মধ্যপ্রাচ্যঃ অনৈক্য এবং সম্ভাবনা-২ (মুসলিম ব্রাদারহুড)
লিখেছেন লিখেছেন ভাবনার ল্যাম্পপোস্ট ২২ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:০১:৩৭ সন্ধ্যা
মধ্যপ্রাচ্য এবং মুসলিম বিশ্বের সার্বিক চিত্র দেখি
প্রায় ১৮০কোটি মানুষের ধর্ম ইসলাম হচ্ছে পৃথিবীর দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার ধর্ম।
মানুষ হচ্ছে সমস্ত সভ্যতার মূল কেন্দ্র সুতরাং সংখ্যা একটা গুরুত্বপুর্ন বিষয়।
বর্তমান এবং আগামী পৃথিবীর শক্তির বিষয় হচ্ছে
ক) জ্ঞান-বিজ্ঞান
খ) সামরিক শক্তি
গ) সৃজনশীল তরুন সমাজ
ঘ) গনতন্ত্র
তুরস্ক ও মালয়েশিয়া ছাড়া মুসলিম বিশ্বের আর কোথাও এই তিনটা বিষয়ের শক্তি নাই......
এখন আমরা দেখি মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রগুলির কি অবস্থা
১। মক্কা-মদীনাঃ বৃটিশদের “Rules & Divide Theory” অনুযায়ী দীর্ঘদিন গালফ এলাকায় নতুন মানচিত্রে শাসন করছে একদল বাদশাহ। তারা তাদের নিজেদের পরিবারের স্বার্থে চলেন। পশ্চিমা শক্তি তাদের মূল বন্ধু। তেল বিক্রি করেন আবার সেই টাকা পসচিমে রাখেন। ব্যাপক ভাবে ভোগ-বিলাসী রাজপরিবার গুলি সাধারন জনগনের জন্য করে রেখেছে কঠোর শরীয়া আইন। সেই আইন আবার এই রাজ পরিবারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না...তবে উন্নয়ন এবং নাগরিক সুবিধার সর্বোচ্চ প্রদান করে নাগরিকদের একপ্রকার আফিমাসক্ত করে রাখতে পেরেছেন। মূলত ইখওয়ানের বিশাল সংগঠন রয়েছে এই এলাকায়। তাই এই রাজ পরিবারের প্রধান ভবিষ্যৎ শত্রু হল মুসলিম ব্রাদারহুড বা ইখওয়ান উল মুসলিমিন। এরা ছাড়া আর কারো অদুর ভবিষ্যতে রাজ পরিবারকে হটানো সম্ভব না।
২। তুরস্কঃ উসমানীয়া খেলাফত পরবর্তী কামাল আতাতুর্কের কঠোর সেক্যুলারিস্ট শাসনের পরে সামরিক ক্যু পরবর্তী ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক ফ্রন্ট ক্ষমতায় আছে প্রায় দশ বছর। শিখহা, সুশাসন এবং উন্নয়নের নতুন মডেলে তৈরী হচ্ছে তুরস্ক। অনেকটা সেক্যুলার ধারায় রাষ্ট্র চালাচ্ছে FJP। চেষ্টা করছে আলবেনিয়া থেকে উজবেকিস্থান পর্যন্ত যে মুসলিম এবং তুর্কী বলয় সেটাকে তুরস্কের ধারায় নিয়ে আসতে। সম্প্রতি রাশিয়া এবং আমেরিকা বাম এবং সেক্যুলার শক্তি দিয়ে তুরস্ককে অস্থির করে সেনা অভ্যুত্থান ঘটাতে চাচ্ছে।
৩। ইরানঃ ইসলামী বিপ্লব বলা হলেও মূলত শিয়া বিপ্লব তারা তাদের ফিরকার ক্ষুদ্র স্বার্থ সবার আগে দেখে, সে জন্য ইরাকে তার আর আমেরিকার স্বার্থ এক, ইরাকে শিয়া সরকার আর আমেরিকার সমর্থন এক। আবার সিরিয়াতে গিয়ে সে রাশিয়ার স্বার্থ দেখেছে, মূলত তার সমর্থন, হিজবুল্লাহর অংশগ্রহন বাশার কে শক্তি দেয়। আর সেটা ইসলামী রেনেসার নতুন ঢেউ কে স্থিমিত করে দেয়।
৪। সিরিয়াঃ দেখছেন সিরিয়া তে কি অবস্থা? একজন ব্যাক্তি তার ক্ষমতা লিপ্সার জন্য এপর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ জনতাকে শহীদ করেছে। আসলে আরব বসন্তের রেজাল্টে মিশর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, জর্ডান, লিবিয়াতে ইসলামপন্থীদের নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হওয়াতে পশ্চিমারা নতুন প্লান তৈরী করেন।
এখানে পশ্চিমাদের অনৈক্যই হল ঐক্য...... রাশিয়া এবং আমেরিকা কথা চালা চালি করছে আর মুসলিমরা মারা পড়ছে। আমরা আহ, সরি, দুঃখ এই শব্দ নিয়ে আছি।
৫। পাকিস্থানঃ একটা জটিল পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে যাচ্ছে, “চাচা, আপন জান বাঁচা” এই অবস্থায় অন্যকে নিয়ে ভাবার কিছু নাই।
৬। মালয়েশিয়াঃ তুরস্কের চেয়ে আরো কনজারভেটিভ ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা,বিজ্ঞান, ধর্ম এর সমন্বয়ে উদার ধারায় আগাচ্ছে তারা।
৭। মিসরঃ ..................
ইসলাম পরবর্তী সময়ে মুসলিম দেশ সমূহে বামপন্থী ভাব ধারার ব্যাপক প্রভাব তৈরী হয়, শিক্ষিত সমাজ বামধারায় বিলীন হয়ে নাস্তিকতার পথে পা দেয়। সাথে সাথে প্রায় সব মুসলিম দেশে রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্রের জন্ম দেয়া হয়। তৈরী হয় শিয়া-সুন্নীর বিভেদ।
চারটা মহান মাজহাবকেকে কেন্দ্র করে আমাদের ভিতর মানসিকতার পরিবর্তন করার চেষ্টা করা,
-অজু ডান দিক থেকে না বা দিক থেকে করতে হবে?
-রাসুল(সাঃ) নূর না মাটির তৈরীর মত ফালতু তর্ক করা।
-হিন্দু এবং পার্সি ধর্মের প্রভাবে মাজার পুজার সংস্কৃতি চালু করা।
-ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্র ব্যবস্থার বাইরে নিয়ে ব্যক্তগত পর্যায়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করা।
-আল-কায়েদার মত জঙ্গিবাদ তৈরী করা
-বাম, রাম এবং পশ্চিমা সংস্কৃতির আগ্রাসন
এর ভিতর দিয়ে একনায়ক এবং রাজারা ক্ষমতা ভোগ করছে আর পাশ্চাত্য চালাচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক চৌর্যবৃত্তি।
মজার বিষয় হল মুসলিম ব্রাদারহুড, সাদাত পার্টি, জামায়াত, আনোয়ার ইব্রাহিম এই ইসলামী আন্দোলন একই ধারা বা মূল ধারা মেইনটেইন করে এই ধারা টি হচ্ছে গনতান্ত্রিক ভাবে একটি আধুনিক, কল্যানকামী এবং ইসলামী ভাবধারার রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়। তারা এই মুসলিম দের বিভেদ ফেকাহ’র পার্থক্য সব কিছুকে ধাড়ন করে আগাতে চায় সেই জন্য এই প্রকৃত ইসলামের এত বিরোধিতা।
আরো লিখার ইচ্ছা আছেঃ
বিষয়: রাজনীতি
১০৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন