ঐকই সফলতা
লিখেছেন লিখেছেন শারমিন হক ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৪৩:৫৩ সন্ধ্যা
২০০৩ সাল।দিন কিংবা তারিখ কোনটাই স্মরণে আসতেছে না।
আমি তখন মিরপুর-৬ ,দারুল উলুমে মেশকাত জামাতের ছাত্র আর সেই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ছিলেন ’৯১ এর নির্বাচনে জয়ী হওয়া একজন সংসদ সদস্য।মাওলানা আতাউর রহমান খানের যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য ছিল অসাধারণ।মাওলানা আতাহার আলী খান (রহঃ) এর সুযোগ্য ছাত্র ছিলেন মাওলানা আতাউর রহমান খান।
হযরতের যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য শুনতে এতটাই আগ্রহ ছিল সবসময় অপেক্ষা করতাম কখন তিনি বক্তব্য দিবেন।একদিন আছরের নামাযের পূর্বে দারুল উলুমের মসজিদ কমপেলক্স যাকে মিরপুর এলাকার তাবলীগের মার্কাজ বলা হয় আতাউর রহমান খান বয়ান শেষ করে চলে যাবার পর দেখলাম আমাদের মেশকাত বর্ষের একজন ছাত্র কি বিষয় নিযে যেন প্রচন্ড রাগারাগি করতেছেন।কাছে গিয়ে জানলাম তাবলীগের দুই সাথী আতাউর রহমান খানকে দুনিয়ার আলেম বলে মন্তব্য করেছে।তাঁদের কাছে প্রশ্ন করার প্রেক্ষাপটে জানতে পারলাম তাঁরা কোন আলেম নয় ,তবে বেশ কিছুদিন তাবলীগে সময় লাগিয়েছে।যাই হোক পরবর্তীতে তাঁরা তাঁদের এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ছিল।
এইতো কয়েক দিন পূর্বে চ্যানেল আই বিশ্ব ইজতেমা থেকে তাঁদের নিউজ কভার করতে গিয়ে একজনের অনুভূতি জানতে চাইলেন ।প্রশ্নটা ছিল এ ধরণের কেন তাঁরা বিশ্ব ইজতেমায এসেছে।আর ঐ লোকটি উৎসাহের সহিত জবাব দিচ্ছেন তিনি হজ্জ্বে যেতে পারেন নি ,এখানে হজ্জ্বের সওয়াবের আশায় এসেছেন।অনেকে এটাকে দ্বিতীয় হজ্জ্বও বলে থাকে।আমি জানি না উপরোক্ত মন্তব্য গুলো তাবলীগের মুরব্বিদের কান পর্যন্ত পৌঁছায় কিনা।ব্যক্তিগত ভাবে আমিও তাবলীগে সময় লাগিয়েছি এখনও যাই।এ বিষয় সম্পর্কে মানুষকে অবগত করানো একান্তই জরুরি।এমন হাজারও ইস্তেমা যদি একসাথে করা হয় তারপর ও কখনও তা হজ্জ্বের সমতুল্য তো দূরের কথা কাছাকাছিও যেতে পারবেনা।হজ্জ্ব হচ্ছে ইসলামের পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের একটি।
সমাজের মধ্যে শিরক,বিদআত ,গোমড়াহী একদিনে তৈরি হয় না।
বিশ্ব ইস্তেমায় আসা প্রায় লোকজনই তাবলীগ সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নয়।
উপরোক্ত মন্তব্যগুলো তাবলীগের দোষ হতে পারে না।তবে উল্লেখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা উচিত।অনেকে বলে ফাযায়েলে আমলের ভিতরে অনেক জাল হাদিস আছে।হয়তো থাকতে পারে কারণ সহীহ হাদীসের কিতবাগুলোও জাল হাদিস মুক্ত নয়।তাছাড়া ফাযায়েলে আমল এমন কোন কিতাব নয় যার দ্বারা শরীয়তের হুকুম পরিপূর্ণ।ফাযায়েলে আমল হয়েছে শুধু আমলকে গুরত্ব দেয়ার জন্য।এই কিতাবকে নিয়ে বিতর্কের কোন অবকাশ দেখি না।এর ভূমিকা হচ্ছে একটি মাদ্রাসার মত।যাদের ছাত্রদের নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই।তাবলীগ তাঁদের নিয়মানুযায়ী এই মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে থাকেন দিন প্রচারের কাজে।তারপরও যারা তাবলীগকে নিয়ে মতনৈক্য পোষণ করে তাঁদেরকে বলব নিরপক্ষভাবে তাবলীগকে জানার জন্য।তাবলীগে কিছু সময় লাগিয়ে দেখতে পারেন।
কয়েক দিন আগেও জামাত সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না।এখন দেখি মওদুদির লিখিত কিছু বিষয় ব্যতীত তাঁদের সাথে মতনৈক্য করার কিছুই নেই।আমি জামাতের কোন কর্মি না হলেও তাঁদের সাথে আমার কোন মতবিরোধ নেই,পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁদের প্রতি।এদেশে মুসলমানের আগমন মুহাম্মদ বিন কাসেমের মাধ্যমে শুরু হলেও এর বহু পূর্বে সূফি-দরবেশরা দিন প্রচারের জন্য এসেছিলেন।ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মিদ বিন খিলজী যেমন তরবারি হাতে বজ্রকন্ঠে অত্যাচারি হিন্দুদের উপর ঝাঁপিযে পড়ে তাঁদেরকে পরাজিত করেছিলেন তেমনভাবে খানজাহান আলী,শাহ আলী ,বায়োজিদ বোস্তামির মত অসংখ্য সূফি-দরবেশ এদেশে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন।
আজ আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন।আমাদের মতবিরোধের কারণেই আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকাসত্ত্বেও সংখ্যালঘু মুসলমানে পরিণত হয়েছি।আজ একজন হিন্দু যে কোন কারণেই মারা যাক এদেশের সানবাধিকার নামক দালাল সুলতানা কামাল,কানা মিজান কেঁচোর গর্ত থেকে কেঁচোর মত মুড়িয়ে মুড়িয়ে বেরিয়ে আসে।শুরু করে মানব বন্ধনের কর্মসূচি।অথচ বতর্মান বছরের জানুয়ারী মাস থেকে শুরু এ পর্যন্ত কম করে হলেও ৫০০জন মুসলমান নামের সখ্যালঘুদের নির্বিচারে ,নিরাপরাধে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।আশ্চর্যজনক হলেও সত্য মানবাধিকার নামক কর্মিরা বিস্ময়কর ভাবে নিরব।কানা মিজান তো বলেছেই মা দূর্গার যেমন দশ হাত,তেমনি মানবাধিকার কর্মিদেরও দশ হাত।তাঁরা নির্যাতিত,নিপীড়িত মানুষদেরকে দূর্গার মতই রক্ষা করে।
স্যার মাহমুদুর রহমানের কথাই সত্য -মুসলমান নামক সংখ্যালঘুদের কোন মানবাধিকার থাকতে নেই।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৯ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজ আমাদের মাঝে ঐক্য না থাকার কারণে রাস্টিয় ভাবে মুসলমান হিসাবে নাস্তিক সরকারের কাছে আমাদের ইজ্জত ভুলুন্ঠিত হচ্ছে।
যারা মাঠে ময়দানে জামাতের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে এটা ও আর একটি অজ্ঞতা।না জানার কারণে।
একটি বই আপনারা পড়তে পারেন যাদের বিরুদ্ধে হক্কানি আলেমদের এতো ফতোয়া
বইটি হচ্ছে অধ্যাপক গোলাম আজম লিখিত (ইকামাতে দ্ধীনের গুরুত্ব)আশা রাখি অনেকের চোখের অন্ধত্ব দুর হবে।
আমাদের দেশে হাজার হাজার আলেমই ইকামতে দ্বীন আর খেদমতে দ্বীন বুজেনা।
আমার সব চাইতে বড় দুঃখ লক্ষ লক্ষ আলেমের দেশ এই বাংলাদেশ পীর আউলিয়ার দেশ এই বাংলাদেশ শুধু মাত্র আলেমদের এই অনৈক্যের কারণেই আমাদের উপর তাবেদারী করছে রামপন্থি বামপন্থি রা।
আর যারা একটু আধটু যত টুকু পারে দ্বীনকে ইকামাত করার চেস্টায় রত আছে এই সমস্ত আলেমরা তাদের বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজি তে ব্যস্ত রয়েছে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবার উপর রহম নাজিল করুন। আমিন।
ওয়া মা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।
০ এটাই বাংলাদেশের মানুষের স্ট্যান্ডার্ড ।
এরা অন্যে যা বলে তা অন্ধের মত বিশ্বাস করে । নিজেরা যাচাই করে দেখার নুন্যতম যোগ্যতা নেই ।
আপনাকে আন্তরিক মোবারকবাদ গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন