“কারাবদ্ধ লৌহমানব
লিখেছেন লিখেছেন শারমিন হক ২৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৫:১২:৩৩ বিকাল
গনমাধ্যম হচ্ছে যেকোন জাতির জন্য আয়নাস্বরূপ তথা চোখ।গনমাধ্যমকে যেকোন রাষ্ট্রের কর্ণধারও বলা চলে।গনমাধ্যমের মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই জানতে পারে নিজ দেশ কিংবা বিশ্বের খবরাখবর।গনমাধ্যম যেকোন দেশকে আশার আলো দেখাতে সক্ষম।একইভাবে,গনমাধ্যম যেকোন দেশ কিংবা জাতিকে একনিমিষেই নিক্ষেপ করতে পারে অন্ধকারের আস্তাকুঁড়ে।
গনমাধ্যমের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা সবথেকে বেশি।কারণ,তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে মানুষ জানতে পারে বা বুঝতে পারে দেশের সার্বিক অবস্থার কথা।সাংবাদিকরা এক স্থানের খবর অন্যস্থানে খুব সহজেই মানুষকে জানান দিয়ে থাকেন যা কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।সাংবাদিকদের তুলে ধরা খবরাখবরের উপরই নির্ভর করে জাতির অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যত।
যা বলতে চেয়েছিলাম হলুদ সাংবাদিকতা কোন দেশের জন্যই মঙ্গলজনক নয়।ক্ষনিক সময়ের তরে হয়তো কারো জন্য ভালো কিছু বহন করতে পারে বটে; পক্ষান্তরে এর পরিনতি হয় ভয়াবহ যা কল্পনাতীত।হলুদ সাংবাদিকতা একটি জাতি ,একটি রাষ্ট্র কিংবা একটি পরিবার ধ্বংসের ও কারণ হয়ে থাকে।মূলত,সত্য-মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন দেশের অগ্রগতি কিংবা অবনতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।আর এই সত্য -মিথ্যা তথ্য প্রকাশ পায় গনমাধ্যমকর্মিদের উপর নির্ভর করে।কেউ কেউ সরকারের ভয়ে,টাকার লোভে,ক্ষমতার জোরে,সাহসিকতার বলে এমনটা করে থাকেন।যার কবলে পতিত আজ বাংলাদেশ ।
বাংলাদেশে সৎ,সাহসী,আদর্শবান সাংবাদিকের বড়ই অভাব ,যাও বা দু’একজন আছেন তাঁরাও নির্যাতিত,নিপীড়িত হচ্ছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে।বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা বর্তমানে এক তরফা আইন প্রয়োগ করে যাচ্ছে।তাঁরা যেন আজ দেশের সেবায় নিয়োজিত না হয়ে , সরকারের হুকুম পালনের কর্মিতে পরিণত হয়েছেন।সরকারের দুর্নীতি ,লুটপাট,দুঃশাসন,অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট আচরণের বিরুদ্ধে একমাত্র চলা সত্যের কলম সৈনিক মাহমুদুর রহমান আজ অন্ধকারের কারাপ্রকোষ্ঠে কারাবদ্ধ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চেতনা ও ইসলামের মূল্যবোধে বিশ্বাসী জনগণ সাহসী সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের কাছে চির কৃতজ্ঞ,ঋণী।তাঁর মাধ্যমেই জনতা সত্যের স্বাদ পেয়েছিল,উন্মোচিত হয়েছিল নাস্তিকদের ঘাঁটি।মানুষ বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে কেবলমাত্র রাজনৈতিক মতভেদের কারণে মানুষকে প্রহসনমূলক বিচারের কাঠগড়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ,এমনকি জীবনও দিতে হচ্ছে।সত্যকে প্রকাশ করে তিনি তো কোন অন্যায় করেন নি,বরং সেই সত্যতার মাঝে মানুষ খুঁজে পেয়েছিল নানান অজানা কথা।তাঁর প্রকাশনায় মানুষ বুঝতে পেরেছিল সত্য-মিথ্যের বিভেদ।তাঁর এমন আদর্শিক চিন্তা-ভাবনা সরকারকে দিশেহারা করে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।সত্যকে প্রকাশ করার অপরাধে তিনি সরকারের অবিচারের শিকার হয়ে গত ১৪ডিসেম্বর,২০১২ থেকে ১১ ্এপ্রিল ,২০১৩ পর্যন্ত আমারদেশ কার্যালয়ে সরকারি বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ জীবন কাটান।শেষ পর্যন্ত সরকার ১১এপ্রিল২০১৩ তারিখে বিনা অপরাধে তাঁকে আটক করেন এবং আমারদেশ কার্যালয়কে তছনছ করে দেয়।তাঁর আইনজীবিরা জানান,সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের পর মাহমুদুর রহমানের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।
তাঁকে সমবেদনা জানাব কি করে তা আমার জানা ছিল না।তাঁর একজন ক্ষুদ্র ভক্ত হিসেবে আমি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে তাঁর সত্যতাকে সম্মান করে একটি স্টাটাস দিই।আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা আওয়ামি অন্ধপ্রেমী আমার একজন প্রিয় স্যার সাথে সাথে আমাকে ইনবক্সে মেসেজ করেন।
স্যারের প্রথম কথাই ছিল -মাহমুদুর রহমান তো হলুদ সাংবাদিক তাঁকে নিয়ে লেখার কি আছে?
আমি বললাম-স্যার আপনি কি করে বুঝেলেন তিনি হলুদ সাংবাদিক,আপনার কাছে কোন প্রমাণ আছে?
স্যার বলল-সমকালে দেখেছি।
আমি বললাম-তাতেই কি প্রমাণ হয় তিনি হলুদ সাংবাদিক।
স্যার বলল-নাস্তিক সম্পর্কে তাঁর (মাহমুদুর রহমান) দেয়া তথ্যে ভুল আছে।
আমি বললাম-স্যার আমি বর্তমানে আইটির একজন স্টুডেন্ট কাজেই তাঁর দেয়া তথ্যে কোন ভুল নেই এতে আমি ১০০% নিশ্চিত।
স্যার প্রসঙ্গ পাল্টানোর চেষ্টা করলেন।
আমি বললাম-স্যার আমি ১৯৭১ দেখিনি কিন্তু ২০১৩ সালের ৫ই মে রাতের আঁধারে শাপলা চত্ত্বরে আলেম হত্যার দৃশ্য স্ব-চক্ষে দেখেছি।
স্যার বলল-১৯৭১ সালে এর থেকে অনেক বেশি হয়েছে।এতটুকু মনে রাখ - বঙ্গবন্ধু ইজ এ গ্রেট লিডার ফর বাংলাদেশ।
স্যারকে আমি আরো কিছু প্রশ্ন করলাম।স্যার আমার প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিতে ব্যর্থ হলেন।যা আমার লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।কারণ,তাতে আদালত অবমাননায় আমার বিরুদ্ধে রুল জারি হতে পারে।আমাদের দেশের আইনের হাত তো অনেক লম্বা কখন কি করে বসে বুঝার উপায় নেই। ।স্যার আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে চুপ মেরে গেলেন।
জানিনা স্যার আমার এ লেখা পড়বেন কিনা কিন্তু স্যারকে বলব স্যার আমি আপনার দেয়া শিক্ষা অর্জন করেছি ঠিকই কিন্তু আপনার আদর্শ আমাকে িকরেছে বিস্মিত,হতভম্ব।বাস্তবটা ঠিকই দেখতেছেন কিন্তু আওয়ামিলীগ সাপোর্ট করেন বলেন আজ আমাকেও মিথ্যা শেখানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলেন।
কি ছিল তাঁর অপরাধ-
১.সত্যকে মানুষের সম্মুখে তুলে ধরা।
২.নাস্তিকদের মুখোশ খুলে ফেলা।
৩স্কাইপি কেলেঙ্কারী প্রকাশ করা(যা অন্য মিডিয়াতে প্রথম প্রকাশ পায়)।
৪.হলুদ মিডিয়া,সাংবাদিকদের চাপটেঘাত করা।
৫.দেশের সার্বিক অবস্থাকে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরা।
এগুলো করা তো অপরাধ হতে পারে না।বস্তুত,এগুলো করা একজন সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব।মাহমুদুর রহমান সৎ,সাহসী সাংবাদিকতার পরিচয় তুলে ধরে সঠিক কাজই করেছেন।একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রে একজন সাংবাদিকের যা করা দরকার তিনি তাই করেছেন।কিন্তু,ঘৃণিত এবং লজ্জাজনক হলেও সত্য যে সেই সাহসের বাতিঘর মাহমুদুর রহমান সরকারের হিংসার দাবানলে পড়ে আজ অন্ধকার কারাগারে কারাবদ্ধ।তাহলে,দেশ স্বাধীনতা অর্জনের ৪৩ বছর পরও কি আমরা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা পেয়েছি! প্রকাশ্যে দিবালোকের আলোয় সামান্যতম মত বিরোধের কারণে প্রতিনিয়ত ঝড়ে যাচ্ছে মানুষের জীবন।একে কোন ধরণের স্বাধীনতা বলে আমার বোধগম্য নয়।
আমি অবাক হয়ে যাই মাহমুদুর রহমানের সাহসিকতা দেখে।আমি সম্মান করি,শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি মাহমুদুর রহমানের সাহসকে।মানুষ দেশকে কতটা ভালবাসলে,কতটা নিঃস্বার্থ হলে নিজ জীবন বিপন্ন করে দেশের জন্য তথা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে থাকেন তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাহমুদুর রহমান।বাংলাদেশের রিমান্ড নামক পৈশাচিক নির্যাতনে নানাভাবে নির্যাতিত হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর আদর্শ থেকে একচুল পর্যন্ত নড়েন নি।
সালাম জানাই তাঁর গর্বিত মাতাকে যিনি এমন কৃতীসন্তান জন্ম দিয়ে বাংলাদেশের মুখকে উজ্জ্বল করেছেন।সাংবাদিক নামক সম্মানের পেশায় নিয়োজিত,নিবেদিত মাহমুদুর রহমানকে মহান আল্লাহ তাআলা অচিরেই জালিমীর কারাগার থেকে মুক্তি দান করুণ।বাংলাদেশের এই দুঃসময়ে মাহমুদুর রহমানের মত আদর্শিক,সাহসী কলমযোদ্ধার বড়ই প্রয়োজন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঘুমন্ত জাতিকে জাগরনির মুয়াজ্জিন সংগ্রামী দেশপ্রেমিক সৎ সাহসি মাহামুদুর রহমানের মুক্তি চাই।
ছবি ফেসবুক থেকে
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
নিশ্চয়ই মুনাফিক, প্রতারক ও জালিম শাসক ইসলাম ও দেশটার ও মুসলিম উম্মাহর হাজারটা ক্ষতি করলেও বাংলাদেশের মুসলিম তাদের আদর্শ, তাদের নৈতিকতার রূপকে শানিত করতে পারছে - ঐ মাহমুদুর রহমানকে দেখে।
সরকারের বর্তমান চাওয়া পাওয়া অনুযায়ী হয়তো তাদের ফুটসোলজার রা আগামীতে এ জাতিকে স্মৃতিশক্তিবিহীন, অপ্রকৃতস্থ এক মাহমুদুর রহমানকে কিংবা লাশ রূপী কোন মাহমুদুর রহমানকে দিবে - কিন্তু কৃতজ্ঞ বাংলাদেশীরা বন্দী পূর্ব মাহমুদুর রহমানের জন্য তাদের সমস্ত প্রার্থনা আল্লাহর কাছে করে যাবে এবং যথার্থ মুসলিমরা মাহমুদুর রহমানকে এই টর্চারের জন্য যথোপযুক্ত ব্যক্তিদের যথার্থ শাস্তি নিশ্চিত করবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন