isis দাওলাতুল ইসলামিয়া
লিখেছেন লিখেছেন বেদূঈন পথিক ৩০ জুন, ২০১৪, ০১:৫৪:২৩ রাত
আল-ক্বায়িদাহ হলো একটি জামা'আহ/তানযীম/হিযব তথা দল, আর ISIS(দাওলাতুল ইসলামিয়য়্যাহ) হল একটি ইমারাহ/স্টেইট। একটি ইমারাহ-র প্রধান কিভাবে একটি দলের প্রধানের কাছে বাই'য়াত নিতে পারে?
আর এই জন্যই আল-ক্বায়িদাহ একটি দল হিসেবে এর আমীর শাইখ উসামা বিন লাদেন এবং পরবর্তীতে শাইখ জাওয়াহিরি ইমারাতে আফঘানিস্থানের আমীর মুল্লাহ মুহাম্মাদ উমারের কাছে বাই'য়াত নিয়েছিলেন।
ঠিক তেমনি ইরাকে ইসলামিক স্টেইট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে যখন আল-ক্বায়িদাহ-ইরাক দল হিসেবে ছিল, তখন তার আমীর ছিলেন শাইখ যারক্বাউয়ি, যিনি সারা দুনিয়ার জিহাদ তানযীম আল-ক্বায়িদাহ সেন্ট্রালের আমীর শাইখ উসামা'র কাছে বাই'য়াত নিয়েছিলেন ২০০৪ সালে।
কিন্ত ২০০৬ সালের ১৩ ই অক্টোবর ইরাকে ইসলামিক স্টেইট প্রতিষ্ঠীত হলে, আল-ক্বায়িদাহ-ইরাক, দাওলাহ ইসলামিয়য়্যাহ'র (স্টেইট) মধ্যে মার্জ হয়ে যায়। এবং স্বয়ং শাইখ উসামা বিন লাদেন, শাইখ জাওয়াহিরি এবং আল-ক্বায়িদাহ-জাযিরাতুল আরবের ইমাম আনওয়ার আল-আওলাকি তাকে সাধুবাদ জানিয়ে দু'আ করেন! শাইখ যারক্বাউয়ি'র আল-ক্বায়িদাহ-সহ ইরাকের সকল জিহাদী দল ইসলামিক স্টেইটের প্রথম আমীর শাইখ আবু উমার আল-বাগ্বদাদী'র হাতে ইমারাতের বাই'য়াত গ্রহন করেন!
পুরো বিষয়টি জলের মতো স্পষ্ট; এ বিষয়ে শাইখ উসামা-আওলাকির অডিও আর জাওয়াহিরি'র ভিডিও বক্তব্য দলীল হিসেবে আছে। ইদানিং এইগুলো নিয়ে জল ঘোলা করা হচ্ছে!
আল্লাহ আমাদের ফিতনাবাজদের থেকে নিরাপদ রাখুন, আমীন!
বিষয়: বিবিধ
৩১১৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১. আগের খলিফা যদি পরবর্তী খলিফাহ নিযুক্ত করে যান। বর্তমানে সেটা সম্ভব না কারণ এখন কোন খলিফা নেই।
২. আহলুল হাল্লিল অয়াল আকদ (উম্মাহ'র প্রভাবশালি ব্যাক্তিবর্গ) যদি একমত হয়ে কাউকে খিলাফাহ নিযুক্ত করেন তবে তিনি বৈধ খিলাফাহ হবেন।
৩. কেউ যদি জোর পূর্বক খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করেন তবে তিনিও বৈধ খলিফাহ বলেই বিবেচিত হবেন।
বর্তমানে যারা মুযাহিদ আলেম ও আমির আছেন তারা যদি সর্বসম্মতিক্রমে খলিফাহ নিযুক্ত করেন তবে তিনি বৈধ খলিফাহ হবেন। বর্তমানে যদি AQIM, AQAP, আল সাবাব, চেচেন মুজাহিদ, জাব্বাত আল নুসরা, TTP, তালিবান সম্মিলিত ভাবে একজন কে খলিফা নিযুক্ত করে তবে তিনি উপরিক্ত শর্ত পূরণ করবেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে উম্মাহ একজন সত্যবাদি, ত্যাগি ও পরিক্ষিত আল্লাহ'র বান্দার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিলেন। পৃথিবীর প্রায় সকল জিহাদি তানজিম আল কায়দার ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন এমনকি ইসলামিক স্টেট ও ইরাকও। আর আল কায়দা ও TTP সরাসরি মোল্লা উমরের কাছে বাইয়াহ দিয়েছেন। এভাবে চরম এই ফিত্নার যুগেও আল্লাহ'র অশেষ রহমতে মুসলিম উম্মাহ একজন আমিরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিল। কিন্তু ISIS আল কায়দা থেকে বের হয়ে গিয়ে প্রথমে শামের মুজাহিনদের ঐক্য ফাটল ধরায় যা এখন বাংলাদেশ এমনকি কুফফার দেশে অবস্থিতি মুসলিমদেরকেও দুই ভাগ করে ফেলেছে। তাই এখন ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে খলিফা নিযুক্ত করাটা দড়জা বন্ধ হয়ে গেছে। অতএব এই পদ্ধতিতে ISIS এর খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয় নি।
এখন অবশিষ্ট থাকল তৃতীয় পদ্ধতি। শক্তি প্রয়োগ করে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করার অপছন্দনীয় কিন্তু বৈধ পদ্ধতি। ISIS এর সামনে এখন এই পদ্ধতিই শুধু অবশিষ্ট আছে। ISIS কে যদি এখন এই পদ্ধতিতে খিলফাহ প্রতিষ্ঠা করতে হয় তবে দুনিয়ার তামাম মুজাহিদদের কে হয় হত্যা করতে হবে নয়ত তাদেরকে শক্তি প্রয়োগ করে আনুগত্যের অধিনে আনতে হবে।
আল্লাহ'র কসম মোল্লা মহাম্মদ উমর সেই ব্যাক্তি যার উপর ২০০১ সালে সমগ্র প্রিথিবি একত্রিত হয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল কিন্তু উনি সামান্যতম দুর্বল হন নাই। আল্লাহ সুভানাতায়াল'র কৃপায় আজ সেই দাম্ভিক আমেরিকা ম্রিত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আর কি করে ভাবা যায় যে সেই মোল্লা উমর বাগদাদি'র কাছে মাথা নত করবে?
বাগদাদি খিলফাহ ঘোষণা করার মাধ্যমে সমগ্র মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। মুজাহিদ উমারা এই যুদ্ধ চাই নি, কিন্তু যেহেতু খিলফাহ'র প্রস্ন তাই তারা এখান থকে পিছুও হটতে পারবে না।
এখানে একটা সবরন রাখা দরকার যে, কিছু ভাই মনে করতে পারেন মোল্লা উমর বাগদাদিকে বাইয়াহ দিয়ে দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কথাটা শুনতে খুব ই ভাল লাগে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
প্রথমত, মোল্লা উমর নিজে কারও কাছে বাইয়াহ চেয়ে নেন নি। ওসামা বিন লাদেন থেকে শুরু করে সকল মুজাহিদ আলেম উনাকে স্বেচ্ছায় বাইয়াহ দিয়েছেন। সৌদি আরবের তিন জন প্রখ্যাত নির্যাতিত আলেম হামুদ বিন উকলা, আলি বিন খুদাইর, সোলাইমান আল আওলান উনাকে আমিরুল মুমিনিন এর বাইয়াহ দিয়েছেন। অতএব উনি নেতৃত্ব চেয়ে নেন নি কিন্তু যখন উনার উপর গ্লোবাল জিহাদের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তখন উনি সে দায়িত্ব পালনে কোন অবহেলা করতে পারেন না।
দ্বিতীয়ত, বাগদাদি তার আমিরের বাইয়াহ লঙ্গন করে বাঘয়াত করেছে। এরকম একজন বিদ্রোহী ক্ষমতালোভী ব্যক্তির হাতে উম্মার নেতৃত্ব গেলে উম্মাহ'র পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে সহজেই অনুমান করা যায়। উনি পারেন না উম্মাহ'কে এরকম একজন খাম খেয়ালিপনা ক্যাপ্টেন এর হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে।
শেষ কথা হচ্ছে, বাগদাদি খিলাফাহ ঘোষণা করেছে তাই সে বৈধ খলিফা হয়ে গেছে এরকমটা ভাবার সুযোগ নেই। যদি দুই নম্বর পদ্ধতি ফলো করা হত তবে ঘোষণা করলেই খলিফাহ বৈধ হয়ে যেত। কিন্তু যেহেতু তারা তিন নম্বর পদ্ধতিতে গিয়েছে অতএব এখন খেলা কেবল শুরু। অর্থাৎ তাদেরকে এখন শক্তি প্রয়োগ করে অন্যান্য জিহাদি জামাহ কে নিজেদের অধিনে আনতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই তা একটা ভয়ংকর রক্তারক্তি পর্যায়ে চলে যাবে। এই যুদ্ধে যে জিতবে সেই বৈধ খলিফাহ হবে। যদিও সে যুদ্ধ অনৈতিক বা অবৈধ হয় তবুও সে যদি শক্তি প্রয়োগ করে সবাইকে নিজের বশ্যতা স্বীকার করাইতে পারে তবে সে বৈধ খিলাফাহ হবে। তার আগ পর্যন্ত যতক্ষণ যুদ্ধ চলবে সে খলিফাহ'র দাবিই করেছে মাত্র, শরিয়াহ মর্যাদা পায় নি খলিফাহ'র।
মন্তব্য করতে লগইন করুন