টেনিস, ফুটবল এবং রাজনীতির মাঠঃ দায়ী আওয়ামীলীগ
লিখেছেন লিখেছেন ভাবনার ল্যাম্পপোস্ট ২৪ আগস্ট, ২০১৩, ০৩:০৪:৪২ দুপুর
ছোট বেলা থেকে টেনিসের খুব ভক্ত...টেনিস দুই প্রকার একটা হল লন টেনিস আরেকটা হল টেবিল টেনিস। টেবিল টেনিস পাড়ার ক্লাবে অনেক খেলেছি কিন্তু ভাল খেলতাম না। আর লন টেনিস স্টেফি গ্রাফ, পিট সাম্প্রাস, অন্দ্রে আগাসীর মত গ্লামারস এবং লিজেন্ডারি খেলোয়াড়দের খেলআ অনেক উত্তেজনা নিয়ে দেখতাম, এখনও দেখি......একদিন বুয়েটে এক বড়ভাই শিক্ষকের সাথে খেলতে গিয়ে দেখি বল আর নেট পার করতে পারি না। ঢাবি’র ইন্টারন্যশনাল হলের মাঠে আমরা কয়েক বন্ধু ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে গিয়েও একই অবস্থা। মাঝ খান থেকে র্যা কেট, ট্রাউজার আর গেঞ্জি কেনাই ফাও হল।
টেনিসে ব্যক্তি কেন্দ্রিক খেলা। ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলস খুব বেশি পপুলার না। মজার বিষয় হল লন টেনিসে আমেরিকা এবং ইউরোপ সব সময় সেরা আর টেবিল টেনিসে সব সময় চীন রাজত্ব করে।
ফুটবলে কোন বাংগালী লাথি দেয় নাই এমন আছে কি না সন্দেহ। ফুটবল একটা টোটাল টিম ওয়ার্ক।
দুটি খেলার ভিতর এই অমিল গুলির বাইরে একটা বড় অমিল আছে সেটা হল যে, প্রচলিত খেলার ভিতর টেনিস হল এমন একটা খেলা যেখানে বল কোর্টে ইন করে যত দুরেই যাক না কেন সেটা খেলতে হবে অর্থাৎ বল অধিকাংশ সময় কোর্টের বাইরে থাকে...আর যারা এই কোর্টের বাইরে ভাল খেলতে পারে তারি ভাল খেলোয়াড়।
কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রে আমরা কি দেখি, সেই রাজনৈতিক পরিবেশ সুষ্ঠ যেখানে ফুটবলের মত বল সব সময় মাঠে থাকে আর সরকারের ক্ষেত্রে এটা টোটালি একটা টিম ওয়ার্ক। মেসি তখনি বিকল যখন বল সে যোগান পাবে না। আবার ডিফেন্স দুর্বলতো পাল্টা আক্রমণে গোল হয়ে যেতে পারে।
আ,লীগ হল রাজনীতিকে সব সময় টেনিসের মত ব্যবহার করতে চায়...অর্থাৎ মাঠের বাইরে নিয়ে খেলতে চায়। যেমনঃ
১। ১৯৭৪- আজীবন গণতন্ত্রীর বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা যার ভিতর দিয়ে রেসলিং’র মত পাতানো খেলা তৈরী করা। যেখানে সবাই মজা করবে কিন্তু কেউ খেলবেনা।
২। ১৯৭৫- আ,লীগের এক অংশের ক্ষমতা দখলের জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে রক্ত মাড়িয়ে ক্ষমতা দখল করা। অনেকটা সেম সাইড গোল দেয়া।
৩। ১৯৭৫-খালেদ মোশারফকে দিয়ে ক্যু করানো।
৪। ১৯৮২- এরশাদের ক্যু কে জটিল ভাষায় “ I am not un happy” বলে ৮ বছর এরশাদকে ওয়াক ওভার দেয়া। অর্থাৎ মোহামেডানকে ঠেকানোর জন্য সাদেক হোসেন খোকাকে দিয়ে শক্তিশালী ব্রাদার্স করা।
৫। ১৯৯১-১৯৯৬- স্বাধীনতাউত্তর সবচেয়ে উদার এবং সুশাসন পূর্ণ শাসনকে বেকায়দায় ফেলে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের জন্য তত্বাবধায়কের আন্দোলন। রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের বাইরে নিয়ে টেনিস খেলার মাঠ বানানো, তাদের এক অংশের প্রচেষ্টায় জেঃ নাসিমের ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র।
৬। ২০০১- তাদের মনোয়নকৃত সাহাবুদ্দিন আহমেদ-লতিফুর রহমান-এবং এম,এ সাঈদের রেফারীত্বকে অস্বীকার করা এবং কুৎসিত ভাষায় গালি দেয়া “সালসা” বলা কারন একটাই তারা নাদির শাহ-নাদিম ঘৌড়ির মত ঘুষ খেতে চায় নি বা ম্যাচ পাতাতে চায়নি।
৭। ২০০৮- নির্বাচনে না যাবার জন্য বিভিন্ন অজুহাত তৈরী করা। মিশরের ফুটবল দাঙ্গার মত ২৮শে অক্টোবর পল্টনে খুনের মহাউৎসব করা। মোঃ আসিফ, মোঃ আমির, সালমান বাটদের ঘুষ দিয়ে পাকিস্থান টিম কিনে নেবার মত এবং টেনিসের মত বল বাইরে রেখে খেলার ভিতর দিয়ে ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
৮। ২০১৩- তত্বাবধায়ক বাদ দিয়ে নিজের আম্প্যায়ারিং এ নিজের সাইড আম্প্যায়ার নিয়ে এবং নিজের থার্ড আম্প্যায়ার দিয়ে নিজের দলকে মাঠে নামিয়ে জেতাতে চাচ্ছেন। এই প্রবলেম’র কারনে ক্রিকেটে অনেক আগেই একইদেশের আম্প্যায়ার প্রথা বাতিল হয়েছে। কিন্তু আ,লীগ ২০০১’র শিক্ষায় আর কোন রিস্ক নিতে চায় না আর যদি নিতান্তই নিজেদের আম্প্যায়ারিং এ না পারে তাহলে তাদের ঐতিহাসিক ট্রাম্প কার্ডের মাধ্যমে রাজনীতিকে টেনিসে পরিনত করবে এটাই ধরে নেয়া যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির মাঠ হচ্ছে ফুটবলের মাঠ। এটা টোটালি টিমওয়ার্কের ভিতর দিয়ে মাঠে বল রেখে খেলতে হয়। এইজন্যই সারা পৃথিবী এটার জন্য পাগল। আর্ট, টেকনিক, নান্দনিকতা এবং টিমওয়ার্কের ভিতর দিয়ে রাজনীতি করুন প্লিজ। আমরা দর্শকরা প্রাণভরে হাততালি দিব দয়া করে টেনিসে পরিনত করবেন না।
বিষয়: রাজনীতি
১০৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন