জীবনসঙ্গিনীকে ইহসান করা
লিখেছেন লিখেছেন কোহিনূর ইসলাম সুমি ২৭ জুলাই, ২০১৩, ১২:২৪:৫৫ দুপুর
সুবহানাল্লাহ ! আল্লাহর দ্বীনটা এত সুন্দর, এত বেশি দারুণ। সত্যিই, পারিবারিক থেকে ব্যক্তিগত সমস্ত সম্পর্কগুলোতে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, ইহসান করা, পারস্পরিক ব্যবহার-আচরণ, ক্ষমাশীলতা, উদারতা, ভালোবাসার ব্যাপারগুলোতে আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার স্ত্রী উম্মুল মু’মিনীনদের জীবনীতে যে নিদর্শন ও উদাহরণ রেখে গেছেন, তা সমগ্র মানব ইতিহাসে নেই। আমি রোমান, পার্শিয়ান, ভারতীয়, ইংরেজ সভ্যতাগুলোর অল্পবিস্তর যা ইতিহাস পড়েছি, তাতে পারস্পরিক সম্পর্কে ইহসান জিনিসটার জায়গাও দেখিনি।
উপরের কথাগুলোর প্রতিটি শব্দই আমি অনুভূতি থেকে লিখলাম। আমি একটা বই পড়ছিলাম সকাল থেকে — ‘মহিলা সাহাবী’। নিয়ায ফতেহপুরীর লেখা, কাটাবন থেকে কিনেছিলাম অনেক আগে, পড়া হয়নি যত্ন নিয়ে। সাহিত্য বর্ণনায় উচ্চমানের না হলেও ইতিহাস বই হিসেবে সুন্দর। তাছাড়া, ”আসহাবে রাসূলের (সা) জীবনকথা” বইটি থেকে তো আযওয়াজুন্নবী (নবী সহধর্মিনী) কয়েকজনের কথা জেনেছিলাম। আজ স্ত্রীদের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যবহারগুলো কেমন ছিল তার একটা ধারণা নিতে এই বইটা পড়তে ধরলাম। স্ত্রীদের মাঝে খুঁনসুঁটি ছিলো, পারস্পরিক গা জ্বলানো কথাও ছিল। এই আচরণগুলো যে মানবিক — তা অনুধাবন করলাম পড়ে। কিন্তু নবীজী (সা) সেগুলোকে খুবই চমৎকার করে সামলেছিলেন ধৈর্য ও ভালোবাসা দিয়ে। আমাদেরকেই শিখিয়েছিলেন উদাহরণ দিয়ে।
যেমন, ইহুদি থেকে মুসলিম হওয়া স্ত্রী সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহার উট যাত্রাপথে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় হযরত যায়নাব (রা) কে উট দিয়ে সাহায্য করতে বলেছিলেন নবীজী (সা)। তিনি উত্তরে বলেছিলেন আমি এই ইহুদি নারীকে উট দিবো? এমন কথাতে মর্মাহত হয়ে প্রিয় নবী(সা) ২/৩ মাস তার সাথে কথা বলেননি। যা পরে হযরত আয়িশা মাফ করিয়ে নেন।
কী দারুণ শিক্ষাই না আছে নবীজীর (সা) জীবনের ঘটনাগুলোতে! শিখলাম, একজন মানুষ দ্বীনের পথে এলে কোনভাবেই তার পেছনের ইতিহাস নিয়ে টিপ্পনী দিয়ে কষ্ট দেবার সুযোগ নেই।
আরো সুন্দর কিছু জিনিস পেলাম। মনখারাপ হলে এত সুন্দর কথা বলে তাদের মন ভালো করে দিতেন! সমাজ, রাস্ট্রীয় কাজ সেরেও পরিবারের সবার দিকেই তীক্ষ্ম খেয়াল রাখতেন। ভেবে দেখলাম, অনেক গভীর মন দিতে হয়েছে উনার প্রতিটি মূহুর্তেই, সব কাজে। সত্যিই মানুষটা সৃষ্টিজগতের প্রতি রাহমাত ছিলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাকে প্রেরণ করেছিলেন অমন করেই।
হে আল্লাহ!! আপনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ আমাদেরকে গ্রহণ করে তার দেখানো পথে চলার তাওফিক দেন। আমরা যেন পারস্পারিক আচরণে ইহসান করতে পারি, আমরা যেন ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে পারি সমাজে। যেন সম্পর্কগুলোতে অনেক বেশি উদারতা দেখাতে পারি, ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে পারি পরিবারে, সমাজে, মুসলিম উম্মাহর মাঝে… নিশ্চয়ই আপনি প্রেমময়, ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু, পবিত্র।
বিষয়: বিবিধ
১৮৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন