রাক্ষুসে মেঘনার গ্রাসে আমার প্রিয় জন্মস্হান কমলনগর-রামগতি।

লিখেছেন লিখেছেন কিং মেকার ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:২৭:৩৩ রাত



স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হয় মেঘনার ভাঙ্গন এ ভাঙ্গন আজও থেমেনি। আজ পর্যন্ত কোন সরকারই কমলনগর-রামগতিকে রক্ষা করা চেষ্টা করে নাই ভবিষ্যতে হবে কিনা আজও সন্দেহ আছে। টানা বর্ষণ, প্রবল স্রোতের ঘুর্ণাবর্ত ও জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় জেলার কমলনগর-রামগতি উপজেলা মেঘনায় তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তীব্র স্রোতের মুহুর্তের মধ্যে মেঘনায় বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ী, ফসলী জমি ও বেড়ীবাঁধসহ কমলনগর-রামগতি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। মেঘনার ভয়াল থাবায় ভেঙ্গে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডে ব্লক বাঁধ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভাঙ্গন কবলিত লক্ষাধিক লোকজনের ঘর বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত। রামগতি উপজেলার চর গাজী, বড় খেরী, চর রমিজ, চর আলগী, চর আলেকজান্ডার, ও চর আবদুল্লাহ, কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন ও পাটওয়ারী হাট ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম মেঘনার ভাঙ্গন তান্ডব চলছে। চোখের পলকেই নদীতে বিলীন হচ্ছে গ্রাম জনপদ, মার্কেট, স্কুল-কলেজ-বিদ্যালয়, সাইক্লোন শেল্টার, কবরস্থান, অফিস-আদালত, বসতবাড়ী, মসজিদ, ফসলি জমি, বেড়িবাঁধ, বাসস্থানসহ হাজারো স্থাপনা।

কমলনগর-রামগতি উপজেলা দীর্ঘ ৩৫ কিঃ মিঃ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শুধু ধবংসের চিহ্ন। ভাঙ্গনে প্রতিনিয়ত নদী গিলে খাচ্ছে গাছ-পালা, ফসলি জমি ও বাড়ীঘর। ভাঙ্গন কবলিত মানুষেরা তাদের ঘরদোর সরিয়ে নিতে ব্যাস্ত। কেউ কেউ নিজের জায়গা থেকে গাছ কেটে সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ আবার রাস্তা থেকে ইট-সুরকি তুলতে ব্যাস্ত। কমলনগর-রামগতি মানুষদের শোকের মাতম। মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনে এভাবেই ছোট হয়ে আসছে লক্ষ্মীপুর কমলনগর-রামগতি উপজেলাটি। ভাঙ্গনের তীব্রতা অব্যাহত থাকলে নির্মানাধীন অত্যাধুনিক কমলনগর-রামগতি ২টি উপজেলার উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনসহ সরকারী বেসরকারী অসংখ্য স্থাপনা।

রামগতি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, আ.স.ম আবদুর রব সরকারী কলেজ, আলিয়া মাদ্রাসা, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রামগতি থানা, পৌরসভা কার্যালয়সহ উপজেলা সদর আলেকজান্ডার বাজার এখন মেঘনার নদীর ভাঙ্গন থেকে মাত্র এক’শ গজ দুরে অবস্থান করছে। ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজ উদ্দ্যেগে বার বার নদী বাঁধের চেষ্টা করছে।

রামগতিতে স্থানীয় উদ্দ্যেগে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক রামগতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন রামগতিকে রক্ষায় নিজেদের গঠিত তহবিল থেকে ব্লক তৈরী ও জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু নদীর গভীরতা থাকার কারনে বাঁধ বেশীদিন ঠিকেনি। কমলনগর উপজেলায় তীব্র ভাঙ্গনের ফলে চর ফলকন, পাটওয়ারী হাট ইউনিয়ন ও সাহেবের হাট, চর কালকিনি ইউনিয়ন বর্তমানে বিলীনের পথে। সবচেয়ে বেশী ভাঙ্গন দেখা দেয় চর ফলকন, পাটওয়ারী হাট, সাহেবের হাট ইউনিয়ন অচিরেই এর কোন উদ্দ্যেগে না নিলে কমলনগর উপজেলাটি কিছুদিনের ভীতর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, আমার ইউনিয়নের তিন এর এক অংশ বিলীন হয়ে গেছে অচিরেই বাকী ইউনিয়ন বিলীন হয়ে যাবে। স্থানীয়ভাবে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা সম্ভব হয় নাই। সরকারীভাবে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৭৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File