সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে সবার সাড়া দেয়া উচিত।

লিখেছেন লিখেছেন মৃনাল হাসান ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:৫১:০৮ রাত

‘এই পৃথিবীর টিকে থাকার আদৌ কোন সম্ভাবনা যদি থাকে তবে তা আবহাওয়া পরিবর্তনের কনফারেন্স রুমে নয় কিংবা সর্বোচ্চ দালানকোঠার শহরে নয় বরং মাটিতে যারা প্রতিদিন কাধে কাধ মিলিয়ে তাদের বনাঞ্চল, তাদের পাহাড় ও নদী বাঁচানোর জন্য যুদ্ধ করছে তাদের কারনেই থাকবে। কারন তারা জানে এই বনাঞ্চল এই পাহাড় এবং নদীই তাদের বাঁচিয়র রেখেছে।

ভয়ানকভাবে ভুল পথে ধাবিত হতে থাকা এই পৃথিবীকে আবার নতুন পথে চালিত করার প্রথম পদক্ষেপ হবে ভিন্ন মতাদর্শের মানুষদেরকে একঘরে না করে ফেলা।যাদের চিন্তা ভাবনা পুঁজিবাদ অথবা সাম্যবাদের আওতার বাইরে অন্য কোন কিছু তাদের জন্যও যায়গা করে দেয়া। সেই নতুন কল্পনায় হয়তো আনন্দ আর পুর্নতাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করব আমরা।সেই দার্শনিক স্তরে পৌঁছানোর জন্য খানিকটা যায়গা ছেড়ে দিতে হবে- তাদের জন্য যাদের দেখলে মনে হয় আমাদের অতীত লালন করছে অথচ হয়তো হবে ভবিষ্যতের পথ প্রদর্শক।তা করার জন্য কিছু প্রশ্নের উত্তর চাইতে হবে আমাদের শাসকদের কাছ থেকে- আপনারা কি দয়া করে আমাদের নদীর পানি নদীতে আর বনের গাছগুলিকে বনেই থাকতে দিতে পারেন? বক্সাইট পাহাড়েই রেখে দিতে পারেন? যদি তাদের উত্তর ‘না’ হয় তাহলে অন্তত তাদের যুদ্ধে সর্বস্বান্ত মানুষগুলোর কাছে নৈতিকতার প্রচার বন্ধ করা উচিত’।

উপরের সম্পুর্ন বক্তব্যটাই মানবাধিকার কর্মী ও লেখিকা অরুন্ধুতি রায়ের।অসম্ভব ভালো লাগা এই লাইনগুলো উদ্ধৃত করার লোভ সংবরন করতে পারলাম না। রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে এই জন্য ‘তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি” নামক একটি সংগঠন ঢাকা থেকে রামপাল একটি লংমার্চ করেছে।এই সংগঠনের সবাই বামপন্থী। বামদের আমি একদম পছন্দ করিনা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এরা জাতি বিভক্তির কাজে নিয়োজিত এবং এরা এদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার মাধ্যমে অনবরত হিংসা, প্রতিহিংসা ছড়িয়ে জাতিকে একটি চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কাজে লিপ্ত। কিন্তু সুন্দরবন রক্ষার জন্য তারা আমাদের দেশে যে আন্দোলন শুরু করেছে তাদেরকে পছন্দ করিনা বলে তাদের এই আন্দোলনকে অবজ্ঞা করতে পারছিনা। তাই আমি মনে করি এই আন্দোলনে সবার শরিক হওয়া উচিত।

১৮ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ খুলনার জনসভায় রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধীতা করে বক্তব্য দিয়েছেন এবং সুন্দরবন রক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। রামপাল ইস্যুতে এটাই বিএনপি তথা ১৮ দলীয় জোটের প্রথম বক্তব্য। এ ব্যাপারে বিরোধীদলকে আরো স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে। শুধু তত্বাবধায়ক ইস্যুতে আটকে না থেকে অন্যান্য ইস্যুগুলোও জনগনের কাছে তুলে ধরতে হবে।এরকম একটি লংমার্চ বিরোধীদলও করতে পারত এবং তা হত আরো সাড়া জাগানিয়া। ‘গোল্লায় যাক সুন্দরবন, খুশি থাকুক দাদার মন’ এই স্লোগানে সরকার যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। কিন্তু বিরোধীদলকে দায়িত্বহীন হলে চলবে না। জাতির কল্যানে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১১০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File