সোনার ছেলেদের ৪ বছরে ধর্ষণ ১২৯৭১। ধর্ষকলীগ জিন্দাবাদ।
লিখেছেন লিখেছেন কিং মেকার ১৭ আগস্ট, ২০১৩, ০১:৪২:১২ রাত
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ৪ বছরে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয় মোট ১২৯৭১ জন। এ সময়ে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৬৭ হাজার ২২৯টি। এছাড়া যৌতুক ও নানা কারণে স্বামীগৃহে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৫ জন নারী। তন্মধ্যে স্বামীগৃহে নির্যাতনের ফলে জীবন দিতে হয়েছে প্রায় দেড় সহস্রাধিক নারীকে। সর্বাধিক ৮৫৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ঘটেছে। উল্লৈখ্য ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত অপরাধের চিত্র বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েব সাইটে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যানে দেখা যায়
ধর্ষণ ১২৯৭১
২০০৯ সালে ২ হাজার ৯৭৭ জন
২০১১ সালে ৩ হাজার ২৪৩ জন
২০১১ সালে ৩ হাজার ৩৪৪ জন
২০১২ সালে ৩ হাজার ৪০৭ জন (১১ মাসে)
সর্বমোট ধর্ষণ- ১২৯৭১ জন (৩ বছর ১১ মাসে)
নারী নির্যাতন ৬৭২২৯ জন
২০০৯ সালে ১২ হাজার ৯০৬টি
২০১০ সালে ১৬ হাজার ২১২টি
২০১১ সালে ২০ হাজার ৬৬ জন,
২০১২ সালে ১৮ হাজার ৪৫টি (১১ মাসে)
সর্বমোট নারী নির্যাতন – ৬৭২২৯ জন (৩ বছর ১১ মাসে)
ধর্ষণ ৩৫৬৩ (পত্রিকায় প্রকাশিত)
২০০৯ সালে ৪৫৬ জন।
২০১০ সালে ৫৫৯ জন
২০১১ সালে ৭১১ জন
২০১২ সালে ১৮৩৭ জন।
সর্বমোট- ৩৫৬৩ জন
উল্লেখ্য বেশিরভাগ যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা দেখা গেছে। কুলাঙ্গার পরিমল কর্তৃক ভিকারুন নেসার ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
২১ এপ্রিল ২০১০ পটুয়াখালীতে বাহাদুর নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর নেতৃতে ৬/৭ জন যুবক এক গৃহবধুকে ধর্ষণ করে।
২২ এপ্রিল ২০১০ ভোলার লালমোহনের কচুয়াখালী গ্রামে বিএনপি কর্মী শফি মাঝির স্ত্রী ও মেয়েকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে । এছাড়া ভোলায় উপনির্বাচনের পরদিন যুবলীগ নেতা সিরাজ মিয়া বিএনপি সমর্থিত নান্নু মেম্বারের ভাতিঝা রুবেলের স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
১৩ মে ২০১০ সিলেট পলিটেকনিকে ছাত্রলীগ নেতা সৈকত শ্রেণীকক্ষে এক ছাত্রীকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। এছাড়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সোনাইকান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন রেজার পুত্র পান্না (২২) তার একজন সহযোগীকে নিয়ে স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলাকে (৪০) ধর্ষণ করে।
৫ জুলাই ২০১০ টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। ধর্ষিতা কিশোরী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। ৫ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুর বাজারে আসে খাতা কিনে বাড়ি ফেরার সময় হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিব, ছাত্রলীগ নেতা আরিফ, সখীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত সিকদারের ভাগ্নে বাবুল, নাতি আকাশ মেয়েটিকে মোটরসাইকেলে করে হাজিপাড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে হাবিব মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় তার সহযোগীরা ধর্ষণের চিত্র ভিডিও করে। পরে আরেকজন ধর্ষণ করতে গেলে মেয়েটি সযোগ বুঝে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটিকে ধাওয়া করে ছাত্রলীগ নেতারা। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরিস্থিতি টের পেয়ে ধর্ষণকারী ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। ফিল্মি স্টাইলে এ ধরনের ধর্ষণের ঘটনা সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র প্রকাশ করে।
৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ বগুড়ার শাজাহানপুরে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী প্রকৃতির ডাকে বাইরে গেলে বখাটে আলামিন তাকে ধর্ষণ করে। পরে মামলা করতে গেলে যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ বাধা দেয়।
৪ জানুয়ারি ২০১২ সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে জুয়েল ও পলাশ স্বামীকে মারধর করে আটকে রেখে এক নৃত্যশিল্পকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
১৯ জানুয়ারি ২০১২ সিলেটের জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মিছরা জামান কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন এক মহিলা।
২৪ জানুয়ারি ২০১২ সরাইলে যুবলীগ ক্যাডার জাকির কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হন এক তরুণী।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গণধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বাবা মামলা করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সমুদয়কাটি ইউনিয়নের সুন্দর গ্রামে মা (৩০) ও মেয়েকে (১১) ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ চট্টগ্রামে র্যাব পরিচয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে ৩ বখাটে।
১২ মার্চ ২০১২ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বাজার এলাকায় স্বামীর অনুপুস্থিতিতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে যুবলীগ কর্মী সুমন।
২০১০ সালের ৪ এপ্রিল কাওসারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৬ এপ্রিল ছাত্রলীগ নেতা বাবু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৪ এপ্রিল টিএসসির বৈশাখী কনসার্টে ছাত্রলীগের মধ্যম সারির নেতাদের হাতে তরুণীদের শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা দেশবাসীকে হতবাক করে।
এছাড়া ১৯ এপ্রিল বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতা ডিউ কর্তৃক এক তরুণী এবং ২৮ এপ্রিল পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ নেতা বরকত খান কর্তৃক স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শারিরীকভাবে নাজেহাল হন।
তথ্যসূত্র-
- বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যান
- অধিকার
- গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমআরটি
- মানবাধিকার সংগঠনসমূহ
বিষয়: বিবিধ
১১৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন