কিভাবে ও কেন ব্লগিং শুরু করলাম

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ লুত্ফুল আনাম ০২ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:৩০:১২ সন্ধ্যা



সকল ব্লগারদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্লগ জগতে লেখালিখি শুরু করছি।

আমার বয়স ৬৫, আমি পেশায় ইন্জিনিয়র। আমার বয়সি লোকজন ব্লগে সম্ভবত কম আছেন কারন এটা তরুণদের জগত বলেই আমার মনে হয়। দু বছর আগেও ব্লগ সম্বন্ধে আমার কোন ধারনা ছিল না। হাই স্পীড ইন্টারনেটের দেশে মেয়েদের কাছে বেড়াতে গিয়ে দীর্ঘ সময় অনলাইনে দেশী খবরের কাগজ পড়া ও বিভিন্ন ওয়েব সাইট ভিজিট করে ব্লগ সম্বন্ধে প্রথম ধারনা হয়।

আমি এতদিন বিভিন্ন সংবাদপত্রের অনলাইন পাঠকদের মন্তব্য ও বিভিন্ন ব্লগের ব্লগারদের লেখা ও মন্তব্য পড়ে আসছি। বিভিন্ন পাঠক ও ব্লগারদের লেখা ও মন্তব্য পড়ে যেমন আনন্দিত হয়েছি তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতাশ ও আহতও হয়েছি। তরুণ লেখকদের দেশপ্রেম, মানুষের জন্য ভালবাসা, নিজ এবং অন্যের অধিকারের প্রতি সচেতনতা, অন্যায়, জুলুম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, পরিমিতবোধ ও শালীনতাবোধ ইত্যাদি যেমন আমাদের নূতন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ব্যাপারে আশার সঞ্চার করে তেমনি কিছু কিছু লেখকের অশালীন, কুরুচিপূর্ণ, কদর্য (পড়া যায় না, মুখে উচ্চারন করা যায় না), কুযুক্তিপূর্ণ লেখা ভীষণভাবে পীড়া দেয়। আমাদের দেশে যারা শুধু নিজের নামটা লিখতে পারে তাদেরকেই শিক্ষিত হিসাবে গণ্য করা হয়। তাহলে যারা ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখির যোগ্যতা রাখে তাদেরকে নিশ্চয়ই উচ্চ শিক্ষিত বলা উচিত। শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে। সত্য ও মিথ্যা, ন্যায় ও অন্যায়, ভাল ও মন্দ, নীতি ও দুর্নীতি এবং সুন্দর ও অসুন্দরকে চিনতে শেখায়। নিজের অধিকারের সাথে সাথে অন্যের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন করে। সকল অন্যায় অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে সাহসী করে। আল্লাহ্ প্রতেকটা মানুষের ভিতরে বিবেক নামক প্রগ্রামটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন যা তাকে আমৃত্যু ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করে দেয়। সে কারনে আল্লাহ্ আমাদের কাজের হিসাব ও বিচারের ব্যবস্থা রেখেছেন। “বুঝতে পারিনি” এ ধরনের অজুহাত কেউ দিতে পারবে না। শিক্ষা মানুষের বিবেককে করে শাণিত আর অজ্ঞতা এবং কুশিক্ষা করে অবদমিত।

লেখালেখির জগতটা জ্ঞান, বুদ্ধি আর যুক্তির জগত। এখানে হুমকি, ধামকি, গালাগালি বা পেশি শক্তির আশ্রয় নেবার কোন সুযোগ নাই। এখানে নিজের মত ও বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে তা মেধা ও যুক্তির সাহায্যে করতে হবে। আমার লেখাটা শুধু আমার সম্বন্ধেই ধারনা দেয় না, ধারনা দেয় আমার পরিবার, আমার সমাজ এবং আমার দেশ সম্বন্ধেও। ইন্টারনেট তথ্য আদান প্রদানকে কি সহজই না করে দিয়েছে। মাউসের একটা মাত্র ক্লিকের দ্বারা আমি মুহুর্তে লক্ষ, কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারি। তাই আমাদের খুব সাবধান হওয়া উচিৎ । আসুন সাবমিট বাটনটা ক্লিক করার আগে আমরা আমাদের লেখাটা বারবার পড়ি। লক্ষ্য করি আমার লেখাটা কোনভাবে ভদ্রতা, সভ্যতা আর শালীনতার সীমা অতিক্রম করেনি, অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেনি এবং অন্যায়ভাবে অন্যকে আঘাত করেনি। আমরাই আমাদের মডারেটর হই। প্রত্যেক ব্লগের কিছু নীতিমালা আছে এবং মডারেটরও আছে। তারপরও কেন অশ্লীল ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য ও লেখাগুলকে সরিয়ে দেয়া হয় না? প্রতেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে কিন্তু তার সীমাও আছে।

আমার লেখার যোগ্যতা (বিশেষ করে কম্পিউটারে বাংলা লেখার পারদর্শীতা) না থাকা সত্ত্বেও আমাদের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে মত বিনিময়, আমাদের চিন্তা ভাবনা, আমাদের বিশ্বাস, আমাদের স্বপ্ন দেশকে নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা ইত্যাদি শেয়ার করা এবং তাদেরটা জানা ও বুঝার জন্যই লেখার এ প্রচেষ্টা। আমি সব ব্লগার বন্ধু ও পাঠকদের অনুরোধ করব আমার যে কোন ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিতে ও সুপরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে। হযরত ওমর (রাদিআল্লাহু তা’লা আনহু) যে তাঁর ভুল ত্রুটি ধরে দেয় তাকে তাঁর বন্ধু বলেছেন।

(এ লেখাটা ব্লগে প্রথম লেখা হিসাবে পোস্ট করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু মিসরের ঘটনায় এর আগে একটা সংক্ষিপ্ত লেখা দ্বারা নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বাধ্য হয়েছি।)

বিষয়: বিবিধ

১৬৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File