ইসলামে নারীর পোশাক
লিখেছেন লিখেছেন মারুফ_রুসাফি ২৭ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৩১:১৭ দুপুর
নারীর পোশাক-পরিচ্ছদ কেমন হওয়া উচিৎ সে ব্যাপারে ইসলাম কিছু নির্দেশনা দিয়েছে এবং জীবনে চলার পথে সেগুলো মেনে চলতে তাগিদ দিয়েছে।নারীর পোশাক অবশ্যই তার পুরো শরীরকে ঢেকে রাখার জন্য যথেষ্ট হতে হবে। হাত এবং চেহারা নিয়ে কোনো কোনো বর্ণনায় কিছু দ্বিমত থাকলেও বর্তমানের ফেতনা ও নারীর সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষার তাগিদে মুখ ঢেকে পর্দা করার ব্যাপারে ফকীহগণ একমত হয়েছেন।সূরা নূরে আল্লাহ পাক আদেশ দিয়েছেন, ‘নারীরা যেন তাদের গায়ে ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে।’সূরা আহযাবে আল্লাহ পাক রাসুলকে (সা.) বলেছেন, ‘আপনি আপনার স্ত্রীদের ও আপনার কন্যাদের এবং মুমিনদের নারীদের বলে দিন, তারা যেন তাদের সারা গায়ে জিলবাব (লম্বা বোরকা) জড়িয়ে চলাফেরা করে।’সুতরাং গায়রে মাহরাম (যাদের সামনে পর্দা রক্ষা করা ফরজ) পুরুষদের সামনে কিংবা বাইরে বের হওয়ার সময় নিজের পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হবে। আর ঘরের লোকদের (মাহরাম- যাদের সামনে পর্দা করা ফরজ নয়) সামনে চেহারা, হাত ও পা খুলে চলাফেরা করতে অসুবিধে নেই।নারীদের ক্ষেত্রে এমন কোনো রঙিন পোশাক পরে বাইরে বের হওয়া নিষেধ যা অন্যের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে। নারীর পোশাক যেন এত ক্ষীণ ও পাতলা কিংবা লাগোয়া না হয় যা তার দেহ আবরণের জন্য যথেষ্ট নয়। ঢিলেঢালা এবং শালীন পোশাকেই নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য ও সুরক্ষা নিহীত।পুরুষদের আকৃষ্ট করার জন্য সুগন্ধি মেখে ঘরের বাইরে বের হতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। তিনি এমন পোশাক পরতেও মানা করেছেন যা পুরুষদের পোশাকের সাথে মিলে যায়। বিধর্মী নারীদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোনো পোশাক পরিধান করা এবং গর্ব ও অহঙ্কারের জন্য দামি পোশাক পড়ে মানুষকে দেখানো থেকেও বিরত থাকতে ইসলাম নারীকে তাগিদ দিয়েছে।এ বিষয়টিও মনে রাখতে হবে, রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, সুন্দর সুন্দর জামা পরিধান করা কিংবা পোশাকে পরিপাটি হয়ে থাকা অহঙ্কার নয়। বরং আল্লাহ পাক সুন্দর এবং তিনি বান্দার সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। এগুলো অহঙ্কার হিসেবে তখনই গণ্য হবে যখন কেউ সুন্দর জামা গায়ে দিয়ে অন্যকে তুচ্ছ করে এবং নিজেকে সবার চেয়ে দামি ও সুন্দর ভাবতে থাকে। খুব সংক্ষেপে ইসলামের পোশাক সম্পর্কিত নির্দেশনা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন। আরবদের পোশাক কিংবা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির পোশাক দেখে অন্ধ অনুসরণ নয়, বরং পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নববীতে যেভাবে মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য আবরণের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে মেনে চলার মধ্যে প্রকৃত শান্তি ও সম্মান এবং নিরাপত্তা নিহিত।ভুলে গেলে চলবে না, নিজেদের যুক্তি ও প্রবৃত্তির লালসাকে আল্লাহর জন্য ত্যাগ করে তার বিধান ও হুকুমের সামনে অবনত হওয়ার নাম ইসলাম। অনেকে আজ নানা অজুহাতে ও প্রলোভনে সুকৌশলে মুসলমানদের এ পোশাক সৌন্দর্য ও আদর্শ কেড়ে নিতে চাইছে। এসব ধোঁকা থেকে সজাগ থাকা আজ ঈমানের দাবি।
মানুষ যখন বনে জঙ্গলে বাস করতো, তখন তাদের কোনো পরিধেয় বস্ত্র ছিল না। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে মানুষ নিজেকে ঢেকে রেখে মার্জিত হতে শিখেছিল। লজ্জা ও শালীনতার সেখান থেকেই শুরু। এর পূর্ণতা দিয়েছে ইসলাম। আধুনিকতা কিংবা প্রগতির নামে যারা আজ আবার পোশাককে সংকীর্ণ করে মুক্ত সংস্কৃতির দিকে ডাকছে, মূলত তারাই আবার ফিরে যাচ্ছে প্রাকসভ্যতার অন্ধকারের দিকে- যেখানে আদিম মানুষদের বসবাস ছিল একেবারে বস্ত্রহীন।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন