গাজী সালাউদ্দীন আয়ুবী! কে ছিলেন উনি?
লিখেছেন লিখেছেন বেদূঈন পথিক ১৯ জুলাই, ২০১৪, ০২:৩৭:৪৬ রাত
ইসরাইল আর
ফিলিস্তান এর যুদ্ধটা মুলত
কি নিয়ে হচ্ছে ?
আর কেন হচ্ছে ?
আসুন জেনে নেই কারন →
↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓
মুলত জেরুজালেম হল মুসলিম,
খ্রিস্টা ন ও ইহুদী এই তিনটি ধর্মেরই
পবিত্র স্থান। মুসলিমদের পবিত্র স্থান
এই জন্য যে, এখানে পবিত্র
মসজিদ মসজিদুল আকসা অবস্থিত,
যেটি মুসলিমদের প্রথম কিবলা । আর
এই মসজিদে নামাজ
পড়লে যে কোন
মাসজিদে নামাজ পড়া থেকে ৫০০
গুন সওয়াব
বেশি হয়। এছাড়াও আমাদের প্রিয়
নবীর মিরাজ গমনের স্থান আর
অসংখ্য নবী ও রাসূলদের
স্মৃতি বিজড়িত স্থান।
আবার জেরুজালেম হল, খ্রিস্টানদের
যীশু অর্থাৎ
ঈসা (আঃ)এর জন্মভুমি।
এবং মুসা (আঃ)ও দাউদ (আঃ)এর
স্মৃতি বিজড়িত স্থান। তাই
জেরুজালেম ইয়াহুদিদের
তীর্থস্থান। অর্থাৎ জেরুজালেম হল, ৩
ধর্মেরই পবিত্র স্থান।
তবে আজকের ইজরাইল অর্থাৎ
জেরুজালেম একসময় মুসলিমদের
অধীনে ছিল। আর তখন মুসলিমদের
অধীনে থাকা সত্তেও খ্রিস্টান ও
ইহুদীদের প্রার্থনা করতে কোন বারন
করা হত না। কিন্তু হঠাৎ ১০৫০
সালে খ্রিস্টানদের পোপ
আরবানের আহবানে ইউরোপের
খ্রিষ্টানরা ধর্মের দোহাই
দিয়ে জেরুজালেম দখল করার জন্য
মরিয়া হয়ে উঠে। সমুদ্র পথে লক্ষ
লক্ষ সামরিক
বাহিনী নিয়ে এসে অতর্কিত
হামলা চালিয়ে মুসলিমদের
নির্বিচারে হত্যা করা শুরু করে। শুরু
হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতিহাস। আর
ইতিহাসে এই যুদ্ধকে ক্রুসেডের যুদ্ধ
বা ধর্ম যুদ্ধ বলা হয়।
আধুনিক যুদ্ধের অস্ত্র সাজে সজ্জিত
ইউরোপীয়ান খ্রিস্টানদের
কাছে মুসলিমরা শুরুতে অনেকটা
বিপর্যস্ত
হলে ও যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন
উদ্দিপনা নিয়ে এলেন গ্রেট
সালাডিন বা বীর সালাউদ্দিন
আইয়ুবি। শুরু হল পাল্টা প্রতিরোধের
অধ্যায় । মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই,
সালাহউদ্দীনকে তৎকালীন
বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর
ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হত।
ইতিহাসে মুসলিমদের চরম
দুর্দিনে তার মত অসাধারন
সাহসী বীর পুরুষের আবির্ভাব
না হলে হয়ত ইসলামের ইতিহাস
পরাজয়ের গ্লানিতে পরিপূর্ণ থাকত।
বলা হয়ে থাকে যে,
তিনি যে কোন
পরিস্থিতেতে কখনো হাসতেন
না । তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন
করা হলে তিনি জবাবে বলেছিলেন
,
"আমি কিভাবে হাসতে পারি, যখন
মাসজিদ আল-
আকসা ক্রুসেডারদের দখলে?"
ক্রুসেডের যুদ্ধে সালাহউদ্দীনের
সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল
রেনাল্ড নামের খ্রিস্টান এক
শাসক। এই চরম অমার্জিত
লোকটি প্রায়ই তার দখলকৃত
অঞ্চলগুলোতে মুসলিমদের উপর
অত্যাচার চালাত আর রাসুল পাক
(সাঃ)কে অকথ্য ভাষায়
গালি গালাজ করত। এমনকি এক
পর্যায়ে সে মক্কা আর মদিনায়
আক্রমণ করার হুমকি দেয়।
সালাহউদ্দীন খোদ ইসলামের
সাথে এই বেয়াদবি সহ্য
করতে পারেন নি। সবশেষে চূড়ান্ত
একটি আক্রমণের মধ্য
দিয়ে ক্রুসেডার বাহীনিকে সম্পূর্ণ
রূপে বিধ্বস্ত
করেন
এবং রেনাল্ডকে বন্দি করা হয়।
অন্যান্য ক্রুসেডার নেতাদের
যেখানে ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়,
সেখানে কিন্তু সালাদিন
রেনাল্ডকে ক্ষমা করেন নি।
তিনি বলেন, দেখ
তুমি যদি আমাকে গালি দিতে আমি
মেনে নিতাম,
কিন্তু তুমি এমন
একজনকে গালি দিয়েছ
যেটা ক্ষমার অযোগ্য। সালাহউদ্দীন
নিজ
হাতে তলোয়ার দিয়ে রেনাল্ড
এর মাথা বিচ্ছিন্ন করে, তার
গোঁড়ামি আর অমার্জিত আচরণের
উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করেন।
সবশেষে ক্রুসেডের
নেতৃত্বে ছিলেন রিচার্ড দ্য
লায়নহার্ট। একবার যুদ্ধাবস্থায়
সালাদিন লক্ষ্য করেন যে,
রিচার্ডের ঘোড়া নিহত
হয়ে গেছে। সালাহউদ্দীন মুসলিম
আস্তাবল থেকে তার জন্য
একটি ঘোড়া পাঠিয়ে দেন। কারণ
তিনি মনে করতেন, কোন
সেনাপতিরই জন্য
ঘোড়া ছাড়া নিজ
বাহিনীকে নেতৃত্ব
দেয়াটা ভাল দেখায় না। তার
উদারতা আর ক্ষমাশীলতার
কথা শত্রু শিবির এবং খ্রিষ্টান
সমাজে ও ইউরোপে রূপকথার মত
ছড়িয়ে পড়ে এবং তাদের
মনে তিনি শ্রদ্ধার
আসনে অধিষ্ঠিত হন। দেয়া হয়
তাকে গ্রেট বীর উপাধি।
তিনি ব্যাক্তিগত
জীবনে এতোটাই ধার্মিক ছিলেন
যে, যুদ্ধ ক্ষেত্রে ও চলন্ত ঘোড়ার
পিঠে উপবিষ্ট হয়ে নামাজ
পড়তেন। অবশেষে সালাহুদ্দীন
আইয়ুবির মাধ্যমে ১১৮৭ সালের
২রা অক্টোবর, ৮৮ বছর ২ মাস ১৭ দিন
পর, হারানো জেরুজালেম শহর
মুসলমানরা পুনরুদ্ধার করেন।
জেরুজালেম আর মধ্যপ্রাচ্চ
থেকে নিজেদের
গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় খ্রিস্টান
ক্রুসেড বাহিনী....
১ম বিশ্বযুদ্ধের পর ইহুদিরা আবার
জেরুজালেমে আসে। কিন্তু
সবশেষে ২য় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের
পতনের পর,
ইজ্রাইলিরা জেরুজালেমে এসে
ফিলিস্থিনীদের
কাছে থাকার জন্য আশ্রয় নেয় । আর
থাকতে গিয়েই এই
ইহুদিরা বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের
ভুমি জোর করে অবৈধ ভাবে দখল
করে নিচ্ছে আর নিরাপরাধ মানুষ
মারছে। বর্তমান
ফিলিস্তিনবাসী একজন
সালাদিনের অপেক্ষায় পথ
পানে চেয়ে আছে। যিনি কায়েম
করবেন ইনসাফের শাসন, উপযোক্ত
শাস্তি দিবেন ঐ সমস্ত হায়েনাদের,
যারা এই প্রবিত্র
রমজান মাসেও হত্যা করছে অসংখ্য
নির অপরাদ মানুষ, অবুঝ শিশু, আবাল
বৃদ্ধা, অসহায় নারী।
বন্ধু!
তোমাকে বলছি,
যদি না পার বীর সালাদিন হতে,
তাহলে উনার
সঙ্গিদের মত হও।
ইসরাইলি পন্য
ব্যাবহার করা ছেড়ে দাও,।
বিষয়: বিবিধ
২৫৫১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন