জরিনার স্বাধীনতা
লিখেছেন লিখেছেন ট্রাস্টেড থিফ ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:৫৬:১৮ সকাল
জীবন সায়াহ্নে জমিদার তার দাসী জরিনাকে তুলে দিলেন তার এককালের লাঠিয়াল ভিনদেশী কায়েদের হাতে। কায়েদ তাকে নিয়ে ঘর করছে আবার তার সাথে বান্দি দাসীর মতও খারাপ আচরণ করছে। এরই মধ্যে জরিনার সাথে পরিচয় মুজি শেখের সাথে। কবে যে মুজি শেখের প্রেম যমুনায় সে হাবু ডুবু খাচ্ছে টেরই পেল না। কায়েদ ব্যাপারটা জানার পর দু জনের মধ্যে লেগে যায় যুদ্ধ। কায়েদ শক্তিতে বলীয়ান হওয়ায় পেরে উঠতে পারছিলনা মুজি শেখ। মুজি শেখ খবর দিল জমির চাচারে। দেখেন দাদা আমরা দুইজন দুইজনরে ভালোবাসি কিন্তু কায়েদ বাধা দেয়। জমির চাচাতো অনেক আগে থেকেই কায়েদের শত্রু কারণ জমিদার তার রাজত্ব কালে জমিরের ক্ষমতার কিছু অংশ কায়েদেরে দিয়েছিল। যাই হোক জমির চাচা এইবার মোক্ষম সুযোগটা পাইল।আট দশ জন পালোয়ান আইনা কায়েদেরে দিছে হোয়াইয়া। জরিনারে পাইল মুজি শেখ। জরিনা এই প্রথম বিয়ের স্বীকৃতি পেল। এক বুক আশা নিয়ে সুখের সংসার গড়তে শুরু করলো জরিনা। কিন্তু না জরিনার সে স্বপ্ন তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল।"
মুজি শেখের চোখে যে নেশা নেশা ভাব ছিল তা নিমিষেই মিইয়ে গেছে। জরিনা বুঝতে পারলো তার প্রতি মুজি শেখের আদৌ ভালোবাসা ছিলা না ছিল শুধু কামনার খোরাক। সে দুঃখ মাটি চাপা দিয়ে কোন ভাবে ভেসে থাকার প্রানন্ত চেষ্টা করছে সে। কিন্তু না মুজি শেখের অত্যাচার দিনকে দিন বেড়েই যাচ্ছে। নেশা করার জন্য তার টাকার যোগান চাই আর গায়ে হাত তোলা তার এখন মামুলি ব্যাপার। শত নির্যাতন সহ্য করেও সে পাড়ি দিচ্ছে জীবনের এবেলা থেকে ওবেল। কোথা থেকে সে যোগার করে এনে দিবে নেশার টাকা। এরই মধ্যে মুজি শেখ গেল জমির চাচার কাছে কিছু টাকার জন্য। জমির চাচাতো এককথায় টাকা প্রায় হাতে তুলে দিচ্ছে। কিন্তু না? - তুমি সরাব পান করবা আমার বাড়িতে। তোমারে কিচ্ছু দিতে হবে না। - জি হুজুর ইহা অতি উত্তম প্রস্তাব।
মুজি শেখ সরাব পান করছে আর জমির চাচা রাতের ঘুট ঘুটে অন্ধকারে রওনা হয়ে গেল মুজি শেখের বাড়ি। জরাজীর্ণ বেড়া দিয়ে খুব সহজেই জমির চাচা ভিতরে ঢুকে গেল। জমির চাচা কাছাকাছি আসতেই জরিনা নাকে হুঁকার গন্ধ টের পেল। সে বুঝতে পারে একজটকায় সরে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো। জমির চাচা তাড়াহুড়া করে বের হয়ে গেল। তাড়াহুড়াকরে বের হতে গিয়ে দেখে লুঙ্গি চিড়ে গেছে।
জরিনা জানতে পারল মুজি শেখ জমির চাচার বাড়ীতে সরাব গিলছে।
এবার সে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। নালিশ জানালো মাতব্বরের কাছে। মাতাবর যদিও ভালো লোক নয় তবে ঘটনাটা এলাকাতে যেহেতু চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে তাই মাতাবর হিসেবে তার মাতব্বরি না দেখালেই নয়। জমির চাচাকে শাসাতে লাগল - কোন সাহসে তুমি এত রাতে একজন মহিলার ঘরে যাও দিনের বেলায় যেতে পার না?
জরিনা মাতব্বরকে জানালো, সে স্বাধীনতা চায়। সে আর মুজি শেখের ঘর করবেনা। কারণ সে মাতাল, নির্যাতন করে, নিজের বউকে অন্যের কাছে বিক্রি করে।
মাতাবর এই সুযোগটার অপেক্ষায় ছিল
হুংকার দিল মুজি শেখকে যে তুমি যদি আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে জরিনার সাথে মিট মাট করে নিতে না পার তবে জরিনাকে অন্যত্র্য বিয়ে দেয়া হবে। (আসলে সে নিজেই প্রার্থী)
জমির চাচা চিন্তা করলো কায়েদের সাথে নয় মাস যুদ্ধ কইরা ওরে মুজি শেখের ঘরে তুলেছি সিস্টেমে আমার ২৯ তম বউ বানামু বইলা যেইভাবে সিকিমরে বউ কইরা নিলাম ঠিক সেই ভাবে। আর এই হালায় কয় কি।জমির চাচার মতলব মাতব্বরের অজানা থাকার কথা নয়। তাই জমির চাচাও মাতব্বরের এই হুমকির কৌসুলি জবাব দিছে - " জরিনা আমার প্রতিবেশী, আমি তাকে ভালো করে চিনি, সে কোন স্বভাবের মেয়ে তাও আমি ভালো করে জানি। তার স্বভাব চরিত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জরিনাকে ঠিক রাখার জন্য মাতব্বরকে বলবো সে যেন জরিনাকে জমিরের চোখে দেখে।"
জরিনা কি সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারবে??????????????? (এই অধ্যায় ইতিহাস লিখবে)
বিষয়: বিবিধ
১৮৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন