"একজন শিবির কর্মী ও কয়েক জন শ্রমিক ছাত্রের কথা"
লিখেছেন লিখেছেন ওমার আল ফারুক ১২ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:১১:০০ বিকাল
কন্টাক্টর তার কাজের পরিচালককে বললেন,"এই ছেলেগুলো যখনি কাজে আসবে,বিনা বাক্যে কাজে নিয়ে নেবে|এদের টাকা কম দেবেনা|"
বলছিলাম একজন শিবির কর্মী ও কয়েক জন ছাত্রের কথা|যারা সততা দিয়ে আদায় করল সরকারী হাসপাতাল তৈরীকারী কন্টাক্টরের নিকট থেকে বিশেষ সুবিধা আর ভালোবাসা|অনেকের নিকট থেকে শুনতে হয়,সততার ভাত নেই|সৎ পথের মানুষগুলো তাচ্ছিল্যের শিকার ইত্যাদি ইত্যাদি|অবশ্য যারা অসৎ পথে চলে এটি তাদের পথ চলাকে বৈধ করার কৌশল মাত্র|
আমার এক সাথি ভাইয়ের সাথে সেদিন কথা হচ্ছিল|যিনি পড়া লেখার মাঝেই নিজের খরচ চালাতে শ্রমিকের কাজ করেন|কথার মাঝে তিনি বলেন ঘটনাটা|নির্মাণাধিন হাসপাতালটিতে বহু শ্রমিক কাজ করে|কিন্তু প্রায় সকলে কাজে ফাকি দেয়|যে কাজ এক দিনে করার কথা সেটি সময় লাগে দুই তিন দিন|আমার সাথি ভাইটি বলল,আমি একদিন একটি পিলারের কাজ করছিলাম|একজন শ্রমিক এসে বলল তোমার কাজ করার প্রয়োজন নেই|মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছে|যেয়ে খেলা কর|হাজিরা দেয়ার সময় এসে হাজিরা দিয়|তোমাকে কেউ চিনতে পারবেনা|ভাইটি জবাবে বললেন,আমি পারিশ্রমিক নেব কিন্তু কাজ করবনা এটাতো হতে পারেনা!
এছাড়াও তার সাথে আরো কয়েক জন ছাত্র কাজ করে তারাও যথাযতই কাজ করে|বিষয়টি কন্টাক্টরের নজর এড়ায়নি|শিবির কর্মীদের মাঝে অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে|যার ফলে আমার এই ভাইটি একটু বেশীই মার্ক হয়ে যান|একদিন কন্টাক্টর ভাইটিকে ডেকে বললেন,"তোমরা কি ছাত্র? উত্তরে হ্যাঁ জবাব পেয়ে তিনি তার সার্বক্ষণিক কাজ তদারকীকে ডেকে বললেন,এরা যখনি কাজে আসবে তখনি নিয়ে নিবে|কখন ফিরাবেনা|টাকাও কম দেবেনা|"এখানের নিয়ম হল শ্রমিকদেরকে নিয়মিত কাজে যোগ দিতে হয়|অন্যথায় কাজে ক্ষতি হওয়ার ফলে শ্রমিকদের গালি শুনতে হয়|এখানের আরো একটি নিয়ম হল,নতুন যারা কাজে আসে তাদের দেয়া হয় অর্ধেক মজুরি|এছাড়া ফাঁকিবাজ শ্রমিকেরা নতুনদেরকে ফাঁকি দিতে শেখায়|কিন্তু এই ছাত্ররা নিজের খরচ চালানোর অর্থে হারামকে প্রবেশ করতে অপারগতা প্রকাশ করে|আমার ওই ভাইটি আরো একজন নতুন ছাত্রকে কাজে নিয়ে যায়|নিয়ম অনুযায়ী তার মজুরি অর্ধেক পাওয়ার কথা থাকলেও পূর্ণ মজুরি দেয়া হয়|তাদের অনিয়মিত কাজে যোগ দেয়া এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা ভোগ করার বিষয়টি জানাজানি হলে অন্য শ্রমিকরা প্রতিবাদ করে|কিন্তু ফাঁকিবাজ শ্রমিকদের প্রতিবাদের জবাবে কাজ তদারকীর উত্তর,"ওরা ওপরের লোক|ওদের ব্যাপারে কেউ কথা বলবেনা|ওদেরকে কষ্টের কাজ দেয়াও নিষেধ|"
দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যখন অন্যায় আবিচার,দুর্নীতি কদাচার মহামারি আকার ধারণ করেছে তখন এই নতুন প্রজন্মের চরিত্রবাণ কিছু যুবক জাতির জন্য আশা জাগানিয়া|বিশেষ করে ছাত্র শিবির তার ঝাণ্ডা তলে সমবেত হাজার হাজার তরুণ যুবাকে যে আদর্শবাণ করে গড়ে তুলছে এটি খোদ আওয়ামীলীগ নেত্রী ও শিকার করতে বাধ্য হবে|অন্যদিকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ,ধর্ষক ছাড়া কিছুই দিচ্ছেনা|জাতি তাকিয়ে থাকবে এই চরিত্রবাণ সংগঠনটির কর্মীদের নেতৃত্ব দেখার প্রত্যাশায়|
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন