"শিক্ষাগুরুর মর্যাদা" - কথাটা কি রুপকথা হয়ে যাবে?

লিখেছেন লিখেছেন ইকবাল মোর্শেদ ২৭ এপ্রিল, ২০১৫, ০৯:২১:৪৮ রাত

এই বাংলাদেশে আর কিছুদিন পর সম্ভবত কেউই আর শিক্ষক হতে চাইবে না।

শিক্ষকদেরকে পেপার স্প্রে মারা, লাঠিপেটা করা থেকে শুরু করে হালের নতুন সংযোজন চড় থাপ্পর, লাথিঘুষি, মাথায় ডিম ভাঙ্গা পর্যন্ত অপমান-অপদস্থ করার কোনো উপায় বোধহয় আর বাকি রাখা হয়নি।

সুতরাং, শিক্ষককে দিয়ে পায়ে ধরিয়ে মাফ চাওয়ানো হয়েছে, তার ছবিও তোলা হয়েছে -- এই বীভৎস দৃশ্য দেখে অবাক হবার কী আছে?

শিক্ষিকাকে চড় মারা হয়েছে, পরনের কাপড় ধরে টানাটানি করা হয়েছে -- একথা শুনে চমকে ওঠার কী আছে?

তাদের নামে যে এখনও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়নি এটা ভেবেইতো শুকরিয়া আদায় করা উচিত।

.

বাংলাদেশ যে এখন ক্ষমতাবানদের ক্ষমতা দেখানোর একটা জায়গা হয়ে গিয়েছে - এই ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নাই। যার যেখানে ক্ষমতা দেখানোর জায়গা আছে, সুযোগ আছে, সে সেটার পুরোপুরি সদব্যবহার করে ক্ষমতার বলয়ে তার অবস্থান দেখিয়ে চলেছে। সাংবাদিক ক্ষমতা দেখায় সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে রিপোর্ট করে, পুলিশ ক্ষমতা দেখায় সাংবাদিক পিটিয়ে, বিচারপতি ক্ষমতা দেখায় পুলিশকে কানধরে উঠবস করিয়ে... ক্ষমতা দেখানোর এই চক্র চলতেই থাকে। সুতরাং, শিক্ষক সমাজ এই চক্র থেকে মুক্ত থাকবেন এই আশা আমরা করতে পারি না।

.

কিন্তু তারপরেও কিছু ব্যাপার থেকেই যায়। আমাদের সমাজ ব্যবস্থার একশটা খারাপ দিক থাকলেও, একটা অন্তত ভাল দিক ছিল -- কেউ যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন শিক্ষককে অসম্মানের কথা কেউ চিন্তাই করতে পারত না।

পাড়ার সবচেয়ে বখাটে যে ছেলেটা সেও স্যারকে দেখলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াত। হাতের সিগারেটটা পেছনে লুকিয়ে ফেলে, মুখে একটা তেলতেলে হাসি ধরে রেখে বলত, স্লামালেকুম স্যার, ভাল আছেন স্যার?

এলাকার সবচেয়ে বড় শিল্পপতিও নিজের সন্তানের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে গিয়ে পরামর্শ করে আসতেন।

বিদেশ থেকে বড় ডিগ্রী নিয়ে আসা ছেলেটাও চলতি পথে তার প্রাইমারি স্কুলের স্যারকে দেখলে পা ছুঁয়ে সালাম করে বলত, স্যার আমি অমুক ব্যাচের অমুক, চিনতে পারছেন স্যার?

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষমতা বলয়ের বাইরে শিক্ষকদের আলাদা একটা বলয় ছিল। সে বলয়টা ছিল সম্মানের, শ্রদ্ধার।

.

সমাজের এই চিত্রটা সম্ভবত আর এরকম থাকবে না।

একটা সময় আসবে যখন শিক্ষকের সম্মান-মর্যাদা পুরোপুরি নির্ভর করবে তার রাজনৈতিক ক্ষমতা কতটুকু আছে তার উপর। তিনি কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ সমর্থন করেন তার উপর।

ক্ষমতাবিহীন শিক্ষককে সামনে পেলে বরং সিগারেটের ধোঁয়া তার মুখে ছুড়ে মেরে ছাত্রনেতা তার ক্ষমতার পরিধি জানান দেবে। পিছন থেকে শুনিয়ে শুনিয়ে হুমকি দিয়ে বলবে, স্যার, প্র্যাকটিক্যালে যদি নাম্বার কম আসে সেটার পরিণতি কিন্তু ভাল হবে না।

খাতায় নাম্বার বসানোর আগে শিক্ষক ছাত্রের নাম চেক করে দেখবেন। তাকে নাম্বার কম দেয়াতে কোনো সমস্যা হবে নাতো!

ছাত্রনেতা দেখলে বরং শিক্ষকই দাঁড়িয়ে যাবেন, কারণ ছাত্রনেতা খুশি থাকলেই কেবল পদোন্নতির সম্ভাবনা থাকবে।

সম্মানের বলয়টা একসময় পুরোপুরি ভেঙ্গে যাবে।

.

সমাজের এই বিকৃতির পেছনে শিক্ষকদের কি কোন দায় নেই?

অবশ্যই আছে। তারা নিজেদের অর্থনৈতিক, আবাসন, সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর ব্যাপারে যেভাবে সোচ্চার হয়েছেন, তাদের নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, ছাত্রদের, সমাজের, রাষ্ট্রের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কখনো সেভাবে সোচ্চার হননি।

নিজেদের প্রতিষ্ঠানে দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করেন নি। তাদের ছাত্রদের আবাসন সংকট দূর করার দাবি জানান নি। ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষা না নেয়ার দৃঢ়তা দেখাতে পারেন নি। একের পর এক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তখন তারা এর বিরুদ্ধে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন নি।

অথচ, মেধা, যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ হলে অসুস্থ শিক্ষক রাজনীতি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যেত। ছাত্রদের আবাসন সংকট দূর হলে হলভিত্তিক নোংরা ছাত্ররাজনীতির গোড়া ভেঙ্গে যেত। প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা গেলে বিপুল সংখ্যক তরুণ সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পেত। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলো ঠিক থাকলে আজকের বিচারহীনতা-ক্ষমতার অপব্যবহার বহুলাংশে বন্ধ হয়ে যেত।

এই সমস্যাগুলোর পেছনে সমাজের সকলেরই কিছু না কিছু দায় আছে। কিন্তু আমি মনে করি, শিক্ষকদের দায় সবচেয়ে বেশি। কারণ তারাই দেশের সবচেয়ে চিন্তাশীল জনগোষ্ঠী। ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে তাদেরই সবার আগে সোচ্চার হবার কথা।

সুতরাং, যতদিন না তারা সোচ্চার হোচ্ছেন, সাধারণ জনগণকে তো ভুগতে হবেই, তাদেরকেও ভুগতে হবে।

.

এই সমাজের আমরা সবাই 'গা বাঁচিয়ে চলা' নীতিতে বিশ্বাসী। যতক্ষণ না নিজের বা নিজের পরিচিত জনের উপর কোন অন্যায় হচ্ছে ততক্ষণ চুপ করে থাকাই আমাদের ধর্ম।

সাহস করে এগিয়ে এসে যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারি, নিজেদেরকে সে অন্যায়ের শিকার হওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখাটাই হবে আমাদের একমাত্র নিয়তি।

বিষয়: রাজনীতি

১৩৭৭ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

317216
২৭ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:২৬
317218
২৭ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৩৩
হতভাগা লিখেছেন : যে দেশে গুনীর কদর হয় না সে দেশে গুনী জন্মায় না
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৭:০৭
258421
ইকবাল মোর্শেদ লিখেছেন : যথার্থ বলেছেন।
317227
২৭ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৪৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যে দেশের শিক্ষক ছাত্রকে কুরআন শরিফ পড়ার অপরাধে বহিস্কার করে। বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য চিহ্নিত সন্ত্রাসির পক্ষে ভোট চায় সেই দেশের শিক্ষকরা আর কি আশা করতে পারে।
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৭:১৬
258422
ইকবাল মোর্শেদ লিখেছেন : ঠিক বলেছেন ভাই। যেভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ চলছে একসময় দেখা যাবে বেশিরভাগ শিক্ষকই মেধার ভিত্তিতে ছাত্রদের মূল্যায়ন না করে রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করছেন। অনেক জায়গায় অবশ্য এখনই বেশিরভাগ শিক্ষক এমন হয়ে গিয়েছেন। কারণ, তারা নিজেরাই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে। তাদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করাই বাতুলতা মাত্র।
317277
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৯:১৫
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : Source
সেদিন ফিজিক্স ক্লাসে লেকচারের ফাঁকে ম্যাডাম আক্ষেপের সাথে একটা বললেছিন- ‘একজন টিচার হিসাবে ভার্সিটি সম্মানি হয়তো টিচারদের দিতে পারছে। কিন্তু স্টুডেটরা টিচারদের যথাযথ সম্মান দিচ্ছে না। জানি না, অন্য টিচাররা পান কি না তবে আমি স্টুডেনদের কাছ থেকে সেটা পাইনি। আজকাল স্টুডেটরা টিচারদের সম্মান দেয় না, শ্রদ্ধাবোধ দেখায় না......।’

ম্যাডামের এই কথা শুনার সাথে সাথে আমার ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটির কথা মনে পড়ল। কবিতাটি সম্পূর্ণ আমার মুখস্থ ছিল চেষ্টা করলাম কবিতাটি স্মরণ করার জন্য। নাহ, পাচ/ছয় লাইনের বেশী পারলাম না। আমার কাছে কেন জানি বারবার মনে হচ্ছিল ম্যাডামের এই আক্ষপের জবাব ওই কবিতায় আছে। বাসায় এসে কবিতাটি পড়লাম। হ্যাঁ, পেয়ে গেছি উত্তর।

কবিতার মূলকথা এমন ছিল-‘ বাদশাহ আলমগীরের ছেলেকে দিল্লির এক মৌলভী পড়াতেন। একদিন সকালে বাদশাহ দেখেন বাদশাহর ছেলে মৌলভী সাহেবের পায়ে পানি ঢালছে আর মৌলভী নিজ হাতে পায়ের ধুলা পরিষ্কার করতেছেন। শিক্ষক মৌলভী খুব ভয় পেয়ে গেলেন। বাদশাহের পুত্রকে দিয়ে পানি ঢালার অপরাধে তিনি চিন্তিত হয়ে গেলেন। অবশেষে নিজেকে নিজেই শান্তনা দিলেন এই ভেবে- “শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার।” পরদিন সকালে বাদশাহর দূত শিক্ষকে কেল্লাতে ডেকে নিয়ে গেল। বাদশাহ শিক্ষককের উদ্দশ্যে বললেন- আমার পুত্র আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে? বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা। বাদশাহ সেদিন সকালের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন- আমার পুত্র আপনার পায়ে পানি ঢালছে আর আপনি নিজ হাতে আপনার পা পরিষ্কার করতেছেন। আমার পুত্র কেন নিজ হাত দিয়ে সযত্নে আপনার পা বুলিয়ে পরিষ্কার করে দিল না? সে শিক্ষা কেন আপনি তাকে দিলেন না?

নিজ ভুল বুঝতে পেরে শিক্ষক তখন উচ্ছ্বাস ভরে সগৌরবে উচ্চকন্ঠে বললেন-

"আজ হতে চির উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির

সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।”

একজন শিক্ষক যদি তার মর্যাদা তিনি নিজে আদায় করে না নেন তাহলে ছাত্ররা কি এমনিতে দিবে? অথবা অন্যভাবে বললে- ছাত্রদের কাছ থেকে আদায় করে না শিখানো হয় তাহলে তারা দিবে কিভাবে?

ক্লাসে যে শিক্ষক খুব বেশী কঠুর, পড়া আদায়ে যিনি কোন ছাড় দেন না। দেখবেন, সব ছাত্র উনার পড়া ঠিকই নিয়ে আসে পক্ষান্তরে যে শিক্ষক পড়া আদায়ে ছাড় দেন সেই ক্লাসে ছাত্ররা ফাঁকি দেয়। শিক্ষকদের সম্মান না করলে, শিক্ষকদের সাথে বেয়াদবী করলে যে শিক্ষক ছাত্রদের শাস্তি দেন সব ছাত্ররা ঠিকই সেই শিক্ষককে সম্মান করে, শ্রদ্ধাবোধ দেখায়।

ছোটবেলা দেখতাম ছাত্ররা এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকরাও শিক্ষকদের খুব ভয় পেতেন। যে ভয়টা ছিল সম্মান প্রদর্শন, আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশের প্রতীক। ছোটবেলা এগুলো দেখে এটাই শিখেছি শিক্ষক মানেই সম্মানিত ব্যক্তি। উনাকে দেখলেই সালাম দিতে হবে, কথা বলতে হবে বিনয়ের সাথে, ভদ্র আচরণ করতে হবে এক কথায় যতভাবে সম্মান প্রকাশ করা যায়। কেন এটা হত জানেন শিক্ষকরা এগুলো আদায় করে নিতেন। আর আজ ঠিক উল্টো ঘটনা- শিক্ষকরা ছাত্রদের ভয় পায়।

রাজনীতির নামে বা অন্য কোন বিষয়ে যখন শিক্ষক-শিক্ষক গ্রুপিং, শিক্ষক-ছাত্র গ্রুপিং হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক যখন একসাথে নাচানাচি করবে। কোচিং-এর নামে যখন শিক্ষক ছাত্রদের মাঝে মার্কিং করবেন। শিক্ষকরা যখন ইভটিজিং বা অন্য কোন জঘন্য কাজে লিপ্ত হবেন। মানুষ গড়ার কারিগর না হয়ে শিক্ষকরা যখন মানুষ ধ্বংসের কারিগর হবেন। শিক্ষকদের ব্যবহার যদি শিক্ষকের মত না হয়। কথা-বার্তার ভাষা যদি কর্কশ হয় তখন ছাত্ররা কিভাবে শিক্ষকের মর্যাদা দিবে????

পরিশেষে- বাদশাহ আলমগীরের মত অভিভাবক আর দিল্লীর মৌলভীর মত শিক্ষক হতে না পারলে শিক্ষকের মর্যাদা কেউ ঠিক মত বুঝেবে বলে মনে হয় না। কেউ আদায় করে নেবে কিংবা শিক্ষককের মর্যাদা দেবে বলে মনে হয় না।

‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটি নিচে দেয়া হল-

বাদশাহ আলমগীর

কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর ;

একদা প্রভাতে গিয়া,

দেখেন বাদশাহ-শাহাজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া;

ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে;

পুলকিত হৃদয় আনত-নয়নে ।।

শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি

ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।

.

শিক্ষক মৌলভী

ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।

দিল্লীপতির পুত্রের করে

লইয়াছে পানি চরণের পরে,

স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!

ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।

হঠাৎ কি ভাবি উঠি

কহিলেন, আমি ভয় করি না'ক, যায় যাবে শির টুটি,

শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার

দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,

ভয় করি না'ক, ধারি না'ক ধার, মনে আছে মোর বল,

বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।

যায় যাবে প্রাণ তাহে,

প্রাণের চেয়েও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।

তার পরদিন প্রাতে

বাদশাহর দূত শিক্ষকে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।

খাস কামরাতে যবে

শিক্ষকে ডাকি বাদশা কহেন, ''শুনুন জনাব তবে,

পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?

বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,

নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা''

শিক্ষক কন-''জাহপানা, আমি বুঝিতে পারিনি হায়,

কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?''

বাদশাহ্ কহেন, ''সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে

নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,

পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।

নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে

ধুয়ে দিল না'ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।''

.

উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে

কুর্ণিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে-

"আজ হতে চির উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির

সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর" । ।
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৯:১৬
258430
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ দেয়া না আদায়ের বিষয়.
http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/1712/shafiqsohag/48010#.VT77XFB-COJ -শফিক সোহাগ
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৯:১৭
258431
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : উপরের কমেন্টস একজন ব্লগার শফিক সোহাগ এর পোষ্ট থেকে নেয়া।
ধন্যবাদ।
২৮ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
258476
ইকবাল মোর্শেদ লিখেছেন : লেখকের বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণভাবে সহমত।
317373
২৮ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১১:২৬
আফরা লিখেছেন : শিক্ষকের মর্যদা নষ্ট হওয়ার জন্য সে নিজেই দায়ী তবে সবাই না গুটি কয়েক জনের জন্য ভাল শিক্ষকরাও সন্মান পাচ্ছে না ।
২৯ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৪৩
258536
ইকবাল মোর্শেদ লিখেছেন : আপনি সম্ভবত কিছু শিক্ষকের অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার দিকে ইঙ্গিত করে মন্তব্যটি করেছেন। শিক্ষকদের মর্যাদাহানির পেছনে এটাও একটা বড় কারণ।

তবে আমি এই লেখাটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রাজনীতিকরণের ফলে যে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এবং হবে - সেটাকে ফোকাস করে লিখেছি। আর এই সমস্যার জন্য মূল দায়ী ক্ষমতাসীনরা যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ব্যবহার করে। আর, শিক্ষকদেরকে এই দৃষ্টিকোণ থেকে দায়ী করেছি যে, তারা এই সমস্যাগুলো দেখেও চুপ করে রয়েছেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File