সাহজানপুর বস্তি বনাম প্রধান মন্ত্রির মুখের ভাষা...!!!
লিখেছেন লিখেছেন চিন্তিত মন ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৭:৪৮:১৪ সন্ধ্যা
কমলাপুর ষ্টেশনের অনতিদূরে মালিবাগ ক্রসিং পার হতেই ঠায় দাড়িয়ে গেল ট্রেনটা। মহাকালের সময় হতে হাটি হাটি পা পা করে একটা ঘন্টা বিদায় নিল, কিন্তূ ট্রেনটা সেই যে লাশ হয়ে দাড়াল আর জ্যান্ত করা গেল না। সাথে একগাদা লাগেজ, তাই অন্য দশটা যাত্রীর মত টারজান কায়দায় ট্রেন হতে লাফিয়ে রিক্সা চেপে উউউউ শব্দে গন্তব্যে পৌছার ছবি চিত্রায়নসম্ভব হলনা। চরম বিরক্তিতেত্যাক্ত বিরক্ত, না পারছি গিলতে না পারছি ফেলতে। পাঠক, শক্ত হয়ে বসুন, কাহিনীর এখানেই শেষ নয়, শুরু মাত্র! জানালায় থুতনি হেলিয়ে চারদিক চোখ বুলাচ্ছি, যতদূর চোখ যায় বস্তি আর বস্তি। ময়লা, নোংরা আর আবর্জনায় বেড়ে উঠা বস্তি জীবনকে এত কাছ হতে আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হলনা। এক মাসদ্য প্রসূত বাচ্চাকে কোন রকমে আকড়ে চুলায় আগুন ধরানোর চেষ্টা করছে, চারদিকে আরও গোটা তিনেক নাবালক শিশুর এলোমেলো চলাফেরা। এ যেন নোংরা রাজ্যে নোংরা রানী আর শাহাজাদা-শাহাজাদীদের রাজত্ব ! পাশেই এক মহিলা অন্য মহিলার কেশ চর্চার পাশাপাশি উকুন মারছে মহা আনন্দে।এক কথায় গায়ে গতরে খেটে খাওয়া মানুষের অলস এবং বৈচিত্রহীন জীবন।চরম বিরক্ত হয়ে অপেক্ষা করছি অনিশ্চিত যাত্রার। বাইরের স্লো মোশনের জীবনে সহসা চাঞ্চল্য দেখা দেয়ায় নড়েচড়ে বসল সবাই। বস্তিতে কারা যেন ঝগড়া করছে।প্রথমে নীচু স্বরের গলার আওয়াজ, ধ্বস্তাধ্বস্তিএবং সব শেষে কাগজে কলমে নিষিদ্ধ ভাষার নির্বিচার ব্যবহার।সে ভাষার দুয়েকটা শব্দ এখানে উল্লেখ করতে গেলে কর্তৃপক্ষেরে রোষানলে পরে লেখালেখির অধিকার হারানোর সম্ভাবনা থাকবে, তাই চেপে রাখলাম ভেতরের ইচ্ছাটাকে।স্বামী পেটাচ্ছেস্ত্রীকে, স্ত্রী জবাই হওয়া পশুর মতচীৎকার করছে এবং চেষ্টা করছে পাশে দাঁড়ানো সতীনের টুটি চেপে ধরতে।এক নাগাড়ে দেখতে গেলে ঝিমুনীএসে যায়।এমনটাই আসছিল বোধহয়, হুড়মুড় করে জেগে উঠলাম বিকট এক গর্জনে। ‘চু...নীর মাগি, তুরে কইলামভাত পাকাইতে আর তুই গেলি তুর ভাতারের মার ১৪ গুষ্টি...মারাইতে।’ স্বামী হবে হয়ত ৪টা নাবালক সন্তানের জননীর। ঝাপিয়ে পরে এলোপাথাড়ি লাথি মারতেই কোলের বাচ্চাটা ছিটকে পরল মাটিতে, বাকি ৩টা হাল্কা উত্তম-মধ্যম খাওয়ার পর পিপড়ার মত পালিয়ে গেল। দানবীয় উন্মত্ততায় চুলের মুঠি টেনে মাথা চেপে ধরল ফুটন্ত পানিতে। গগনবিদারী চীৎকারে চারদিক কেপে উঠল। এ নিয়ে বস্তির কাউকে খুব একটা উতলা মনে হলনা। আমার সহযাত্রীর অনেকেই দেখলাম প্রাণখুলে উপভোগ করছে এ দৃশ্য।প্রধান মন্ত্রির(শেখ হাসিনার) ইদানিং কালের কিছু কথা শুনলে বস্তির কথা মনে পরে যায়।
তাকে দেখে (খালেদা জিয়া) হুজুরের লালা ঝরতেও পারে তিনি তো (খালেদা জিয়া) সবসময় সাজু গুজুকরেই থাকেন।ঊল্লেখিত গুলা,গত কাল একজনসভায়,দেশের প্রধানমন্ত্রি বলেছে।
ক্ষমতায় বসেতৃতীয় বিশ্বের অতি দরিদ্র দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন নিকৃষ্ট ও প্রোভোকেটিভ কথা খুবই বিরল।
অনেকটা বস্তির কায়দায় প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের টুটি চেপে ধরতে চান।দেশ শাসনের নাম কখনো বিরোধী দলীয় নেত্রির চা বাগানে জন্ম উপাখ্যান হতে পারে না। এ স্রেফ জাতির সাথে ভাওতাবাজি, এ স্রেফ জাতির সাথে উলংগপ্রতারনা।
বিষয়: বিবিধ
২৬১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন