পিতামতা সন্তানের শ্রেষ্ট শিক্ষক ।
লিখেছেন লিখেছেন শারমিন হক ২১ আগস্ট, ২০১৩, ০৯:০২:৫৮ রাত
পিতামাতা হল পৃথিবীর শ্রেষ্ট সম্পদ,যাদের মূল্য বিচার বিশ্লেষণ করে পরিমাপ করা সম্ভব নয় ।
একটা সন্তান জন্ম দেয়া যে কত কষ্টের তা বলে বা লিখে শেষ করার মত নয় ।
কিন্তু, এই নির্মম সত্যটাকে আমি নিজেও মা হবার আগে কখনও উপলব্ধি করতে পারি নি ।
যেদিন বুঝতে পেরেছিলাম আমি মা হতে চলেছি সেদিন থেকে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা যেন দ্বিগুণ হয়ে গেল যদিও মায়ের সাথে কখনও খারাপ আচরণ করি নি তারপরও মনে হতে লাগল মাকে যতটা সম্মান করার দরকার ছিল ততটা করি নি ।
ছেলে মেয়ের জীবন গড়তে সর্বাধিক ভূমিকা পালন করেন একজন মা ।
মায়ের অতি আদর ,স্নেহ,ভালবাসা ছেলেমেয়ের জীবনকে নরকে পরিণত করে ।
মা যদি একটি ছেলে/মেয়েকে ছোটবেলা থেকে আদরের পাশাপাশি শাসন করে,ধর্মীয় শিক্ষা সমন্ধে অবগত করতে পারে তবে সেই ছেলেটি/মেয়েটি কখনও খারাপ হতে পারে না বলে আমার বিশ্বাস ।
বাবাকে বেশির ভাগ সময়ই বাহিরের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় যার জন্য সে কখনই ছেলেমেয়েকে মায়ের মত সময় দিতে পারে না কিংবা খোঁজখবর নিতে পারে না ।
অনেক পরিবারে এমনও দেখা যায় ছেলেমেয়ের সাথে বাবার মাত্র সপ্তাহে একদিন দেখা হয় ।
কারণ ,বাবা যখন কাজে যায় তখন ছেলেমেয়ে ঘুমায় এবং যখন ফিরে তখনও ঘুমায় ।
আজ নিজ সমন্ধে কিছু কথা বলব-
আমি মা হবার সময় আমার আপনজন বলতে স্বামী ছাড়া কেউই কাছে ছিল না ।
স্বামীও ছিল না থাকার মত কারণ অফিসের ব্যস্ততার কারণে সে ছুটি নিতে পেরেছি খুবই কম ।
আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি তখন আমাকে মেডিকেল নিয়ে যায় আমার স্বামী ।
কিন্তু ঐ মেডিকেলে ছেলে মানুষদের গ্রহণ করে না ,শুধুমাত্র স্বামী একটা নির্ধারিত সময়ে দেখা করতে পারবে ভাগ্যক্রমে, ,ঐ সময়টা হল আমার স্বামী যখন তাঁর অফিস নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকে তখন ।
কি আর করা বিদেশের বাড়ি যা নিয়ম তা থেকে বিন্দুমাত্র নড়চড় হওয়ার অবকাশ নেই ।
আমাকে এডমিড করে চলে আসল ।
ধীরে ধীরে আমার অসুস্থতা বাড়তে থাকলে এভাবে সাতদিন কঠিন অসুস্থতার পর শেষ পর্যন্ত লেবার রুমে নিয়ে গেল কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না ।
আমি আর টলারেট করতে পারছিলাম শুধু আল্লাহ আল্লাহ বলে চিৎকার করতে থাকলাম ।
একপর্যায় আমি অঙ্গান হয়ে পড়ি এসময় অমার স্বামী আমার পাশে আমার নাকে অক্জিজেন লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল ।
হুশ হয়ে জানতে পারলাম বাচ্চার হার্টবিট একেবারেই কম এবং আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে সমস্যা হতে পারে ।
ধক করে উঠল বুকের মধ্যে এত কষ্টের পর একি শুনলাম !
কি আর করা জলদি অপারেশন রুমে নিয়ে গেল ।
মা্ত্র ৯ মিনিটে অপারেশনের মাধ্যমে আমার সোনামনি সব বাঁধা উপেক্ষা করে মহান আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় দুনিয়ার আলো দেখতে সক্ষম হল ।
কিন্তু যখন আমি আমার মেয়ের মুখ দেখলাম তখন পিছনের যত কষ্ট তা একনিমিষেই ভুলে গেলাম ।
বুঝলাম মা হতে কতটা কষ্টকে সহ্য করতে হয় ,
কেনইবা ছেলেমেয়ে মাকে শত কষ্ট দিলেও তাঁদেরকে একটু কষ্ট আঁচ করতে পর্যন্ত দিতে চায় না,
কেনইবা
ছেলেমেয়েকে ছেড়ে চলে যায় না ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন