমার কথা শুনতেও পেল না। আমি ওদের সামনে দাড়িয়ে। অথচ ওদের আচরণে মনে হচ্ছে না যে ওরা আমাকে দেখছে।
সাদা চুলের লোকটা হো হো করে হেসে উঠে। বলতে থাকে ‘বোকা লোকটারে মাইরা ফালাইলি শুরেশ্যা! এইডাতো কলিম সাব না! এইডা হইল গিয়া ক্যারানি কলিম। কাঁঠাল পট্টিতে থাহে।’
‘তার আমি কি করুম! আপনে তো আইজকাই ছবি দিলেন! ধইরা আইনা মাইরা ফালইছি! আমরার কাজ শ্যাষ!’
‘হ! ভুলডা গণেশ্যার'ই অইছিল। অরেই কাজটা দিছিলাম।’
‘অত কিছু বুঝিনা কর্তা। আমার বিলটা আবার এই ছুতায় মাইর দেওন যাইবনা। মাইয়াডার অসুখ। অসুদ কিনা নিয়া যাইতে অইব।’
‘সেইডা নিয়া চিন্তা করিস না। আমি চিন্তা করতাছি এই বলদ লোকটার কতা। তোরে কয় নাই যে ও দোষী না?’
‘কি কি কইছে মোর মোনে নাই। তয় কইছিল ওর নাকি খুব অভাব! ঘরে বউ কষ্টে আছে!’
‘তাই নাকি!’
‘অত কতা শুনতে খায়েশ লয় নাই। মোর টাইম নাই অত কতায়। কাম সারান লাগব! কাম সারছি! অর অভাব দিয়া মোর কি অইব! নিজের অভাব নিয়াই বাচি না!’
আমি ওদের কথা শুনতে পাচ্ছি স্পষ্ট। আর ওরা আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না দেখছি। শত চিৎকারেও ওদের কানে আমার শব্দ যাচ্ছে না দেখছি। আমি গলাকাটা লোকটার কাটা মণ্ডুটার দিকে তাকালাম। চোখ দুটো বুজে আছে। আমি শুরেশ্যা নামের কোকড়াঁ চুলের লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে জানতে চাইলাম ‘এই ভাই কি বলছ? এটা কোন জায়গা?
আশ্চর্য! লোকটা আমার ধাক্কাটা টেরই পেল না। রাজা সাবের সাথে কি কি কথা বলতেই থাকল অনবরত ॥
(বি:দ্র: গল্পটা লিখেছিলাম অনেক আগে। তারিখ ১৭ই মে ২০০৯ সাল। মনে হলো এখানকার পাঠকদের সাথে ভাগাভাগি করি )
বিষয়: সাহিত্য
১২১০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন