জনসমর্থন তলানিতে ঠেকায় আওয়ামী লীগ বেপরোয়া : সরকার সমালোচকদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চায় : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের উদ্বেগ
লিখেছেন লিখেছেন কিংফারুক ১৩ আগস্ট, ২০১৩, ১২:২৪:০৯ রাত
মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিশ্বব্যাপী আবারও ধিকৃত হলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠক ও অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে গ্রেফতারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এই বার্তা গেছে যে, জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার তার সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ সমালোচকদের স্তব্ধ করে দিতে চায়। জনসমর্থন তলানিতে ঠেকায় আওয়ামী লীগ এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে উপহাস করছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অধিকার সম্পাদকের গ্রেফতার ও রিমান্ডের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে গতকাল এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পৃথক প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ান সরকারের কড়া সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে চার বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
আদিলুর রহমানের গ্রেফতার ও রিমান্ড আদেশের পর বিশ্বব্যাপী আবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মানবাধিকার বিরোধী অবস্থান ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্বের খ্যাতনামা মানবাধিকার সংগঠন এবং প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো গত সাড়ে চার বছরে আওয়ামী লীগের মানবাধিকার
লঙ্ঘনের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যে দলটিকে ‘বাকশালী’ বলে এখনও অনেকে গালমন্দ করে থাকেন।
সরকারের এই অসহিষ্ণু মনোভাবের নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, দেশবরেণ্য একজন মানবাধিকার সংগঠককে সরকার বিনা ওয়ারেন্টে কালো আইন খ্যাত ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে। অথচ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে এসব না করেও সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারত। সবাই বিলক্ষণ বুঝতে পারেন যে আইনি পদক্ষেপ সরকারের উদ্দেশ্য নয়। রিমান্ডে নিয়ে ডান্ডা মেরে ভিন্নমত পোষণকারীকে ঠাণ্ডা বানানোই ছিল সরকারের কাজ।
তবে পতনের আগে কোনো ব্যক্তি যখন যে ঢাল ধরে সে ঢালই ভেঙে পড়ে—আওয়ামী লীগেরও হয়েছে সেই অবস্থা। সম্ভবত রিমান্ডের নামে আওয়ামী লীগ বিরোধীদের ওপর যে বর্বরতা শুরু করেছে এবার তাতে বাদ সেধেছে উচ্চ আদালত। হাইকোর্ট গতকাল স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে তাকে রিমান্ডে নেয়ার খায়েশ ত্যাগ করতে হবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া ছিল চোখে পড়ার মতো। গ্রেফতারের পরপরই কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়ে সরকারের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে নিউইয়র্ক ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং হংকংভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এশিয়ান হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রিমান্ডের নামে আদিলুর রহমানের ওপর সরকারের বর্বরতার খায়েশ যাতে মিটাতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্পদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
সরকার অনেক দিন ধরেই অধিকারের পেছনে লেগে আছে। সরকার দেখতে পাচ্ছে অধিকারের কথা দেশবাসীই বিশ্বাস করছে, বিশ্বাবাসী আস্থা রাখছে তাদের ওপর। যেমন হেফাজতে ইসলামীর মে মাসের অবরোধ নিয়ে অধিকারের রিপোর্ট ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। হেফাজতের একজনকে হত্যা করা হয়নি বলে সরকার যে মিথ্যাচার করছে তা দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি। ঘুমন্ত ও ইবাদতরত মুসল্লিদের ওপর সরকারের বর্বরতাকে ধিক্কার জানিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মূলত সরকারকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এর প্রমাণ পাওয়া গেছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। সেখানে হেফাজত ইস্যু বড় ভূমিকা রেখেছে বলে সরকারও স্বীকার করেছে।
এ অবস্থায় অধিকারের অন্যতম কর্ণধার আদিলুর রহমানকে শায়েস্তা করার জন্য সরকার উঠেপড়ে লাগে। তবে সরকারের প্রতিহিংসার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের বিবৃতি ও গণমাধ্যমের খবরে এর প্রতিফলন ঘটে।
গ্রেফতারের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র : আদিলুর রহমানকে গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ভিরাজ লেবাইলি বলেছেন, ‘আমরা আদিলুর রহমানের গ্রেফতারের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি ব্যাখ্যা চেয়েছি। অধিকার ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকাণ্ড যেখানে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত, সেখানে মানবাধিকার কর্মী গ্রেফতারের বিষয়টি নেতিবাচকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আদিলুর রহমানকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি কার্যকরের ব্যাপারে বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই। কিন্তু সরকার বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে যে কোনো আইনগত ইস্যু দাঁড় করানোর চেষ্টায় রত। অধিকারের মতো সংগঠনগুলো যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাধীনভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সরকারের একটি পরিবেশ তৈরি করে দেয়া অপরিহার্য দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি- আ.লীগের জনসমর্থন তলানিতে ঠেকায় আদিলুরকে গ্রেফতার : আদিলুর রহমানকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকার জাতীয় নির্বাচনের আগে তার সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ সমালোচকদের স্তব্ধ করে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি বলেছে, জনসমর্থন তলানিতে ঠেকায় আওয়ামী লীগ এখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে উপহাস করছে।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদিলুর রহমানকে গ্রেফতারের পর থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের মধ্যেই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনটির এই বিবৃতি এলো।
গতকাল এইচআরডব্লিউর এক বিবৃতিতে বলা হয়, খ্যাতনামা মানবাধিকার সংগঠক আদিলুর রহমান খানকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তাকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদিলুরের মুক্তি এবং মানবাধিকার রক্ষক ও সরকারের সমালোচকদের হয়রানি বন্ধে বাংলাদেশ সরকারকে দাতাদের চাপ দিতে হবে।
এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘আদিলুরের গ্রেফতারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার তার সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ সমালোচকদের স্তব্ধ করে দিতে চায়। জনসমর্থন তলানিতে ঠেকায় আওয়ামী লীগ এখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে উপহাস করছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার’র পরিচালক এবং আইনজীবী আদিলুর রহমান খানকে শনিবার রাতে তার গুলশানের বাসভবনের সামনে থেকে গ্রেফতার করে সাদা পোশাকের ১০ ডিবি পুলিশ। বিদেশ চলে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা না থাকলেও তাকে জামিন দেয়া হয়নি এবং ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমান সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য অধিকার’র ওপর সেনা সমর্থিত ফখরুুদ্দীন সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও খড়্গহস্ত। এর আগেও বিভিন্নভাবে এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, আদিলুর দীর্ঘদিন ধরেই আশঙ্কা করে আসছিলেন যে রাজনৈতিক কারণে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। তবে তিনি বলেছিলেন, ঝুঁকি সত্ত্বেও তিনি দেশে থেকেই কাজ করে যেতে চান।
বিবৃতিতে বলা হয়, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আদিলুর যেন তার আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ পান। রোববার শুনানির আগে তাকে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ দেয়া হয়নি।
গত ৫ ও ৬ মে হেফাজতকর্মীদের ওপর গুলিতে অন্তত ৬১ জন নিহত হয়েছে বলে অধিকার গত জুন মাসে রিপোর্ট প্রকাশ করার পরই সরকার এর সমালোচনা শুরু করে। তবে শুধু অধিকার একা নয়, দেশ-বিদেশের আরও বহু সংগঠন এবং গণমাধ্যমও এ ধরনের রিপোর্ট করেছে। সিএনএন, আল জাজিরা, ইকোনমিস্ট, রাশিয়া টুডে এ ধরনের রিপোর্ট করলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথাই বলেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত আগস্টে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘রাজপথে রক্তপাত : বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগ’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট পেশ করে যেখানে বলা হয়, ৫ ও ৬ মে হেফাজতকর্মীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর বেআইনি শক্তি প্রয়োগের ফলে অন্তত ৫০ জন নিহত এবং ২,০০০ আহত হয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি।
ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে যে আদিলুর হেফাজতকর্মীদের হতাহতের ঘটনা নিয়ে ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তাহলে তাকে জেলে নিক্ষেপের পরিবর্তে জনসমক্ষে তার সঙ্গে বিতর্কে যেতে পারত।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আদিলুরের ওপর নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহার করার আশঙ্কা রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অধিকার আগেও বলেছে যে ডিবিসহ বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক নির্যাতন চালায়। অথচ এজন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা আমাদের জানা নেই।
ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘আদিলুরের সুখ্যাতি প্রমাণ করে যে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের অনুমোদন ছাড়া তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই ব্যক্তিগতভাবে জনসমক্ষে নিশ্চিত করতে হবে, বন্দি অবস্থায় তার ওপর যেন কোনো নির্যাতন না করা হয়।’
অধিকার সম্পাদককে গ্রেফতারে ইইউ উদ্বিগ্ন : আদিলুর রহমানকে গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
ঢাকায় কর্মরত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সম্মতিতে ইইউ দূতাবাসের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতারের খবর গত ১০ আগস্ট প্রচারের পর থেকে বাংলাদেশ অবস্থিত ইইউভুক্ত দেশের দূতাবাসগুলো ঘটনার ওপর গভীরভাবে নজর রাখছে। ইইউ এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিগুলো মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং গণতান্ত্রিক নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং ইউরোপিয়ান কমিউনিটির মধ্যে অংশীদারিত্ব এবং উন্নয়নের যে চুক্তি রয়েছে তার মূল ভিত্তিই হলো মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন।
আদিলুর রহমান খান এবং তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবগত উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আদিলুর রহমান খানকে চিনি।
অধিকার বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে এটাও আমাদের জানা। আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সুশীল সমাজ এবং মানবাধিকার কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
অধিকার সম্পাদককে গ্রেফতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতারের ঘটনায় আমরা আমাদের সার্বিক উদ্বেগের বিষয়টি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তার যেন কোনো ক্ষতি না হয় তা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার বিরুদ্ধে করা মামলার ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার পাশাপাশি মানবাধিকারের প্রতি যেন সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে সরকারের কড়া সমালোচনা : প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান রোববার আদিলুর রহমানের গ্রেফতারের ওপর একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঢাকা থেকে সাদ হাম্মাদীর লেখা প্রতিবেদনে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের বক্তব্য তুলে ধরা হয়, যাতে সরকারের কড়া সমালোচনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে আদিলুর রহমান সম্পর্কে বলা হয়, তার প্রতিষ্ঠান অধিকার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, যেমন নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ব্যাপারে ছিল সোচ্চার। অধিকার জানায়, গত জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১৮৪ জন নিহত হয়েছে। গার্ডিয়ানকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, বর্তমান সরকারের সমালোচনার জন্য তিনি নিপীড়নের শিকার। বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন আদিলুর রহমানের গ্রেফতারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগেও আদিলুর রহমান ও তার সহকর্মীদের হুমকি দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ২০০৭ সালে অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলানকে নিরাপত্তা বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে নৌবাহিনীর সদর দফতরে আটকে রেখে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও বহু মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসংখ্য দুর্নীতির মামলা নিয়ে সরকারের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ১৫০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
৯১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন