সুলতান সালাহউদ্দিন আইউবির জানাযা

লিখেছেন লিখেছেন ওমার আল ফারুক ২৬ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:৩৬:১২ রাত

সালাহউদ্দীনের জানাযা

১১৯৩ সন। ২০শে ফেব্রুয়ারী। মক্কা মুয়াজ্জমা থেকে হাজীরা দেশে ফিরছেন। সুলতান সালাহ উদ্দীন হাজদের কাফিলাকে আগ বাড়াতে গেলেন। গরম কাপড় না পরে ভিজা আবহাওয়অয় হাঁটাহাঁটি করে তাঁর জ্বর হলো। জ্বর থেকে আর উঠলেন না তিনি। ১১৯৩ সনের ৪ঠা মার্চ সারা মুসলিম জাহানকে কাঁদিয়ে সুলতান সালাহউদ্দীন ইন্তিকাল করলেন।

ইসলামরে সোনাল ইতিহাসের এক অনন্য নায়ক সুলতান সালাহউদ্দীন। ১১৮৭ সনে খৃষ্টান ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা ও বাইতুল মুকাদ্দাস পুনরুদ্ধার করার পর দীর্ঘ পাঁচ বছর রণাঙ্গনেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে। জেরুসালেম হাতছাড়া হওয়ার সংবাদে গোটা খৃষ্টান ইউরোপ ক্রোধে ফুলে উঠেছিল। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানী, ডেনমার্ক, ইতালী প্রভৃতি ইউরোপীয় দেশ থেকে ১১৯৮ সনে ছয় লক্ষ খৃষ্টান সৈন্য ছুটে এসেছিল ফিলিস্তিনে। তারা সাথে করে নিয়ে এসেছিল গোটা ইউরোপবাসীর আয়ের এক-দশমাংশ। দীর্য় তিন বছর ধরে সুলতান সালাহউদ্দীন যুদ্ধ করলেন উম্মত্ত ক্রুসেডারদের সাথে। কিন্তু সমগ্র ইউরোপের সমবেত শক্তিও সালাহউদ্দীনের সাথে এঁটে উঠতে পারেনি। ব্যর্থ হলো তাদের তৃতীয় ক্রুসেডও। প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫লক্ষ ইউরোপীয়কে ভূমধ্যসাগরের বালুবেলায় চিরতরে শুইয়ে রেছে ক্রুসেডাররা ফিরে গেল দেশে। ফিলিস্তিনসহ গোটা নিকট প্রাচ্যের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে থাকলেন সুলতান সালাহউদ্দীন। সুলতান সালাহ উদ্দীন সমগ্র ইউরোপে কি অপরিসীম ভীতির সৃষ্টি করেছিলেন, সালাহ উদ্দীনকে পরাভূত করার জন্য গোটা ইউরোপ থেকে তোলা ‘সালাহউদ্দীন কর’ই তার প্রমাণ। ইউরোপের ভীতি ও এক বিশাল রাজ্যের একচ্ছত্র অধিনায়ক সেই সুলতান সালাহউদ্দীন ইন্তিকাল করলেন। আল্লাহর পথে জিহাদের আত্মোৎসর্গিত এই সুলতান যখন মৃত্যুবরণ করলেন, তখন কপর্দকহীন ছিলেন তিনি। তিনি ইউরোপত্রাস প্রবল প্রতাপশালী সুলতান ছিলেন, কিন্তু তাঁর কোন সিংহাসন ছিলনা, ছিল না বিলাস ব্যসনের কোন রাজ প্রাসাদ। রাজ্যের সাধারণ রাজকোষ ছিল, কিন্তু তাঁর নিজস্ব কোন তহবিলের অস্তিত্ব ছিল না। নিজের জীবন, সম্পদ সব কিছুকেই তিনি উজার করে দিয়েছিলেন জিহাদে। তিনি যদি চাইতেন, যে শক্তি তাঁর ছিল তা দিয়ে তিনি বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন, কিন্তু তা তিনি চাননি। তিনি চেয়েছিলেন িইসলামের বিজয়, নিজের জন্য কোন রাজ্য প্রতিষ্ঠা নয়। এ পথেই তিনি তাঁর সবকিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন। তাঁর যেদিন মৃত্যু হলো, সে দিন জানাযার খরচ সংকুলানের অর্থও তাঁর কাছে পাওয়া যায়নি। ধরা করা অর্থে তাঁর জানাযার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল।

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

213710
২৭ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:১৫
চোথাবাজ লিখেছেন : ধন্যবাদ ভালো লাগলো
213782
২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৭:০৮
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আমাদের শিশুদের জন্য ইসলামের এসব মহান নায়কদের ইতিহাস জানানোর তেমন কোন উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে সবাইকে উদ্যোগী হবার আহবান জানাই।
213804
২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫০
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : বর্তমানকালে এমন একজন নেতা খুবই প্রয়োজন মুসলিম সমাজের জন্য।
213806
২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:৫৩
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এই নায়কের উপর আমার একটা আর্টিকেল ছিল। এক অসাধারণ হিরো। অসাধারণ বীরযোদ্ধা। তিনি শুধু অস্ত্রে নয় বুদ্ধিমত্তায় পুরো ইউরোপের সকল শাসককে নাকানিচুবানী খাইয়েছেন। তার প্রশংসা করেছে স্বয়ং তার শত্রু
২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:১৪
162073
আহ জীবন লিখেছেন : ভাই প্লিজ প্রকাশ করুন।
213845
২৭ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
egypt12 লিখেছেন : আজকে আমাদের নতুন প্রজন্ম গোঁড়া মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু ক্ষুদিরাম ও প্রীতিলতার নাম জানে কিন্তু আমাদের নিজেদের সেরা বীরদের ইতিহাস কেউ জানে না বা জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনা। এটাই জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য Broken Heart
213950
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৯
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদHappy>- Happy>- Happy>-

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File