অপরাজিতা
লিখেছেন লিখেছেন সাফওয়ান ১৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:৫৯:০০ সন্ধ্যা
- সাদিয়া, তুমি শুনছ?
- হুঁ, বলো!
- তোমার কি অপরাজিতার কথা মনে আছে?
- তোমার ক্লাসমেট ছিলো, সেই মেয়েটা?
- হুমম। ও খুব সুন্দর কবিতা লিখত।
- বলেছিলে একবার মনে হয়।
- একবার শীতের সময়ে আমাদের ক্যাম্পাসে 'স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর ছিলো। অপরাজিতা পাঠ করেছিলো, 'রোদনের বসন্ত' নামের কবিতা।
- এ আবার কেমন শিরোনাম? অদ্ভুত তো!
- অদ্ভুতই বটে! অপরাজিতার শব্দচয়ন খুব সুন্দর ছিল। তোমার মতন নয় যদিও। তুলনা করছিনা। তবে তোমার লেখনী কোমল, আর অপরাজিতার শব্দগুলো খুব দৃঢ় গাঁথুনির ছিল।
- মনে আছে কোন পংক্তি?
- বলছি শোন :
আমার সকল উদাসীনতার নাম যদি দাও ঘৃণা,
তোমার বোধের প্রতিটি জোড়ে দিলাম তপ্ত করুণা।
- অপরাজিতাকে তোমার পছন্দ ছিল?
- ছিলো বৈকি। আমি কবিতাপ্রেমী ছিলাম, তুমি জানো।
- বলনি ওকে কখনো?
- কবিতা ভালোবাসলেই কবি ভালোবাসতে হবে বলে মনে করো তুমি?
- কবির হাতেই তো কবিতা আসে।
- কিন্তু কবিতা আমার অবসরের সঙ্গী ছিল। আমি তো চাইছিলাম জীবনসঙ্গী।
- তাহলে কীসের তোমার নির্লিপ্ততা এনেছিল?
- আমি কোমলভাষী মানুষ, শক্ত কথা আমার সয়না।
- আমি তো অনেক রূঢ় তুমি জানোনা?
- টের পাইনি এখনো।
- পাবে 'খন।
- তুমি পারবে না রূঢ় হতে। কঠিন সময়েও।
- এত নিশ্চিত হচ্ছ কী করে?
- মনে হয় আমার। তুমি তো মহামহিমের প্রিয় হতে চাও। তুমি কী করে পারবে তোমার জীবনসঙ্গীকে রূঢ় ব্যবহার করতে।
- ভন্ডামি ছাড়ো। বাস্তবতায় কাব্য মানেনা। খেপে গেলে কি আর হুঁশ থাকে?
- আমি ভন্ডামি করিনি সাদিয়া। আমি জানি একজন মানুষের সবচাইতে খারাপ ব্যবহারটাই তাকে চেনায়। সময় তো কম যায়নি। আমার বাসার সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েও তুমি মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছ দেখেই আমার ভয় কেটে গেছে। আমার সংকোচ ওটাই বড় ছিল।
- অপরাজিতারাও হয়ত পারে, সাদিয়াকে পেতে হলো কেন?
- আমি আসলে ওভাবে ভাবিই নি কখনো। প্রস্তত ছিলাম না জীবনের সবচাইতে বড় সিদ্ধান্তটার জন্য। কবিতা পাঠ করতে গিয়ে তখন অমন ভুল করে ফেললে বুঝি আফসোসে জীবন কেটে যেত।
- এভাবে বলনা। আর কেউ বুঝি জীবন কাটাচ্ছে না?
- সবার বুকের চাওয়া আর আর্তি কি এক? আমার চোখ পেরিয়ে যায় মৃত্যুর ওপারে। সফলতা আর সুখ তো ওপাশেই, তাইনা?
- এতক্ষণে কাব্যের ভ্রম কেটেছে তোমার।
- ভ্রমে থাকিনা আমি। কাব্য বলতে আমি বুঝি শব্দের বুনন। আমার কাছে কাব্যকে শীতের সকালে মাকড়সার জালে লেগে থাকা শিশির কণার মতন মনে হয়।
- এই অনুভূতিকে কী বল তুমি রিহাম? স্পর্শকাতরতা?
- বাহ! কী দারুণ করে বলে ফেললে। এই শব্দচয়নেই তোমার বিশেষত্ব।
- সে তো তোমার মনের প্রণয়াঞ্জনলিপ্ত মনের কথা, রিহাম। আমি নিজেকে চিনিনে বুঝি?
- ঠিকাছে। চুপ করে গেলুম। খুশি হলে তো?
- বেশ। হয়েছিই তো! সাদিয়া, তুমি শুনছ?
- হুঁ, বলো!
- তোমার কি অপরাজিতার কথা মনে আছে?
- তোমার ক্লাসমেট ছিলো, সেই মেয়েটা?
- হুমম। ও খুব সুন্দর কবিতা লিখত।
- বলেছিলে একবার মনে হয়।
- একবার শীতের সময়ে আমাদের ক্যাম্পাসে 'স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর ছিলো। অপরাজিতা পাঠ করেছিলো, 'রোদনের বসন্ত' নামের কবিতা।
- এ আবার কেমন শিরোনাম? অদ্ভুত তো!
- অদ্ভুতই বটে! অপরাজিতার শব্দচয়ন খুব সুন্দর ছিল। তোমার মতন নয় যদিও। তুলনা করছিনা। তবে তোমার লেখনী কোমল, আর অপরাজিতার শব্দগুলো খুব দৃঢ় গাঁথুনির ছিল।
- মনে আছে কোন পংক্তি?
- বলছি শোন :
আমার সকল উদাসীনতার নাম যদি দাও ঘৃণা,
তোমার বোধের প্রতিটি জোড়ে দিলাম তপ্ত করুণা।
- অপরাজিতাকে তোমার পছন্দ ছিল?
- ছিলো বৈকি। আমি কবিতাপ্রেমী ছিলাম, তুমি জানো।
- বলনি ওকে কখনো?
- কবিতা ভালোবাসলেই কবি ভালোবাসতে হবে বলে মনে করো তুমি?
- কবির হাতেই তো কবিতা আসে।
- কিন্তু কবিতা আমার অবসরের সঙ্গী ছিল। আমি তো চাইছিলাম জীবনসঙ্গী।
- তাহলে কীসের তোমার নির্লিপ্ততা এনেছিল?
- আমি কোমলভাষী মানুষ, শক্ত কথা আমার সয়না।
- আমি তো অনেক রূঢ় তুমি জানোনা?
- টের পাইনি এখনো।
- পাবে 'খন।
- তুমি পারবে না রূঢ় হতে। কঠিন সময়েও।
- এত নিশ্চিত হচ্ছ কী করে?
- মনে হয় আমার। তুমি তো মহামহিমের প্রিয় হতে চাও। তুমি কী করে পারবে তোমার জীবনসঙ্গীকে রূঢ় ব্যবহার করতে।
- ভন্ডামি ছাড়ো। বাস্তবতায় কাব্য মানেনা। খেপে গেলে কি আর হুঁশ থাকে?
- আমি ভন্ডামি করিনি সাদিয়া। আমি জানি একজন মানুষের সবচাইতে খারাপ ব্যবহারটাই তাকে চেনায়। সময় তো কম যায়নি। আমার বাসার সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েও তুমি মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছ দেখেই আমার ভয় কেটে গেছে। আমার সংকোচ ওটাই বড় ছিল।
- অপরাজিতারাও হয়ত পারে, সাদিয়াকে পেতে হলো কেন?
- আমি আসলে ওভাবে ভাবিই নি কখনো। প্রস্তত ছিলাম না জীবনের সবচাইতে বড় সিদ্ধান্তটার জন্য। কবিতা পাঠ করতে গিয়ে তখন অমন ভুল করে ফেললে বুঝি আফসোসে জীবন কেটে যেত।
- এভাবে বলনা। আর কেউ বুঝি জীবন কাটাচ্ছে না?
- সবার বুকের চাওয়া আর আর্তি কি এক? আমার চোখ পেরিয়ে যায় মৃত্যুর ওপারে। সফলতা আর সুখ তো ওপাশেই, তাইনা?
- এতক্ষণে কাব্যের ভ্রম কেটেছে তোমার।
- ভ্রমে থাকিনা আমি। কাব্য বলতে আমি বুঝি শব্দের বুনন। আমার কাছে কাব্যকে শীতের সকালে মাকড়সার জালে লেগে থাকা শিশির কণার মতন মনে হয়।
- এই অনুভূতিকে কী বল তুমি রিহাম? স্পর্শকাতরতা?
- বাহ! কী দারুণ করে বলে ফেললে। এই শব্দচয়নেই তোমার বিশেষত্ব।
- সে তো তোমার মনের প্রণয়াঞ্জনলিপ্ত মনের কথা, রিহাম। আমি নিজেকে চিনিনে বুঝি?
- ঠিকাছে। চুপ করে গেলুম। খুশি হলে তো?
- বেশ। হয়েছিই তো!
বিষয়: বিবিধ
১৬৯৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন