অদ্ভূত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ – গণমাধ্যমের উপর সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ

লিখেছেন লিখেছেন শাহরিয়ার আরমান ০১ আগস্ট, ২০১৩, ০৫:২৭:৫২ সকাল

রাজনীতি গণমানুষের কথা বলে, – প্রশ্ন আসে এটা তাহলে গণনীতি না হয়ে রাজনীতি হল কেন ? বিষয় টি দুর্বোধ্য এবং জটিল।

গণতান্ত্রিক পন্থায় একটি সরকার গঠিত হওয়ার পর তাদের প্রধান দায়িত্ব থাকে জনগনের সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। বাংলাদেশ এর গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় যদিও বিষয় টি সুদূর পরাহত। সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারী আমলারা থাকে সাধারণ জনগনের ধরা-ছোয়ার বাহিরে। এই অবস্থায় একমাত্র সংবাদ মাদ্যম ই পারে গঠন মূলক সমালোচনার নীতির অবলম্বনের মাধ্যমে জনগনের হয়ে সরকারের কাছ থেকে গণমানুষের দাবী আদায়ের পথে পা বাড়াতে।কিন্তু যখন আমরা দেখি এ সাংবাদিকরা যখন জনগনের হয়ে স্বদেশের অভিন্ন দাবী আদায়ের ভূমিকা রাখে, তারাই যদি আবার সরকারি দমন নিপীড়নের এবং গুম হত্যার স্বীকার হন তখন যোক্তিক প্রশ্ন আসে সরকারটি কতটুকু আদর্শিক এবং গণতান্ত্রিক ?

বাংলাদেশ আওয়ামিলিগ এমন একটি তথাকথিত গনতান্ত্রিক (?) সরকারি দল যারা জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উদ্বেকজনক হারে সাংবাদিক নির্যাতন , গুম , হত্যা এবং গণ ও সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দেয়ার মত রোমহর্ষক মধ্যযুগীয় অপরাধ করেই চলেছে। তার উপর তাদের শাক দিয়ে মাছ ডাকার নীতি তো আছেই।বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিষয়টি এখনো রহস্যজনক,সম্প্রতি স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রী ম. খা. আলমগীর এর উদ্ভট মন্ত্যবে বিষয়টি আরো দুর্বেদ্ধ করে তুলেছে । বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক খুন হয়ছেন বর্তমান সরকারের আমলে, এর সংখা ১৭।

নির্যাতিত সাংবাদিক এর সংখা দু’হাজারের ও বেশি।

বর্তমান সরকারের শাসনামলে, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান, যমুনা টিভি, ‘শীর্ষ নিউজ, দৈনিক আমারদেশ এবং সোনারবাংলাদেশ ব্লগ সহ অসংখ্য গণ ও সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।




দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে কারাগারে প্রেরণ সহ দেশের কৃতি সন্তান ও সত্যের সাহসী সৈনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং রিমান্ড এর নামে রোমহর্ষক নির্যাতন চালায় বর্তমান সরকার।মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং টক-শোতে সরকারের সমালোচনার স্বাধীনতার অবস্থা সামরিক শাসনের চেয়েও খারাপ। দেখে মনে হচ্ছে এই সেই বাকশাল তন্ত্রের নগ্ন রূপ।

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিদিনই নির্যাতিত হচ্ছেন কোন না কোন সাংবাদিক।দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য, যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেয়া, সেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেই নির্যাতিত এবং লাঞ্চিত হয়েছেন বহু সাংবাদিক।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পুলিশ সরাসরি সাংবাদিকদের দিকে বন্দুক তাক করে গুলি করেছে এমন ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি বায়তুল মোকাররম থেকে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় কোনো কারণ ছাড়াই ঘটনাস্থল থেকে দূরে ‘আমার দেশ’ এর ফটো সাংবাদিক মীর আহমেদ মীরু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নির্বাচিত কর্মকর্তা সাংবাদিক আমিনুল হক ভূঁইয়া এবং ৭১ টেলিভিশন এর এক ফটো সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন।




সাংবাদিক নির্যাতনে পিছিয়ে নেই বর্তমান সরকারের এমপি মন্ত্রীরাও।মন্ত্রী আমলারা রাজনীতির রাঙ্গা লাঠি ঘুরিয়ে, নীতির টিনের বেপু বাজিয়ে অত্যন্ত সাবলীল ভাবে গণ নিপীড়ন এবং সাংবাদিক নির্যাতন করেই চলেছন।এক্ষেত্রে সুস্পষ্ট প্রমান থাকা সত্বেও তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার কোন ভূমিকা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।অতি সম্প্রতি আওয়ামীলীগ এর প্রগতিবাদী এম পি গোলাম মাওলা রনির হাতে চরম মারধোর ও লাঞ্চনার শিকার হন ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন এর দুইজন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আওয়ামিলিগ সাংসদ কামাল মজুমদারের হাতে লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হন ‘ই টি ভি’র এক নারী সাংবাদিক (০২-০১-২০১২)।

http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=M5WTJILh4jo

একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে যখন বিশ্ব আন্তর্জাতিক বাজার এবং আকাশ সংস্কৃতির উপর নিজেদের দখল নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা কি করছি???? সাংবাদিক হত্যা বা নির্যাতন এ কিসের ইঙ্গিত বহন করে???? এতশত গুম,হত্যা ,নির্যাতন রাজনৈতিক সহিংসতা ,ধর্মীয় বিদ্বেষ আমাদের রন্দ্রে রন্দ্রে অথচ নিস্ক্রিয় বিচার বিভাগ…….আমরা কোথায় চলেছি……………!!!!!!!

বিষয়: রাজনীতি

১১৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File