প্রান কোম্পানী ফলের রসের নামে প্রতারণা করছে জনগনের সাথে
লিখেছেন লিখেছেন আহত গাংচিল ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১১:৪০:৪২ রাত
দেশের খ্যাতনামা জুস ব্র্যান্ড ‘প্রাণ’। নাম প্রাণ অথচ প্রাণেই ভেজাল। ফলের রসের নামে প্রতিনিয়তই দেশের মানুষের সাথে চালিয়ে যাচ্ছে চলছে প্রতারণা। এই কোম্পানির কোন ফলের জুসেই নেই ফলের রস। রয়েছে কেবল কৃত্রিম সুগন্ধি। মিষ্টি কুমড়ার সাথে ম্যাংগো ফ্লেভার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব জুস। আর মিষ্টিকুমড়া মিশ্রিত জুসে যে সামান্য পরিমাণ আম দেয়া হচ্ছে তাতেও মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত ফরমালিন
P
শুধু ভেজাল দিয়েই তারা ক্ষান্ত থাকেনি বিপননেও চলছে দেশের মানুষের সাথে ব্যাপক প্রতারণা। ইতোমধ্যে এই কোম্পানিটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে তাতেও রয়েছে শুভাংকরের ফাঁকি। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে-‘Call করলেই-All ড্রিংকস’। কল করলে ড্রিংকস কি হিসেবে দেবে বা মূল্য আদৌ নেবে কিনা-বিজ্ঞাপনে এসব উল্লেখ নেই। নিচে একটি সেল নম্বার (01977267253) দেয়া আছে। এই নম্বরে ফোন না করে আদৌ আপনি জানতে পারবেন না যে বিজ্ঞাপনটির আড়ালে কি লুকিয়ে আছে।
এই নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তানভীর হোসাইন নামে একজন রিসিভ করেই জানাতে চায় কোথ্থেকে বলছেন? কি নিবেন? ওডার দেন আমরা আপনাদের বাসা পৌঁছে দিবো।
Pran Mango Juice Pak
এদিকে বিজ্ঞাপনে বিষয়টি খোলামেলা ভাবে বলা হয়নি কেন? বিষয়টি জানতে চাইলে তানভীর বলেন, এটা আমরা জানি না আপনি আমাদের মাকের্টিং অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বলে একটি নম্বার দেন। যদিও বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নাম্বারটি (01912257012) রিসিভ করেননি তিনি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, প্রাণ জুস তৈরির উদ্দেশ্যে কেনা আমে পরীক্ষা করতে গিয়ে বেরিয়ে বেড়িয়ে আসে ভয়াবহ তথ্য। ১৭জুন সোমবার মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে প্রাণ কোম্পানির ফরমালিন মিশ্রত ৯০ টন আম জব্দ করা হয়েছে। পরে তা ধ্বংস করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাংনী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমরান হোসেনের উপস্থিতিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে একটি ডোবাতে আম ধ্বংস করা হয়েছে।
২৮ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুস সালামের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজিপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এ আম জব্দ করেন। ওই আমে ফরমালিন মেশানোর দায়ে প্রাণ এগ্রো কোম্পানির প্রতিনিধিসহ স্থানীয় একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
প্রাণ কর্তৃপক্ষকে ১৫ মে’র মধ্যে আম ধ্বংসের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু প্রাণ কৃর্তৃপক্ষ আম ধ্বংস না করায় আদালতের নির্দেশে সোমবার ইমরান হোসেনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ আম ধ্বংস করেছে।
প্রতিনিয়তই প্রাণের জুসে পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল, কিছুদিন আগে জুসের বোতলে পাওয়া গেছে নাট-বল্টু। এর আগে নভেম্বরে প্রাণের জুসে মিষ্টি কুমড়া মেশানোর অভিযোগ প্রমাণ হয়। খাদ্যমান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় এই ভেজালের প্রমাণ মিলেছে।
প্রাণের এমন এসব ভেজাল জুস খাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা।
শিশু ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, এ ধরনের পানীয় মানবদেহের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। ১০ বছর আগেও দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ। এখন এ সংখ্যা দুই কোটির বেশি এবং তাদের অর্ধেকই শিশু। এ ছাড়া দেশে বছরে অন্তত ৮৪ হাজার মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। কৃত্রিম সুগন্ধি মেশানো এসব পানীয় গর্ভবতী ও বৃদ্ধদের জন্যও ক্ষতিকর। তাদেরও কিডনি ও লিভার আক্রান্ত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ফরমালিন শরীরে প্রবেশের পর লিভার বা যকৃতে মিথানল এনজাইমের উপস্থিতিতে প্রথমে ফরমালডিহাইড এবং পরে ফরমিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। তাৎক্ষনিকভাবে পেটের পীড়া, বদহজম, ডায়রিয়া, আলসার চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। এমনকি লিভার ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে।
ফরমালিন যুক্ত ফলমূলসহ অন্যান্য খাবার গ্রহণের ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, আ্যাজমা রোগের উপদ্রব হয়। ফুসফুস, শ্বাসনালীতে ক্যান্সার হতে পারে। বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, মাথাব্যথা ও চোখ জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং ফরমালিনযুক্ত মাছ পাকস্থলী, ফুসফস ও শ্বাসনালীতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এছাড়াও ব্লাড ক্যান্সার, চোখের যতি কমে যেতে পারে
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন