মুসলিম বিশ্বঃ অনৈক্য এবং সম্ভাবনা-৩ (দক্ষিন-দক্ষিন পূর্ব এশিয়া)

লিখেছেন লিখেছেন ভাবনার ল্যাম্পপোস্ট ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:৩০:২৯ রাত

আলহামদুলিল্লাহ্‌, দীর্ঘ ব্যস্ততা শেষে আবার লিখতে বসতে পারলাম। আগে শুধু মাত্র মধ্যপ্রাচ্য শিরোনাম দিলেও এখন পরিবর্তন করে মুসলিম বিশ্ব দিলাম।

এর মধ্যে সিরিয়া এবং মিশরে আমার লেখার পূর্বের কথা গুলি মিলে গেছে......সিরিয়াতে যথারীতি আমেরিকা-রাশিয়া ঐক্য স্থাপন করেছে এবং মিশরে সামরিক জান্তা একচ্ছত্র ক্ষমতা নিয়ে দমন পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।

দক্ষিন-দক্ষিন পূর্ব এশিয়াতে রয়েছে ইসলামে একটা বৃহত চারণভূমি। আফগানিস্থান থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত রয়েছে মুসলিমদের একটা বৃহত্তর অংশ।

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ৮০০ বছর মুসলিমরা শাসন করেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ, মালেয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্থানে ইসলাম, জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা চলছে। তবে সেটা অনেক অনেক পিছিয়ে আছে চীন এবং ইন্ডিয়া থেকে।

২০৫০ সালের ভিতর এই সমগ্র অঞ্চলকে ধরা হচ্ছে বিশ্বের সর্ব বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে আর চীন দিবে এই নতুন বিশ্বের নেতৃত্ব। আর এই অঞ্চলে রয়েছে ৯০-১০০ কোটি মুসলিমের বসবাস যা একক ধর্ম হিসাবে বৃহৎ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে অর্থনৈতিক ভাবে মুসলমানরা সব দিক থেকে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের থেকে পিছিয়ে আছে। মালয়েশিয়াতে চীনাদের চেয়ে মুসলিমরা, ইন্ডিয়াতে হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞ্বান, প্রযুক্তি, গবেষণা, ব্যাবসা-বাণিজ্য সব দিক থেকে অনেক অনেক পিছিয়ে । দেখুন চীনের সবচেয়ে গরীব অঞ্চল হল উইঘুর এরিয়া আবার কাশ্মীর, আকিয়াব এক সময় সমৃদ্ধ থাকলেও এখন ইন্ডিয়া এবং মিয়ানমারের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এলাকা।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই অঞ্চলের মুসলিমদের পার্থক্য হলঃ

১। এটা নন-আরব রিজিয়ন।

২। এখানে মুসলিমরা ঈমানীবোধে অনেক শক্তিশালী...

৩। সব সময় সংগ্রামী।

৪। অনেক বেশী গনতন্ত্র মনা।

৫। মাল্টি-কালচারে বসবাস করে একটা বৈশ্বিক চরিত্র অর্জন।

৬। অর্থনৈতিক ভাবে তুলনা্মূলক পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী।

৭। আমলের দিক থেকে তুলনামূলক দূর্বল

৮। সূফীবাদ’র ব্যাপক প্রভাব

এই অঞ্চলের মুসলিমদের যদি সত্যিকারে শিক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তির শিক্ষা, সঠিক ঈমান-আমলের চর্চা এবং এর সাথে গণতন্ত্র মনস্ক হিসাবে গড়ে তোলা যায় তাহলে আগামীর নতুন বিশ্বে মুসলিমরা একটি নতুন ইতিহাস তৈরী করতে পারবে।

এখন আমরা দেখব এই অঞ্চলের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলির অবস্থা এবং চরিত্র

১। চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি।

২। ভারতীয় কংগ্রেস।

৩। বিজেপি।

৪। মুসলিম লীগ, পাকিস্থান।

৫। আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ।

৬। বি,এন,পি, বাংলাদেশ।

৭। পি,পি,পি।

৮। মালয়েশিয়া।

৯। ইন্দোনেশিয়া।

১০। কম্যুনিস্ট আন্দোলন

১১। ইসলামী মুভমেন্ট

এর সাথে রয়েছে মুসলিম বিশ্বের নতুন উপদ্রব আল-কায়েদা

মূলত আগামী পৃথিবীতে যদি অন্য কোন দৈবিপাক না হয় তাহলে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি এবং

ভারতীয় কংগ্রেস বিশ্ব রাজনীতি, বিজ্ঞান এবং অর্থের শক্তির অন্যতম চালিকা শক্তি হবে। বাংলাদেশের বি,এন,পি এবং পাকিস্থান মুসলিম লীগ চীন লবিকে মেইন্টেইন করে আবার বাংলাদেশে রয়েছে চীন পন্থী কম্যুনিস্টরা। পাকিস্থানের আর্মি সবসময় চীন পন্থী তাই পিপিপিও নীতি পরিবর্তন করতে পারেনা মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া মূলত ইন্দো-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং মস্কো পন্থী কম্যুনিস্টরা হল ভারতীয় লবির বাহক। আবার বাংলাদেশে বি,এন,পির ভিতরে রয়েছে ভারতীয় লবির লোক এবং আওয়ামীলীগের ভিতরে রয়েছে চীনা লবির লোক। দুই দলই কিছুটা ভারসাম্যতা রাখতে চায়। এই অঞ্চলে কম্যুনিস্ট ভাবধারার রয়েছে ব্যাপক প্রভাব। চিন্তাশীল, লেখক, কবি, অর্থনীতিবিদ, মিডিয়া মূলত বাম পন্থীরা নিয়ন্ত্রন করে।

এই অবস্থায় ইসলামী আন্দোলনের রূপরেখা, কর্ম্পদ্ধতি নিয়ে প্রচুর চিন্তা এবং গবেষণা করা প্রয়োজন। কারন ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ধূলিষ্যাত হতে পারে সঠিক কর্মপদ্ধতির অভাবে। চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি এবং ইন্ডিয়ার সাথে কি ভাবে কাজ করতে হবে সেটা ঠিক করা মুসলিম স্কলারদের গবেষণার বিষয় হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।

মুসলিম বিশ্বঃ অনৈক্য এবং সম্ভাবনা-৪ (দক্ষিন-দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার রাজনীতি) আগামী পর্ব

বিষয়: রাজনীতি

১২৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File