তিনি রাষ্ট্রদুত, না দলীয় প্রতিনিধি?
লিখেছেন লিখেছেন মৃনাল হাসান ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:১৬:০১ রাত
পত্রিকায় একটি শিরোনাম এসেছে- জিয়াউর রহমান ওয়ের পক্ষে আদালতের রায়। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত এয় রায় দিয়েছে। শিকাগো শহরের একটি রাস্তার নামকরন করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে। এই নামকরনে সে দেশের কেউ আপত্তি করেনি। আপত্তি করেছে কিছু বাঙ্গা্লী, আর তাদের সাথে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। শেখ হাসিনা বা সজীব ওয়াযেদ জয়ের নামে নয়, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বা মখা আলমগীরের নামে নয়, ইনু বা দিলিপ বড়ুয়ার নামে নয়, শামীম ওসমান বা জয়নাল হাজারির নামে নয়, জিয়াউর রহমানের নামে সড়ক! এটা কি মেনে নেওয়া যায়? তাই তারা আমেরিকার আদালতে এই নামকরনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে। কিন্তু আদালত তাদের দাবি মেনে নেয়নি। আদালত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সিদধান্তের পক্ষে রায় দিয়েছে। অর্থাৎ সড়কটির নামকরন জিয়াউর রহমানের নামে করতে বলা হয়েছে।শিকাগো শহরের ৪৯ ওয়ার্ডের কমিটির সদস্য জো মুর। জো মুর জানান, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি বেশ রুক্ষ ও উত্থান-পতনের। রাজনৈতিক সব পক্ষই বিভিন্ন অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত। মোটের ওপর বিচার-বিবেচনা করে তার কাছে জিয়াউর রহমানকে ভালো মানুষের একজনই মনে হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেছেন, দূতাবাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব শহরে চিঠি দেয়া হয়েছে। এই চিঠিতে শহরের মেয়রদের জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তথ্য দেয়া হয়েছে। যাতে শিকাগোতে জিয়াউর রহমান যে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তা যেন অন্য কোথাও না পান তা বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন তিনি।
এতোদিনে বুঝতে পারলাম, কেন তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি হয়না, সীমান্ত চুক্তি হয়না, বানিজ্য ঘাটতি দূর হয়না। কেন বাংলাদেশের শ্রমিকেরা বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে আসছে এবং বিদেশে নতুন কোন শ্রমবাজার সৃষ্টি হচ্ছেনা। কেন বিদেশের বাজারে আমাদের তৈরি পোশাকের কদর হারাচ্ছে।একটি রাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে দুতাবাস খুলে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখা, বৈদেশিক বানিজ্য বৃদ্ধি করা, বৈদেশিক সম্পর্কের বিভিন্ন জটিলতার সমাধান করার জন্য। দুতাবাসের প্রধান রাষ্ট্রদুত, তিনি বিদেশে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিনিধি। তিনিই এসব বিষয় দেখভাল করেন। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রদুতদের কাজ দেখছি অন্য রকম। আমেরিকার কোন একটি শহরের রাস্তার নামকরন হবে জিয়াউর রহমানের নামে, তা তিনি ঠেকাতে যাবেন। একতরফা নির্বাচনের বৈধতা অর্জনের ব্যর্থ চেষ্টা তিনি করবেন। তিনি কি রাষ্ট্রদুত? না, দলীয় প্রতিনিধি? দলীয় প্রধানের বিভিন্ন ডিগ্রি সংগ্রহের কাজ তিনি করবেন। বিদেশে অবস্থানরত স্বদেশীদের কোন সমস্যার কথা তারা শোনেন না।
রাষ্ট্রদুত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন যে জঘন্য কাজটি করছেন, তাতে আমেরিকান সমাজের কাছে আমাদের দেশের ভাবমুর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।আমেরিকার কোন রাষ্ট্রদুত কি এমন কাজ করতে পারেন? সেদেশেও রাজনিতি আছে, পক্ষ বিপক্ষ আছে। কিন্তু বিদেশে তাদের কোন বিশিষ্ট ব্যাক্তির পাওয়া সম্মাননার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকতে পারেন? এমনকি সোমালিয়া বা আইভরিকোষ্টের মত জাতিগত, গোত্রগত সংঘাতপীরিত দেশের রাষ্ট্রদুতরাও কি এমন জাতি বা গোত্রীয় প্রতিনিধির ভুমিকা পালন করতে পারে?
বিষয়: বিবিধ
১৬০২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাতি হিসেবে আমরা পরশ্রীকাতর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন