আলোর জ্যোতি-১

লিখেছেন লিখেছেন শারমিন হক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:৫৪:১৬ দুপুর

রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর সাফল্যময় নবুয়্যাতের ২৩ বছর জীবনকে ২টি ধারায় বিভক্ত করা যায়-

১.নবুয়্যাতের প্রথম ১৩ বছর মক্কায় অতিবাহিত করেন।এই ১৩ বছর তিনি শুধু দাওয়াতের উপর কাজ করেছেন।বর্তমানে প্রচলিত তাবলীগ জামাত কেবলমাত্র রাসূল (সাঃ) এর এই ১৩ বছরের কার্যক্রমের উপর চালিত আছেন।

২.রাসূল(সাঃ)এর নবুয়্যাতের বাকি ১০ বছর মদিনায় অতিবাহিত করেন।এখানে না বললেই নয়-মহানবী (সাঃ) এর আগমন কেবলমাত্র একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যই ছিল না।তিনি ছিলেন পথহারা মানবজাতিকে সুন্দর ও সুঠিক পথে ফিরানোর আলোক প্রদর্শক।

আর এটি করতে গিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মনে করেছিলেন একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করা।

তাই তিনি নবুয্যাতের শেষ ১০ বছরে মদিনায় বসে বহু জাতীয় গোত্রের ঐক্যমতে সুন্দর,শাশ্বত একটি ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম করেছিলেন।ঐ সময়ের অন্ধকারাচ্ছান্ন পৃথিবীতে রাসূল(সাঃ) গঠিত রাষ্ট্রটি ছিল আলোর জ্যোতি।

তৎকালীন সময়ে রাসূল (সাঃ) গঠিত রাষ্ট্রে ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সবাই পেয়েছিল সমান অধিকার।নবী করীম(সাঃ) এর নবুয়্যাতের শেষ ১০ বছরেই শরীয়াতের সব হুকুম আহকাম অবতীর্ণ হয়।এ সময়েই অবতীর্ণ হয় জিহাদের সব আয়াত সমূহ।

কাজেই,নবী করিম(সাঃ) এর নবুয়্যাতিকালনি সময়ে দুটি ধারা দেখা যায়-মক্কী জীবন এবং মাদানী জীবন।এ দুটির মধ্যে একটি হচ্ছে দাওয়াতি জীবন আরেকটি জিহাদী জীবন।অবশ্য তিনি জিহাদী জীবনেও দাওয়াতের কাজ করেছেন।

আসা যাক মক্কী জীবনে-এই মক্কী জীবনে রাসূল(সাঃ) এর দাওয়াতী প্রচেষ্টায় এমন কিছু সাহাবী তৈরি করেছিলেন যাদের ঈমান ছিল সুদৃঢ় ও মজবুত।এই ঈমানের জোরে মাত্র ৩১৩ জন সাহাবী যাদের কারো হাতে ছিল খেঁজুরের ঢাল,ভাঙা তরবারি,ভাঙা বর্শ যারা প্রতিপক্ষ রণঅস্ত্র সজ্জিত প্রায় ১০০০জনের একটি বাহিনীকে পরাজিত করেছিল।আর এ দাওয়াতি কাজই করে যাচ্ছে প্রচলিত তাবলীগ।আমি বলছি না,তাঁরা স্বয়ংসম্পূর্ণ কোন পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক দল।তবে তাঁরা নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কথা বলেন নি তা মানতে রাজি নই।তবে সেটা তাবলীগের ব্যানারে নয়,হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে করেছে।তাবলীগের ৭০% লোকই হেফাজতের সাথে সম্পৃক্তি।তারপর ও যারা বলেন তাবলীগ নাস্তিকদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায় নি ,সে ধারণা মোটেও ঠিক নয়।

আফসোস আমাদের বাংলাদেশে যতগুলো ইসলামি দল আছে যেমন হেফাজতে ইসলাম,জামাতে ইসলাম,ইসলামি এক্যজোট,ইসলামি আন্দোলন এদের সবার উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন হলেও এদের মধ্যে কোন ঐক্য নেই যার সুযোগটা লুফে নিচ্ছে বাতেল শক্তি।

আজ আমি তাবলীগকে গালি দিচ্ছি ভারতের দালাল বলে,তাবলীগ জামাতকে গালি দিচ্ছে ইহুদি খ্রিস্টানদের দালাল বলে,জামাত চরমোনাইকে গালি দিচ্ছে আওয়ামিলীগের দালাল বলে।অথচ,আমাদের সকলের গন্তব্য এক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।তাহলে কেন আমাদের মাঝে বিভেদ ,অনৈক্যের দেয়াল।আমাদের এই অনৈক্য মতভেদে লাভবান হচ্ছে কারা?

ঐদিন ফেইসবুকে দেখলাম একজন চরমোনাইকে বলছে চুরমনাই,ফাযায়েলে আমলকে বলছে ফাজিল আমাল,বিশ্ব ইজতেমাকে ইস্তেনজা ,জামাতকে বলছে আঁচল ধরা।আমরা যারা এই শব্দগুলো ব্যবহার করি তাঁরা ইসলাম সম্পর্কে কতটুকু জানি বা বুঝি।

এই তো সেদিন আমি তাবলীগের সমর্থনে একটি স্টাটাস দিয়ে গোল আলুর খেতাব পেলাম।আমি সকল ইসলামি দলের ভালো দিক গুলো পছন্দ করি।আমি মনে করি -আমরা যদি আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নিজের অবস্থান থেকে ইসলামের জন্য কাজ করি তবে দৃঢ় বিশ্বাস এদেশে বাতেল শক্তি কখনও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।

ইনশাহআল্লাহ।

বিষয়: সাহিত্য

১২৪৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

168902
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৪
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৩৯
129633
শারমিন হক লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
168965
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:১৯
মোঃমাছুম বিল্লাহ লিখেছেন : চরমনায়ের সাথে কিভাবে এক মত হওয়া সম্ভব
চরমোনাই পীরের মুরিদের কান্ড দেখুন
http://www.youtube.com/watch?v=QThu1SHsM_c&list=C9CC243F13D44C88
169098
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:০৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ইসলামী সকল দলকে পছন্দ করি ,
আমি মনে করি -আমরা যদি আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নিজের অবস্থান থেকে ইসলামের জন্য কাজ করি তবে দৃঢ় বিশ্বাস এদেশে বাতেল শক্তি কখনও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।

ইনশাহআল্লাহ।
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৪০
122898
মোঃমাছুম বিল্লাহ লিখেছেন : "ইসলামের বিভিন্ন দল"
এই দল গুলো তৈরী করা হয়েছে বিভেদ বাড়ানোর জন্য
আমি যে ভিডিও টা দিলাম সামান্য ঞ্জাণ যার আছে সেও বুঝে এগুলো ঠিক না।তার পরেও কেন করে?
169182
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪৯
ভিশু লিখেছেন : সুন্দর শেয়ার...Happy Good Luck
জাযাকাল্লাহ খাইরান!
Praying Praying Praying
169252
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০৩
শেখের পোলা লিখেছেন : তাবলীগকে খারাপ বলিনা৷ এটারও প্রয়োজন আছে তবে তারা চিরদিন ওখানেই অবস্থান করবে তা কেন হবে? ওর পরেকি আরকোন ধাপ নেই?ওদের কাজকে প্রাথমিক স্কুলের সাথে যদি তুলনা করি তবে প্রতি বছর কিছু ছেলে অবশ্যই পাশ করে হাই স্কুল মানে ইসলামী শরিয়ত প্রতিষ্ঠায় ব্রতি হওয়া চাই৷ তা হয়না৷ আর তাদের দাওয়াত মুসলীমদের কাছেই৷ কেয়ামতের দিন আমার বাড়ির পাশের হিন্দু যদি বলে আল্লাহ আমি মূর্খ মানুষ ছিলাম, ইসলাম কি তাতো আমাকে কেউ শেখাতে আসেনি৷ তখন আমার পিঠে কি চাবুক পড়বেনা মনে করেন? রসুল সঃ যেখানে বলেছেন আমার পক্ষের একটি কথাও অন্যকে পৌঁছে দাও৷ এই অন্য মানেকি তুরাগ নদীর পাড় না ভীন গাঁয়ের মসজিদ৷ আর তার জন্য তিন দিন, একুশ দিন আর একচল্লিশ দিন বউ বাচ্চা ফেলে বেরিয়ে পড়তে হবে৷
169346
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : চমৎকার পোষ্ট দিয়েছেন ধন্যবাদ।
169349
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৬
আফরোজা হাসান লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট। জাযাকিল্লাহু খাইর।
169368
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:২৫
রাবেয়া রোশনি লিখেছেন :
হেফাজতে ইসলাম,জামাতে ইসলাম,ইসলামি এক্যজোট,ইসলামি আন্দোলন এদের সবার উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন হলেও এদের মধ্যে কোন ঐক্য নেই যার সুযোগটা লুফে নিচ্ছে বাতেল শক্তি।

এই বিষয়টা ইসলামিক দল গুলো বুঝা উচিৎ নিজেদের স্বার্থে ইসলামের স্বার্থে । আপনাকে অনেক শুকরিয়া Happy Praying

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File