আজন্ম মিথ্যাবাদী চাইছে মিথ্যার স্বীকৃতি!
লিখেছেন লিখেছেন প্রতিবেশী ফারুক ১৬ আগস্ট, ২০১৩, ০৮:১৪:১৮ রাত
আমি ভোগবাধী, সুবিধাবাদী জাফর ইকবালের সাথে একমত নই। আপনার পরকালীন জবাবদিহিতা নেই, আমার আছে। আমি মিথ্যা বলতেও চাই না, শুনতেও চাই না। সত্য জানার আগ্রহ মোর আজন্ম। সত্যটা বলার সৎ সাহস আপনার কিংবা আপনি যে এজেন্সির হয়ে কাজ কর তাদের আছে কী?
ধনী-গরীব, কৃষক-শ্রমিক-দিনমজুর, শোষিত জনতা সবাই আমরা এই স্বাধীন দেশের নাগরিক। ব্রাহ্মন-অচ্ছুত বিবেধের যুগ আমরা বহু আগেই অতিক্রম করে এসেছি। একটুও বাড়িয়ে বলছি না মি. জাফর- বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সম্মানিত শিক্ষাগুরুদের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে শুধু দালাল জাফর ইকবালকে বলছি- আপনি জাফর একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আপনার মত জাফর আমরা বিয়াই (তৈরী করি)।
আপনি একটা প্রজন্মের কাছে হিরো। সেই প্রজন্ম দেশের গন্ডির বাহিরে পড়া শুনা করেনা বলেই আপনি তাদের কাছে হিরো। আপনি হলিউডের ছবির কাহিনী কাট-সাট করে লিখেন। আপনার মেধা আছে, সেটা আমার থেকে বেশী তা স্বীকার করি। কিন্তু ওভারঅল কতটুকু সেটা আমাদের জানা আছে। ভার্সিটিতে মাস্টারী ছাড়া জাতির জন্য কী এমন সম্মান বয়ে এনেছেন? হাজারো বারী’র মাঝে একজন বারীর কথা বলি, যে বারী শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ছিল। গত লন্ডন অলিম্পিকে দেশের জন্য যে সম্মান বারী এনেছে আপনি তার ধারে কাছে আছেন? শিবিরে নাম শুনলেতো আপনার ১১০ ডিগ্রী আসে গায়ে! এ রকম হাজারো বারী শিবিরের প্রোডাক্ট, সারা বিশ্বে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গোলাম আযমের ছেলে সালমান আযমী আল জাজিরাতে ইন্টারভিউ করেছিল, সেটা আরেকটা টকশোতে আলোচনা হয়েছিল ঠিক এভাবে- ‘তার এই ইন্টারভিউ আমাদের যোগ্যতা-দক্ষতা সারা পৃথিবীর কাছে আবার প্রমাণ করেছে, জাতির সম্মান বেড়েছে, এই ইন্টারভিউ’র জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই’। আমার এ লেখার আজই আপনার দৃষ্টিতে পড়বে, ভেবে দেখতে পারেন।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ নিয়ে আপনার ফাজলামোটা ৪২ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটা ফাজলামী হিসেবে বিবেচিত। আওয়ামীলীগকে ভোট দেয়া হয়েছে ঘরে ঘরে চাকুরী দেয়ার জন্য, বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য, দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য, যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য। যু্দ্ধাপরাধের বিচারের নামে ব্যবসা কিংবা রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য নয়। যোগ্য নাগরিকদের বাদ দিয়ে সন্ত্রাসী, গুন্ডা-পান্ডা দিয়ে প্রশাসনের চেইন ধংশের জন্য নয়।
৫মে ২০১৩ স্বাধীন দেশের ইতিহাস কলংকিত করেছে বর্তমান সরকার। সরকারের হাতে উপায় ছিল না, তাই সরকার করেছে। উপায় না থাকার ব্যাখ্যাটা শুনেন- হেফাজত যদি ফজর নামাজ পর্যন্ত টিকে যেত তখন জামায়াত-শিবির ওপেন যোগ দিতে ফজরের পর। বিএনপি আরো পরে হলেও মাঠে নেমে যেত। সরকার টিকে থাকার কোন সুযোগ থাকতো না। সরকারের ছিল অস্তিত্বের ব্যাপার। সরকার তার অস্তিত্বের জন্য যা করা দরকার তাই করেছে। এতে লুকোচুরির কী আছে? প্রতি নিয়ত সারাদেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসে এরচেয়ে বেশী মানুষ মারা যাচ্ছে। কার খবর কে রাখে? সীমান্তে পাখির মত গুলি করে ভারতীয় বাহিনী নিরীহ বাংলাদেশীদের খুন করছে, কয়টার খবর আপনি জাফর রাখেন? জীবনে কয়টা লাইন লিখেছেন সীমান্ত হত্যা কান্ড নিয়ে? অধিকার যখন তথ্য ভিত্তিক রিপোর্ট হাজির করল তাতে আপনারা আদা-জল খেয়ে, ল্যাংটা হয়েগেলেন।
অধিকারের ব্যাপারেতো আপনারা নির্লজ্জতার সকল সীমা অতিক্রম করেছেন। ভাববেন না এটা জামায়াতীদের সংগঠন বলে পার পেয়ে যাবেন। অধিকার তথ্য দাতাদের নিরাপত্তা চেয়েছিল রাষ্ট্রের কাছে, আওয়ামীলীগ সরকারের কাছে। সরকার সে ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা দেয়নি। তথ্যদাতার নিরাপত্তার কথা ভেবেই অধিকার সেই তালিকা সরকারকে দেয়নি। এটাও কী অস্বীকার করবে? জাসদের সাবেক নেতা, সুপ্রিম কোর্টে ঝড় তুলা আইনজীবী, সাবেক সহকারী এটর্নি জেনারেল আদিলুর রহমানকে একদিনেই আপনারা যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে দিবেন? এটা কী মগের মুল্লুক? আমি ব্যক্তিগত ভাবে আওয়ামীলীগের জন্য চিন্তিত। দল হিসেবে আমি আওয়ামীলীগকে পছন্দ করি। আমার ঘরে ছাত্রলীগের সোনালী অতীতের কান্ডারী আছেন একাধিক জন।
আল জাজিরা ১৪টা কবরের রিপোর্ট প্রচার করেছিল। সরকার সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি। সরকার তখন সেই লাশগুলো উত্তোলন করে প্রমাণ করতে পারত লাশগুলো হেফাজতীদের নয়। সেই রাতে সরকারের অনুগত টিভি ক্যামেরাগুলো ছিল ১০০০০ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পিছনে। ১০ হাজার মানুষের একটা মিছিলের পিছনে থাকলে সামনে কী হচ্ছে তা বুঝা যায় না, এটা একটা বাচ্চা শিশুও জানে। কিন্তু আমার শংকা- বন্ধ করে দেয়া ২টা টিভি চ্যানেলের ডজন খানেক ক্যামেরা হেফাজতীদের স্পটে ছিল, তাদের ভিডিও ফুটেজগুলো তারা এখন হয়ত প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে না। সকল প্রমাণ নষ্ট করতে পারলেও সেগুলোর এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। সেই ভিডিও ফুটেজগুলো তারা যখন প্রচার করবে তখন কী হবে?
মিথ্যাবাদী জাফর ইকবাল আপনাকে আশ্বস্ত করি- মুশতারি শফি, বাঘা সিদ্দিকী, ইসমাঈল বেঙ্গলদের মত মুক্তিযোদ্ধারা যাকে মুরগি কবির ডাকে সেই চেতনার মোড়ল, শাহরিয়ার কবিরকে নিয়ে বিএনপি যখন চরম ফাজলামো করেছিল আমরা তখনও কথা বলেছি। বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ব্যারিস্টার তানিয়া আমিরকে নিয়ে হাতে গনা যে কয়জন সাহসী নাগরিক প্রোগ্রাম করেছিল আমিও তাদের একজন। ২০০১’র অক্টোবরে দেশব্যাপী ছাত্রদল-যুবদল যা করেছিল তারও প্রতিবাদ করেছি। আমার ঘরে হিন্দু আশ্রয় নিয়েছিল। সেই কালো রাতে আমার জায়নামাজ-ঠাকুরের ধুতির কোন পার্থক্য আমার কাছে ছিলনা। একটাই পরিচয় ছিল সেও মানুষ, আমিও মানুষ। আজ ফ্যাসীবাদের সহযোগী হয়ে আপনারা আওয়ামীলীগের ক্ষতি করছেন। আওয়ামীলীগ এখন না বুঝলেও বুঝবে। যখন বুঝতে তখন আমরাই তাদের পাশে থাকব। কারণ আমরা ফ্যাসীবাদের বিরুদ্ধে, মজলুমের পক্ষে। ৪৮-৭১ বঙ্গবন্ধু যে নির্যাতিতদের কথা বলতেন সেই মজলুমের পক্ষে আমরা, আমরা শেখ মুজিবের পক্ষে, শুধু ফ্যাসিবাদ-বাকশাল-স্বৈরতন্ত্র-জুলম আর সকল অন্যায়ের বিপক্ষে।
বিষয়: বিবিধ
২৯২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন